Ajker Patrika

বেহাল শতবর্ষের লাইব্রেরি

খান রফিক, বরিশাল
আপডেট : ১৮ নভেম্বর ২০২১, ১৩: ১২
বেহাল শতবর্ষের লাইব্রেরি

ঐতিহ্যবাহী বরিশাল বিএম কলেজের শত বছরের লাইব্রেরি ধুকে ধুকে চলছে। সেখানে নেই আধুনিকায়নের ছোঁয়া। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ঝুঁকিপূর্ণ রিডিং রুম ব্যবহার অনুপযোগী। তা ছাড়া নতুন বই ও পর্যাপ্ত সংবাদপত্র না রাখায় আগ্রহ হারাচ্ছেন তাঁরা।

অপরিচ্ছন্ন ও শ্রীহীন কমন রুম বিমুখ ছাত্রীরা। একই ভবনে মহাত্মা অশ্বিনী কুমার মিউজিয়াম এবং চিকিৎসা কেন্দ্র রয়েছে তালাবদ্ধ। দক্ষ জনবল না থাকায় লাইব্রেরি ভবনের কার্যক্রম অনেকাংশে অচল হয়ে পড়ছে। বেহাল এ লাইব্রেরি মাঝে মধ্যই তালাবদ্ধ থাকে। এ নিয়ে হতাশ ও ক্ষুব্ধ সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা। কলেজে কর্তৃপক্ষ অবশ্য এসব অভিযোগ অস্বীকার করে করোনার দোহাই দিয়েছেন।

গত মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় বিএম কলেজের লাইব্রেরি ভবনের রিডিং রুম ঘুরে দেখা গেছে হাতে গোনা কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী রয়েছেন। সেখানে একটিমাত্র পত্রিকা পড়ে আছে। রুমটি স্যাঁতসেঁতে ও অন্ধকার। শিক্ষার্থীরা ওপরের দিকে দেখিয়ে বললেন, পলেস্তারা খসে পড়ায় আসতেও ভয় করে।

মহসিন নামে একজন কর্মচারী থাকলেও তিনি বইয়ের নাম পড়তে জানেন না। মাঝে মাঝে তালা দিয়ে উধাও হয়ে যান তিনি। এ লাইব্রেরিতে ৫০ হাজারের মত বই থাকলেও সেগুলো সংরক্ষণের অভাব স্পষ্ট।

পাশের ছাত্রী কমনরুম থেকে বেড়িয়ে আসা কয়েক ছাত্রী জানান, তাদের কক্ষের ফার্নিচার ঘুণে ধরেছে। বাথরুমের পর্দা এত অপরিষ্কার যে তারা আসা ছেড়ে দিয়েছেন। মমতাজ বেগম নামে একজন কর্মচারী থাকলেও তাঁকে অধ্যক্ষ তার বাসভবনে নিয়ে এক বছর ধরে দায়িত্ব পালন করান- এমনটাই অভিযোগ করলেন ছাত্রীরা।

ছাত্র কমন রুমের বিপরীতে চিকিৎসা কেন্দ্রে ঝুলছে তালা। ভবনের দোতলায় কলেজের প্রতিষ্ঠাতা মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্তের দুর্লভ মিউজিয়াম বন্ধ থাকায় দেখার সুযোগ নেই ছাত্র-ছাত্রীদের। কলেজের ছাত্র শাওন খান জানান, লাইব্রেরি তাদের আকর্ষণ করে না। কারণ সেখানে নতুন বই, পত্রিকা নেই। পরিবেশও নেই। মিউজিয়াম এবং চিকিৎসা কেন্দ্র তারা কবে খোলা দেখেছেন মনে নেই।

কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. এ এস কাইউম উদ্দিন আহমেদ বলেন, বুধবার শিক্ষক সমিতির সম্পাদককে নিয়ে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি পরিদর্শন করেছেন। ছাত্র-ছাত্রীদের অভিযোগ অযৌক্তিক নয়। করোনায় কার্যক্রম কিছুটা অকার্যকর হয়েছে। তবে তাঁরা লাইব্রেরিকে আধুনিকায়ন করার উদ্যোগ নিচ্ছেন। জনবল বৃদ্ধি করে পাঠক ফিরিয়ে আনারও ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেখানে লাইব্রেরিয়ান এবং সহকারী লাইব্রেরিয়ান পদ শূন্য। জানতে চাইলে কলেজের ক্রীড়া শিক্ষক ও লাইব্রেরিয়ান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. আফিল উদ্দিন বলেন, তাদের জনবল সংকট রয়েছে। বই পড়তে পারেন না এমন কর্মচারী দিয়ে লাইব্রেরি পরিচালনা সম্ভব না বলে মত তাঁর। মিউজিয়াম ও চিকিৎসা কেন্দ্র বন্ধ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এটি আমার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না।’

বিএম কলেজের সাবেক অধ্যাপক এবং সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) এর সভাপতি অধ্যাপক শাহ সাজেদা বলেন, পিয়ন চাপরাশি দিয়ে লাইব্রেরি চলে না। কলেজে ৩০ হাজার শিক্ষার্থী। লাইব্রেরিতে ৫০-৬০ হাজার বই। শত বছরের এই লাইব্রেরি অচল। কেন চিকিৎসক নেই, মিউজিয়াম খোলা হচ্ছে না। ছাত্রীদের কমন রুমের স্টাফ অধ্যক্ষের বাসভবনে দায়িত্ব পালন করা দুঃখজনক।

বিএম কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া বলেন, লাইব্রেরি সব সময়ই খোলা থাকে। করোনার কারণে ছাত্র ছাত্রী উপস্থিতি খুবই কম। তিনি জানান, রিডিং রুম ও কমন রুম আগের চেয়ে অত্যাধুনিক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টা হতে চেয়েছিলেন আসিফ নজরুল: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

বামপন্থীদের ‘মেরে ঠ্যাং ভেঙে’ দিতে চান ডাকসু নেতা সর্বমিত্র, অভিযোগ ঢাবি শিক্ষার্থীর

পরীক্ষায় অটো পাসের মতো কোনো বিষয় তো সংবিধানে থাকতে পারে না: সালাহউদ্দিন আহমদ

দেশি ব্যবসায়ীদের চেয়ে বিদেশিদের কথা শুনতে সরকার বেশি পছন্দ করে

পাকিস্তানি জেনারেলকে ‘ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলযুক্ত বাংলাদেশের পতাকা উপহারে’র দাবি নিয়ে যা বলল সিএ ফ্যাক্ট চেক

এলাকার খবর
Loading...