Ajker Patrika

প্রাথমিক শিক্ষার সংকট দূর করা হোক

সম্পাদকীয়
প্রাথমিক শিক্ষার সংকট দূর করা হোক

দেশের শিক্ষাব্যবস্থা, বিশেষ করে প্রাথমিক শিক্ষার বেহাল দশা নিয়ে প্রায়ই গণমাধ্যমে খবর বের হয়। বিভিন্ন সমস্যার চিত্র তুলে ধরা হয়। কিন্তু এসব সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে দ্রুত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণের কথা শোনা যায় না। ২৫ ফেব্রুয়ারি আজকের পত্রিকায় ‘মামলায় পদোন্নতিবঞ্চিত ৩০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক’ শিরোনামে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যাচ্ছে, মামলা জটিলতায় পদোন্নতিবঞ্চিত হচ্ছেন প্রায় ৩০ হাজার সহকারী শিক্ষক। স্থায়ী প্রধান শিক্ষক না থাকায় স্কুলগুলোও চলছে ঢিমেতালে।

খবরে বলা হয়েছে, গত বছরের ৩ আগস্ট লক্ষ্মীপুর জেলার তিন উপজেলার সহকারী শিক্ষককে প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি দেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর মধ্য দিয়ে শুরু হয় পদোন্নতি কার্যক্রম। সর্বশেষ ৬ নভেম্বর পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে ১৯ উপজেলায় ৯৪১ জন সহকারী শিক্ষক পদোন্নতি পান। এরপর চলতি বছরের জানুয়ারিতে জাতীয়করণকৃত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ৫০ শতাংশ চাকরিকাল গণনাসংক্রান্ত মামলায় ফের আটকে যায় পদোন্নতি কার্যক্রম।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্যমতে, দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৬৫ হাজার ৫৬৫টি। এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২ কোটি ৫ লাখ ৪৬ হাজার ৯১। আর শিক্ষক আছেন ৩ লাখ ৬২ হাজার ৭০৯ জন।

সারা দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গত বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত প্রধান শিক্ষকের পদোন্নতিযোগ্য শূন্য পদ ছিল ২৯ হাজার ১৬৭। এর মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের চলতি দায়িত্ব দিয়েছে ১৫ হাজার ৪৯৮টি বিদ্যালয়ে। আর বাকি ১৩ হাজার ৬৬৯ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদে সিনিয়র শিক্ষকেরা দায়িত্ব পালন করছেন। গত ৭ মাসে আরও প্রায় ১ হাজার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অবসরে গেছেন। সেই হিসাবে শূন্য পদের সংখ্যা ৩০ হাজারের কম নয়।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তার মতে, মামলার কারণে বারবার পিছিয়ে যাচ্ছে পদোন্নতি। আর মামলার কথা বলে শিক্ষকদের ভুল বুঝিয়ে টাকা আদায় করা হচ্ছে। এতে কতিপয় ব্যক্তি লাভবান হলেও গোটা শিক্ষক সমাজ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। স্থায়ী প্রধান শিক্ষক না থাকায় সুশৃঙ্খলভাবে বিদ্যালয় পরিচালনা সম্ভব হচ্ছে না অনেক জায়গায়। ব্যাহত হচ্ছে শ্রেণিকক্ষে পাঠদানও। নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত হিসেবে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। ভারপ্রাপ্তের দায়িত্ব থাকলে অনেক সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয় না।

বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি রাজেশ মজুমদারের মতে, মামলার জটিলতায় প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি বন্ধ থাকার বিষয়টি দুঃখজনক। কতিপয় ব্যক্তি অসৎ উদ্দেশ্যে মামলা করে গোটা শিক্ষক সমাজকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

র্ঘদিন ধরে পদোন্নতি না থাকায় সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হতে হচ্ছে। এ বিষয়ে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি। আমরা মনে করি, সমস্যা চিহ্নিত হওয়ার পর সমাধানের ক্ষেত্রে উদাসীনতা দেখানো একেবারেই অনুচিত। প্রাথমিক শিক্ষাই হলো শিক্ষার মূল ভিত্তি। ভিত্তি দুর্বল হলে কাঠামো কীভাবে দৃঢ় হবে?

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের সংখ্যালঘু ইস্যুতে বাংলাদেশের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাল দিল্লি

‘ক্রিকেটাররা আমাকে ন্যুড পাঠাত’, বিস্ফোরক ভারতের সাবেক কোচের সন্তান

‘শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশ হাসবে’ ব্যানারে বিমানবন্দর এলাকায় আ.লীগের মিছিল

পরপর সংঘর্ষে উড়ে গেল বাসের ছাদ, যাত্রীসহ ৫ কিমি নিয়ে গেলেন চালক

ইটনায় এবার ডিলার নিয়োগে ঘুষ চাওয়ার কল রেকর্ড ফাঁস

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত