Ajker Patrika

মেলে শুধু জ্বরের চিকিৎসা

দিঘলিয়া প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ জানুয়ারি ২০২২, ১৩: ২৩
Thumbnail image

দিঘলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাত বছর ধরে পড়ে আছে আধুনিক অপারেশন থিয়েটার। এটি চালুর নেই কোনো উদ্যোগ। ফলে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগী। উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মানুষের একমাত্র ভরসা এ হাসপাতালে জ্বর ও মাথাব্যথা ছাড়া মূলত অন্যান্য রোগের চিকিৎসা নেই। ফলে উপজেলাবাসী স্বাস্থ্য সেবার জন্য ছুটছেট শহরে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৪ সালে মাত্র ২৫টি শয্যা নিয়ে যাত্রা শুরু করে দিঘলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। বর্তমানে এটি ৫০ শয্যায় সীমাবদ্ধ। ২০১৪ সালে কোটি টাকা ব্যয়ে আধুনিক অপারেশন থিয়েটার স্থাপন করা হলেও কাজে আসছে না উপজেলাবাসীর। ডিজিটাল এক্স-রে ও আলট্রাসনো মেশিনও বছরের পর বছর পড়ে থাকায় নষ্ট হয়ে গেছে। ডিজিটাল এক্স-রে, আলট্রাসনো মেশিন, প্যাথলজিক্যাল যন্ত্রপাতি সবই আছে তালাবদ্ধ রুমে। আধুনিক অপারেশন থিয়েটার আছে কিন্তু কোনো দিন কোনো রোগীর অপারেশন হয়নি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্বাস্থ্যখাতে সরকারের উন্নয়ন বস্তাবন্দী করে রাখা হয়েছে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায়। কনসালট্যান্ট, মেডিকেল অফিসার, নার্স সবই আছে নেই শুধু রোগীর স্বাস্থ্য সেবা। টেকনোলজিস্ট ও অফিস কর্মচারীর অনেক পদই খালি। এখানে স্বাস্থ্য সেবা বলতে শুধু জ্বর আর মাথা ব্যথার ওষুধ বোঝায়। ফলে উপজেলাবাসী স্বাস্থ্যসেবার জন্য প্রতিনিয়ত শহরমুখী হচ্ছেন।

উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের প্রায় ২ লাখ মানুষের স্বাস্থ্য সেবার একমাত্র ভরসা দিঘলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। যা চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক্স-রে মেশিনটি দীর্ঘদিন নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। কর্মরত চিকিৎসকেরা কেউ কোনো দিন এক্স-রে মেশিনের চেহারাও দেখেনি। শুধু শুনেছেন তালা দেওয়া রুমের মধ্যে একটি এক্স-রে মেশিন আছে। আল্টাসনো মেশিন আছে অপারেটর নেই, তাই কখনো আল্টাসনো হয় না। প্যাথলজিতে হাতে গোনা কয়েকটি পরীক্ষা হলেও সক্ষমতার বেশিরভাগই করা হয় না। সাত বছর আগে কোটি টাকা ব্যয়ে একটি আধুনিক অপারেশন থিয়েটার স্থাপন করা হয়েছিল এ হাসপাতালে। কিন্তু কোনও দিন তা ব্যবহার হয়নি।

সার্জন থাকলে অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক থাকেন না, আবার অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক থাকলে সার্জন থাকেন না। সিজারের মত অতি গুরুত্বপূর্ণ সেবাও বন্ধ রয়েছে এ হাসপাতালে। সিজার কার্যক্রমে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি দীর্ঘদিন ব্যবহার না করার ফলে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আসা অন্তসত্ত্বা নারীরা মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করে প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি হতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে করে চরম বিপাকে পড়ছেন সাধারণ গরিব রোগীর পরিবার।

একাধিক রোগী বলছেন, এই হাসপাতালের চিকিৎসকেরা ক্লিনিকে অপারেশন করেন কিন্তু এখানে যত অনীহা। অপারেশনযোগ্য রোগী আসলে কৌশলে দালালেরা তাদের বাগিয়ে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ রয়েছে। আর এসব কারণে কোন কোন সময় ঘটছে প্রসূতি নারীর মৃত্যুর ঘটনাও। এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মাহাবুবুল আলম সিজার ও অপারেশন বন্ধ থাকার কথা স্বীকার করে বলেছেন, অপারেশন করার জন্য সার্জন এর প্রয়োজন হয়। কিন্তু এ হাসপাতালে কোনো সার্জন নাই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত