Ajker Patrika

করোনা বাড়লেও মাস্কে অনীহা

ইলিয়াস আহমেদ, ময়মনসিংহ
আপডেট : ০৭ জুলাই ২০২২, ১১: ০৩
Thumbnail image

করোনায় আক্রান্ত এবং মৃত্যুর হার আবার বাড়লেও মাস্ক পরতে সাধারণ মানুষের মধ্যে অনীহা দেখা গেছে। দোকান, শপিং মল, বাজার, ক্রেতা-বিক্রেতা, হোটেল, রেস্টুরেন্টে সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরিধান করতে নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। নির্দেশনা অমান্য করলে আইনানুগ শাস্তি দিতে বলা হয়েছে। সরকারের এমন নির্দেশনার পরও মানুষ মাস্ক পরতে আগ্রহী হচ্ছে না।

জেলা সিভিল সার্জনের অফিস বলছে, গত ৫ দিনে জেলায় আরও ৮৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তের হার ৮ শতাংশ। তবে দুই দিন ধরে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৩১ জনের মধ্যে ৩৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়। আক্রান্তের হার ১১ শতাংশ।

জানা গেছে, ঈদুল আজহা সামনে রেখে পশুর হাটগুলোতে স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই। এর কারণ জানতে চাইলে দায়সারা জবাব দিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। সচেতন মহল প্রশাসনকে তৎপর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চুরখাই এলাকার নাজিরাবাদ স্কুল মাঠে শুরু হয়েছে কোরবানি হাট। গত মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরু হওয়া এ হাট চলবে ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত। দুপুরে হাটটিতে গিয়ে দেখা যায় ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। শত শত মানুষ পশু ক্রয়-বিক্রয় করতে হাটে এলেও কারও মুখে কোনো মাস্ক পাওয়া যায়নি। এসবের কারণ জানতে চাইলে তারা কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি।

হাটে ষাঁড় নিয়ে আসা সোহেল রানার কাছে মাস্ক না পরার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, মনের অজান্তে মাস্ক বাড়িতে রেখে এসেছেন। করোনার সংক্রমণ কমে যাওয়ায় তিনি কয়েক মাস ধরে মাস্ক পরছেন না। এখন আবার নতুন করে করোনা বাড়ছে কি না, তা-ও তাঁর জানা নেই।’

ওই হাটের ইজারাদার হাজি আব্দুল্লাহ বলেন, ‘সকাল থেকে শত শত ক্রেতা-বিক্রেতা পশু নিয়ে হাটে আসছে। কারও মুখে মাস্ক নেই, এমনকি আমিও মাস্ক পরি নাই।’

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটের ফোকাল পারসন মহিউদ্দিন খান মুন বলেন, ‘প্রতিদিনেই নতুন করোনা রোগী আসছে হাসপাতালে। আসলে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চলার কারণেই এমন হচ্ছে। এখন মানুষকে মাস্ক পরতে দেখা যায় না। মাস্ক না পরলে করোনা সংক্রমণ কোনোভাবেই ঠেকানো সম্ভব নয়। তাই নিজের পাশাপাশি পরিবার এবং সমাজের স্বার্থে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।’

জেলা জনউদ্যোগের আহবায়ক অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম চুন্নু বলেন, ‘করোনা শুরুর পর সরকার মানুষকে নানা বিধিনিষেধের আওতায় আনার চেষ্টা করেছে। কিন্তু আমরা না মেনে নিজেরা নিজেদের ক্ষতি করছি।

জেলা সিভিল সার্জন মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ রোধে আমরা নো মাস্ক নো সার্ভিস কার্যক্রম চালু করেছি। প্রতিটি উপজেলা হাসপাতালে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্যবিধি মানা ছাড়া কাউকে চিকিৎসা না দিতে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ওয়াহিদুল আলম বলেন, ‘কোরবানি উপলক্ষে ময়মনসিংহ জেলায় দুই শতাধিক পশুর হাট বসেছে। এর মধ্যে স্থায়ী হাট ৮৭টি। সেখানে ৫১টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। ইজারাদারসহ সকলকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পশু কেনাবেচা করার জন্য। সকলের জন্য মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক।’

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য। কারণ, স্বাস্থ্যবিধি মানা ছাড়া কোনোভাবেই করোনা মোকাবিলা সম্ভব নয়। ময়মনসিংহ বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক মো. শাহ আলম বলেন, ‘সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চললে আমাদের পরিস্থিতি শ্রীলঙ্কার মতো হবে। করোনা কোনো দিন শেষ হবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত