Ajker Patrika

অধিনায়ক সাকিবে উজ্জীবিত বাংলাদেশ

বোরহান জাবেদ, সিলেট থেকে 
অধিনায়ক সাকিবে উজ্জীবিত বাংলাদেশ

আফগানিস্তানের কাছে প্রথমবার ওয়ানডে সিরিজ হেরে বাংলাদেশ একটু ব্যাকফুটেই আছে। যদিও চট্টগ্রামে সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে সান্ত্বনার জয় নিয়ে সিলেটে এসেছে বাংলাদেশ। তবু তাতে ওয়ানডে সিরিজ হারের স্মৃতি এত দ্রুত ভোলার নয়। তবে টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগে গতকাল অনুশীলনে বাংলাদেশ দলকে দেখে মনে হয়েছে চট্টগ্রামে ওয়ানডে দলের সঙ্গে সিলেটের এই দলের বেশ পার্থক্য।

গা গরমের ফুটবল থেকে অনুশীলন সেশন—এক প্রাণোচ্ছল, উজ্জীবিত বাংলাদেশের দেখা মিলল। আর এই উজ্জীবিত বাংলাদেশের কেন্দ্রে অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সঙ্গে আলাপ সেরেই সতীর্থদের সঙ্গে ফুটবলে মেতে উঠলেন সাকিব। তাঁকে পেয়ে উচ্ছ্বাস আরও বেড়ে গেল শান্ত-আফিফদের। গোল করে শান্ত যে ভোঁ-দৌড় দিলেন, প্রথম দেখায় প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ফুটবলই মনে হবে যে কারও।

গা গরমের পর সেন্টার উইকেটে ব্যাটিং, নিজের ব্যাটিংয়ের ফাঁকে নেট সেশনে সতীর্থদের সঙ্গ দিয়ে যাওয়া—সব জায়গায় সাকিবের সরব উপস্থিতি। তিনি নিজে অবশ্য বোলিং করেননি। মাঝ উইকেটে শুধু ব্যাটিংই করেছেন। যতক্ষণ ব্যাটিং করেছেন, বল উড়িয়ে মেরেছেন মাঠের চারদিকে। সাকিব সূক্ষ্মভাবে সতীর্থদের শক্তি-দুর্বলতা দেখেছেন। এই জায়গায় বরাবরের মতো বাস্তববাদী তিনি। ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে সেটাই বললেন, ‘যে ব্যাটিং বা বোলিং করবে, সে তার জায়গা থেকে কী কী পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে, আমি নিশ্চিত সেগুলো নিয়ে তারা ব্যক্তিগতভাবে কাজ করবে। এটা আসলে কাউকে বলার বিষয় নয়।’

সাকিবের উপস্থিতি যেমনই হোক, মাঠে ক্রিকেটারদের যাঁর যাঁর কাজ তাঁকেই করতে হবে। দলটা আফগানিস্তান আর সংস্করণ টি-টোয়েন্টি বলে বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জও অনেক বেশি। আফগানিস্তান এই অবস্থানে উঠে এসেছে এই সংস্করণে ধারাবাহিক ভালো খেলে।

গত কয়েক বছরে বিশ্বব্যাপী ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছেন এই আফগানিস্তান দলের অনেকেই। বিশ্বের বড় বড় ক্রিকেটারের সান্নিধ্য পেয়ে রহমানউল্লাহ গুরবাজ-রশিদ খানরা হয়েছেন আরও শাণিত, সেটা এখন অন্য সংস্করণেও কাজে দিতে শুরু করেছে। সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজই তার বড় প্রমাণ। টি-টোয়েন্টির পরিসংখ্যানও বাংলাদেশের বিপক্ষে। টি-টোয়েন্টিতে দুই দল এখন পর্যন্ত ৯ বার মুখোমুখি হয়েছে। প্রথম জয়টা ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে বাংলাদেশের হলেও পরের ৮ বার দেখায় আফগানিস্তানের জয়জয়কার। ২০১৮ সালের জুনে দেরাদুনে ধবলধোলাইয়ের লজ্জাসহ মোট ৬ ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ।

সিলেটের উইকেট সাধারণত রানপ্রসবা হলেও এবার কোনো অধিনায়কই এ নিয়ে কিছু বলতে চাইলেন না। বোলিং শক্তির কথা মাথায় রেখে মজার ছলে হলেও বোলিং-সহায়ক উইকেটের আশা আফগান অধিনায়ক রশিদের। হাথুরুসিংহে-গামিনি ডি সিলভার সঙ্গে উইকেট দেখলেও সাকিব শুধু এটুকু জানালেন, কন্ডিশন নিয়ে চিন্তিত নন তাঁরা। ওয়ানডে সিরিজের ধকল কাটিয়ে বাংলাদেশ কেমন করবে, সময়ই বলে দেবে। তবে আশাবাদী হতে তো দোষ নেই। বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিবও তা-ই হচ্ছেন। তাঁর লক্ষ্য, দুই ম্যাচই জেতা।

বাংলাদেশ অবশ্য আশাবাদী হতেই পারে ২০ ওভারের ক্রিকেটে তাদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স থেকেও। ঘরের মাঠে মার্চে টি-টোয়েন্টি সিরিজেই ইংল্যান্ডকে ধবলধোলাই, এরপর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জয়—আফগানদের বিপক্ষেও একই ফল কঠিন হলেও অসম্ভব তো নয়।

নতুন করে দায়িত্ব নেওয়ার পর সাকিব টি-টোয়েন্টি দলকে গুছিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সামনে রেখে এই কাজে বেশ খানিকটা এগিয়েছেনও। দলে ভাঙাগড়া হয়েছে। ফলও আসছে। সাকিবের বাংলাদেশকে তাই একটু ‘অন্য রকম’ ভাবাই যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত