ফারুক মেহেদী

অর্থনীতির নানান বিষয়ে অর্থনীতিবিদ ড. সাদিক আহমেদ আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সহকারী সম্পাদক ফারুক মেহেদী।
করোনার ধাক্কায় বিপর্যস্ত হয়েছে বিশ্ব অর্থনীতি। বাংলাদেশও কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
ড. সাদিক আহমেদ: কোভিডের আগপর্যন্ত অর্থনীতি ভালো চলছিল। জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার অনেক উঁচুতে ছিল। অন্যতম উদীয়মান অর্থনীতি বলা হচ্ছিল বাংলাদেশকে। মানবসম্পদসহ সব সূচকই ইতিবাচক ছিল। কোভিড আসার পর জিডিপি প্রবৃদ্ধি, রপ্তানি, দারিদ্র্যের ওপর একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ল। এটা একটা বৈশ্বিক সংকট ছিল। এতে তুলনামূলকভাবে বাংলাদেশের কম ক্ষতি হয়। বিবিএস ২০১৯-২০ অর্থবছরে বলেছে, সাড়ে ৩ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। বৈশ্বিক তুলনায় এটা ভালো। ভারতে নেতিবাচক হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভিয়েতনামে কমেছে। একপর্যায়ে সবকিছু খুলে দেওয়ায় ক্ষতির মাত্রাটা কমেছে। জিডিপিও বাড়ছে। বিবিএস ২০২০-২১ অর্থবছরে সাড়ে ৫ শতাংশ অর্জিত হওয়ার কথা বলছে। রপ্তানি বেশ ভালোভাবেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। সুতরাং অর্থনৈতিক কার্যক্রম বলা যেতে পারে ভালোর দিকে। রেমিট্যান্স আগে ভালো ছিল, তবে কিছুদিন ধরে একটু নেতিবাচক। এটা প্রত্যাশিত ছিল।
এমন পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সরকারের নীতি-কৌশল কেমন হওয়া উচিত?
ড. সাদিক আহমেদ: বেসরকারি বিনিয়োগ কিছুটা ফিরেছে। যতটা হওয়া উচিত, সেটা হয়নি। আর সাপ্লাই চেইনে যে সমস্যাটা দেখা যাচ্ছে, সেটা হলো চীন, ইউরোপ এবং আমেরিকায়ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ঠিকমতো হচ্ছে না। বৈশ্বিকভাবে পণ্যমূল্য বাড়ছে। জ্বালানি তেলের দাম অনেক বেড়েছে। নির্মাণসামগ্রী ও শিল্পের কাঁচামালের দাম বেড়েছে। এটা ব্যয়ের ওপর চাপ তৈরি করছে। এটা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের ওপর একটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। তাই আমি মনে করি, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা খুবই জরুরি। একটি মিশ্র অর্থনৈতিক নীতি গ্রহণ করতে হবে। মুদ্রা ও রাজস্বনীতিতে ভারসাম্য আনতে হবে। ঋণপ্রবাহ যদি ১২-১৪ শতাংশের মধ্যে হয়, তাহলে ঠিক আছে। রাজস্ব ঘাটতি জিডিপির ৫ শতাংশ, এটাও ঠিক আছে। খরচ বাড়ার ফলে কিছু নেতিবাচক প্রভাব তো থাকবেই। তবে সরকার যে ভর্তুকি দিয়ে সব আটকে রাখবে, এটা সম্ভব নয়।
করোনার ক্ষত না কাটতেই জ্বালানির দাম বাড়ানো কতটা ঠিক হলো?
ড. সাদিক আহমেদ: ডিজেলে সরকারের ভর্তুকি ছিল। বৈশ্বিক দাম বাড়ার ফলে সরকার যে সমন্বয় করছে, এটা ঠিকই আছে। তবে আমি মনে করি, দাম সমন্বয়ের বিষয়টির একটি পদ্ধতিগত সংস্কার প্রয়োজন। অ্যাডহক বেসিসে সরকার কেন দাম নির্ধারণ করবে? ভারতও কিন্তু সরকারের হাতে রাখেনি। এটার নিয়ন্ত্রণ যদি বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়, জ্বালানি ও অর্থ মন্ত্রণালয় মতামত দেবে। তবে মূল বিষয়টি বিইআরসি দেখভাল করবে। চাহিদা ও সরবরাহের ভিত্তিতে দাম নির্ধারিত হবে। এভাবে করলে দাম নিয়ে প্রশ্ন আসবে না। সরকার প্রয়োজন মনে করলে ভ্যাট, ট্যাক্স বা শুল্ক কমিয়ে দিতে পারে। ট্যাক্স পলিসি দিয়ে এটা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সুতরাং আমি মনে করি, পণ্যমূল্য বা জ্বালানি তেলের দাম সরকারের হাত থেকে ছেড়ে দিতে হবে।
সরকারের অ্যাডহক ভিত্তিতে দাম নির্ধারণ কতটা যৌক্তিক?
ড. সাদিক আহমেদ: যদি বাজারভিত্তিক হয়, তাহলে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়লে এখানেও বাড়বে, দাম কমলে এখানেও কমবে। এটা হলো সবচেয়ে উত্তম নীতি। এ সিস্টেম তো আমাদের নেই। নেই বলেই এটাকে প্রশাসনিক দাম বলা হচ্ছে। যেহেতু এটি স্ট্র্যাটেজিক পণ্য, তাই পণ্যটির দাম অতিরিক্ত বেড়ে গেলে সরকার ট্যাক্স পলিসি দিয়ে হস্তক্ষেপ করবে। সার্বিকভাবে আমি মনে করি, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দামের যে চাপ, তা আমাদের সহ্য করতে হবে।
করোনায় দারিদ্র্য বাড়ছে বলা হচ্ছে। এটা কমানোর জন্য করণীয় কী হতে পারে?
ড. সাদিক আহমেদ: এটা ঠিক যে, সময়ের পরিক্রমায় দারিদ্র্য কমেছে, জিডিপি বেড়েছে; তবে একই সঙ্গে আয়বৈষম্যও বেড়েছে। আমরা জানি, ২০ শতাংশের বেশি দরিদ্র মানুষ রয়েছে। কোভিডের ফলে এই হার কিছুটা বেড়েছে। এ ধরনের আয়বৈষম্য কমানোর জন্য সামাজিক সুরক্ষা কৌশল নেওয়া হয়। বাংলাদেশেও সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি আছে। তবে সম্পদের সীমাবদ্ধতার জন্য এটা কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় হচ্ছে না। এটাকে ব্যাপক পরিসরে করতে হবে। এ জন্য সরকারকে করের ওপর জোর দিতে হবে। আমি মনে করি, বাংলাদেশের কর জিডিপি অনুপাত ৯ শতাংশকে বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। মাথাপিছু আয় আড়াই হাজার ডলার ছাড়িয়ে গেছে। এতেই বোঝা যায়, আমাদের সক্ষমতা বেড়েছে। কর সেভাবে বাড়েনি। করব্যবস্থায় একটা সংস্কার এনে কিছু সম্পদ স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষায় বিনিয়োগ করা যাবে। অবশ্যই সংস্কারের জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রয়োজন। তার পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারও করতে হবে।
দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী বা ধনীরা সেরা করদাতার তালিকায় নেই কেন?
ড. সাদিক আহমেদ: এ জন্যই সংস্কারের কথা বলছি। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো ভলান্টারি কমপ্লায়েন্স। এটা ছাড়া এনবিআরের লোকজন পাঠিয়ে ধরাধরি করে হবে না। করব্যবস্থা সহজ করতে হবে। ভলান্টারিভাবে আয় থেকে কর জমা হবে। এনবিআর পরে সিলেকটিভ অডিট করবে। সবার ফাইল দেখার প্রয়োজন নেই। আমরা তো জানি, বেশি আয়ের মানুষ কোথায় আছে। আমরা যদি মনে করি, ওঁদের কর ঠিকমতো আসছে না, সেখানে অডিট করা যায়।
বৈশ্বিক যেসব উত্তম চর্চা আছে, সেগুলো আমরা কেন করছি না?
ড. সাদিক আহমেদ: আমরা বলছি যে, করনীতি এবং কর আদায় দুটোকে আলাদা করে দিতে হবে। কর প্রশাসনকে আধুনিক করতে হলে সবকিছু কম্পিউটারাইজড করতে হবে। অনলাইনে যেন রিটার্ন দিতে পারে, সে ব্যবস্থা করতে হবে। টার্গেট করে সিলেকটিভ ও প্রোডাকটিভ অডিট করতে হবে। একটা কম্পিউটারাইজড মডেল থাকবে যে, এই ক্রাইটেরিয়া থাকলে এ ধরনের অডিট করা যাবে। আমি মনে করি, দৃশ্যমান উচ্চবিত্তদের করের বিষয়টি আগে দেখা যেতে পারে।
করোনায় দারিদ্র্যের হার বেড়েছে শোনা গেলেও সরকার বলছে কমছে। আপনি কী বলেন?
ড. সাদিক আহমেদ: আমাদের কাছে দারিদ্র্যের সঠিক তথ্য নেই। ধারণা থেকে যেটা বলা যায়, কোভিডের আগে আমাদের দারিদ্র্যের হার নেমে এসেছিল ১৯ শতাংশে। দারিদ্র্য কিসের ওপর নির্ভর করে? প্রবৃদ্ধি, আয়, রেমিট্যান্স, কর্মসংস্থানের ওপর। বাংলাদেশে কোভিডের ফলে প্রবৃদ্ধি কিছুটা কমেছে। কিন্তু নেতিবাচক তো হয়নি। আর রেমিট্যান্স তো ৩০ শতাংশের মতো বেড়েছে। রেমিট্যান্স বেড়েছে, প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক হয়নি, রপ্তানিও ভালো ছিল। সুতরাং দারিদ্র্য বাড়ার কথা নয়। সাময়িকভাবে যদিও কোভিড শুরুর দিকে দারিদ্র্যের হার কিছুটা বেড়েছিল, তবে বছরভিত্তিক হিসাবে তা খুব বাড়েনি বলে আমার ধারণা।
এত কিছুর মধ্যেও অর্থনীতির জন্য কী কী চ্যালেঞ্জ দেখছেন?
ড. সাদিক আহমেদ: আমরা অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছি। সেখানে প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন করা হয়েছে সাড়ে ৮ বা ৯ শতাংশ। ২০৩১ সালের মধ্যে আমরা উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ হয়ে যাব। অতি দারিদ্র্য শূন্য হয়ে যাবে। ২০৪১ সালে আমরা উচ্চ আয়ের দেশ হব—সরকারের এসব লক্ষ্যমাত্রা কোভিডের কারণে কিছুটা পিছিয়ে গেছে। প্রবৃদ্ধি কমেছে, দারিদ্র্য যেভাবে কমার কথা, কমেনি। সুতরাং প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন অর্জনে অনেক প্রচেষ্টা চালাতে হবে। বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। অবকাঠামো, দারিদ্র্য বিমোচনে বরাদ্দ বাড়াতে হবে, কর ব্যবস্থাপনায় সংস্কার আনতে হবে। এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের প্রস্তুতি নিতে হবে। কর্মসংস্থান বাড়ানোও একটা বড় চ্যালেঞ্জ। তবে ৫-৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি আমরা এমনিতেই অর্জন করতে পারব। কিন্তু যদি এটাকে ৮-৯ শতাংশে নিতে হয়, তাহলে আমাদের রিফর্ম করতেই হবে।
বিনিয়োগ লাগবে। কিন্তু পরিবেশ কতটা অনুকূলে আছে?
ড. সাদিক আহমেদ: বিনিয়োগে সবচেয়ে বড় বাধা ট্রানজেকশন কস্ট। দেখা যায়, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সংযোগ সহজে পাওয়া যায় না। বাংলাদেশে ব্যাংক ক্রাপসি বা কন্টাক্ট এনফোর্সমেন্টের আইনগত ব্যবস্থার প্রচুর প্রশ্ন রয়েছে। বিনিয়োগ অনুমোদন বা এর প্রক্রিয়া অনেক দীর্ঘসূত্র, জমি পেতে সমস্যা আছে—এ রকম অনেক সমস্যা আছে। কোর্টের সমস্যা। কর দিতে জটিলতা। এসব ইস্যু চিহ্নিত হয়েছে এবং তা সরকারও জানে। সরকার যদি এগুলোর সমাধান করতে পারে, তাহলে নিঃসন্দেহে বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়বে। বাংলাদেশ অত্যন্ত লাভজনক গন্তব্য। এখন যদি জরুরি সংস্কারগুলো করা যায়, ট্রেড প্রোটেকশন কমিয়ে এফডিআই নিয়ে আসা, প্রযুক্তি সংযোজন বাড়ানো, ফ্রি ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট, মুদ্রার বিনিময় হারে নজর দেওয়া যায়, তাহলে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার আরও সহজ হবে। সর্বোপরি জলবায়ু পরিবর্তনের যে ঝুঁকি, সেটা দক্ষতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে। ফসিল ফুয়েলের ব্যবহার কমাতে হবে।

অর্থনীতির নানান বিষয়ে অর্থনীতিবিদ ড. সাদিক আহমেদ আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সহকারী সম্পাদক ফারুক মেহেদী।
করোনার ধাক্কায় বিপর্যস্ত হয়েছে বিশ্ব অর্থনীতি। বাংলাদেশও কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
ড. সাদিক আহমেদ: কোভিডের আগপর্যন্ত অর্থনীতি ভালো চলছিল। জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার অনেক উঁচুতে ছিল। অন্যতম উদীয়মান অর্থনীতি বলা হচ্ছিল বাংলাদেশকে। মানবসম্পদসহ সব সূচকই ইতিবাচক ছিল। কোভিড আসার পর জিডিপি প্রবৃদ্ধি, রপ্তানি, দারিদ্র্যের ওপর একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ল। এটা একটা বৈশ্বিক সংকট ছিল। এতে তুলনামূলকভাবে বাংলাদেশের কম ক্ষতি হয়। বিবিএস ২০১৯-২০ অর্থবছরে বলেছে, সাড়ে ৩ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। বৈশ্বিক তুলনায় এটা ভালো। ভারতে নেতিবাচক হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভিয়েতনামে কমেছে। একপর্যায়ে সবকিছু খুলে দেওয়ায় ক্ষতির মাত্রাটা কমেছে। জিডিপিও বাড়ছে। বিবিএস ২০২০-২১ অর্থবছরে সাড়ে ৫ শতাংশ অর্জিত হওয়ার কথা বলছে। রপ্তানি বেশ ভালোভাবেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। সুতরাং অর্থনৈতিক কার্যক্রম বলা যেতে পারে ভালোর দিকে। রেমিট্যান্স আগে ভালো ছিল, তবে কিছুদিন ধরে একটু নেতিবাচক। এটা প্রত্যাশিত ছিল।
এমন পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সরকারের নীতি-কৌশল কেমন হওয়া উচিত?
ড. সাদিক আহমেদ: বেসরকারি বিনিয়োগ কিছুটা ফিরেছে। যতটা হওয়া উচিত, সেটা হয়নি। আর সাপ্লাই চেইনে যে সমস্যাটা দেখা যাচ্ছে, সেটা হলো চীন, ইউরোপ এবং আমেরিকায়ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ঠিকমতো হচ্ছে না। বৈশ্বিকভাবে পণ্যমূল্য বাড়ছে। জ্বালানি তেলের দাম অনেক বেড়েছে। নির্মাণসামগ্রী ও শিল্পের কাঁচামালের দাম বেড়েছে। এটা ব্যয়ের ওপর চাপ তৈরি করছে। এটা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের ওপর একটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। তাই আমি মনে করি, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা খুবই জরুরি। একটি মিশ্র অর্থনৈতিক নীতি গ্রহণ করতে হবে। মুদ্রা ও রাজস্বনীতিতে ভারসাম্য আনতে হবে। ঋণপ্রবাহ যদি ১২-১৪ শতাংশের মধ্যে হয়, তাহলে ঠিক আছে। রাজস্ব ঘাটতি জিডিপির ৫ শতাংশ, এটাও ঠিক আছে। খরচ বাড়ার ফলে কিছু নেতিবাচক প্রভাব তো থাকবেই। তবে সরকার যে ভর্তুকি দিয়ে সব আটকে রাখবে, এটা সম্ভব নয়।
করোনার ক্ষত না কাটতেই জ্বালানির দাম বাড়ানো কতটা ঠিক হলো?
ড. সাদিক আহমেদ: ডিজেলে সরকারের ভর্তুকি ছিল। বৈশ্বিক দাম বাড়ার ফলে সরকার যে সমন্বয় করছে, এটা ঠিকই আছে। তবে আমি মনে করি, দাম সমন্বয়ের বিষয়টির একটি পদ্ধতিগত সংস্কার প্রয়োজন। অ্যাডহক বেসিসে সরকার কেন দাম নির্ধারণ করবে? ভারতও কিন্তু সরকারের হাতে রাখেনি। এটার নিয়ন্ত্রণ যদি বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়, জ্বালানি ও অর্থ মন্ত্রণালয় মতামত দেবে। তবে মূল বিষয়টি বিইআরসি দেখভাল করবে। চাহিদা ও সরবরাহের ভিত্তিতে দাম নির্ধারিত হবে। এভাবে করলে দাম নিয়ে প্রশ্ন আসবে না। সরকার প্রয়োজন মনে করলে ভ্যাট, ট্যাক্স বা শুল্ক কমিয়ে দিতে পারে। ট্যাক্স পলিসি দিয়ে এটা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সুতরাং আমি মনে করি, পণ্যমূল্য বা জ্বালানি তেলের দাম সরকারের হাত থেকে ছেড়ে দিতে হবে।
সরকারের অ্যাডহক ভিত্তিতে দাম নির্ধারণ কতটা যৌক্তিক?
ড. সাদিক আহমেদ: যদি বাজারভিত্তিক হয়, তাহলে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়লে এখানেও বাড়বে, দাম কমলে এখানেও কমবে। এটা হলো সবচেয়ে উত্তম নীতি। এ সিস্টেম তো আমাদের নেই। নেই বলেই এটাকে প্রশাসনিক দাম বলা হচ্ছে। যেহেতু এটি স্ট্র্যাটেজিক পণ্য, তাই পণ্যটির দাম অতিরিক্ত বেড়ে গেলে সরকার ট্যাক্স পলিসি দিয়ে হস্তক্ষেপ করবে। সার্বিকভাবে আমি মনে করি, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দামের যে চাপ, তা আমাদের সহ্য করতে হবে।
করোনায় দারিদ্র্য বাড়ছে বলা হচ্ছে। এটা কমানোর জন্য করণীয় কী হতে পারে?
ড. সাদিক আহমেদ: এটা ঠিক যে, সময়ের পরিক্রমায় দারিদ্র্য কমেছে, জিডিপি বেড়েছে; তবে একই সঙ্গে আয়বৈষম্যও বেড়েছে। আমরা জানি, ২০ শতাংশের বেশি দরিদ্র মানুষ রয়েছে। কোভিডের ফলে এই হার কিছুটা বেড়েছে। এ ধরনের আয়বৈষম্য কমানোর জন্য সামাজিক সুরক্ষা কৌশল নেওয়া হয়। বাংলাদেশেও সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি আছে। তবে সম্পদের সীমাবদ্ধতার জন্য এটা কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় হচ্ছে না। এটাকে ব্যাপক পরিসরে করতে হবে। এ জন্য সরকারকে করের ওপর জোর দিতে হবে। আমি মনে করি, বাংলাদেশের কর জিডিপি অনুপাত ৯ শতাংশকে বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। মাথাপিছু আয় আড়াই হাজার ডলার ছাড়িয়ে গেছে। এতেই বোঝা যায়, আমাদের সক্ষমতা বেড়েছে। কর সেভাবে বাড়েনি। করব্যবস্থায় একটা সংস্কার এনে কিছু সম্পদ স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষায় বিনিয়োগ করা যাবে। অবশ্যই সংস্কারের জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রয়োজন। তার পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারও করতে হবে।
দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী বা ধনীরা সেরা করদাতার তালিকায় নেই কেন?
ড. সাদিক আহমেদ: এ জন্যই সংস্কারের কথা বলছি। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো ভলান্টারি কমপ্লায়েন্স। এটা ছাড়া এনবিআরের লোকজন পাঠিয়ে ধরাধরি করে হবে না। করব্যবস্থা সহজ করতে হবে। ভলান্টারিভাবে আয় থেকে কর জমা হবে। এনবিআর পরে সিলেকটিভ অডিট করবে। সবার ফাইল দেখার প্রয়োজন নেই। আমরা তো জানি, বেশি আয়ের মানুষ কোথায় আছে। আমরা যদি মনে করি, ওঁদের কর ঠিকমতো আসছে না, সেখানে অডিট করা যায়।
বৈশ্বিক যেসব উত্তম চর্চা আছে, সেগুলো আমরা কেন করছি না?
ড. সাদিক আহমেদ: আমরা বলছি যে, করনীতি এবং কর আদায় দুটোকে আলাদা করে দিতে হবে। কর প্রশাসনকে আধুনিক করতে হলে সবকিছু কম্পিউটারাইজড করতে হবে। অনলাইনে যেন রিটার্ন দিতে পারে, সে ব্যবস্থা করতে হবে। টার্গেট করে সিলেকটিভ ও প্রোডাকটিভ অডিট করতে হবে। একটা কম্পিউটারাইজড মডেল থাকবে যে, এই ক্রাইটেরিয়া থাকলে এ ধরনের অডিট করা যাবে। আমি মনে করি, দৃশ্যমান উচ্চবিত্তদের করের বিষয়টি আগে দেখা যেতে পারে।
করোনায় দারিদ্র্যের হার বেড়েছে শোনা গেলেও সরকার বলছে কমছে। আপনি কী বলেন?
ড. সাদিক আহমেদ: আমাদের কাছে দারিদ্র্যের সঠিক তথ্য নেই। ধারণা থেকে যেটা বলা যায়, কোভিডের আগে আমাদের দারিদ্র্যের হার নেমে এসেছিল ১৯ শতাংশে। দারিদ্র্য কিসের ওপর নির্ভর করে? প্রবৃদ্ধি, আয়, রেমিট্যান্স, কর্মসংস্থানের ওপর। বাংলাদেশে কোভিডের ফলে প্রবৃদ্ধি কিছুটা কমেছে। কিন্তু নেতিবাচক তো হয়নি। আর রেমিট্যান্স তো ৩০ শতাংশের মতো বেড়েছে। রেমিট্যান্স বেড়েছে, প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক হয়নি, রপ্তানিও ভালো ছিল। সুতরাং দারিদ্র্য বাড়ার কথা নয়। সাময়িকভাবে যদিও কোভিড শুরুর দিকে দারিদ্র্যের হার কিছুটা বেড়েছিল, তবে বছরভিত্তিক হিসাবে তা খুব বাড়েনি বলে আমার ধারণা।
এত কিছুর মধ্যেও অর্থনীতির জন্য কী কী চ্যালেঞ্জ দেখছেন?
ড. সাদিক আহমেদ: আমরা অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছি। সেখানে প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন করা হয়েছে সাড়ে ৮ বা ৯ শতাংশ। ২০৩১ সালের মধ্যে আমরা উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ হয়ে যাব। অতি দারিদ্র্য শূন্য হয়ে যাবে। ২০৪১ সালে আমরা উচ্চ আয়ের দেশ হব—সরকারের এসব লক্ষ্যমাত্রা কোভিডের কারণে কিছুটা পিছিয়ে গেছে। প্রবৃদ্ধি কমেছে, দারিদ্র্য যেভাবে কমার কথা, কমেনি। সুতরাং প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন অর্জনে অনেক প্রচেষ্টা চালাতে হবে। বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। অবকাঠামো, দারিদ্র্য বিমোচনে বরাদ্দ বাড়াতে হবে, কর ব্যবস্থাপনায় সংস্কার আনতে হবে। এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের প্রস্তুতি নিতে হবে। কর্মসংস্থান বাড়ানোও একটা বড় চ্যালেঞ্জ। তবে ৫-৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি আমরা এমনিতেই অর্জন করতে পারব। কিন্তু যদি এটাকে ৮-৯ শতাংশে নিতে হয়, তাহলে আমাদের রিফর্ম করতেই হবে।
বিনিয়োগ লাগবে। কিন্তু পরিবেশ কতটা অনুকূলে আছে?
ড. সাদিক আহমেদ: বিনিয়োগে সবচেয়ে বড় বাধা ট্রানজেকশন কস্ট। দেখা যায়, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সংযোগ সহজে পাওয়া যায় না। বাংলাদেশে ব্যাংক ক্রাপসি বা কন্টাক্ট এনফোর্সমেন্টের আইনগত ব্যবস্থার প্রচুর প্রশ্ন রয়েছে। বিনিয়োগ অনুমোদন বা এর প্রক্রিয়া অনেক দীর্ঘসূত্র, জমি পেতে সমস্যা আছে—এ রকম অনেক সমস্যা আছে। কোর্টের সমস্যা। কর দিতে জটিলতা। এসব ইস্যু চিহ্নিত হয়েছে এবং তা সরকারও জানে। সরকার যদি এগুলোর সমাধান করতে পারে, তাহলে নিঃসন্দেহে বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়বে। বাংলাদেশ অত্যন্ত লাভজনক গন্তব্য। এখন যদি জরুরি সংস্কারগুলো করা যায়, ট্রেড প্রোটেকশন কমিয়ে এফডিআই নিয়ে আসা, প্রযুক্তি সংযোজন বাড়ানো, ফ্রি ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট, মুদ্রার বিনিময় হারে নজর দেওয়া যায়, তাহলে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার আরও সহজ হবে। সর্বোপরি জলবায়ু পরিবর্তনের যে ঝুঁকি, সেটা দক্ষতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে। ফসিল ফুয়েলের ব্যবহার কমাতে হবে।
ফারুক মেহেদী

অর্থনীতির নানান বিষয়ে অর্থনীতিবিদ ড. সাদিক আহমেদ আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সহকারী সম্পাদক ফারুক মেহেদী।
করোনার ধাক্কায় বিপর্যস্ত হয়েছে বিশ্ব অর্থনীতি। বাংলাদেশও কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
ড. সাদিক আহমেদ: কোভিডের আগপর্যন্ত অর্থনীতি ভালো চলছিল। জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার অনেক উঁচুতে ছিল। অন্যতম উদীয়মান অর্থনীতি বলা হচ্ছিল বাংলাদেশকে। মানবসম্পদসহ সব সূচকই ইতিবাচক ছিল। কোভিড আসার পর জিডিপি প্রবৃদ্ধি, রপ্তানি, দারিদ্র্যের ওপর একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ল। এটা একটা বৈশ্বিক সংকট ছিল। এতে তুলনামূলকভাবে বাংলাদেশের কম ক্ষতি হয়। বিবিএস ২০১৯-২০ অর্থবছরে বলেছে, সাড়ে ৩ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। বৈশ্বিক তুলনায় এটা ভালো। ভারতে নেতিবাচক হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভিয়েতনামে কমেছে। একপর্যায়ে সবকিছু খুলে দেওয়ায় ক্ষতির মাত্রাটা কমেছে। জিডিপিও বাড়ছে। বিবিএস ২০২০-২১ অর্থবছরে সাড়ে ৫ শতাংশ অর্জিত হওয়ার কথা বলছে। রপ্তানি বেশ ভালোভাবেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। সুতরাং অর্থনৈতিক কার্যক্রম বলা যেতে পারে ভালোর দিকে। রেমিট্যান্স আগে ভালো ছিল, তবে কিছুদিন ধরে একটু নেতিবাচক। এটা প্রত্যাশিত ছিল।
এমন পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সরকারের নীতি-কৌশল কেমন হওয়া উচিত?
ড. সাদিক আহমেদ: বেসরকারি বিনিয়োগ কিছুটা ফিরেছে। যতটা হওয়া উচিত, সেটা হয়নি। আর সাপ্লাই চেইনে যে সমস্যাটা দেখা যাচ্ছে, সেটা হলো চীন, ইউরোপ এবং আমেরিকায়ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ঠিকমতো হচ্ছে না। বৈশ্বিকভাবে পণ্যমূল্য বাড়ছে। জ্বালানি তেলের দাম অনেক বেড়েছে। নির্মাণসামগ্রী ও শিল্পের কাঁচামালের দাম বেড়েছে। এটা ব্যয়ের ওপর চাপ তৈরি করছে। এটা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের ওপর একটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। তাই আমি মনে করি, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা খুবই জরুরি। একটি মিশ্র অর্থনৈতিক নীতি গ্রহণ করতে হবে। মুদ্রা ও রাজস্বনীতিতে ভারসাম্য আনতে হবে। ঋণপ্রবাহ যদি ১২-১৪ শতাংশের মধ্যে হয়, তাহলে ঠিক আছে। রাজস্ব ঘাটতি জিডিপির ৫ শতাংশ, এটাও ঠিক আছে। খরচ বাড়ার ফলে কিছু নেতিবাচক প্রভাব তো থাকবেই। তবে সরকার যে ভর্তুকি দিয়ে সব আটকে রাখবে, এটা সম্ভব নয়।
করোনার ক্ষত না কাটতেই জ্বালানির দাম বাড়ানো কতটা ঠিক হলো?
ড. সাদিক আহমেদ: ডিজেলে সরকারের ভর্তুকি ছিল। বৈশ্বিক দাম বাড়ার ফলে সরকার যে সমন্বয় করছে, এটা ঠিকই আছে। তবে আমি মনে করি, দাম সমন্বয়ের বিষয়টির একটি পদ্ধতিগত সংস্কার প্রয়োজন। অ্যাডহক বেসিসে সরকার কেন দাম নির্ধারণ করবে? ভারতও কিন্তু সরকারের হাতে রাখেনি। এটার নিয়ন্ত্রণ যদি বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়, জ্বালানি ও অর্থ মন্ত্রণালয় মতামত দেবে। তবে মূল বিষয়টি বিইআরসি দেখভাল করবে। চাহিদা ও সরবরাহের ভিত্তিতে দাম নির্ধারিত হবে। এভাবে করলে দাম নিয়ে প্রশ্ন আসবে না। সরকার প্রয়োজন মনে করলে ভ্যাট, ট্যাক্স বা শুল্ক কমিয়ে দিতে পারে। ট্যাক্স পলিসি দিয়ে এটা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সুতরাং আমি মনে করি, পণ্যমূল্য বা জ্বালানি তেলের দাম সরকারের হাত থেকে ছেড়ে দিতে হবে।
সরকারের অ্যাডহক ভিত্তিতে দাম নির্ধারণ কতটা যৌক্তিক?
ড. সাদিক আহমেদ: যদি বাজারভিত্তিক হয়, তাহলে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়লে এখানেও বাড়বে, দাম কমলে এখানেও কমবে। এটা হলো সবচেয়ে উত্তম নীতি। এ সিস্টেম তো আমাদের নেই। নেই বলেই এটাকে প্রশাসনিক দাম বলা হচ্ছে। যেহেতু এটি স্ট্র্যাটেজিক পণ্য, তাই পণ্যটির দাম অতিরিক্ত বেড়ে গেলে সরকার ট্যাক্স পলিসি দিয়ে হস্তক্ষেপ করবে। সার্বিকভাবে আমি মনে করি, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দামের যে চাপ, তা আমাদের সহ্য করতে হবে।
করোনায় দারিদ্র্য বাড়ছে বলা হচ্ছে। এটা কমানোর জন্য করণীয় কী হতে পারে?
ড. সাদিক আহমেদ: এটা ঠিক যে, সময়ের পরিক্রমায় দারিদ্র্য কমেছে, জিডিপি বেড়েছে; তবে একই সঙ্গে আয়বৈষম্যও বেড়েছে। আমরা জানি, ২০ শতাংশের বেশি দরিদ্র মানুষ রয়েছে। কোভিডের ফলে এই হার কিছুটা বেড়েছে। এ ধরনের আয়বৈষম্য কমানোর জন্য সামাজিক সুরক্ষা কৌশল নেওয়া হয়। বাংলাদেশেও সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি আছে। তবে সম্পদের সীমাবদ্ধতার জন্য এটা কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় হচ্ছে না। এটাকে ব্যাপক পরিসরে করতে হবে। এ জন্য সরকারকে করের ওপর জোর দিতে হবে। আমি মনে করি, বাংলাদেশের কর জিডিপি অনুপাত ৯ শতাংশকে বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। মাথাপিছু আয় আড়াই হাজার ডলার ছাড়িয়ে গেছে। এতেই বোঝা যায়, আমাদের সক্ষমতা বেড়েছে। কর সেভাবে বাড়েনি। করব্যবস্থায় একটা সংস্কার এনে কিছু সম্পদ স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষায় বিনিয়োগ করা যাবে। অবশ্যই সংস্কারের জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রয়োজন। তার পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারও করতে হবে।
দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী বা ধনীরা সেরা করদাতার তালিকায় নেই কেন?
ড. সাদিক আহমেদ: এ জন্যই সংস্কারের কথা বলছি। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো ভলান্টারি কমপ্লায়েন্স। এটা ছাড়া এনবিআরের লোকজন পাঠিয়ে ধরাধরি করে হবে না। করব্যবস্থা সহজ করতে হবে। ভলান্টারিভাবে আয় থেকে কর জমা হবে। এনবিআর পরে সিলেকটিভ অডিট করবে। সবার ফাইল দেখার প্রয়োজন নেই। আমরা তো জানি, বেশি আয়ের মানুষ কোথায় আছে। আমরা যদি মনে করি, ওঁদের কর ঠিকমতো আসছে না, সেখানে অডিট করা যায়।
বৈশ্বিক যেসব উত্তম চর্চা আছে, সেগুলো আমরা কেন করছি না?
ড. সাদিক আহমেদ: আমরা বলছি যে, করনীতি এবং কর আদায় দুটোকে আলাদা করে দিতে হবে। কর প্রশাসনকে আধুনিক করতে হলে সবকিছু কম্পিউটারাইজড করতে হবে। অনলাইনে যেন রিটার্ন দিতে পারে, সে ব্যবস্থা করতে হবে। টার্গেট করে সিলেকটিভ ও প্রোডাকটিভ অডিট করতে হবে। একটা কম্পিউটারাইজড মডেল থাকবে যে, এই ক্রাইটেরিয়া থাকলে এ ধরনের অডিট করা যাবে। আমি মনে করি, দৃশ্যমান উচ্চবিত্তদের করের বিষয়টি আগে দেখা যেতে পারে।
করোনায় দারিদ্র্যের হার বেড়েছে শোনা গেলেও সরকার বলছে কমছে। আপনি কী বলেন?
ড. সাদিক আহমেদ: আমাদের কাছে দারিদ্র্যের সঠিক তথ্য নেই। ধারণা থেকে যেটা বলা যায়, কোভিডের আগে আমাদের দারিদ্র্যের হার নেমে এসেছিল ১৯ শতাংশে। দারিদ্র্য কিসের ওপর নির্ভর করে? প্রবৃদ্ধি, আয়, রেমিট্যান্স, কর্মসংস্থানের ওপর। বাংলাদেশে কোভিডের ফলে প্রবৃদ্ধি কিছুটা কমেছে। কিন্তু নেতিবাচক তো হয়নি। আর রেমিট্যান্স তো ৩০ শতাংশের মতো বেড়েছে। রেমিট্যান্স বেড়েছে, প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক হয়নি, রপ্তানিও ভালো ছিল। সুতরাং দারিদ্র্য বাড়ার কথা নয়। সাময়িকভাবে যদিও কোভিড শুরুর দিকে দারিদ্র্যের হার কিছুটা বেড়েছিল, তবে বছরভিত্তিক হিসাবে তা খুব বাড়েনি বলে আমার ধারণা।
এত কিছুর মধ্যেও অর্থনীতির জন্য কী কী চ্যালেঞ্জ দেখছেন?
ড. সাদিক আহমেদ: আমরা অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছি। সেখানে প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন করা হয়েছে সাড়ে ৮ বা ৯ শতাংশ। ২০৩১ সালের মধ্যে আমরা উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ হয়ে যাব। অতি দারিদ্র্য শূন্য হয়ে যাবে। ২০৪১ সালে আমরা উচ্চ আয়ের দেশ হব—সরকারের এসব লক্ষ্যমাত্রা কোভিডের কারণে কিছুটা পিছিয়ে গেছে। প্রবৃদ্ধি কমেছে, দারিদ্র্য যেভাবে কমার কথা, কমেনি। সুতরাং প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন অর্জনে অনেক প্রচেষ্টা চালাতে হবে। বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। অবকাঠামো, দারিদ্র্য বিমোচনে বরাদ্দ বাড়াতে হবে, কর ব্যবস্থাপনায় সংস্কার আনতে হবে। এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের প্রস্তুতি নিতে হবে। কর্মসংস্থান বাড়ানোও একটা বড় চ্যালেঞ্জ। তবে ৫-৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি আমরা এমনিতেই অর্জন করতে পারব। কিন্তু যদি এটাকে ৮-৯ শতাংশে নিতে হয়, তাহলে আমাদের রিফর্ম করতেই হবে।
বিনিয়োগ লাগবে। কিন্তু পরিবেশ কতটা অনুকূলে আছে?
ড. সাদিক আহমেদ: বিনিয়োগে সবচেয়ে বড় বাধা ট্রানজেকশন কস্ট। দেখা যায়, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সংযোগ সহজে পাওয়া যায় না। বাংলাদেশে ব্যাংক ক্রাপসি বা কন্টাক্ট এনফোর্সমেন্টের আইনগত ব্যবস্থার প্রচুর প্রশ্ন রয়েছে। বিনিয়োগ অনুমোদন বা এর প্রক্রিয়া অনেক দীর্ঘসূত্র, জমি পেতে সমস্যা আছে—এ রকম অনেক সমস্যা আছে। কোর্টের সমস্যা। কর দিতে জটিলতা। এসব ইস্যু চিহ্নিত হয়েছে এবং তা সরকারও জানে। সরকার যদি এগুলোর সমাধান করতে পারে, তাহলে নিঃসন্দেহে বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়বে। বাংলাদেশ অত্যন্ত লাভজনক গন্তব্য। এখন যদি জরুরি সংস্কারগুলো করা যায়, ট্রেড প্রোটেকশন কমিয়ে এফডিআই নিয়ে আসা, প্রযুক্তি সংযোজন বাড়ানো, ফ্রি ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট, মুদ্রার বিনিময় হারে নজর দেওয়া যায়, তাহলে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার আরও সহজ হবে। সর্বোপরি জলবায়ু পরিবর্তনের যে ঝুঁকি, সেটা দক্ষতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে। ফসিল ফুয়েলের ব্যবহার কমাতে হবে।

অর্থনীতির নানান বিষয়ে অর্থনীতিবিদ ড. সাদিক আহমেদ আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সহকারী সম্পাদক ফারুক মেহেদী।
করোনার ধাক্কায় বিপর্যস্ত হয়েছে বিশ্ব অর্থনীতি। বাংলাদেশও কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
ড. সাদিক আহমেদ: কোভিডের আগপর্যন্ত অর্থনীতি ভালো চলছিল। জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার অনেক উঁচুতে ছিল। অন্যতম উদীয়মান অর্থনীতি বলা হচ্ছিল বাংলাদেশকে। মানবসম্পদসহ সব সূচকই ইতিবাচক ছিল। কোভিড আসার পর জিডিপি প্রবৃদ্ধি, রপ্তানি, দারিদ্র্যের ওপর একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ল। এটা একটা বৈশ্বিক সংকট ছিল। এতে তুলনামূলকভাবে বাংলাদেশের কম ক্ষতি হয়। বিবিএস ২০১৯-২০ অর্থবছরে বলেছে, সাড়ে ৩ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। বৈশ্বিক তুলনায় এটা ভালো। ভারতে নেতিবাচক হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভিয়েতনামে কমেছে। একপর্যায়ে সবকিছু খুলে দেওয়ায় ক্ষতির মাত্রাটা কমেছে। জিডিপিও বাড়ছে। বিবিএস ২০২০-২১ অর্থবছরে সাড়ে ৫ শতাংশ অর্জিত হওয়ার কথা বলছে। রপ্তানি বেশ ভালোভাবেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। সুতরাং অর্থনৈতিক কার্যক্রম বলা যেতে পারে ভালোর দিকে। রেমিট্যান্স আগে ভালো ছিল, তবে কিছুদিন ধরে একটু নেতিবাচক। এটা প্রত্যাশিত ছিল।
এমন পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সরকারের নীতি-কৌশল কেমন হওয়া উচিত?
ড. সাদিক আহমেদ: বেসরকারি বিনিয়োগ কিছুটা ফিরেছে। যতটা হওয়া উচিত, সেটা হয়নি। আর সাপ্লাই চেইনে যে সমস্যাটা দেখা যাচ্ছে, সেটা হলো চীন, ইউরোপ এবং আমেরিকায়ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ঠিকমতো হচ্ছে না। বৈশ্বিকভাবে পণ্যমূল্য বাড়ছে। জ্বালানি তেলের দাম অনেক বেড়েছে। নির্মাণসামগ্রী ও শিল্পের কাঁচামালের দাম বেড়েছে। এটা ব্যয়ের ওপর চাপ তৈরি করছে। এটা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের ওপর একটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। তাই আমি মনে করি, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা খুবই জরুরি। একটি মিশ্র অর্থনৈতিক নীতি গ্রহণ করতে হবে। মুদ্রা ও রাজস্বনীতিতে ভারসাম্য আনতে হবে। ঋণপ্রবাহ যদি ১২-১৪ শতাংশের মধ্যে হয়, তাহলে ঠিক আছে। রাজস্ব ঘাটতি জিডিপির ৫ শতাংশ, এটাও ঠিক আছে। খরচ বাড়ার ফলে কিছু নেতিবাচক প্রভাব তো থাকবেই। তবে সরকার যে ভর্তুকি দিয়ে সব আটকে রাখবে, এটা সম্ভব নয়।
করোনার ক্ষত না কাটতেই জ্বালানির দাম বাড়ানো কতটা ঠিক হলো?
ড. সাদিক আহমেদ: ডিজেলে সরকারের ভর্তুকি ছিল। বৈশ্বিক দাম বাড়ার ফলে সরকার যে সমন্বয় করছে, এটা ঠিকই আছে। তবে আমি মনে করি, দাম সমন্বয়ের বিষয়টির একটি পদ্ধতিগত সংস্কার প্রয়োজন। অ্যাডহক বেসিসে সরকার কেন দাম নির্ধারণ করবে? ভারতও কিন্তু সরকারের হাতে রাখেনি। এটার নিয়ন্ত্রণ যদি বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়, জ্বালানি ও অর্থ মন্ত্রণালয় মতামত দেবে। তবে মূল বিষয়টি বিইআরসি দেখভাল করবে। চাহিদা ও সরবরাহের ভিত্তিতে দাম নির্ধারিত হবে। এভাবে করলে দাম নিয়ে প্রশ্ন আসবে না। সরকার প্রয়োজন মনে করলে ভ্যাট, ট্যাক্স বা শুল্ক কমিয়ে দিতে পারে। ট্যাক্স পলিসি দিয়ে এটা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সুতরাং আমি মনে করি, পণ্যমূল্য বা জ্বালানি তেলের দাম সরকারের হাত থেকে ছেড়ে দিতে হবে।
সরকারের অ্যাডহক ভিত্তিতে দাম নির্ধারণ কতটা যৌক্তিক?
ড. সাদিক আহমেদ: যদি বাজারভিত্তিক হয়, তাহলে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়লে এখানেও বাড়বে, দাম কমলে এখানেও কমবে। এটা হলো সবচেয়ে উত্তম নীতি। এ সিস্টেম তো আমাদের নেই। নেই বলেই এটাকে প্রশাসনিক দাম বলা হচ্ছে। যেহেতু এটি স্ট্র্যাটেজিক পণ্য, তাই পণ্যটির দাম অতিরিক্ত বেড়ে গেলে সরকার ট্যাক্স পলিসি দিয়ে হস্তক্ষেপ করবে। সার্বিকভাবে আমি মনে করি, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দামের যে চাপ, তা আমাদের সহ্য করতে হবে।
করোনায় দারিদ্র্য বাড়ছে বলা হচ্ছে। এটা কমানোর জন্য করণীয় কী হতে পারে?
ড. সাদিক আহমেদ: এটা ঠিক যে, সময়ের পরিক্রমায় দারিদ্র্য কমেছে, জিডিপি বেড়েছে; তবে একই সঙ্গে আয়বৈষম্যও বেড়েছে। আমরা জানি, ২০ শতাংশের বেশি দরিদ্র মানুষ রয়েছে। কোভিডের ফলে এই হার কিছুটা বেড়েছে। এ ধরনের আয়বৈষম্য কমানোর জন্য সামাজিক সুরক্ষা কৌশল নেওয়া হয়। বাংলাদেশেও সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি আছে। তবে সম্পদের সীমাবদ্ধতার জন্য এটা কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় হচ্ছে না। এটাকে ব্যাপক পরিসরে করতে হবে। এ জন্য সরকারকে করের ওপর জোর দিতে হবে। আমি মনে করি, বাংলাদেশের কর জিডিপি অনুপাত ৯ শতাংশকে বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। মাথাপিছু আয় আড়াই হাজার ডলার ছাড়িয়ে গেছে। এতেই বোঝা যায়, আমাদের সক্ষমতা বেড়েছে। কর সেভাবে বাড়েনি। করব্যবস্থায় একটা সংস্কার এনে কিছু সম্পদ স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষায় বিনিয়োগ করা যাবে। অবশ্যই সংস্কারের জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রয়োজন। তার পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারও করতে হবে।
দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী বা ধনীরা সেরা করদাতার তালিকায় নেই কেন?
ড. সাদিক আহমেদ: এ জন্যই সংস্কারের কথা বলছি। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো ভলান্টারি কমপ্লায়েন্স। এটা ছাড়া এনবিআরের লোকজন পাঠিয়ে ধরাধরি করে হবে না। করব্যবস্থা সহজ করতে হবে। ভলান্টারিভাবে আয় থেকে কর জমা হবে। এনবিআর পরে সিলেকটিভ অডিট করবে। সবার ফাইল দেখার প্রয়োজন নেই। আমরা তো জানি, বেশি আয়ের মানুষ কোথায় আছে। আমরা যদি মনে করি, ওঁদের কর ঠিকমতো আসছে না, সেখানে অডিট করা যায়।
বৈশ্বিক যেসব উত্তম চর্চা আছে, সেগুলো আমরা কেন করছি না?
ড. সাদিক আহমেদ: আমরা বলছি যে, করনীতি এবং কর আদায় দুটোকে আলাদা করে দিতে হবে। কর প্রশাসনকে আধুনিক করতে হলে সবকিছু কম্পিউটারাইজড করতে হবে। অনলাইনে যেন রিটার্ন দিতে পারে, সে ব্যবস্থা করতে হবে। টার্গেট করে সিলেকটিভ ও প্রোডাকটিভ অডিট করতে হবে। একটা কম্পিউটারাইজড মডেল থাকবে যে, এই ক্রাইটেরিয়া থাকলে এ ধরনের অডিট করা যাবে। আমি মনে করি, দৃশ্যমান উচ্চবিত্তদের করের বিষয়টি আগে দেখা যেতে পারে।
করোনায় দারিদ্র্যের হার বেড়েছে শোনা গেলেও সরকার বলছে কমছে। আপনি কী বলেন?
ড. সাদিক আহমেদ: আমাদের কাছে দারিদ্র্যের সঠিক তথ্য নেই। ধারণা থেকে যেটা বলা যায়, কোভিডের আগে আমাদের দারিদ্র্যের হার নেমে এসেছিল ১৯ শতাংশে। দারিদ্র্য কিসের ওপর নির্ভর করে? প্রবৃদ্ধি, আয়, রেমিট্যান্স, কর্মসংস্থানের ওপর। বাংলাদেশে কোভিডের ফলে প্রবৃদ্ধি কিছুটা কমেছে। কিন্তু নেতিবাচক তো হয়নি। আর রেমিট্যান্স তো ৩০ শতাংশের মতো বেড়েছে। রেমিট্যান্স বেড়েছে, প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক হয়নি, রপ্তানিও ভালো ছিল। সুতরাং দারিদ্র্য বাড়ার কথা নয়। সাময়িকভাবে যদিও কোভিড শুরুর দিকে দারিদ্র্যের হার কিছুটা বেড়েছিল, তবে বছরভিত্তিক হিসাবে তা খুব বাড়েনি বলে আমার ধারণা।
এত কিছুর মধ্যেও অর্থনীতির জন্য কী কী চ্যালেঞ্জ দেখছেন?
ড. সাদিক আহমেদ: আমরা অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছি। সেখানে প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন করা হয়েছে সাড়ে ৮ বা ৯ শতাংশ। ২০৩১ সালের মধ্যে আমরা উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ হয়ে যাব। অতি দারিদ্র্য শূন্য হয়ে যাবে। ২০৪১ সালে আমরা উচ্চ আয়ের দেশ হব—সরকারের এসব লক্ষ্যমাত্রা কোভিডের কারণে কিছুটা পিছিয়ে গেছে। প্রবৃদ্ধি কমেছে, দারিদ্র্য যেভাবে কমার কথা, কমেনি। সুতরাং প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন অর্জনে অনেক প্রচেষ্টা চালাতে হবে। বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। অবকাঠামো, দারিদ্র্য বিমোচনে বরাদ্দ বাড়াতে হবে, কর ব্যবস্থাপনায় সংস্কার আনতে হবে। এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের প্রস্তুতি নিতে হবে। কর্মসংস্থান বাড়ানোও একটা বড় চ্যালেঞ্জ। তবে ৫-৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি আমরা এমনিতেই অর্জন করতে পারব। কিন্তু যদি এটাকে ৮-৯ শতাংশে নিতে হয়, তাহলে আমাদের রিফর্ম করতেই হবে।
বিনিয়োগ লাগবে। কিন্তু পরিবেশ কতটা অনুকূলে আছে?
ড. সাদিক আহমেদ: বিনিয়োগে সবচেয়ে বড় বাধা ট্রানজেকশন কস্ট। দেখা যায়, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সংযোগ সহজে পাওয়া যায় না। বাংলাদেশে ব্যাংক ক্রাপসি বা কন্টাক্ট এনফোর্সমেন্টের আইনগত ব্যবস্থার প্রচুর প্রশ্ন রয়েছে। বিনিয়োগ অনুমোদন বা এর প্রক্রিয়া অনেক দীর্ঘসূত্র, জমি পেতে সমস্যা আছে—এ রকম অনেক সমস্যা আছে। কোর্টের সমস্যা। কর দিতে জটিলতা। এসব ইস্যু চিহ্নিত হয়েছে এবং তা সরকারও জানে। সরকার যদি এগুলোর সমাধান করতে পারে, তাহলে নিঃসন্দেহে বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়বে। বাংলাদেশ অত্যন্ত লাভজনক গন্তব্য। এখন যদি জরুরি সংস্কারগুলো করা যায়, ট্রেড প্রোটেকশন কমিয়ে এফডিআই নিয়ে আসা, প্রযুক্তি সংযোজন বাড়ানো, ফ্রি ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট, মুদ্রার বিনিময় হারে নজর দেওয়া যায়, তাহলে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার আরও সহজ হবে। সর্বোপরি জলবায়ু পরিবর্তনের যে ঝুঁকি, সেটা দক্ষতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে। ফসিল ফুয়েলের ব্যবহার কমাতে হবে।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

অর্থনীতির নানান বিষয়ে অর্থনীতিবিদ ড. সাদিক আহমেদ আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সহকারী সম্পাদক ফারুক মেহেদী।
১২ ডিসেম্বর ২০২১
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

অর্থনীতির নানান বিষয়ে অর্থনীতিবিদ ড. সাদিক আহমেদ আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সহকারী সম্পাদক ফারুক মেহেদী।
১২ ডিসেম্বর ২০২১
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

অর্থনীতির নানান বিষয়ে অর্থনীতিবিদ ড. সাদিক আহমেদ আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সহকারী সম্পাদক ফারুক মেহেদী।
১২ ডিসেম্বর ২০২১
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

অর্থনীতির নানান বিষয়ে অর্থনীতিবিদ ড. সাদিক আহমেদ আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সহকারী সম্পাদক ফারুক মেহেদী।
১২ ডিসেম্বর ২০২১
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫