Ajker Patrika

ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাত নিয়ে ৫ সিনেমা

খায়রুল বাসার নির্ঝর
আপডেট : ১৬ অক্টোবর ২০২৩, ০৯: ১৫
ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাত নিয়ে ৫ সিনেমা

ওয়েডিং ইন গালিলি (১৯৮৭)
১৯৪৮ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পরের ঘটনা। ইসরায়েলের দখল করা এক গ্রামে তখনো কারফিউ চলছে। গ্রামের প্রধান মুক্তার তার ছেলের বিয়ের সময় সাময়িকভাবে কারফিউ স্থগিতের আবেদন জানায় ইসরায়েলি মিলিটারির কাছে। মিলিটারি গভর্নর রাজি হয় এক শর্তে—বিয়েতে তারাও যোগ দেবে। শর্ত মেনে রাজি হয় মুক্তার। তবে বিষয়টি মেনে নিতে পারে না অনেকে। বিয়ের উৎসব শুরু হয়। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কিছু কর্মকর্তা আসে। উৎসব আর প্রথা পালনের মধ্য দিয়ে এগোতে থাকে অনুষ্ঠান। হঠাৎ কিছু যুবক ইসরায়েলি সেনাদের ওপর আক্রমণ করে বসে। নিমেষেই উৎসব পরিণত হয় রণক্ষেত্রে।
এমন গল্প নিয়ে ফিলিস্তিনি নির্মাতা মিশেল খলিফি বানিয়েছেন ‘উরস আল জালিল’ বা ‘ওয়েডিং ইন গালিলি’। কানসহ বিশ্বের অনেক উৎসবে পুরস্কৃত হয়েছে এটি।

প্যারাডাইস নাউ (২০০৫)
সাঈদ ও খালেদ নামে ফিলিস্তিনের দুই যুবক তেল আবিবে একটি আত্মঘাতী মিশনের জন্য নিযুক্ত হয়। মিশনে যাওয়ার আগে একসঙ্গে তাদের কাটানো শেষ কয়েকটি দিনের গল্প উঠে এসেছে ‘প্যারাডাইস নাউ’ সিনেমায়। সশস্ত্র গোষ্ঠী একটি গোপন জায়গায় নিয়ে যায় তাদের। পরিবারের উদ্দেশে তারা ভিডিও বার্তা রেকর্ড করে। তাদের শরীরে বোমা সেট করে দেওয়া হয়। সীমানা টপকে তারা ইসরায়েলে ঢুকে পড়ে। পথ চলতে চলতে সাঈদ ও খালেদের কথোপকথনে উঠে আসে তাদের জীবনদর্শন, সমাজ ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি এবং ফিলিস্তিন-ইসরায়েলের বৈরিতার কথা। প্যারাডাইস নাউ বানিয়েছেন ফিলিস্তিনি-ডাচ নির্মাতা হানি আবু আসাদ। প্রধান দুই চরিত্রে অভিনয় করেছেন কায়েস নাসেফ ও আলি সুলিমান। অস্কারে মনোনীত হয়েছিল সিনেমাটি। পুরস্কার জিতেছে গোল্ডেন গ্লোবসহ অনেক উৎসবে।

‘লেমন ট্রি’ সিনেমার দৃশ্যলেমন ট্রি (২০০৮)
ইসরায়েল ও পশ্চিম তীরের সীমানার কাছাকাছি একটা বাড়িতে থাকা শুরু করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী নেভন ও তার স্ত্রী। সেই বাড়ির কিছুটা দূরে সালমার ছোট লেবুর বাগান। নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে সেই বাগানে সার্বক্ষণিক তদারকি শুরু করে ইসরায়েলের সেনারা। একপর্যায়ে সব গাছ কেটে বাগান সাফ করে দিতে চায়। কিন্তু এত সহজে ছাড়ার পাত্র নয় সালমা। কয়েক প্রজন্ম ধরে এ বাগান চাষ করে আসছে তারা। অনেকেই সালমাকে বোঝায়, ইসরায়েলের সৈন্যদের সঙ্গে ঝামেলায় না জড়াতে। কিন্তু সালমা কেস ঠুকে দেয় সুপ্রিম কোর্টে। বিষয়টি নিয়ে মিডিয়া সরব হয়, আলোচনা শুরু হয় সবখানে। সত্যি ঘটনা অবলম্বনে তৈরি সিনেমাটি ২০০৮ সালে মুক্তি পাওয়ার পর ইসরায়েলেও প্রশংসিত হয়। ইসরায়েলি নির্মাতা এরান রিকলিসের ‘লেমন ট্রি’ বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবসহ অনেক উৎসবে পুরস্কৃত হয়েছে।

দ্য টাইম দ্যাট রিমেইনস (২০০৯)
ফিলিস্তিনের জনপ্রিয় নির্মাতা এলিয়া সুলেমানের অনন্য নির্মাণ ‘দ্য টাইম দ্যাট রিমেইনস’। অনেকটা আত্মজীবনীর ঢঙে এ সিনেমায় তিনি তুলে এনেছেন ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের মধ্যকার সংকটের আদ্যোপান্ত। ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর কীভাবে বদলে গেল ফিলিস্তিনের সমাজ, সংস্কৃতি ও অর্থনীতি। ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল—এ দুই অঞ্চলের মানুষের মনে কীভাবে দ্বন্দ্ব ঘনীভূত হলো, এ সিনেমায় তার একটা স্পষ্ট চিত্র পাওয়া যাবে।

‘প্যারাডাইস নাউ’ সিনেমার দৃশ্যওমর (২০১৩)
ফিলিস্তিনের যুবক ওমর প্রায়ই পশ্চিম তীরের সীমানা টপকে চলে যায় তার প্রেমিকা নাদিয়ার সঙ্গে দেখা করতে। দুই বন্ধু তারেক ও আমজাদকে নিয়ে গোপনে ওমর প্রশিক্ষণ নিচ্ছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ওপর হামলার জন্য। একদিন সীমানা পেরোতে গিয়ে ওমর গ্রেপ্তার হয়। তার ওপর নির্যাতন চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। ছাড়া পেয়ে তিন বন্ধু মিলে এক চেকপোস্টে হামলা করে। এক ইসরায়েলি সৈন্যকে হত্যার অভিযোগে আবার ধরা পড়ে ওমর। ইসরায়েলি বাহিনীর তথ্যদাতা হিসেবে কাজ করতে সম্মত হয় সে। তবে তার আসল উদ্দেশ্য অন্য কিছু। হানি আবু আসাদের ‘ওমর’ সিনেমায় উঠে এসেছে ফিলিস্তিনের তরুণ প্রজন্মের ভাবনা ও জীবনযাপন। অস্কারে মনোনীত হয়েছিল হানি আবু আসাদের সিনেমাটি। স্ক্রিন অ্যাওয়ার্ড, কান চলচ্চিত্র উৎসবসহ অনেক উৎসবে পুরস্কার পেয়েছে ‘ওমর’।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত