Ajker Patrika

অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জেরবার বিএনপি

জামালপুর প্রতিনিধি
অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জেরবার বিএনপি

দুই যুগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল যেন কোনোভাবেই পিছু ছাড়ছেই না জামালপুর বিএনপির রাজনীতিতে। মূল দলের কোন্দলের রেশ ছড়িয়েছে দলটির সব অঙ্গসংগঠনগুলোতেও। দলের কোন্দল এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে পৃথক কর্মসূচি পালন করছেন জেলা-উপজেলার নেতা-কর্মীরা। এমনকি অনেকে আরেকজনের মুখ পর্যন্ত দেখতে নারাজ। এদিকে বিএনপির সাংগঠনিক এ দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে আওয়ামী লীগ জেলায় শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে।

জানা গেছে, জামালপুর বিএনপির রাজনীতিতে কোন্দলের সূত্রপাত ঘটে ১৯৯৩ সাল থেকে। ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর প্রথম নাড়াটা পড়ে জেলা কমিটির সম্মেলনকে ঘিরে। সেই সময়ের স্বাস্থ্য উপমন্ত্রী সিরাজুল হক জেলা বিএনপির সভাপতি প্রার্থী হলে প্রকাশ্যে দলটির কোন্দলের সৃষ্টি হয়। বিএনপির এ কোন্দলের জেরেই ১৯৯৮ সালে ৯ অক্টোবর নিজ দলীয় নেতা-কর্মীদের হাতে খুন হন জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক। জেলা বিএনপির এ প্রভাবশালী নেতার হত্যাকাণ্ডের মধ্যে দিয়ে ভাঙন শুরু হয়। সেই থেকে গত ২৪ বছরেও দলটির ভাঙাচোরা অবস্থা আর মেরামত করতে পারেনি স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতারা। এমনকি গত ২৪ বছরেও সম্মেলনের আয়োজন করতে পারেনি জেলা বিএনপি। ফলে জেলা বিএনপির নেতা-কর্মীরা এখন নানা ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে।

২০০৪ সালে দেওয়া হয় জামালপুর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি। সেই কমিটিতে জামালপুর-১ (দেওয়ানগঞ্জ-বকশীগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত সভাপতি, অ্যাডভোকেট শাহ্ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন সাধারণ সম্পাদক এবং শামীম আহমেদকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়। এ কমিটির নেতৃত্বে দলকে শক্তিশালী করলেও মূলত দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। বিরোধের কারণে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ওয়ারেছ আলী মামুন এবং সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমেদ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন। সেই সময় শামীম আহমেদের অনুসারীরা বিএনপির সভাপতি এম রশিদুজ্জামান মিল্লাতের নেতৃত্বের প্রতি আস্থা রেখে দলীয় কর্মকাণ্ড ধরে রাখেন।

এরপর ২০১১ সালে দেওয়া শেষ কমিটিতে স্থান হয়নি জেলার বিএনপির অনেক জ্যেষ্ঠ নেতাদের। সেই সঙ্গে জেলার বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহম্মেদকেও কোনো পদে রাখা হয়নি। এনিয়ে বিরোধ আবারও মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। শামীম আহম্মেদকে জেলা বিএনপির সদস্য রাখায় তাঁর অনুসারীরা জেলা বিএনপির কমিটি বাতিলের দাবিতে মিছিল সমাবেশ করেন বিভিন্ন সময়।

জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি সাহাদত হোসেন সাগর বলেন, ‘জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ্ মো. ওয়ারেছ আলী মামুনের একক সিদ্ধান্ত এবং স্বৈরাচারী মনোভাবের কারণে দলটি আজ খণ্ড-বিখণ্ডিত হয়ে পড়েছে।’ তিনি আরও বলেন, জামালপুর বিএনপির রাজনীতিতে জেলা কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমেদ তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের অভিভাবক। তাঁকে বাদ দিয়ে বিএনপির রাজনীতি সম্ভব না।

কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রভাবশালী এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জামালপুর বিএনপির এই অবস্থা খুবই দুঃখজনক। তিনি দলের এই অবস্থার জন্য জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ওয়ারেছ আলী মামুনকে দায়ী করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ্ মো. ওয়ারেছ আলী মামুনের সঙ্গে কথা বলতে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে বাসা কিংবা অফিসে পাওয়া যায়নি। এমনকি তাঁর মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পাকিস্তানে কীভাবে হামলা চালাতে পারে ভারত, ইতিহাস যা বলছে

প্রবাসীর রেমিট্যান্সের অর্থ আত্মসাৎ, নারী ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে

জনবল-সরঞ্জাম বেশি হলেও সমরশক্তিতে ভারত কি পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে

ভারতের সঙ্গে সংঘাতে পাকিস্তানের ভাগ্যনিয়ন্তা সেনাপ্রধান জেনারেল মুনির

ইতিহাস গড়ে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদে আইএসআইপ্রধান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত