Ajker Patrika

ট্রেনের টিকিটের জন্য হাহাকার

রেজা মাহমুদ, সৈয়দপুর (নীলফামারী)
আপডেট : ২৯ এপ্রিল ২০২২, ১৫: ৩৭
Thumbnail image

‘মধ্যরাত থেকে টিকিটের জন্য দাঁড়িয়ে। খাবার এনেছিলাম, দাঁড়িয়ে সাহ্‌রিও করেছি। কিন্তু সকাল ৮টায় টিকিট দেওয়া শুরুর ঘণ্টাখানেক পর কাউন্টার থেকে জানানো হয় টিকিট শেষ। তাই টিকিট না পেয়ে শূন্যহাতেই ফিরে যেতে হচ্ছে।’

আক্ষেপের সুরে কথাগুলো বলছিলেন নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলস্টেশনে টিকিটের জন্য আসা ব্যাংকে চাকরিজীবী মো. দেলোয়ার হোসেন (৪২)। একই কথা বলেন খুলনাগামী ট্রেনের টিকিট নিতে আসা ফরিদুল ইসলাম। তাঁরা একা নন। তাঁদের মতো শতাধিক মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে টিকিট না পাওয়ার এই অভিযোগ করেন।

সৈয়দপুর রেলস্টেশন মাস্টার এস এম শওকত আলী বলেন, একটি টিকিটের বিপরীতে ৫০-৬০ জনের চাহিদা। স্থানীয়রা ছাড়াও রংপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় ও খানসামাসহ পাশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার লোকজন এখানে টিকিট কিনতে আসেন। তাই লাইনে দাঁড়িয়েও অনেকেই টিকিট পাচ্ছেন না। তাঁদের মধ্যে যাঁরা আগে লাইনে দাঁড়াচ্ছেন, তাঁরাই টিকিট পাচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, ‘টিকিট কাটার সময় জন্মনিবন্ধন বা জাতীয় পরিচয়পত্র দেখা হচ্ছে, যাতে টিকিটটা বাইরে বিক্রি বা কোনো কালোবাজারির হাতে না যায়। এ ব্যাপারে আমরা সচেষ্ট। টিকিট অন্য কোথাও পাওয়ার সুযোগ নেই।

রেলওয়ে সূত্রমতে, সৈয়দপুর থেকে ঢাকা, খুলনা, রাজশাহী রুটে ৫টি আন্তনগর ও একটি মেইল ট্রেন চলাচল করে। এসব ট্রেনের মধ্যে সৈয়দপুরের জন্য আসন বরাদ্দ রয়েছে ঢাকাগামী নীলসাগর আন্তনগর এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ৫৮, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত চেয়ার কোচে ১০ ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বুথে (শয়নকক্ষে) ২টি। খুলনাগামী আন্তনগর সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার কোচে ৭৫, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বুথে ৪টি ও রূপসা এক্সপ্রেস ট্রেনে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কোচে ৪টি এবং শোভন চেয়ার কোচে ১৫টি। এ ছাড়া রাজশাহীগামী আন্তনগর তিতুমীর ও বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন ৫০, শোভন চেয়ার ১৫ ও প্রথম শ্রেণির কোচে ৬টি আসন বরাদ্দ রয়েছে।

জানা গেছে, সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানাসহ অর্ধশতাধিক ব্যাংক ও পাঁচ শতাধিক শিল্পকারখানা রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে ঢাকা, খুলনা, যশোর, ফরিদপুর, নাটোর, বগুড়া, নওগাঁ, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও রাজশাহীসহ বিভিন্ন জেলার প্রায় ৫০ হাজার মানুষ চাকরি করেন। প্রতি ঈদে তাঁরা পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদ করতে গ্রামের বাড়িতে যান। রেলপথে যাওয়াটাই তাঁদের কাছে সুবিধাজনক।

রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, কাউন্টারের সামনে টিকিটপ্রত্যাশীদের দীর্ঘ সারি। যাঁরা টিকিট হাতে পেয়েছেন, তাঁরা উৎফুল্ল। আর যাঁরা পাননি, তাঁরা হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরছেন। আবিদ হোসেন নামে একজন বলেন, ‘আমি রেলওয়ে কারখানায় চাকরি করি। ঈদে গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইল যাব। টিকিটের জন্য তারাবির নামাজ আদায় করে এখানে এসে দাঁড়িয়েছি। তবুও সামনে প্রায় ৫০ জনের মতো ছিল। টিকিট পাব কি না তা নিয়ে অনিশ্চিত ছিলাম। টিকিট পেয়ে খুব আনন্দ হচ্ছে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত