ফারুক মেহেদী, ঢাকা
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। এর নিষ্ঠুর আঘাত পড়ছে এখন শিল্পোৎপাদনে। বাধ্য হয়ে দিনের বেশির ভাগ সময় বন্ধ রাখতে হচ্ছে রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক, বস্ত্র খাতসহ অর্থনীতির প্রাণ বলে পরিচিত বিভিন্ন খাতের শিল্পকারখানা। লোকসানে পড়ে উদ্যোক্তাদের ঋণখেলাপি হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে; পাশাপাশি কাঙ্ক্ষিত উৎপাদন না হওয়ায় লোকসান ঠেকাতে কর্মী ছাঁটাইয়ের মতো পরিস্থিতিও তৈরি হচ্ছে। সব মিলিয়ে একমাত্র ডলার নিয়েই উদ্ভূত সমস্যাই বাংলাদেশের পুরো অর্থনীতিকে রীতিমতো তালগোল পাকিয়ে দিয়েছে। জটিল এ পরিস্থিতিতে খোদ সরকারের কাছেও এর সহজ সমাধান নেই। এতে ব্যবসায়ী উদ্যোক্তাদের মধ্যে বাড়ছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা।
কয়েক দিন ধরে দেশের বেশ কয়েকজন শীর্ষ ব্যবসায়ী-শিল্পোদ্যোক্তার সঙ্গে বিদ্যুৎ-জ্বালানি সংকটের তীব্রতা, এর নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে আলাপ এবং অর্থনীতির নানান সূচকের গতি-প্রকৃতি পর্যালোচনা করে জানা যায়, দেশ এখন কঠিন বিদ্যুৎ ও গ্যাস-সংকট মোকাবিলা করছে। উৎপাদনের সক্ষমতা থাকলেও পর্যাপ্ত গ্যাস না থাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদন কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় করা যাচ্ছে না। এতে লোডশেডিং ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সরকার যে ঘোষণা দিয়েছে, বাস্তবে তার চেয়েও বেশি হারে লোডশেডিং করতে হচ্ছে।
রপ্তানিমুখী শিল্পের অন্যতম কাঁচামাল সরবরাহকারী বস্ত্র খাতের উদ্যোক্তারা জানান, তাঁদের ৯০ শতাংশ কারখানাই কমবেশি গ্যাস-সংকটে ধুঁকছে। এগুলোর মধ্যে ৬০ শতাংশ কারখানা দিনের ১২ ঘণ্টা বন্ধ রাখতে হচ্ছে। বাকি যেসব কারখানা রয়েছে, সেগুলোও নিবু নিবু করে চলছে।
বস্ত্র খাতের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জ্বালানি সংকটে যেভাবে আমাদের কারখানাগুলো বসে থাকছে, তাতে শিল্পের উৎপাদন খরচ বাড়ছে। এতে বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা হারানোর ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। আমাদের পুঁজি হারাব, আমাদের প্রতিটি কারখানার নগদ অর্থের সংকট বাড়বে। শুধু তা-ই নয়; উদ্যোক্তারা ব্যাংকের কাছে ঋণখেলাপি হয়ে যাবে।’
খাতসংশ্লিষ্টরা জানান, বস্ত্র খাতে দ্রুত নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ করা না হলে অনেক শিল্পকারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। তাতে বিপুলসংখ্যক শ্রমিক চাকরি হারাবেন। ব্যাংক খাতও পুঁজি লগ্নিকারী হিসেবে ঝুঁকিতে পড়তে পারে।
বিদ্যুৎ-জ্বালানি সংকটে বেসরকারি খাত কতটা ধুঁকছে, তার একটি চিত্র গত রোববার বিসিআইয়ের একটি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীর সামনে তুলে ধরেছেন দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী-শিল্পোদ্যোক্তারা। ওই বৈঠকে তাঁরা জানান, গ্যাস ও বিদ্যুৎ-সংকটের কারণে গত কয়েক মাসে ১০ থেকে ৩৫ শতাংশ উৎপাদন খরচ বেড়েছে।
এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি জসিম উদ্দিন জানান, তাঁর নিজের প্রতিষ্ঠানই জ্বালানি সংকটে সাত-আট ঘণ্টা বন্ধ রাখতে হচ্ছে। হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যাংকঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করে এখন ডুবে যাওয়ার অবস্থা তৈরি হয়েছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ও দেশের অন্যতম শীর্ষ রপ্তানিকারক হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ নিজের স্পিনিং মিল দিনের বেলা বন্ধ রাখার কথা জানিয়ে বলেন, এভাবে চলতে থাকলে কর্মী ছাঁটাই করা ছাড়া উপায় থাকবে না। বৈঠকে বিভিন্ন খাতের উদ্যোক্তারা কমবেশি প্রায় সবাই উৎপাদন কমে যাওয়া, লোকসান বাড়া এবং ক্রয়াদেশ কমে যাওয়ার আশঙ্কার কথা তুলে ধরেন।
এ সময় নিট পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা জানান, জ্বালানি সংকটে এ খাতের উৎপাদন কমেছে প্রায় ৪০ শতাংশ। ব্যবসায়ীরা সংকট কাটাতে প্রয়োজনে বিভিন্ন খাতে সরবরাহ কমিয়ে শিল্পে গ্যাস সরবরাহ বাড়ানোর পক্ষে, এমনকি প্রয়োজনে স্পট মার্কেট থেকে বেশি দামে হলেও জ্বালানি কেনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
জ্বালানি উপদেষ্টা এসব আশঙ্কার কথা শুনেও তেমন আশ্বাস দিতে পারেননি উদ্যোক্তাদের। তিনি বরং দিনের বেলা বিদ্যুৎ না দিয়ে লোডশেডিং বাড়ানোর পক্ষে কথা বলেন। তিনি জানান, আগামী ছয় মাসের জন্য ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার খরচ করে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কেনা ব্যয়বহুল হবে। এ সময়ে রিজার্ভের ওপর বাড়তি চাপ দেওয়া ঠিক হবে না বলেই তিনি এমন মন্তব্য করেন।
বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তারা জানান, সরকারের রিজার্ভ যদি ৩৫ বিলিয়ন ডলার থেকে থাকে, তাহলে মাত্র ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার খরচ করা কঠিন কিছু নয়। তা ছাড়া পাইপলাইনে আইএমএফের সাড়ে চার বিলিয়ন ডলারের ঋণ পাওয়ার বিষয়টিও ইতিবাচক অবস্থায় রয়েছে। রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় কমলেও সেখান থেকেও বৈদেশিক মুদ্রা আসবে।
নিট পোশাক খাতের সংগঠন বিকেএমইএর সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ পরিবেশবান্ধব কারখানা প্লামি ফ্যাশনসের উদ্যোক্তা ফজলুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, গ্যাস ও বিদ্যুৎ-সংকট যতই তীব্র হচ্ছে, ততই শিল্পের অবস্থা ভয়াবহ হচ্ছে।
কারখানাগুলো চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। যারা পারছে, তারা বেশি খরচ করে চালাচ্ছে, যারা পারছে না তারা কঠিন বিপাকে আছে। এমনিতেই ক্রয়াদেশ কমছে। এখন বিদ্যুৎ-জ্বালানি সংকটে উৎপাদন মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে। এতে ক্রয়াদেশ আরও কমে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।
উদ্যোক্তাদের কেউ কেউ বলছেন, ধানমন্ডি আর গুলশানে সরকারের যেসব পরিত্যক্ত সম্পত্তি রয়েছে, সেগুলো বিক্রি করলে অন্তত ১০ হাজার কোটি টাকা আসবে, সেটা সরকার খরচ করতে পারবে। এ ছাড়া খেলাপি ঋণ রয়েছে এক লাখ কোটি টাকার বেশি, সেটা যদি কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে আদায় করা যায় বা খেলাপিদের বন্ধকী সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা আদায় করা হয়, তাহলেও একটা বড় অঙ্কের টাকা আসবে।
বিজিএমইএর সাবেক প্রেসিডেন্ট ও এনভয় গ্রুপের চেয়ারম্যান কুতুবউদ্দিন আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘টেক্সটাইলে আমরা আসলে অর্ধেক সময় গ্যাস পাচ্ছি। তার মানে, আমাদের উৎপাদন অর্ধেক কমে গেছে। তাহলে বলতে পারেন, রপ্তানিও কমেছে অর্ধেক। আগে থেকেই রপ্তানি কমছে। এখন সক্ষমতা অনুযায়ী উৎপাদন করতে না পারায় নতুন করে রপ্তানি কমছে। আর পোশাক খাতেও তিন-চার ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় ডিজেল দিয়ে উৎপাদন চালিয়ে নেওয়ায় খরচ বেড়ে যাচ্ছে। তখন মুনাফা করবে কীভাবে, এটা একটা প্রশ্ন। এখন এলএনজি আমদানি করে শিল্প টিকিয়ে রাখা ছাড়া কোনো রাস্তা নেই। তিনি জানান, রিজার্ভে হাত না দিয়েও বিকল্প উপায়ে সরকার টাকা সংগ্রহ করতে পারে। আর সেটা দিয়ে ডলারের সংস্থান করা যাবে।
খাতসংশ্লিষ্টরা জানান, সরকার অতিমাত্রায় সতর্ক হয়ে ডলার বাঁচাতে গিয়ে শিল্পকারখানায় নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস-বিদ্যুৎ না দিতে পারলে পুরো অর্থনীতি বসে পড়তে পারে। লোকসানে পড়ে একের পর এক কারখানা বন্ধ হয়ে গেলে মানুষ চাকরি হারাবে। বেকারত্ব বাড়বে। সরকারও কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় রাজস্ব পাবে না। সরকারের আয় না হলে বাজেট বাস্তবায়ন তথা সরকারের নিজের খরচ মেটানোও কঠিন হয়ে পড়বে। আর এসবের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে পুরো অর্থনীতিতে। তখন সেটা সামাল দেওয়া আরও কঠিন হয়ে পড়বে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। এর নিষ্ঠুর আঘাত পড়ছে এখন শিল্পোৎপাদনে। বাধ্য হয়ে দিনের বেশির ভাগ সময় বন্ধ রাখতে হচ্ছে রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক, বস্ত্র খাতসহ অর্থনীতির প্রাণ বলে পরিচিত বিভিন্ন খাতের শিল্পকারখানা। লোকসানে পড়ে উদ্যোক্তাদের ঋণখেলাপি হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে; পাশাপাশি কাঙ্ক্ষিত উৎপাদন না হওয়ায় লোকসান ঠেকাতে কর্মী ছাঁটাইয়ের মতো পরিস্থিতিও তৈরি হচ্ছে। সব মিলিয়ে একমাত্র ডলার নিয়েই উদ্ভূত সমস্যাই বাংলাদেশের পুরো অর্থনীতিকে রীতিমতো তালগোল পাকিয়ে দিয়েছে। জটিল এ পরিস্থিতিতে খোদ সরকারের কাছেও এর সহজ সমাধান নেই। এতে ব্যবসায়ী উদ্যোক্তাদের মধ্যে বাড়ছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা।
কয়েক দিন ধরে দেশের বেশ কয়েকজন শীর্ষ ব্যবসায়ী-শিল্পোদ্যোক্তার সঙ্গে বিদ্যুৎ-জ্বালানি সংকটের তীব্রতা, এর নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে আলাপ এবং অর্থনীতির নানান সূচকের গতি-প্রকৃতি পর্যালোচনা করে জানা যায়, দেশ এখন কঠিন বিদ্যুৎ ও গ্যাস-সংকট মোকাবিলা করছে। উৎপাদনের সক্ষমতা থাকলেও পর্যাপ্ত গ্যাস না থাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদন কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় করা যাচ্ছে না। এতে লোডশেডিং ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সরকার যে ঘোষণা দিয়েছে, বাস্তবে তার চেয়েও বেশি হারে লোডশেডিং করতে হচ্ছে।
রপ্তানিমুখী শিল্পের অন্যতম কাঁচামাল সরবরাহকারী বস্ত্র খাতের উদ্যোক্তারা জানান, তাঁদের ৯০ শতাংশ কারখানাই কমবেশি গ্যাস-সংকটে ধুঁকছে। এগুলোর মধ্যে ৬০ শতাংশ কারখানা দিনের ১২ ঘণ্টা বন্ধ রাখতে হচ্ছে। বাকি যেসব কারখানা রয়েছে, সেগুলোও নিবু নিবু করে চলছে।
বস্ত্র খাতের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জ্বালানি সংকটে যেভাবে আমাদের কারখানাগুলো বসে থাকছে, তাতে শিল্পের উৎপাদন খরচ বাড়ছে। এতে বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা হারানোর ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। আমাদের পুঁজি হারাব, আমাদের প্রতিটি কারখানার নগদ অর্থের সংকট বাড়বে। শুধু তা-ই নয়; উদ্যোক্তারা ব্যাংকের কাছে ঋণখেলাপি হয়ে যাবে।’
খাতসংশ্লিষ্টরা জানান, বস্ত্র খাতে দ্রুত নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ করা না হলে অনেক শিল্পকারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। তাতে বিপুলসংখ্যক শ্রমিক চাকরি হারাবেন। ব্যাংক খাতও পুঁজি লগ্নিকারী হিসেবে ঝুঁকিতে পড়তে পারে।
বিদ্যুৎ-জ্বালানি সংকটে বেসরকারি খাত কতটা ধুঁকছে, তার একটি চিত্র গত রোববার বিসিআইয়ের একটি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীর সামনে তুলে ধরেছেন দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী-শিল্পোদ্যোক্তারা। ওই বৈঠকে তাঁরা জানান, গ্যাস ও বিদ্যুৎ-সংকটের কারণে গত কয়েক মাসে ১০ থেকে ৩৫ শতাংশ উৎপাদন খরচ বেড়েছে।
এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি জসিম উদ্দিন জানান, তাঁর নিজের প্রতিষ্ঠানই জ্বালানি সংকটে সাত-আট ঘণ্টা বন্ধ রাখতে হচ্ছে। হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যাংকঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করে এখন ডুবে যাওয়ার অবস্থা তৈরি হয়েছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ও দেশের অন্যতম শীর্ষ রপ্তানিকারক হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ নিজের স্পিনিং মিল দিনের বেলা বন্ধ রাখার কথা জানিয়ে বলেন, এভাবে চলতে থাকলে কর্মী ছাঁটাই করা ছাড়া উপায় থাকবে না। বৈঠকে বিভিন্ন খাতের উদ্যোক্তারা কমবেশি প্রায় সবাই উৎপাদন কমে যাওয়া, লোকসান বাড়া এবং ক্রয়াদেশ কমে যাওয়ার আশঙ্কার কথা তুলে ধরেন।
এ সময় নিট পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা জানান, জ্বালানি সংকটে এ খাতের উৎপাদন কমেছে প্রায় ৪০ শতাংশ। ব্যবসায়ীরা সংকট কাটাতে প্রয়োজনে বিভিন্ন খাতে সরবরাহ কমিয়ে শিল্পে গ্যাস সরবরাহ বাড়ানোর পক্ষে, এমনকি প্রয়োজনে স্পট মার্কেট থেকে বেশি দামে হলেও জ্বালানি কেনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
জ্বালানি উপদেষ্টা এসব আশঙ্কার কথা শুনেও তেমন আশ্বাস দিতে পারেননি উদ্যোক্তাদের। তিনি বরং দিনের বেলা বিদ্যুৎ না দিয়ে লোডশেডিং বাড়ানোর পক্ষে কথা বলেন। তিনি জানান, আগামী ছয় মাসের জন্য ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার খরচ করে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কেনা ব্যয়বহুল হবে। এ সময়ে রিজার্ভের ওপর বাড়তি চাপ দেওয়া ঠিক হবে না বলেই তিনি এমন মন্তব্য করেন।
বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তারা জানান, সরকারের রিজার্ভ যদি ৩৫ বিলিয়ন ডলার থেকে থাকে, তাহলে মাত্র ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার খরচ করা কঠিন কিছু নয়। তা ছাড়া পাইপলাইনে আইএমএফের সাড়ে চার বিলিয়ন ডলারের ঋণ পাওয়ার বিষয়টিও ইতিবাচক অবস্থায় রয়েছে। রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় কমলেও সেখান থেকেও বৈদেশিক মুদ্রা আসবে।
নিট পোশাক খাতের সংগঠন বিকেএমইএর সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ পরিবেশবান্ধব কারখানা প্লামি ফ্যাশনসের উদ্যোক্তা ফজলুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, গ্যাস ও বিদ্যুৎ-সংকট যতই তীব্র হচ্ছে, ততই শিল্পের অবস্থা ভয়াবহ হচ্ছে।
কারখানাগুলো চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। যারা পারছে, তারা বেশি খরচ করে চালাচ্ছে, যারা পারছে না তারা কঠিন বিপাকে আছে। এমনিতেই ক্রয়াদেশ কমছে। এখন বিদ্যুৎ-জ্বালানি সংকটে উৎপাদন মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে। এতে ক্রয়াদেশ আরও কমে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।
উদ্যোক্তাদের কেউ কেউ বলছেন, ধানমন্ডি আর গুলশানে সরকারের যেসব পরিত্যক্ত সম্পত্তি রয়েছে, সেগুলো বিক্রি করলে অন্তত ১০ হাজার কোটি টাকা আসবে, সেটা সরকার খরচ করতে পারবে। এ ছাড়া খেলাপি ঋণ রয়েছে এক লাখ কোটি টাকার বেশি, সেটা যদি কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে আদায় করা যায় বা খেলাপিদের বন্ধকী সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা আদায় করা হয়, তাহলেও একটা বড় অঙ্কের টাকা আসবে।
বিজিএমইএর সাবেক প্রেসিডেন্ট ও এনভয় গ্রুপের চেয়ারম্যান কুতুবউদ্দিন আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘টেক্সটাইলে আমরা আসলে অর্ধেক সময় গ্যাস পাচ্ছি। তার মানে, আমাদের উৎপাদন অর্ধেক কমে গেছে। তাহলে বলতে পারেন, রপ্তানিও কমেছে অর্ধেক। আগে থেকেই রপ্তানি কমছে। এখন সক্ষমতা অনুযায়ী উৎপাদন করতে না পারায় নতুন করে রপ্তানি কমছে। আর পোশাক খাতেও তিন-চার ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় ডিজেল দিয়ে উৎপাদন চালিয়ে নেওয়ায় খরচ বেড়ে যাচ্ছে। তখন মুনাফা করবে কীভাবে, এটা একটা প্রশ্ন। এখন এলএনজি আমদানি করে শিল্প টিকিয়ে রাখা ছাড়া কোনো রাস্তা নেই। তিনি জানান, রিজার্ভে হাত না দিয়েও বিকল্প উপায়ে সরকার টাকা সংগ্রহ করতে পারে। আর সেটা দিয়ে ডলারের সংস্থান করা যাবে।
খাতসংশ্লিষ্টরা জানান, সরকার অতিমাত্রায় সতর্ক হয়ে ডলার বাঁচাতে গিয়ে শিল্পকারখানায় নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস-বিদ্যুৎ না দিতে পারলে পুরো অর্থনীতি বসে পড়তে পারে। লোকসানে পড়ে একের পর এক কারখানা বন্ধ হয়ে গেলে মানুষ চাকরি হারাবে। বেকারত্ব বাড়বে। সরকারও কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় রাজস্ব পাবে না। সরকারের আয় না হলে বাজেট বাস্তবায়ন তথা সরকারের নিজের খরচ মেটানোও কঠিন হয়ে পড়বে। আর এসবের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে পুরো অর্থনীতিতে। তখন সেটা সামাল দেওয়া আরও কঠিন হয়ে পড়বে।
বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ দিন আগেগাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪দেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২০ নভেম্বর ২০২৪