Ajker Patrika

দুর্ঘটনায় পা হারিয়ে মানবেতর জীবন

বানিয়াচং (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৯ অক্টোবর ২০২১, ২০: ১৬
দুর্ঘটনায় পা হারিয়ে  মানবেতর জীবন

বানিয়াচং উপজেলায় বাসিন্দা পরিতোষ মোদক। সড়ক দুর্ঘটনায় পা ভেঙে যায় তাঁর। ভেঙে যাওয়া পায়ের চিকিৎসা করাতে বাড়ি বিক্রি করে দেন। বর্তমানে নিঃস্ব হয়ে ভিক্ষা করছেন তিনি। একদিন ভিক্ষা না করলে জোটে না পরিবারের খাবার। মানবেতর জীবনযাপন করা এ পরিবারের দাবি সরকার সাহায্য করলে ঘুরে উঠতে পারবেন তাঁরা।

এলাকাবাসীরা জানান, পরিতোষ মোদকের পৈতৃক পেশা ছিল মিষ্টান্ন তৈরি ও বিক্রি করা। খুব ছোটবেলায় বাবাকে হারিয়ে পেশা হিসেবে বেছে নেন মোয়া-মুড়কি, বাদাম, ছোলা বিক্রি করার কাজ। পড়ালেখা করা তাঁর ভাগ্যে জোটেনি।

এই বয়সেই তাঁর জীবনের প্রতিটি পরতে পরতে গেঁথে আছে কেবল কষ্ট। চশমা লাগিয়েও চোখে ঝাপসা দেখেন। চোখের ডাক্তার বলে দিয়েছেন অপারেশন করতে হবে। কিন্তু অর্থের অভাবে চোখের চিকিৎসা করাতে পারছেন না।

চার সন্তানের জনক পরিতোষ। দরিদ্রতার কারণে দুটি সন্তানকে দত্তক দিয়েছেন। কারণ তার স্ত্রী মণিকা মোদক মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন। তাই সন্তানদের প্রতি তেমন কোনো দায়িত্ব পালন করতে পারেন না।

ভিক্ষা করতেও ভালো লাগে না বলে প্রতি দিন ভিক্ষা করতে বের হন না তিনি। যেদিন ভিক্ষা করতে বের হন না, ওই দিন দুই শিশু ও মানসিক ভারসাম্যহীন স্ত্রীকে নিয়ে উপোস থাকতে হয়। আবার পরিতোষের স্ত্রীর উৎপাতে বাড়ির মালিক প্রায়ই তাদের বাড়ি ছাড়ার জন্য তাগাদা দেন।

কিন্তু অসুস্থ স্ত্রী ও ছোট দুটি শিশু নিয়ে পরিতোষের যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। হতাশ হয়ে পরিতোষ এখন কেবল চোখের জল ফেলে দিনরাত কাটাচ্ছেন।

মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের একটি ঘরের জন্য ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানের কাছে গেলে সময়মতো না আসায়, তারা বিষয়টা দেখতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন।

পরিতোষ মোদক বলেন, ‘আমার কোনো যাওয়ার জায়গা নেই। সরকারের নিকট সাহায্যের আবেদন করেছি। আমাকে যেন মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দেওয়া হয়।’

বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদ্মাসন সিংহ বলেন, ‘পরিতোষ মোদকের কষ্ট দূর করার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করব। ভবিষ্যতে আবার যদি গৃহহীনদের জন্য ঘর আসে তাহলে অবশ্যই তার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত