Ajker Patrika

ইচ্ছেমতো টাকা আদায় বোরো আবাদের সেচে

রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১১: ৫৭
ইচ্ছেমতো টাকা আদায়  বোরো আবাদের সেচে

নওগাঁর রাণীনগরে চলতি বোরো মৌসুমে ইতিমধ্যে ৮৫ শতাংশ খেতে চারা রোপণ শেষ হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে নির্ধারণ হয়নি জমিতে সেচের মূল্য। এ সুযোগে নলকূপ মালিকদের বিরুদ্ধে কৃষকদের কাছ থেকে ইচ্ছেমতো টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। ফলে ধান আবাদের শুরুতেই ক্ষতির মুখে পড়ছেন কৃষকেরা।

উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রাণীনগরে এবার ১৮ হাজার ৫৮৫ হেক্টর জমিতে ধানের চারা রোপণ করছেন কৃষকেরা। এসব জমিতে সেচ দিতে ৩৪৬টি বিদ্যুৎ চালিত এবং আটটি ডিজেল চালিত গভীর নলকূপ রয়েছে। এ ছাড়া ২৮০টি বিদ্যুৎ চালিত ও ১ হাজার ৭৫০টি ডিজেল চালিত অগভীর নলকূপ এবং ২০টি বিদ্যুৎ চালিত এলএলপি (লো লিফট পাম্প) নলকূপ আছে। এর মধ্যে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় গভীর নলকূপ রয়েছে ২৫৬টি। বাকি প্রায় সবগুলো ব্যক্তিমালিকানায় পরিচালিত হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, ২০২০-২১ সালের জন্য মাটির প্রকার ভেদে ধানের জমিতে সেচের জন্য ইউনিয়নভিত্তিক সরকারি মূল্য নির্ধারণ করা হয়। এরপর ২০২২ সালে নতুন করে আর কোনো মূল্য নির্ধারণ করা হয়নি।

কৃষকেরা বলছেন, অনেক নলকূপ মালিক বেশি দরে সেচের টাকা আদায় করছেন। শুরুতেই যদি সেচের জন্য অতিরিক্ত টাকা দিতে হয় তাহলে ধানের আবাদ করে লোকসান ছাড়া আর কিছু হবে না। তাই কৃষকের স্বার্থে সংশ্লিষ্টদের বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

তবে নলকূপ মালিকেরা বলছেন, ডিজেল ও বিদ্যুতের দাম বেড়েছে। শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে সেচের দাম বেশি নিতে হচ্ছে।

কালীগ্রাম ইউনিয়নে বিদ্যুৎ চালিত গভীর নলকূপের সেচ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৪০০ টাকা বিঘা। ডিজেল চালিত গভীর নলকূপে এই মূল্য সর্বোচ্চ ১ হাজার ৮০০ টাকা বিঘা। তবে ইউনিয়নের অলংকার দিঘী গ্রামের কৃষক ফজলুল হক জানান, ডিজেল চালিত গভীর নলকূপের মালিক সিরাজুল ইসলাম গত বছরই সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে ২ হাজার ৫০০ টাকা বিঘা করে নিয়েছেন। এবার আরও ২০০ টাকা বেশি নেবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।

তবে সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা ২ হাজার ২০০ থেকে ৫০০ টাকা নিয়েছি। এবার এখন পর্যন্ত দর নির্ধারণ করা হয়নি।’

বড়গাছা ইউনিয়নের শলিয়া গ্রামের কৃষক মজনুর রহমান জানান, এবার ২ হাজার টাকা বিঘা দরে সেচের টাকা দিয়েছেন। মিরাট ইউনিয়নের বড়খোল গ্রামের কৃষক জালাল উদ্দীন বলেন, গত বছর তাঁদের মাঠে বিদ্যুৎ চালিত গভীর নলকূপে ১ হাজার ৫০০ টাকা বিঘা সরকারি দর থাকলেও সেখানে ২ হাজার ৬০০ টাকা নিয়েছে। এ বছর অতিরিক্ত ২০০ টাকা ধরা হয়েছে।

চলতি মৌসুমে সেচের মূল্য এখনো নির্ধারণ করা হয়নি জানিয়ে উপজেলা সেচ কমিটির সদস্যসচিব ও বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন প্রকল্পের সহকারী প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) আলী হোসেন বলেন, ‘চলতি মৌসুমে সেচের মূল্য নির্ধারণের জন্য একটি কমিটি হয়েছিল, এমনটাই শুনেছিলাম। কিন্তু এরপর কী হয়েছে সেটা ইউএনও বলতে পারবেন।’

যোগাযোগ করা হলে উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, নতুন দর নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত আগের দরেই টাকা নেবেন নলকূপ মালিকেরা। কেউ যদি সেচের দাম সরকার নির্ধারিত দরের চেয়ে বেশি নেন তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাকা দিয়ে নারীর চাবুকের ঘা খাচ্ছিলেন পুরুষ, দুজন গ্রেপ্তার

মানবিক করিডর না ভূরাজনৈতিক কৌশল? সীমান্তে যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতায় উদ্বেগ

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা–ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

ভারত–বাংলাদেশ বাণিজ্য বিধিনিষেধের মূল্য গুনছেন ব্যবসায়ীরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত