Ajker Patrika

অনেক খালে এখনো রয়ে গেছে বাঁধ

হুমায়ুন মাসুদ, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১৬ জুন ২০২২, ১২: ১১
অনেক খালে এখনো রয়ে গেছে বাঁধ

মেগা প্রকল্পের কাজের সুবিধার্থে খালে দেওয়া অস্থায়ী বাঁধের কারণে জলাবদ্ধতা হচ্ছে অভিযোগ এনে ওই বাঁধগুলো অপসারণের জন্য বারবার তাগাদা দিয়ে আসছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। গত ৬ এপ্রিল সমন্বয় সভায় মেয়র বর্ষার আগেই বাঁধগুলো অপসারণের জন্য সিডিএ চেয়ারম্যানকে অনুরোধ জানান। কিন্তু গত তিন মাসেও বাঁধগুলো পুরোপুরি অপসারণ করা হয়নি। এ কারণে সামান্য বৃষ্টিতেই নগরীতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের।

তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা। তারা বলছে, জলাবদ্ধতা হওয়ার মতো কোনো বাঁধ খালে নেই। দু-একটি খালে যেসব বাঁধ আছে, এগুলো পানি নিষ্কাশনে খুব বেশি সমস্যা তৈরি করছে না। এরপরও ওই সব খালের মাটি শিগগিরই সরিয়ে নেওয়া হবে। তবে সরেজমিনে অনেকগুলো খালে বাঁধ দেখা গেছে। এর মধ্যে কোনো কোনো খালে একাধিক বাঁধও রয়েছে।

৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। প্রকল্পটির অধীনে চট্টগ্রাম নগরের ৫৭টি খালের মধ্যে ৩৬টির সংস্কার ও সম্প্রসারণ কাজ চলছে। কাজের সুবিধার্থে ওই সব খালে বাঁধ দিয়ে প্রতিরোধ দেয়াল তৈরি করে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা। আর তাতেই এখন সামান্য বৃষ্টিতে নগরের নিচু এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। যদিও গত ২ জুন খালগুলো পরিদর্শন করে সিডিএ জানিয়েছে, খালে আর কোনো বাঁধ নেই।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ চলমান থাকা ২৪টি খালের অধিকাংশ খালে বাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে কোনোটিতে একটি, কোনোটিতে দুটি, এমনকি কোনো খালে তিনটি অস্থায়ী বাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাঁধ রয়েছে নগরের মহেশখালে। কাজ পুরোপুরি শেষ না হওয়ায় ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের নাছির খান খাল ও মহেশখালের সংযোগস্থল ডাল ব্রিজ এলাকায় বাঁধ আছে।

একই ওয়ার্ডের নাছির খান খাল, ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের আকমল আলী খাল, মাইট্টাল্লা খাল, শহীদ নুরুজ্জামান সড়ক খাল, বক্স আলী মুন্সী খাল, ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের গুপ্ত খালে বাঁধ রয়েছে। এ ছাড়া চাক্তাই খাল, রাজাখালী, বামনশাহী, উত্তরাখাল শীতলঝর্ণা খাল, ডোম খাল, ত্রিপুরা খাল, চশমা খাল, সুরভী খাল, মির্জাখাল, রামপুর খাল, টেকপাড়া খালসহ অধিকাংশ খালে এখনো বাঁধ আছে।

যে কারণে এখন সামান্য বৃষ্টিতে নগরের নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। সর্বশেষ গত মঙ্গল ও গতকাল বুধবারের বৃষ্টিতে নগরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে সিটি করপোরেশনের উপপ্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা মোরশেদুল আলম চৌধুরী বলেন, প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নের স্বার্থে নগরের অধিকাংশ খালে বাঁধ দিয়েছে বাস্তবায়নকারী সংস্থা। বাঁধগুলো সরিয়ে বৃষ্টির পানি চলাচলের জন্য প্রকল্প বাস্তবায়ন সংস্থা সিডিএকে বলা হলেও তারা বাঁধগুলো সরায়নি। এখনো অনেক খালে বাঁধ রয়ে গেছে। যে কারণে বৃষ্টির পানি নেমে যেতে অনেক সময় লাগছে। বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে।

বাঁধগুলো কেন সরানো হয়নি এ বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) প্রধান প্রকৌশলী হাসান বিন শামসকে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।

পরে এ বিষয়ে জানতে চাইলে জলাবদ্ধতা প্রকল্পের পরিচালক সেনাবাহিনীর ৩৪ কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ার ব্রিগেডের লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. শাহ আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, অধিকাংশ খালে এখন কোনো বাঁধ নেই। এক-দুটি খালে বাঁধ আছে, সেগুলো থাকবে। ওইটার জন্য জলাবদ্ধতা হবে না। যেগুলো আছে, ওইগুলোকে বাঁধ বলা যাবে না। খালের একপাশে মাটি ফেলে আমরা কাজ করছি। এ খালগুলোর কাজ আমরা শেষ করতে পারিনি। তারপরও বাধ্য হয়ে আমরা বাঁধগুলো খুলে দিয়েছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত