Ajker Patrika

হাওর-ঝিল দখল ও বিষে হারাচ্ছে দেশি মাছ

আগৈলঝাড়া প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ জুন ২০২২, ১১: ২৫
Thumbnail image

বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায় দেশি প্রজাতির মাছ হারিয়ে যাচ্ছে। ধানখেত, খাল-বিলে কীটনাশক প্রয়োগের কারণে দেশি মাছের বংশবিস্তার ব্যাহত হচ্ছে। এমনকি খাল-বিল, হাওর-ঝিল দখল ও ভরাট করা হচ্ছে বেআইনিভাবে। এতে হারিয়ে যেতে বসেছে কই, শিং, শোল, গজার, বোয়াল, টাকির মতো দেশি মাছ।

এ ছাড়া পুকুর, ঘেরে মাছ চাষ, অবৈধ চায়না দুয়ারি ও কারেন্ট জালের ব্যবহারও দায়ী এসব মাছ বিলুপ্তির জন্য।

উপজেলার গৈলা বাজার, বাশাইল, রাজিহার, গুপ্তেরহাট, সাহেবেরহাটসহ বিভিন্ন মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সামুদ্রিক ও অন্যান্য মাছের জোগান থাকলেও দেশি প্রজাতির মাছ তুলনামূলক কম। এ ছাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিক্রেতাদের কাছে দেশি মাছ দেখা গেলেও তাঁদের কাছে এসবের পরিমাণ একেবারেই কম।

এ ব্যাপারে মাছ ব্যবসায়ী নিখিল মন্ডল বলেন, ‘ধানখেতে কীটনাশকের ব্যবহার দেশি প্রজাতির মাছের প্রজননে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। বিভিন্ন পুকুর ও খালের পানিতে ওষুধ ছিটানোর ফলে মাছের প্রজননক্ষেত্র নষ্ট হচ্ছে। এতে মাছের গায়ে দেখা দেয় বিভিন্ন রোগ। এসব রোগ ছোঁয়াচে। ফলে একটি মাছ থেকে অন্য মাছেও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ফলে ধীরে ধীরে মাছের বংশবিস্তার প্রচণ্ডভাবে ব্যাঘাত হচ্ছে। ফলে শূন্যের কোঠায় গিয়ে ঠেকেছে দেশি প্রজাতির মাছ।’

এক সময় উপজেলার বাগধা, সাতলা, পয়সারহাট, রাজিহার, বাশাইল, সাহেবেরহাট, মোল্লাপাড়া, আস্কর, নাগিরপাড় এলাকা থেকে প্রতিদিন দেশি কই, শিং, মাগুর, শোল, গজার, বোয়াল, টাকি, পাবদা, ট্যাংরা, ফলি, খলিশা, ভেটকি, পাবদা, পুঁটি প্রভৃতি মাছ আসত বিভিন্ন বাজারে। কিন্তু বর্তমানে বাজারে দেশি মাছের দেখা মেলে না। যা আছে, তার আবার দাম চড়া। এতে সাধারণ ক্রেতারা এসব মাছ কিনতে হিমশিম খাচ্ছে।

এ ব্যাপারে গৈলা বাজারের ক্রেতা হাবুল সরদার জানান, দেশি প্রজাতির কই ও শিং মাছের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু বাজারে চাহিদার তুলনায় জোগান কম হওয়ায় মাছ ব্যবসায়ীরা চড়া দাম হাঁকান। ইচ্ছে থাকলেও অনেকেই কিনতে পারেন না। দেশি মাছ রক্ষার্থে মৎস্য অধিদপ্তরসহ সচেতন নাগরিকদের এগিয়ে আসতে হবে।

তবে মাছ বিক্রেতারা বলছেন ভিন্ন কথা। এখন আর কেউ ছোট মাছের দিকে নজর দেয় না। যারা মাছ চাষ করে, তারা বড় মাছের ওপর নির্ভরশীল। যে কারণে দিন দিন বাজারে ছোট মাছের পরিমাণ কমে যাচ্ছে।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলম বলেন, ‘পুকুর-ডোবাগুলোতে কৃত্রিম উপায়ে মাছ চাষ করতে গিয়ে বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে দেশি মাছ বিলুপ্ত হচ্ছে। ফলে দেশি মাছ রক্ষার্থে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অবৈধ চায়না দুয়ারি ও কারেন্ট জাল জব্দ করে পুড়িয়ে নষ্ট করা হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত