Ajker Patrika

বিশ্বকাপের দামামা বেজে উঠতেই শুরু হিসাব-নিকাশ

আপডেট : ০৩ এপ্রিল ২০২২, ১১: ৫৭
বিশ্বকাপের দামামা বেজে উঠতেই শুরু হিসাব-নিকাশ

স্বাগতিকের সুবিধা
স্বাগতিক দল সহজ গ্রুপে পড়বে—এটাই যেন রীতি। স্বাগতিক কাতারের সঙ্গে ‘এ’ গ্রুপের বাকি দুই দল সেনেগাল, ইকুয়েডরও প্রায় কাতারের সমশক্তির। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে থাকবে আধুনিক ফুটবলের জনক নেদারল্যান্ডস। কাতারের জন্য অনুপ্রেরণা পরিচিত দর্শকদের সামনে খেলতে পারাটা। তাদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে সাদিও মানে সেনেগাল। ২০০২ বিশ্বকাপের রূপকথার সেনেগাল এবার কী করে সেটাই দেখার অপেক্ষা।

রাজনীতি ও যুদ্ধ
‘বি’ গ্রুপে থাকা ইংল্যান্ডের জন্য নকআউট পর্বে ওঠাটা কঠিন হওয়ার কথা নয়। তবে এই গ্রুপের মূল আকর্ষণ মাঠের বাইরের ইস্যু—রাজনৈতিক ও ঐতিহাসিক। এই গ্রুপে পড়েছে ‘বন্ধু’ ও ‘শত্রু’রা। বিশেষভাবে চোখ থাকবে ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাচের দিকে। গ্রুপের চতুর্থ দলের জন্য অবশ্য অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। যুদ্ধের আবহে থাকা ইউক্রেন মূলপর্বের টিকিটের জন্য লড়তে হবে স্কটল্যান্ড ও ওয়েলসের সঙ্গে।

মেসি-লেভা দ্বৈরথ
‘সি’ গ্রুপে আর্জেন্টিনার তিন প্রতিপক্ষ—মেক্সিকো, পোল্যান্ড ও সৌদি আরব। শেষ দলটি গ্রুপের ‘আন্ডারডগ’। তবে মেসিদের ভাবনার কারণ মেক্সিকো ও পোল্যান্ড। গত বিশ্বকাপে জার্মানিকে গ্রুপ পর্ব থেকে ছিটকে দিতে মেক্সিকোর ছিল বড় ভূমিকা। আর পোল্যান্ডকে নিয়ে কোনো দল যতটা না ভাবে, তার চেয়েও বেশি ভাবতে হয় সময়ের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার রবার্ট লেভানডফস্কিকে নিয়ে। আর্জেন্টিনা-পোল্যান্ড লড়াইটার মূল আকর্ষণ মেসি-লেভা দ্বৈরথ। 

ফ্রান্সের ডেনিসভীতি
চাইলে নিজেদের ভাগ্যবান ভাবতে পারে ফ্রান্স। কারণ, ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা আগের তিনটি বিশ্বকাপেই পড়েছিল কঠিন গ্রুপে। সেই তুলনায় এবার অভিশাপ থেকে মুক্ত হওয়ার সুযোগ ফরাসিদের সামনে। ‘ডি’ গ্রুপে দলটির ভয় অবশ্য ডেনমার্ককে নিয়ে। গত আসরে এই দলটার সঙ্গে নিষ্ফলা লড়াই করেছিল ফরাসিরা। ২০০২ বিশ্বকাপে তো ডেনিসদের হাত ধরেই থেমে গিয়েছিল ফ্রান্সের স্বপ্নযাত্রা। দুই দশক আগে সেই ম্যাচে খেলোয়াড় ভূমিকায় ছিলেন দিদিয়ের দেশাম। সেই বদলা নেওয়ার সুযোগ তিনি পাচ্ছেন কোচ হিসেবে।

দুই চ্যাম্পিয়নের লড়াই
একমাত্র ‘ই’ গ্রুপে পড়েছে বিশ্বকাপের দুই চ্যাম্পিয়ন। স্পেন, জার্মানির সঙ্গে আছে জাপান। নামের প্রতি সুবিচার করতে পারলে ইউরোপের দুই পরাশক্তির জন্য নকআউট পর্বে যাওয়াটা কঠিন হবে না। শক্তিমত্তায় জাপান কিংবা অন্য দলের (নিউজিল্যান্ড কিংবা কোস্টারিকা) চেয়ে ঢের এগিয়ে স্পেন ও জার্মানি।

চোখ থাকবে কানাডায়
‘এফ’ গ্রুপের দুই ফেবারিট বেলজিয়াম ও ক্রোয়েশিয়া। সোনালি প্রজন্মের বেলজিয়ামের এটাই শেষ সুযোগ। রাশিয়া বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে ঝরে পরা আফ্রিকান দল মরক্কো এবার দারুণ কিছু করতে চায়। ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপে ফেরা কানাডার দিকেও চোখ থাকবে। তবে এগিয়ে থাকবে ইউরোপের দুই জায়ান্টই। 

পুনর্মিলনীর মঞ্চ
‘জি’ গ্রুপটা আক্ষরিক অর্থে ব্রাজিল, সুইজারল্যান্ড ও সার্বিয়ার জন্য পুনর্মিলনীর উপলক্ষ। চার বছর আগের বিশ্বকাপেও একই গ্রুপে পড়েছিল দল তিনটি। পার্থক্য শুধু কোস্টারিকার জায়গায় এবার এসেছে ক্যামেরুন। 

উন্মুক্ত লড়াই
আগের বিশ্বকাপগুলোর সঙ্গে তুলনা করলে এবারের আয়োজনে মৃত্যুকূপ নেই। সবচেয়ে কঠিন গ্রুপ খুঁজলে ‘এইচ’ গ্রুপের চার দল পর্তুগাল, উরুগুয়ে, দক্ষিণ কোরিয়া ও ঘানার নাম আসবে। এই গ্রুপটা সবচেয়ে উন্মুক্ত। শেষ ষোলোতে ওঠার সামর্থ্য আছে প্রত্যেকেরই।

ড্রয়ের মঞ্চে বাংলাদেশি 
উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে ড্র পরিচালনা করতে দেখা গেছে রেশমিন চৌধুরীকে। গত পরশু রাতে কাতার বিশ্বকাপের ড্রতেও হাজির হন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এই নারী ক্রীড়া সাংবাদিক। বিসিসি, বিটি স্পোর্টসে কাজ করেছেন ৪৪ বছর বয়সী রেশমিন। বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্ঠানে তাঁর সহকারী ছিলেন ইদ্রিস আলবা।  

কোচদের চোখে ড্র
সার্বিয়া পর্তুগালকে ও সুইজারল্যান্ড ইতালিকে পেছনে ফেলে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ক্যামেরুনও আফ্রিকার অন্যতম শক্তিশালী দল। আমাদের গ্রুপটা মৃত্যুকূপ না, একেবারে সহজও না। প্রতিটি গ্রুপেই কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। যেমন, পর্তুগালের গ্রুপে পড়েছে উরুগুয়ে, দক্ষিণ কোরিয়া ও ঘানা। 
—তিতে, কোচ, ব্রাজিল

মেক্সিকোর বিপক্ষে কঠিন লড়াই হবে। ২০০৬ বিশ্বকাপে আমি ফুটবলার হিসেবে ওদের মোকাবিলা করেছি। সেবার আমাদের জয় পেতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। পোল্যান্ডও সুইডেনকে হারিয়ে এসেছে। গ্রুপিং নিয়ে খুশি হতে পারছি না। তবে এ নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই। 
—লিওনেল স্কালোনি, কোচ, আর্জেন্টিনা

ড্র নিখুঁত হয়েছে কি না জানি না। প্রতিটি দলকেই সমীহ করছি, বিশেষ করে ডেনমার্ককে। আমি র‍্যাঙ্কিংয়ের ১১ নম্বর দলের কথা বলছি, যারা জার্মানির ওপরে অবস্থান করছে ও গত ইউরোতে সেমিফাইনাল খেলেছে। এই গ্রীষ্মেই ড্যানিশদের বিপক্ষে দুবার খেলব। 
—দিদিয়ের দেশম, কোচ, ফ্রান্স

জার্মানি আমাদের গ্রুপকে খুব শক্তিশালী করেছে। গত কয়েক বছরে নিজেদের শক্তি ও কঠোর পরিশ্রম করে আমরা শীর্ষ দল হয়েছি। গ্রুপের বাকি দলগুলোর ব্যাপারে একেবারেই ধারণা নেই। এখন তাদের নিয়ে ছক কষতে হবে ও নিজেদের ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে। 
—লুইস এনরিকে, কোচ, স্পেন

আমাদের গ্রুপটা সবচেয়ে রোমাঞ্চকর। (স্পেন থাকায়) শুরু থেকেই প্রস্তুত থাকতে হবে। জাপানেরও অনেক খেলোয়াড় বুন্দেসলিগায় খেলে। সবাই নিজেদের মান বাড়িয়েছে। শুধু নিশ্চিত করতে হবে আমরা যেন নিজেদের সেরাটা খেলতে পারি। আমরা অনেক দূর যেতে চাই।’ 
—হ্যান্সি ফ্লিক, কোচ, জার্মানি

আমার চোখে এটা অর্ধেক পূর্ণ-অর্ধেক খালি গ্লাসের মতো। যেমন, আমরা যদি আগের বিশ্বকাপের দিকে তাকাই, তাহলে উরুগুয়ে ফেবারিট। আবার যদি এখনকার ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ের দিকে তাকাই, তাহলে পর্তুগাল ফেবারিট। ঘানা ও দক্ষিণ কোরিয়াকেও ভুলে গেলে চলবে না। 
—ফার্নান্দো সান্তোস, কোচ, পর্তুগাল

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শাহজালালে তৃতীয় টার্মিনাল চালুতে বাধা, রাজস্ব ভাগাভাগি নিয়ে টানাপোড়েন

বৈপ্লবিক পরিবর্তন করার সুযোগ হাতছাড়া হয়ে গেছে

ব্যাংকের চাকরি যায় জাল সনদে, একই নথি দিয়ে বাগালেন স্কুল সভাপতির পদ

ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ নিয়ে হাবুডুবু খাচ্ছে এবি ব্যাংক

রাশিয়া খুবই বড় শক্তি, চুক্তি ছাড়া ইউক্রেনের কোনো গতি নেই: ট্রাম্প

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত