সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন চত্বরে প্রতিবছরের মতো এবারও চলছে মাসব্যাপী লোক ও কারুশিল্প মেলা এবং লোকজ উৎসব। করোনা সংক্রমণের কারণে এবার সময় পিছিয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে এ মেলা শুরু হয়। গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী লোকজ ও সংস্কৃতির ব্যবহার্য জিনিসপত্র যুগ যুগ টিকিয়ে রাখতে এবং নতুন প্রজন্মকে এসব শিল্পের সঙ্গে পরিচয় করানোর লক্ষ্যে ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এ মেলার আয়োজন করা হয়।
লোকজ উৎসবের মূল চত্বরে ঢুকলেই চোখে পড়বে কর্মরত কারুশিল্পীদের সুসজ্জিত প্যাভিলিয়ন। এখানে সারিবদ্ধভাবে কারুশিল্পীরা তাঁদের বাহারি কারুপণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। রয়েছে শখের হাঁড়ি, নকশিকাঁথা, কাঠের হাতি-ঘোড়া, বাঁশের ঝুড়ি, বেতের ঝাঁপি, পাটের শিকা, শীতলপাটি, তাঁতের শাড়ি, মাটির পুতুল, শোলাশিল্প, কামারশিল্প ইত্যাদি। কারুশিল্পীদের এ মিলনমেলা দেখে মনে হবে, এ যেন এক টুকরো বাংলাদেশ।
কর্মরত কারুশিল্প প্রদর্শনীর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে উৎসব প্রাঙ্গণে বসে কারুশিল্পীরা তাঁদের কারুপণ্য তৈরি করবেন এবং তা প্রদর্শন ও বিক্রি করবেন। এর ফলে উৎসবে আসা দর্শনার্থীরা ঐতিহ্যের সঙ্গে সরাসরি পরিচিত হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। পাশাপাশি কারুপণ্য কীভাবে তৈরি হচ্ছে, কী কী প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি হচ্ছে—সবকিছুই প্রত্যক্ষ করতে পারছেন।
কথা হয় উৎসবে অংশ নেওয়া কাঠখোদাই কারুশিল্পী ষাটোর্ধ্ব আবদুল আউয়াল মোল্লার সঙ্গে। তিনি জানান, প্রায় ৫০ বছর ধরে এ পেশায় আছেন। বর্তমানে নতুন করে কেউ এ পেশায় আসতে চাচ্ছেন না। সবাই আর্থিকভাবে লাভবান হতে ভিন্ন পেশা বেছে নিচ্ছেন। এ পেশায় কাজের প্রতি মমতা ও ভালোবাসা না থাকলে কেউ টিকতে পারবে না।
কিশোরগঞ্জ থেকে উৎসবে যোগ দিতে এসেছেন ঐতিহ্যবাহী টেপা পুতুল তৈরির কারুশিল্পী আরতি রানী। তিনি বলেন, ‘একসময় গ্রামের উৎসব-পার্বণে টেপা পুতুলের বেশ চাহিদা ছিল। ছোট ছেলেমেয়েদের প্রথম পছন্দ ছিল এই টেপা পুতুল, কিন্তু এখন প্লাস্টিকসহ নানা ধরনের আধুনিক পুতুল ও খেলনার ব্যাপকতায় এ টেপা পুতুলের চাহিদা কমে গেছে। তারপরও বংশের ঐতিহ্য এবং কাজের প্রতি ভালোবাসার কারণে এখনো এ পেশা আমরা ধরে রেখেছি।’
মাগুরার শোলাশিল্পী শংকর মালাকার বললেন, ‘আমরা যে প্রজাতির শোলা দিয়ে ফুলসহ অন্যান্য কারুপণ্য তৈরি করি, সেসব শোলা বিস্তীর্ণ বিল ও হাওরে জন্মে। দিন যত যাচ্ছে, ততই শোলাসংকট দেখা দিচ্ছে। ফলে এ পেশা ধরে রাখাটা অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে।’
লোকজ উৎসবে শুধু কারুশিল্পীদের শিল্পকর্ম প্রদর্শনই নয়, এখানে নিয়মিত পরিবেশিত হচ্ছে বাংলার হারিয়ে যাওয়া লোক-সংস্কৃতির অনুষ্ঠান। নতুন প্রজন্মের কাছে ঐতিহ্যবাহী লোক-সংস্কৃতি তুলে ধরতে উৎসব চত্বরের সোনারতরি লোকজ মঞ্চে পরিবেশিত হচ্ছে নানা লোকজ অনুষ্ঠান।
এখানে বিলুপ্ত প্রায় গোল্লাছুট, কানামাছি, বৌচি, দাঁড়িয়াবান্ধা, লাঠি খেলাসহ নানা রকম গ্রামীণ খেলা প্রদর্শিত হচ্ছে, যা দেখে উৎসবে আসা নতুন প্রজন্ম বাংলার গ্রামীণ খেলা সম্পর্কে জানতে পারছে।
উৎসবে রয়েছে লোকজীবন প্রদর্শনীর ব্যবস্থা। এখানে লোকজ জীবনধারার নানা চিত্র অভিনয় করে দেখানো হয়। স্থানীয় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা এই লোকজীবন প্রদর্শনীতে অংশ নেয়। লোকজীবন প্রদর্শনীতে রয়েছে পালকিতে বরযাত্রা, জামাইয়ের পিঠা খাওয়া, বিয়ের কনে দেখা ও গায়েহলুদের অনুষ্ঠান।
২২ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া এই উৎসব শেষ হবে ২৩ মার্চ। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে।
বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক ড. আহমেদ উল্লাহ জানান, গ্রামবাংলার প্রায় হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য, সংস্কৃতিকে নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্যই মাসব্যাপী এই মেলার আয়োজন। বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী কারুশিল্প ও লোক-সংস্কৃতিকে বহির্বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে সোনারগাঁয়ের লোকজ উৎসবকে ভবিষ্যতে আরও সমৃদ্ধ করা হবে।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন চত্বরে প্রতিবছরের মতো এবারও চলছে মাসব্যাপী লোক ও কারুশিল্প মেলা এবং লোকজ উৎসব। করোনা সংক্রমণের কারণে এবার সময় পিছিয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে এ মেলা শুরু হয়। গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী লোকজ ও সংস্কৃতির ব্যবহার্য জিনিসপত্র যুগ যুগ টিকিয়ে রাখতে এবং নতুন প্রজন্মকে এসব শিল্পের সঙ্গে পরিচয় করানোর লক্ষ্যে ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এ মেলার আয়োজন করা হয়।
লোকজ উৎসবের মূল চত্বরে ঢুকলেই চোখে পড়বে কর্মরত কারুশিল্পীদের সুসজ্জিত প্যাভিলিয়ন। এখানে সারিবদ্ধভাবে কারুশিল্পীরা তাঁদের বাহারি কারুপণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। রয়েছে শখের হাঁড়ি, নকশিকাঁথা, কাঠের হাতি-ঘোড়া, বাঁশের ঝুড়ি, বেতের ঝাঁপি, পাটের শিকা, শীতলপাটি, তাঁতের শাড়ি, মাটির পুতুল, শোলাশিল্প, কামারশিল্প ইত্যাদি। কারুশিল্পীদের এ মিলনমেলা দেখে মনে হবে, এ যেন এক টুকরো বাংলাদেশ।
কর্মরত কারুশিল্প প্রদর্শনীর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে উৎসব প্রাঙ্গণে বসে কারুশিল্পীরা তাঁদের কারুপণ্য তৈরি করবেন এবং তা প্রদর্শন ও বিক্রি করবেন। এর ফলে উৎসবে আসা দর্শনার্থীরা ঐতিহ্যের সঙ্গে সরাসরি পরিচিত হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। পাশাপাশি কারুপণ্য কীভাবে তৈরি হচ্ছে, কী কী প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি হচ্ছে—সবকিছুই প্রত্যক্ষ করতে পারছেন।
কথা হয় উৎসবে অংশ নেওয়া কাঠখোদাই কারুশিল্পী ষাটোর্ধ্ব আবদুল আউয়াল মোল্লার সঙ্গে। তিনি জানান, প্রায় ৫০ বছর ধরে এ পেশায় আছেন। বর্তমানে নতুন করে কেউ এ পেশায় আসতে চাচ্ছেন না। সবাই আর্থিকভাবে লাভবান হতে ভিন্ন পেশা বেছে নিচ্ছেন। এ পেশায় কাজের প্রতি মমতা ও ভালোবাসা না থাকলে কেউ টিকতে পারবে না।
কিশোরগঞ্জ থেকে উৎসবে যোগ দিতে এসেছেন ঐতিহ্যবাহী টেপা পুতুল তৈরির কারুশিল্পী আরতি রানী। তিনি বলেন, ‘একসময় গ্রামের উৎসব-পার্বণে টেপা পুতুলের বেশ চাহিদা ছিল। ছোট ছেলেমেয়েদের প্রথম পছন্দ ছিল এই টেপা পুতুল, কিন্তু এখন প্লাস্টিকসহ নানা ধরনের আধুনিক পুতুল ও খেলনার ব্যাপকতায় এ টেপা পুতুলের চাহিদা কমে গেছে। তারপরও বংশের ঐতিহ্য এবং কাজের প্রতি ভালোবাসার কারণে এখনো এ পেশা আমরা ধরে রেখেছি।’
মাগুরার শোলাশিল্পী শংকর মালাকার বললেন, ‘আমরা যে প্রজাতির শোলা দিয়ে ফুলসহ অন্যান্য কারুপণ্য তৈরি করি, সেসব শোলা বিস্তীর্ণ বিল ও হাওরে জন্মে। দিন যত যাচ্ছে, ততই শোলাসংকট দেখা দিচ্ছে। ফলে এ পেশা ধরে রাখাটা অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে।’
লোকজ উৎসবে শুধু কারুশিল্পীদের শিল্পকর্ম প্রদর্শনই নয়, এখানে নিয়মিত পরিবেশিত হচ্ছে বাংলার হারিয়ে যাওয়া লোক-সংস্কৃতির অনুষ্ঠান। নতুন প্রজন্মের কাছে ঐতিহ্যবাহী লোক-সংস্কৃতি তুলে ধরতে উৎসব চত্বরের সোনারতরি লোকজ মঞ্চে পরিবেশিত হচ্ছে নানা লোকজ অনুষ্ঠান।
এখানে বিলুপ্ত প্রায় গোল্লাছুট, কানামাছি, বৌচি, দাঁড়িয়াবান্ধা, লাঠি খেলাসহ নানা রকম গ্রামীণ খেলা প্রদর্শিত হচ্ছে, যা দেখে উৎসবে আসা নতুন প্রজন্ম বাংলার গ্রামীণ খেলা সম্পর্কে জানতে পারছে।
উৎসবে রয়েছে লোকজীবন প্রদর্শনীর ব্যবস্থা। এখানে লোকজ জীবনধারার নানা চিত্র অভিনয় করে দেখানো হয়। স্থানীয় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা এই লোকজীবন প্রদর্শনীতে অংশ নেয়। লোকজীবন প্রদর্শনীতে রয়েছে পালকিতে বরযাত্রা, জামাইয়ের পিঠা খাওয়া, বিয়ের কনে দেখা ও গায়েহলুদের অনুষ্ঠান।
২২ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া এই উৎসব শেষ হবে ২৩ মার্চ। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে।
বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক ড. আহমেদ উল্লাহ জানান, গ্রামবাংলার প্রায় হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য, সংস্কৃতিকে নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্যই মাসব্যাপী এই মেলার আয়োজন। বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী কারুশিল্প ও লোক-সংস্কৃতিকে বহির্বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে সোনারগাঁয়ের লোকজ উৎসবকে ভবিষ্যতে আরও সমৃদ্ধ করা হবে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
১০ দিন আগেবিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ জানুয়ারি ২০২৫গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪