আজাদুর রহমান চন্দন

গত মে মাসে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে নতুন মার্কিন ভিসা নীতি ঘোষণার পর থেকেই কবে কাদের বিরুদ্ধে এর প্রয়োগ শুরু হয়, সেটি দেখার অপেক্ষা করতে থাকে দেশের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। তাদের সেই অপেক্ষার আংশিক অবসান হয়েছে। ২২ সেপ্টেম্বর মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন-প্রক্রিয়ায় বাধাদানকারীদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞার প্রয়োগ শুরু করেছে।
নিষেধাজ্ঞার আওতায় বাংলাদেশের আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য, ক্ষমতাসীন ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যরা আছেন বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়া ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরাও এর অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন। সুষ্ঠু নির্বাচন-প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার ক্ষেত্রে আরও যাঁরা দায়ী বা জড়িত বলে প্রমাণিত হবেন, ভবিষ্যতে তাঁদের বিরুদ্ধেও ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নিষেধাজ্ঞার প্রয়োগ শুরু করার কথা জানালেও কারা এর আওতায় এসেছেন, তা প্রকাশ করেনি। করার কথাও নয়। কারণ ভিসাসংক্রান্ত তথ্য সব দেশেই গোপন রাখা হয়। কেবল সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিই সেটি জানতে পারেন।
যুক্তরাষ্ট্র এই নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়া কারও নাম বা কোনো তালিকা প্রকাশ না করলেও এবং আগামী দিনেও প্রকাশ না করার ঘোষণা দিলেও আমাদের দেশে অতি-উৎসাহী অনেক লোক আড্ডা-আলোচনায় এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রভাবশালী নানাজনকে ইঙ্গিত করে নানা রকম মন্তব্য ছড়াতে শুরু করেছেন। এসব মন্তব্যে তাঁদের উল্লসিত হওয়ার বিষয়টিও চাপা থাকছে না; বরং বলা যায় উৎকটভাবেই প্রকাশ পাচ্ছে। ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলের নেতাদের বক্তৃতা-বিবৃতিতেও যা প্রকাশ পাচ্ছে তা দেশের জন্য মোটেই সম্মানের নয়।
রাষ্ট্রক্ষমতায় টিকে থাকা আর ক্ষমতায় যাওয়ার লড়াইয়ে জিততে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর বিদেশি শক্তির কাছে ধরনা দেওয়ার প্রতিযোগিতা নতুন নয়। যখন যেই দল ক্ষমতায় থাকে, তখন তার ভূমিকা হয় এক রকম। বিরোধী দলে থাকলে অন্য রকম। ক্ষমতায় থাকলে যে দল যে কথা বলে, ক্ষমতার বাইরে গিয়ে বলে উল্টোটা। যে দলই ক্ষমতার বাইরে থাকে, সেই দলই ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে নালিশ জানায় প্রভাবশালী বিদেশি শক্তির কাছে।
এই প্রতিযোগিতার সুযোগ নিয়ে ক্ষমতাধর দেশগুলো নিজেদের স্বার্থ হাসিল করে চলেছে অবলীলায়। সাম্প্রতিককালে প্রভাবশালী ওই দেশগুলোর মধ্যেও বেড়েছে স্বার্থের দ্বন্দ্ব। বাংলাদেশের রাজনীতি-অর্থনীতিসহ সামগ্রিক বিষয়ে তিনটি দেশের প্রভাব নিয়ে আলোচনা এখন সাধারণ মানুষের মুখে মুখে। দেশ তিনটি হলো যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও চীন।
কোনো কোনো বিশ্লেষক মনে করেন, বাংলাদেশ ঘিরে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নীতি ও দৃষ্টিভঙ্গির যেসব পরিবর্তন হচ্ছে তার মূল লক্ষ্য দেশটিকে চীনের প্রভাববলয়ের বাইরে রাখা। যদি ধরেও নেওয়া হয় যে নতুন মার্কিন ভিসা নীতি স্ট্র্যাটেজিক কোনো কারণে ঘোষিত হয়নি, হয়েছে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে; তাহলে প্রশ্ন ওঠে, যুক্তরাষ্ট্রের সেই ঘোষণা কার্যকর হতে শুরু করায় বাংলাদেশে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে কি? ভিসা নীতি প্রয়োগ করে বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্য অর্জন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন খোদ যুক্তরাষ্ট্রেরই নীতি-গবেষণাপ্রতিষ্ঠান উইলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান।
এমন অনেক দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সখ্য দেখা যায়, যেখানে গণতন্ত্র বা নির্বাচন বলতে তেমন কিছুই নেই এবং যেসব দেশের মানবাধিকার নিয়েও গুরুতর প্রশ্ন আছে। ওই দেশগুলোকে ফেলে ওয়াশিংটন হঠাৎ বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হচ্ছে কি না, তা নিয়ে কেন এত ব্যস্ত হয়ে উঠল, সে প্রশ্নও দেখা দিয়েছে অনেকের মনে। যুক্তরাষ্ট্র সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞার মতো যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছে, তার পেছনে আসল উদ্দেশ্য ভূ-রাজনৈতিক স্ট্র্যাটেজিক স্বার্থ; গণতন্ত্র, সুষ্ঠু নির্বাচন বা মানবাধিকার নয়। যুক্তরাষ্ট্র আসলে নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করে বাংলাদেশকে চীনের প্রভাববলয়ের বাইরে রাখতে চায়।
এ প্রসঙ্গে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেলো ড. আনু আনোয়ার কয়েক মাস আগে বিবিসিকে বলেন, ‘কোথাও গণতন্ত্র হুমকির মুখে পড়েছে বলে মনে করলে যুক্তরাষ্ট্র তাকে সুরক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে সে অর্থে এটা অনুসৃত হয় না, কারণ ভূ-রাজনীতি ও জাতীয় স্বার্থের প্রশ্নের মধ্যে সংঘাত দেখা দিলে এবং আমার দেখা মতে, সব সময়ই ভূ-রাজনৈতিক বিবেচনা প্রাধান্য পায়।’
এটা সবারই জানা, বাংলাদেশে চীন অনেক প্রকল্পে অর্থায়ন করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠতা আরও বেশি। যুক্তরাষ্ট্র স্বীকার করে থাকে যে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার আরও অনেক দেশের মতোই ভারত ও চীন উভয়ের সঙ্গেই ভারসাম্য বজায় রেখে চলছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র নিশ্চিত হতে চায় যেন বাংলাদেশ চীনের ওপর খুব বেশি নির্ভরশীল হয়ে না পড়ে। ওয়াশিংটন ইদানীং স্ট্র্যাটেজির বিষয়টি মূলত চীনের সঙ্গে জটিলতার লেন্স দিয়ে দেখছে। এটা ঠিক, চীনের সঙ্গে রেষারেষিতে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশগুলোকে দলে টানার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
জাপান, ভারত ও অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে চার দেশীয় জোট কোয়াডে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশের ওপর মার্কিন চাপ থাকার খবর নানা সময়ে বেরিয়েছে। বাংলাদেশে স্ট্র্যাটেজিক গুরুত্বপূর্ণ কোনো অবকাঠামোতে চীনা বিনিয়োগে যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তির কথাও মাঝেমধ্যেই শোনা যায়। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চীনের ওপর বাংলাদেশের নির্ভরশীলতা বাড়াটাকেও যুক্তরাষ্ট্র ভালো চেখে দেখছে না। সবশেষ চীনের প্রভাবে মধ্যপ্রাচ্যে পায়ের নিচের জমি নড়বড়ে হয়ে পড়ায় বেজায় চটে আছে বিশ্ব মোড়ল হিসেবে পরিচিত দেশটি।
সেন্ট মার্টিন ঘিরে এ অঞ্চলে মার্কিন সামরিক অবস্থান প্রতিষ্ঠার অভিলাষ বাস্তবায়ন করতে দেশটির নানা তৎপরতা নিয়ে কথাবার্তা শোনা যাচ্ছিল কয়েক দশক আগে থেকেই। ইদানীং শোনা যাচ্ছে তাদের নতুন অভিপ্রায়ের কথা। তারা নাকি বাংলাদেশের ভূখণ্ড, বিশেষ করে সমুদ্রসীমা ব্যবহার করে মিয়ানমারে শক্তি প্রয়োগ করে রাখাইন রাজ্যকে বিচ্ছিন্ন করতে চায়। এ নিয়ে তারা সরকারের ওপর নানাভাবে চাপ দিয়ে যাচ্ছে। নতুন ভিসা নীতি সেই চাপেরই অংশ কি না, সেটি অবশ্য নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়।
অতিসম্প্রতি জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র কয়েক বছর আগেই বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই কক্সবাজারে একটি অভিজাত হোটেলের পার্কিং প্লেস ভাড়া নিয়েছে। স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পক্ষ থেকে সরকারের ওপরমহলে বিষয়টি নাকি জানানোও হয়েছে। কিন্তু সরকার দূর থেকে দেখে যাওয়া ছাড়া কিছুই করতে পারছে না। সবচেয়ে বড় প্রশ্ন—বাংলাদেশে অন্য কোনো দেশের সামরিক উপস্থিতির সুযোগই হোক আর এ দেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে হস্তক্ষেপের প্রসঙ্গই হোক, এ দেশের কোনো সরকারের পক্ষে কি সেই অভিপ্রায়ে সায় দেওয়া সম্ভব? যদি সম্ভব না হয়, আর তার প্রতিক্রিয়ায় যদি ক্ষমতাধর দেশটি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নেয়, সে ক্ষেত্রে এ দেশের কারও পক্ষে কি তার প্রশংসা করা যৌক্তিক?
এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে বর্তমান সরকারসহ বিগত সরকারগুলো দেশের নির্বাচনব্যবস্থা ধ্বংস করে ফেলেছে। শাসকশ্রেণির দলগুলো নিজেদের স্বার্থে যেনতেনভাবে ক্ষমতায় থাকা ও যাওয়ার জন্য নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করেছে। আসন্ন নির্বাচন নিয়েও বিরোধী দলগুলোর দাবিকে সরকার গুরুত্ব না দেওয়ায় দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের সুযোগ পাচ্ছে বিদেশিরা। প্রধান বিরোধী দল ও তার মিত্ররা সেই সুযোগের পালে হাওয়া দিচ্ছে। তাতেও যদি দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ সুগম হতো তাহলে অবশ্য বলার কিছু ছিল না।
আজাদুর রহমান চন্দন, সাংবাদিক ও গবেষক

গত মে মাসে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে নতুন মার্কিন ভিসা নীতি ঘোষণার পর থেকেই কবে কাদের বিরুদ্ধে এর প্রয়োগ শুরু হয়, সেটি দেখার অপেক্ষা করতে থাকে দেশের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। তাদের সেই অপেক্ষার আংশিক অবসান হয়েছে। ২২ সেপ্টেম্বর মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন-প্রক্রিয়ায় বাধাদানকারীদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞার প্রয়োগ শুরু করেছে।
নিষেধাজ্ঞার আওতায় বাংলাদেশের আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য, ক্ষমতাসীন ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যরা আছেন বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়া ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরাও এর অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন। সুষ্ঠু নির্বাচন-প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার ক্ষেত্রে আরও যাঁরা দায়ী বা জড়িত বলে প্রমাণিত হবেন, ভবিষ্যতে তাঁদের বিরুদ্ধেও ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নিষেধাজ্ঞার প্রয়োগ শুরু করার কথা জানালেও কারা এর আওতায় এসেছেন, তা প্রকাশ করেনি। করার কথাও নয়। কারণ ভিসাসংক্রান্ত তথ্য সব দেশেই গোপন রাখা হয়। কেবল সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিই সেটি জানতে পারেন।
যুক্তরাষ্ট্র এই নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়া কারও নাম বা কোনো তালিকা প্রকাশ না করলেও এবং আগামী দিনেও প্রকাশ না করার ঘোষণা দিলেও আমাদের দেশে অতি-উৎসাহী অনেক লোক আড্ডা-আলোচনায় এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রভাবশালী নানাজনকে ইঙ্গিত করে নানা রকম মন্তব্য ছড়াতে শুরু করেছেন। এসব মন্তব্যে তাঁদের উল্লসিত হওয়ার বিষয়টিও চাপা থাকছে না; বরং বলা যায় উৎকটভাবেই প্রকাশ পাচ্ছে। ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলের নেতাদের বক্তৃতা-বিবৃতিতেও যা প্রকাশ পাচ্ছে তা দেশের জন্য মোটেই সম্মানের নয়।
রাষ্ট্রক্ষমতায় টিকে থাকা আর ক্ষমতায় যাওয়ার লড়াইয়ে জিততে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর বিদেশি শক্তির কাছে ধরনা দেওয়ার প্রতিযোগিতা নতুন নয়। যখন যেই দল ক্ষমতায় থাকে, তখন তার ভূমিকা হয় এক রকম। বিরোধী দলে থাকলে অন্য রকম। ক্ষমতায় থাকলে যে দল যে কথা বলে, ক্ষমতার বাইরে গিয়ে বলে উল্টোটা। যে দলই ক্ষমতার বাইরে থাকে, সেই দলই ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে নালিশ জানায় প্রভাবশালী বিদেশি শক্তির কাছে।
এই প্রতিযোগিতার সুযোগ নিয়ে ক্ষমতাধর দেশগুলো নিজেদের স্বার্থ হাসিল করে চলেছে অবলীলায়। সাম্প্রতিককালে প্রভাবশালী ওই দেশগুলোর মধ্যেও বেড়েছে স্বার্থের দ্বন্দ্ব। বাংলাদেশের রাজনীতি-অর্থনীতিসহ সামগ্রিক বিষয়ে তিনটি দেশের প্রভাব নিয়ে আলোচনা এখন সাধারণ মানুষের মুখে মুখে। দেশ তিনটি হলো যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও চীন।
কোনো কোনো বিশ্লেষক মনে করেন, বাংলাদেশ ঘিরে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নীতি ও দৃষ্টিভঙ্গির যেসব পরিবর্তন হচ্ছে তার মূল লক্ষ্য দেশটিকে চীনের প্রভাববলয়ের বাইরে রাখা। যদি ধরেও নেওয়া হয় যে নতুন মার্কিন ভিসা নীতি স্ট্র্যাটেজিক কোনো কারণে ঘোষিত হয়নি, হয়েছে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে; তাহলে প্রশ্ন ওঠে, যুক্তরাষ্ট্রের সেই ঘোষণা কার্যকর হতে শুরু করায় বাংলাদেশে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে কি? ভিসা নীতি প্রয়োগ করে বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্য অর্জন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন খোদ যুক্তরাষ্ট্রেরই নীতি-গবেষণাপ্রতিষ্ঠান উইলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান।
এমন অনেক দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সখ্য দেখা যায়, যেখানে গণতন্ত্র বা নির্বাচন বলতে তেমন কিছুই নেই এবং যেসব দেশের মানবাধিকার নিয়েও গুরুতর প্রশ্ন আছে। ওই দেশগুলোকে ফেলে ওয়াশিংটন হঠাৎ বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হচ্ছে কি না, তা নিয়ে কেন এত ব্যস্ত হয়ে উঠল, সে প্রশ্নও দেখা দিয়েছে অনেকের মনে। যুক্তরাষ্ট্র সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞার মতো যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছে, তার পেছনে আসল উদ্দেশ্য ভূ-রাজনৈতিক স্ট্র্যাটেজিক স্বার্থ; গণতন্ত্র, সুষ্ঠু নির্বাচন বা মানবাধিকার নয়। যুক্তরাষ্ট্র আসলে নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করে বাংলাদেশকে চীনের প্রভাববলয়ের বাইরে রাখতে চায়।
এ প্রসঙ্গে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেলো ড. আনু আনোয়ার কয়েক মাস আগে বিবিসিকে বলেন, ‘কোথাও গণতন্ত্র হুমকির মুখে পড়েছে বলে মনে করলে যুক্তরাষ্ট্র তাকে সুরক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে সে অর্থে এটা অনুসৃত হয় না, কারণ ভূ-রাজনীতি ও জাতীয় স্বার্থের প্রশ্নের মধ্যে সংঘাত দেখা দিলে এবং আমার দেখা মতে, সব সময়ই ভূ-রাজনৈতিক বিবেচনা প্রাধান্য পায়।’
এটা সবারই জানা, বাংলাদেশে চীন অনেক প্রকল্পে অর্থায়ন করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠতা আরও বেশি। যুক্তরাষ্ট্র স্বীকার করে থাকে যে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার আরও অনেক দেশের মতোই ভারত ও চীন উভয়ের সঙ্গেই ভারসাম্য বজায় রেখে চলছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র নিশ্চিত হতে চায় যেন বাংলাদেশ চীনের ওপর খুব বেশি নির্ভরশীল হয়ে না পড়ে। ওয়াশিংটন ইদানীং স্ট্র্যাটেজির বিষয়টি মূলত চীনের সঙ্গে জটিলতার লেন্স দিয়ে দেখছে। এটা ঠিক, চীনের সঙ্গে রেষারেষিতে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশগুলোকে দলে টানার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
জাপান, ভারত ও অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে চার দেশীয় জোট কোয়াডে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশের ওপর মার্কিন চাপ থাকার খবর নানা সময়ে বেরিয়েছে। বাংলাদেশে স্ট্র্যাটেজিক গুরুত্বপূর্ণ কোনো অবকাঠামোতে চীনা বিনিয়োগে যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তির কথাও মাঝেমধ্যেই শোনা যায়। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চীনের ওপর বাংলাদেশের নির্ভরশীলতা বাড়াটাকেও যুক্তরাষ্ট্র ভালো চেখে দেখছে না। সবশেষ চীনের প্রভাবে মধ্যপ্রাচ্যে পায়ের নিচের জমি নড়বড়ে হয়ে পড়ায় বেজায় চটে আছে বিশ্ব মোড়ল হিসেবে পরিচিত দেশটি।
সেন্ট মার্টিন ঘিরে এ অঞ্চলে মার্কিন সামরিক অবস্থান প্রতিষ্ঠার অভিলাষ বাস্তবায়ন করতে দেশটির নানা তৎপরতা নিয়ে কথাবার্তা শোনা যাচ্ছিল কয়েক দশক আগে থেকেই। ইদানীং শোনা যাচ্ছে তাদের নতুন অভিপ্রায়ের কথা। তারা নাকি বাংলাদেশের ভূখণ্ড, বিশেষ করে সমুদ্রসীমা ব্যবহার করে মিয়ানমারে শক্তি প্রয়োগ করে রাখাইন রাজ্যকে বিচ্ছিন্ন করতে চায়। এ নিয়ে তারা সরকারের ওপর নানাভাবে চাপ দিয়ে যাচ্ছে। নতুন ভিসা নীতি সেই চাপেরই অংশ কি না, সেটি অবশ্য নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়।
অতিসম্প্রতি জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র কয়েক বছর আগেই বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই কক্সবাজারে একটি অভিজাত হোটেলের পার্কিং প্লেস ভাড়া নিয়েছে। স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পক্ষ থেকে সরকারের ওপরমহলে বিষয়টি নাকি জানানোও হয়েছে। কিন্তু সরকার দূর থেকে দেখে যাওয়া ছাড়া কিছুই করতে পারছে না। সবচেয়ে বড় প্রশ্ন—বাংলাদেশে অন্য কোনো দেশের সামরিক উপস্থিতির সুযোগই হোক আর এ দেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে হস্তক্ষেপের প্রসঙ্গই হোক, এ দেশের কোনো সরকারের পক্ষে কি সেই অভিপ্রায়ে সায় দেওয়া সম্ভব? যদি সম্ভব না হয়, আর তার প্রতিক্রিয়ায় যদি ক্ষমতাধর দেশটি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নেয়, সে ক্ষেত্রে এ দেশের কারও পক্ষে কি তার প্রশংসা করা যৌক্তিক?
এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে বর্তমান সরকারসহ বিগত সরকারগুলো দেশের নির্বাচনব্যবস্থা ধ্বংস করে ফেলেছে। শাসকশ্রেণির দলগুলো নিজেদের স্বার্থে যেনতেনভাবে ক্ষমতায় থাকা ও যাওয়ার জন্য নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করেছে। আসন্ন নির্বাচন নিয়েও বিরোধী দলগুলোর দাবিকে সরকার গুরুত্ব না দেওয়ায় দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের সুযোগ পাচ্ছে বিদেশিরা। প্রধান বিরোধী দল ও তার মিত্ররা সেই সুযোগের পালে হাওয়া দিচ্ছে। তাতেও যদি দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ সুগম হতো তাহলে অবশ্য বলার কিছু ছিল না।
আজাদুর রহমান চন্দন, সাংবাদিক ও গবেষক
আজাদুর রহমান চন্দন

গত মে মাসে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে নতুন মার্কিন ভিসা নীতি ঘোষণার পর থেকেই কবে কাদের বিরুদ্ধে এর প্রয়োগ শুরু হয়, সেটি দেখার অপেক্ষা করতে থাকে দেশের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। তাদের সেই অপেক্ষার আংশিক অবসান হয়েছে। ২২ সেপ্টেম্বর মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন-প্রক্রিয়ায় বাধাদানকারীদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞার প্রয়োগ শুরু করেছে।
নিষেধাজ্ঞার আওতায় বাংলাদেশের আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য, ক্ষমতাসীন ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যরা আছেন বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়া ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরাও এর অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন। সুষ্ঠু নির্বাচন-প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার ক্ষেত্রে আরও যাঁরা দায়ী বা জড়িত বলে প্রমাণিত হবেন, ভবিষ্যতে তাঁদের বিরুদ্ধেও ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নিষেধাজ্ঞার প্রয়োগ শুরু করার কথা জানালেও কারা এর আওতায় এসেছেন, তা প্রকাশ করেনি। করার কথাও নয়। কারণ ভিসাসংক্রান্ত তথ্য সব দেশেই গোপন রাখা হয়। কেবল সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিই সেটি জানতে পারেন।
যুক্তরাষ্ট্র এই নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়া কারও নাম বা কোনো তালিকা প্রকাশ না করলেও এবং আগামী দিনেও প্রকাশ না করার ঘোষণা দিলেও আমাদের দেশে অতি-উৎসাহী অনেক লোক আড্ডা-আলোচনায় এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রভাবশালী নানাজনকে ইঙ্গিত করে নানা রকম মন্তব্য ছড়াতে শুরু করেছেন। এসব মন্তব্যে তাঁদের উল্লসিত হওয়ার বিষয়টিও চাপা থাকছে না; বরং বলা যায় উৎকটভাবেই প্রকাশ পাচ্ছে। ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলের নেতাদের বক্তৃতা-বিবৃতিতেও যা প্রকাশ পাচ্ছে তা দেশের জন্য মোটেই সম্মানের নয়।
রাষ্ট্রক্ষমতায় টিকে থাকা আর ক্ষমতায় যাওয়ার লড়াইয়ে জিততে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর বিদেশি শক্তির কাছে ধরনা দেওয়ার প্রতিযোগিতা নতুন নয়। যখন যেই দল ক্ষমতায় থাকে, তখন তার ভূমিকা হয় এক রকম। বিরোধী দলে থাকলে অন্য রকম। ক্ষমতায় থাকলে যে দল যে কথা বলে, ক্ষমতার বাইরে গিয়ে বলে উল্টোটা। যে দলই ক্ষমতার বাইরে থাকে, সেই দলই ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে নালিশ জানায় প্রভাবশালী বিদেশি শক্তির কাছে।
এই প্রতিযোগিতার সুযোগ নিয়ে ক্ষমতাধর দেশগুলো নিজেদের স্বার্থ হাসিল করে চলেছে অবলীলায়। সাম্প্রতিককালে প্রভাবশালী ওই দেশগুলোর মধ্যেও বেড়েছে স্বার্থের দ্বন্দ্ব। বাংলাদেশের রাজনীতি-অর্থনীতিসহ সামগ্রিক বিষয়ে তিনটি দেশের প্রভাব নিয়ে আলোচনা এখন সাধারণ মানুষের মুখে মুখে। দেশ তিনটি হলো যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও চীন।
কোনো কোনো বিশ্লেষক মনে করেন, বাংলাদেশ ঘিরে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নীতি ও দৃষ্টিভঙ্গির যেসব পরিবর্তন হচ্ছে তার মূল লক্ষ্য দেশটিকে চীনের প্রভাববলয়ের বাইরে রাখা। যদি ধরেও নেওয়া হয় যে নতুন মার্কিন ভিসা নীতি স্ট্র্যাটেজিক কোনো কারণে ঘোষিত হয়নি, হয়েছে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে; তাহলে প্রশ্ন ওঠে, যুক্তরাষ্ট্রের সেই ঘোষণা কার্যকর হতে শুরু করায় বাংলাদেশে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে কি? ভিসা নীতি প্রয়োগ করে বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্য অর্জন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন খোদ যুক্তরাষ্ট্রেরই নীতি-গবেষণাপ্রতিষ্ঠান উইলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান।
এমন অনেক দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সখ্য দেখা যায়, যেখানে গণতন্ত্র বা নির্বাচন বলতে তেমন কিছুই নেই এবং যেসব দেশের মানবাধিকার নিয়েও গুরুতর প্রশ্ন আছে। ওই দেশগুলোকে ফেলে ওয়াশিংটন হঠাৎ বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হচ্ছে কি না, তা নিয়ে কেন এত ব্যস্ত হয়ে উঠল, সে প্রশ্নও দেখা দিয়েছে অনেকের মনে। যুক্তরাষ্ট্র সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞার মতো যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছে, তার পেছনে আসল উদ্দেশ্য ভূ-রাজনৈতিক স্ট্র্যাটেজিক স্বার্থ; গণতন্ত্র, সুষ্ঠু নির্বাচন বা মানবাধিকার নয়। যুক্তরাষ্ট্র আসলে নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করে বাংলাদেশকে চীনের প্রভাববলয়ের বাইরে রাখতে চায়।
এ প্রসঙ্গে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেলো ড. আনু আনোয়ার কয়েক মাস আগে বিবিসিকে বলেন, ‘কোথাও গণতন্ত্র হুমকির মুখে পড়েছে বলে মনে করলে যুক্তরাষ্ট্র তাকে সুরক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে সে অর্থে এটা অনুসৃত হয় না, কারণ ভূ-রাজনীতি ও জাতীয় স্বার্থের প্রশ্নের মধ্যে সংঘাত দেখা দিলে এবং আমার দেখা মতে, সব সময়ই ভূ-রাজনৈতিক বিবেচনা প্রাধান্য পায়।’
এটা সবারই জানা, বাংলাদেশে চীন অনেক প্রকল্পে অর্থায়ন করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠতা আরও বেশি। যুক্তরাষ্ট্র স্বীকার করে থাকে যে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার আরও অনেক দেশের মতোই ভারত ও চীন উভয়ের সঙ্গেই ভারসাম্য বজায় রেখে চলছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র নিশ্চিত হতে চায় যেন বাংলাদেশ চীনের ওপর খুব বেশি নির্ভরশীল হয়ে না পড়ে। ওয়াশিংটন ইদানীং স্ট্র্যাটেজির বিষয়টি মূলত চীনের সঙ্গে জটিলতার লেন্স দিয়ে দেখছে। এটা ঠিক, চীনের সঙ্গে রেষারেষিতে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশগুলোকে দলে টানার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
জাপান, ভারত ও অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে চার দেশীয় জোট কোয়াডে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশের ওপর মার্কিন চাপ থাকার খবর নানা সময়ে বেরিয়েছে। বাংলাদেশে স্ট্র্যাটেজিক গুরুত্বপূর্ণ কোনো অবকাঠামোতে চীনা বিনিয়োগে যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তির কথাও মাঝেমধ্যেই শোনা যায়। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চীনের ওপর বাংলাদেশের নির্ভরশীলতা বাড়াটাকেও যুক্তরাষ্ট্র ভালো চেখে দেখছে না। সবশেষ চীনের প্রভাবে মধ্যপ্রাচ্যে পায়ের নিচের জমি নড়বড়ে হয়ে পড়ায় বেজায় চটে আছে বিশ্ব মোড়ল হিসেবে পরিচিত দেশটি।
সেন্ট মার্টিন ঘিরে এ অঞ্চলে মার্কিন সামরিক অবস্থান প্রতিষ্ঠার অভিলাষ বাস্তবায়ন করতে দেশটির নানা তৎপরতা নিয়ে কথাবার্তা শোনা যাচ্ছিল কয়েক দশক আগে থেকেই। ইদানীং শোনা যাচ্ছে তাদের নতুন অভিপ্রায়ের কথা। তারা নাকি বাংলাদেশের ভূখণ্ড, বিশেষ করে সমুদ্রসীমা ব্যবহার করে মিয়ানমারে শক্তি প্রয়োগ করে রাখাইন রাজ্যকে বিচ্ছিন্ন করতে চায়। এ নিয়ে তারা সরকারের ওপর নানাভাবে চাপ দিয়ে যাচ্ছে। নতুন ভিসা নীতি সেই চাপেরই অংশ কি না, সেটি অবশ্য নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়।
অতিসম্প্রতি জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র কয়েক বছর আগেই বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই কক্সবাজারে একটি অভিজাত হোটেলের পার্কিং প্লেস ভাড়া নিয়েছে। স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পক্ষ থেকে সরকারের ওপরমহলে বিষয়টি নাকি জানানোও হয়েছে। কিন্তু সরকার দূর থেকে দেখে যাওয়া ছাড়া কিছুই করতে পারছে না। সবচেয়ে বড় প্রশ্ন—বাংলাদেশে অন্য কোনো দেশের সামরিক উপস্থিতির সুযোগই হোক আর এ দেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে হস্তক্ষেপের প্রসঙ্গই হোক, এ দেশের কোনো সরকারের পক্ষে কি সেই অভিপ্রায়ে সায় দেওয়া সম্ভব? যদি সম্ভব না হয়, আর তার প্রতিক্রিয়ায় যদি ক্ষমতাধর দেশটি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নেয়, সে ক্ষেত্রে এ দেশের কারও পক্ষে কি তার প্রশংসা করা যৌক্তিক?
এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে বর্তমান সরকারসহ বিগত সরকারগুলো দেশের নির্বাচনব্যবস্থা ধ্বংস করে ফেলেছে। শাসকশ্রেণির দলগুলো নিজেদের স্বার্থে যেনতেনভাবে ক্ষমতায় থাকা ও যাওয়ার জন্য নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করেছে। আসন্ন নির্বাচন নিয়েও বিরোধী দলগুলোর দাবিকে সরকার গুরুত্ব না দেওয়ায় দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের সুযোগ পাচ্ছে বিদেশিরা। প্রধান বিরোধী দল ও তার মিত্ররা সেই সুযোগের পালে হাওয়া দিচ্ছে। তাতেও যদি দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ সুগম হতো তাহলে অবশ্য বলার কিছু ছিল না।
আজাদুর রহমান চন্দন, সাংবাদিক ও গবেষক

গত মে মাসে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে নতুন মার্কিন ভিসা নীতি ঘোষণার পর থেকেই কবে কাদের বিরুদ্ধে এর প্রয়োগ শুরু হয়, সেটি দেখার অপেক্ষা করতে থাকে দেশের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। তাদের সেই অপেক্ষার আংশিক অবসান হয়েছে। ২২ সেপ্টেম্বর মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন-প্রক্রিয়ায় বাধাদানকারীদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞার প্রয়োগ শুরু করেছে।
নিষেধাজ্ঞার আওতায় বাংলাদেশের আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য, ক্ষমতাসীন ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যরা আছেন বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়া ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরাও এর অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন। সুষ্ঠু নির্বাচন-প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার ক্ষেত্রে আরও যাঁরা দায়ী বা জড়িত বলে প্রমাণিত হবেন, ভবিষ্যতে তাঁদের বিরুদ্ধেও ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নিষেধাজ্ঞার প্রয়োগ শুরু করার কথা জানালেও কারা এর আওতায় এসেছেন, তা প্রকাশ করেনি। করার কথাও নয়। কারণ ভিসাসংক্রান্ত তথ্য সব দেশেই গোপন রাখা হয়। কেবল সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিই সেটি জানতে পারেন।
যুক্তরাষ্ট্র এই নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়া কারও নাম বা কোনো তালিকা প্রকাশ না করলেও এবং আগামী দিনেও প্রকাশ না করার ঘোষণা দিলেও আমাদের দেশে অতি-উৎসাহী অনেক লোক আড্ডা-আলোচনায় এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রভাবশালী নানাজনকে ইঙ্গিত করে নানা রকম মন্তব্য ছড়াতে শুরু করেছেন। এসব মন্তব্যে তাঁদের উল্লসিত হওয়ার বিষয়টিও চাপা থাকছে না; বরং বলা যায় উৎকটভাবেই প্রকাশ পাচ্ছে। ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলের নেতাদের বক্তৃতা-বিবৃতিতেও যা প্রকাশ পাচ্ছে তা দেশের জন্য মোটেই সম্মানের নয়।
রাষ্ট্রক্ষমতায় টিকে থাকা আর ক্ষমতায় যাওয়ার লড়াইয়ে জিততে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর বিদেশি শক্তির কাছে ধরনা দেওয়ার প্রতিযোগিতা নতুন নয়। যখন যেই দল ক্ষমতায় থাকে, তখন তার ভূমিকা হয় এক রকম। বিরোধী দলে থাকলে অন্য রকম। ক্ষমতায় থাকলে যে দল যে কথা বলে, ক্ষমতার বাইরে গিয়ে বলে উল্টোটা। যে দলই ক্ষমতার বাইরে থাকে, সেই দলই ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে নালিশ জানায় প্রভাবশালী বিদেশি শক্তির কাছে।
এই প্রতিযোগিতার সুযোগ নিয়ে ক্ষমতাধর দেশগুলো নিজেদের স্বার্থ হাসিল করে চলেছে অবলীলায়। সাম্প্রতিককালে প্রভাবশালী ওই দেশগুলোর মধ্যেও বেড়েছে স্বার্থের দ্বন্দ্ব। বাংলাদেশের রাজনীতি-অর্থনীতিসহ সামগ্রিক বিষয়ে তিনটি দেশের প্রভাব নিয়ে আলোচনা এখন সাধারণ মানুষের মুখে মুখে। দেশ তিনটি হলো যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও চীন।
কোনো কোনো বিশ্লেষক মনে করেন, বাংলাদেশ ঘিরে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নীতি ও দৃষ্টিভঙ্গির যেসব পরিবর্তন হচ্ছে তার মূল লক্ষ্য দেশটিকে চীনের প্রভাববলয়ের বাইরে রাখা। যদি ধরেও নেওয়া হয় যে নতুন মার্কিন ভিসা নীতি স্ট্র্যাটেজিক কোনো কারণে ঘোষিত হয়নি, হয়েছে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে; তাহলে প্রশ্ন ওঠে, যুক্তরাষ্ট্রের সেই ঘোষণা কার্যকর হতে শুরু করায় বাংলাদেশে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে কি? ভিসা নীতি প্রয়োগ করে বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্য অর্জন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন খোদ যুক্তরাষ্ট্রেরই নীতি-গবেষণাপ্রতিষ্ঠান উইলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান।
এমন অনেক দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সখ্য দেখা যায়, যেখানে গণতন্ত্র বা নির্বাচন বলতে তেমন কিছুই নেই এবং যেসব দেশের মানবাধিকার নিয়েও গুরুতর প্রশ্ন আছে। ওই দেশগুলোকে ফেলে ওয়াশিংটন হঠাৎ বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হচ্ছে কি না, তা নিয়ে কেন এত ব্যস্ত হয়ে উঠল, সে প্রশ্নও দেখা দিয়েছে অনেকের মনে। যুক্তরাষ্ট্র সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞার মতো যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছে, তার পেছনে আসল উদ্দেশ্য ভূ-রাজনৈতিক স্ট্র্যাটেজিক স্বার্থ; গণতন্ত্র, সুষ্ঠু নির্বাচন বা মানবাধিকার নয়। যুক্তরাষ্ট্র আসলে নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করে বাংলাদেশকে চীনের প্রভাববলয়ের বাইরে রাখতে চায়।
এ প্রসঙ্গে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেলো ড. আনু আনোয়ার কয়েক মাস আগে বিবিসিকে বলেন, ‘কোথাও গণতন্ত্র হুমকির মুখে পড়েছে বলে মনে করলে যুক্তরাষ্ট্র তাকে সুরক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে সে অর্থে এটা অনুসৃত হয় না, কারণ ভূ-রাজনীতি ও জাতীয় স্বার্থের প্রশ্নের মধ্যে সংঘাত দেখা দিলে এবং আমার দেখা মতে, সব সময়ই ভূ-রাজনৈতিক বিবেচনা প্রাধান্য পায়।’
এটা সবারই জানা, বাংলাদেশে চীন অনেক প্রকল্পে অর্থায়ন করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠতা আরও বেশি। যুক্তরাষ্ট্র স্বীকার করে থাকে যে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার আরও অনেক দেশের মতোই ভারত ও চীন উভয়ের সঙ্গেই ভারসাম্য বজায় রেখে চলছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র নিশ্চিত হতে চায় যেন বাংলাদেশ চীনের ওপর খুব বেশি নির্ভরশীল হয়ে না পড়ে। ওয়াশিংটন ইদানীং স্ট্র্যাটেজির বিষয়টি মূলত চীনের সঙ্গে জটিলতার লেন্স দিয়ে দেখছে। এটা ঠিক, চীনের সঙ্গে রেষারেষিতে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশগুলোকে দলে টানার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
জাপান, ভারত ও অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে চার দেশীয় জোট কোয়াডে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশের ওপর মার্কিন চাপ থাকার খবর নানা সময়ে বেরিয়েছে। বাংলাদেশে স্ট্র্যাটেজিক গুরুত্বপূর্ণ কোনো অবকাঠামোতে চীনা বিনিয়োগে যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তির কথাও মাঝেমধ্যেই শোনা যায়। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চীনের ওপর বাংলাদেশের নির্ভরশীলতা বাড়াটাকেও যুক্তরাষ্ট্র ভালো চেখে দেখছে না। সবশেষ চীনের প্রভাবে মধ্যপ্রাচ্যে পায়ের নিচের জমি নড়বড়ে হয়ে পড়ায় বেজায় চটে আছে বিশ্ব মোড়ল হিসেবে পরিচিত দেশটি।
সেন্ট মার্টিন ঘিরে এ অঞ্চলে মার্কিন সামরিক অবস্থান প্রতিষ্ঠার অভিলাষ বাস্তবায়ন করতে দেশটির নানা তৎপরতা নিয়ে কথাবার্তা শোনা যাচ্ছিল কয়েক দশক আগে থেকেই। ইদানীং শোনা যাচ্ছে তাদের নতুন অভিপ্রায়ের কথা। তারা নাকি বাংলাদেশের ভূখণ্ড, বিশেষ করে সমুদ্রসীমা ব্যবহার করে মিয়ানমারে শক্তি প্রয়োগ করে রাখাইন রাজ্যকে বিচ্ছিন্ন করতে চায়। এ নিয়ে তারা সরকারের ওপর নানাভাবে চাপ দিয়ে যাচ্ছে। নতুন ভিসা নীতি সেই চাপেরই অংশ কি না, সেটি অবশ্য নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়।
অতিসম্প্রতি জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র কয়েক বছর আগেই বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই কক্সবাজারে একটি অভিজাত হোটেলের পার্কিং প্লেস ভাড়া নিয়েছে। স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পক্ষ থেকে সরকারের ওপরমহলে বিষয়টি নাকি জানানোও হয়েছে। কিন্তু সরকার দূর থেকে দেখে যাওয়া ছাড়া কিছুই করতে পারছে না। সবচেয়ে বড় প্রশ্ন—বাংলাদেশে অন্য কোনো দেশের সামরিক উপস্থিতির সুযোগই হোক আর এ দেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে হস্তক্ষেপের প্রসঙ্গই হোক, এ দেশের কোনো সরকারের পক্ষে কি সেই অভিপ্রায়ে সায় দেওয়া সম্ভব? যদি সম্ভব না হয়, আর তার প্রতিক্রিয়ায় যদি ক্ষমতাধর দেশটি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নেয়, সে ক্ষেত্রে এ দেশের কারও পক্ষে কি তার প্রশংসা করা যৌক্তিক?
এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে বর্তমান সরকারসহ বিগত সরকারগুলো দেশের নির্বাচনব্যবস্থা ধ্বংস করে ফেলেছে। শাসকশ্রেণির দলগুলো নিজেদের স্বার্থে যেনতেনভাবে ক্ষমতায় থাকা ও যাওয়ার জন্য নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করেছে। আসন্ন নির্বাচন নিয়েও বিরোধী দলগুলোর দাবিকে সরকার গুরুত্ব না দেওয়ায় দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের সুযোগ পাচ্ছে বিদেশিরা। প্রধান বিরোধী দল ও তার মিত্ররা সেই সুযোগের পালে হাওয়া দিচ্ছে। তাতেও যদি দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ সুগম হতো তাহলে অবশ্য বলার কিছু ছিল না।
আজাদুর রহমান চন্দন, সাংবাদিক ও গবেষক

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৩ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত মে মাসে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে নতুন মার্কিন ভিসা নীতি ঘোষণার পর থেকেই কবে কাদের বিরুদ্ধে এর প্রয়োগ শুরু হয়, সেটি দেখার অপেক্ষা করতে থাকে দেশের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। তাদের সেই অপেক্ষার আংশিক অবসান হয়েছে। ২২ সেপ্টেম্বর মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে বাংলাদেশ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

গত মে মাসে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে নতুন মার্কিন ভিসা নীতি ঘোষণার পর থেকেই কবে কাদের বিরুদ্ধে এর প্রয়োগ শুরু হয়, সেটি দেখার অপেক্ষা করতে থাকে দেশের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। তাদের সেই অপেক্ষার আংশিক অবসান হয়েছে। ২২ সেপ্টেম্বর মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে বাংলাদেশ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৩ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

গত মে মাসে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে নতুন মার্কিন ভিসা নীতি ঘোষণার পর থেকেই কবে কাদের বিরুদ্ধে এর প্রয়োগ শুরু হয়, সেটি দেখার অপেক্ষা করতে থাকে দেশের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। তাদের সেই অপেক্ষার আংশিক অবসান হয়েছে। ২২ সেপ্টেম্বর মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে বাংলাদেশ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৩ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

গত মে মাসে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে নতুন মার্কিন ভিসা নীতি ঘোষণার পর থেকেই কবে কাদের বিরুদ্ধে এর প্রয়োগ শুরু হয়, সেটি দেখার অপেক্ষা করতে থাকে দেশের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। তাদের সেই অপেক্ষার আংশিক অবসান হয়েছে। ২২ সেপ্টেম্বর মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে বাংলাদেশ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৩ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫