Ajker Patrika

বাড়তি খরচে দুশ্চিন্তা কৃষকের

নওগাঁ প্রতিনিধি
আপডেট : ০৯ আগস্ট ২০২২, ১২: ২৩
বাড়তি খরচে দুশ্চিন্তা কৃষকের

আমনের ভরা মৌসুমে সারের দাম বাড়ানোর পর হঠাৎ বেড়েছে ডিজেলের দাম। একের পর এক মূল্যবৃদ্ধিতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন নওগাঁর কৃষকেরা। এমনিতে এ বছর স্বাভাবিক সময়ের মতো বৃষ্টি হয়নি। এ অবস্থায় যদি অতিরিক্ত দামে ডিজেল কিনে সেচ দিতে হয়, তাহলে কোনোভাবেই লোকসান কাটানো সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন কৃষকেরা। কারণ উৎপাদন খরচ ও পরিবহন খরচ দুটোই বাড়বে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে ডিজেলের মোট চাহিদার বড় একটি অংশ ফসল উৎপাদন ও পণ্য পরিবহনে ব্যবহার করা হয়। তেলের দাম লিটারে ৩৪ টাকা এবং ইউরিয়া সারের দাম কেজিতে ৬ টাকা বাড়ানোর কারণে ফসল উৎপাদনে ব্যয় বাড়বে প্রায় ৩০ শতাংশ; ক্ষতিগ্রস্ত হবে কৃষি অর্থনীতি। এ অবস্থা চলতে থাকলে থেমে যাবে উৎপাদন।

জানা গেছে, গত সোমবার কৃষক পর্যায়ে ইউরিয়া সারের সর্বোচ্চ খুচরা প্রতি কেজি ১৬ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২২ টাকা পুনর্নির্ধারণ করেছে সরকার। এরপর গত শুক্রবার রাতে হঠাৎ জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ১১৪ টাকা করা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডিজেল ও সারের মূল্যবৃদ্ধির পর আমন মৌসুমে এক বিঘা জমিতে খরচ হবে ৬-৭ হাজার টাকা। এর মধ্যে ইউরিয়া সারে ৩০ কেজি ৬৬০-৬৮০, পটাশ ১০ কেজি ২৮০, ফসফেট ১৫ কেজি ৪২০, জিপসামে ১০ কেজি ২২০ টাকা খরচ হবে। এ ছাড়া শ্রমিক, হালচাষ ও রোপণ করতে ৩ হাজার ৫০০ টাকা এবং সেচ বাবদ খরচ হবে ১ হাজার ৫০০ টাকা। বিগত মৌসুমগুলোতে এক বিঘা জমিতে খরচ হয়েছে সাড়ে ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা। অর্থাৎ, এবার সার, হালচাষ ও সেচ খরচে অতিরিক্ত গুনতে হচ্ছে প্রায় ২ হাজার টাকা।

জেলার বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, বৃষ্টির জন্য দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর অবশেষে সেচ দিয়েই চাষাবাদ শুরু করেছেন কৃষকেরা। কেউ জমি প্রস্তুত করতে হালচাষ দিচ্ছেন। কেউবা জমিতে শ্যালো ইঞ্জিনে সেচ দিয়ে ভিজিয়ে রাখছেন। আনুষঙ্গিক কাজ শেষে কেউ আবার চারা রোপণ শুরু করেছেন।

কৃষকেরা জানান, ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে জমিতে হালচাষ ও সেচ খরচ বেড়ে গেছে। বিগত সময়ে এক বিঘা জমিতে ট্রাক্টর দিয়ে এক চাষ করা হতো ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়। ডিজেলের দাম বাড়ার পরদিন থেকেই এক বিঘা জমি চাষ করতে ট্রাক্টর ও পাওয়ারটিলার মালিকেরা ৪০০ থেকে ৫৫০ টাকা পর্যন্ত চাইছেন। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে দুই গুণ বেড়েছে ধান উৎপাদনের ব্যয়। কিন্তু সেই তুলনায় মিলছে না ফলন ও দাম।

কৃষক মনোয়ার হোসেন বলেন, তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় সেচ খরচ প্রতি বিঘায় ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা বাড়বে এবং হালচাষে খরচ বাড়বে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা।

এ বিষয়ে ট্রাক্টরের মালিক সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘গাড়ি চালিয়ে যদি লাভই না হয়, তাহলে চলব কীভাবে? আগে তেলের দাম কম ছিল, চাষের খরচও কম নেওয়া হতো।’

কৃষকদের অধিকার নিয়ে আন্দোলন-সংগ্রামের নেতা জয়নাল আবেদিন মুকুল বলেন, সার ও তেলের দাম বাড়ার কারণে উৎপাদন ব্যয় প্রায় ৩০ শতাংশ বেড়ে যাবে। কারণ যান্ত্রিক কৃষিব্যবস্থায় উৎপাদন খরচ অনেকটাই নির্ভর করে ডিজেলের ওপর। এ অবস্থায় কৃষকের জীবনে অর্থনৈতিক যে সংকট, তা আরও প্রকট হবে।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এ বছর জেলায় ১ লাখ ৯৭ হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক এ কে এম মনজুরে মাওলা বলেন, বৃষ্টি কম হওয়ায় ফসল উৎপাদনে এবার ব্যয় কিছুটা বাড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পরমাণু শক্তিধর হতে চেয়েছিল তাইওয়ান, সিআইএ এজেন্টের বিশ্বাসঘাতকতায় স্বপ্নভঙ্গ

এলপি গ্যাস, তেল, আটাসহ বেশ কিছু পণ্যে ভ্যাট তুলে দিল এনবিআর

চ্যাম্পিয়নস ট্রফি: রিজার্ভ-ডেতেও সেমিফাইনাল না হলে হৃদয়বিদারক সমীকরণ

বগুড়ায় ইফতারের পর ডেকে নিয়ে যুবককে হত্যা

অমর্ত্য সেনের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় যা বললেন জামায়াতের আমির

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত