Ajker Patrika

চাকরিপ্রার্থীদের জেনে রাখা ভালো

রবিউল আলম লুইপা
আপডেট : ০৭ জানুয়ারি ২০২৩, ১৪: ১৩
Thumbnail image

চাকরির আবেদন করার সময় পদটি কোন শ্রেণির, মোট বেতন কত হতে পারে, কোন পদের কর্মকর্তা সত্যায়িত করতে পারবেন, কোন প্রতিষ্ঠানে পেনশন-সুবিধা আছে প্রভৃতি নিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের মনে অনেক প্রশ্ন থাকে। এসব প্রশ্নের উত্তর নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। চাকরিপ্রার্থীদের জন্য তুলে ধরা হলো–

শ্রেণি: ২০১৫ সালের জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী শ্রেণিপ্রথা বিলুপ্ত করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গ্রেডভিত্তিক পরিচিতি দেওয়া হয়েছে। তবু অনানুষ্ঠানিকভাবে এখনো কেউ কেউ সরকারি চাকরিকে গ্রেড অনুসারে প্রথম/দ্বিতীয়/তৃতীয়/চতুর্থ শ্রেণির চাকরি বলে অভিহিত করে থাকে।

জাতীয় বেতন স্কেল-২০১৫-এর পূর্ববর্তী অনুসারে-

  • ১ম শ্রেণি—গ্রেড ৯ বা এর ওপরে ১ পর্যন্ত।
  • ২য় শ্রেণি—গ্রেড ১০ থেকে ১২ পর্যন্ত।
  • ৩য় শ্রেণি—গ্রেড ১৩ থেকে ১৬ পর্যন্ত।
  • ৪র্থ শ্রেণি—গ্রেড ১৭ থেকে ২০ পর্যন্ত।

মূল বেতন ও মোট বেতন
চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে শুধু মূল বেতনের (বেসিক) উল্লেখ থাকে। যেমন ৯ম গ্রেডের পদগুলোর পাশে লেখা থাকে ২২০০০-৫৩০৬০, অর্থাৎ এই গ্রেডে চাকরির শুরুতে মূল বেতন ২২,০০০ টাকা এবং ওই কর্মকর্তা প্রমোশন পেয়ে ওপরের গ্রেডে না যেতে পারলে তার সর্বশেষ মূল বেতন হবে ৫৩,০৬০ টাকা। মূল বেতনের সঙ্গে ৯ম গ্রেডের একজন কর্মকর্তা বাড়িভাড়া (মূল বেতনের জেলা শহরে ৪০ শতাংশ, ঢাকা শহরে ৫৫ শতাংশ) এবং চিকিৎসা ভাতা (১৫০০ টাকা) পেয়ে থাকেন। অন্যদিকে, মোট বেতন থেকে জেনারেল প্রভিডেন্ট ফান্ড (মূল বেতনের কমপক্ষে ৫ শতাংশ), যৌথ বিমা তহবিল ১৫০ টাকা এবং কর্মচারী কল্যাণ তহবিল ১০০ টাকা কর্তন করা হয়; অর্থাৎ ৯ম গ্রেডের একজন কর্মকর্তা চাকরিতে যোগদানের পর জেলা শহরে পদায়ন পেলে মোট ৩০,৯৫০ টাকা (২২,০০০ + ৮,৮০০ + ১৫০০-১,১০০-১৫০-১০০) পেয়ে থাকেন। এ ছাড়া প্রজ্ঞাপনের শর্তসাপেক্ষে, কোনো কোনো কর্মকর্তা যোগদানের সঙ্গে অগ্রিম ইনক্রিমেন্ট, শিক্ষা সহায়ক ভাতা, পাহাড়ি ভাতা, ঝুঁকি ভাতা ও অন্যান্য ভাতা (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) পেতে পারেন।

ক্যাডার ও নন-ক্যাডার
বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) কর্তৃক নিয়োগকৃত ২৬ ধরনের চাকরিকে ক্যাডার এবং পিএসসি কর্তৃক নিয়োগকৃত অন্যান্য সরকারি চাকরিকে নন-ক্যাডার চাকরি বলা হয়। নন-ক্যাডার চাকরি গ্রেড-৯ হলে ১ম শ্রেণি এবং গ্রেড-১০ হলে ২য় শ্রেণি বলা হয়। ক্যাডার ও নন-ক্যাডার চাকরির মধ্যে মূল পার্থক্য—ক্যাডার কর্মকর্তা প্রমোশন পেয়ে সাধারণত নীতিনির্ধারক পর্যায়ে যেতে পারেন (যেমন গ্রেড-৩) এবং নন-ক্যাডার কর্মকর্তা সাধারণত এটি পারেন না (প্রমোশন সুযোগ অনেকাংশেই সীমিত)। 

গেজেটেড কর্মকর্তা
গেজেট হলো সরকারি ঘোষণাসংবলিত একধরনের সংবাদপত্র। যেসব কর্মকর্তার নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতিসহ সব কার্যক্রম সরকারি গেজেটে লিপিবদ্ধ করা হয়, তাকে গেজেটেড কর্মকর্তা বলা হয়। পিএসসি কর্তৃক নিয়োগকৃত ১ম ও ২য় শ্রেণির সব চাকরিই (ক্যাডার ও নন-ক্যাডার) গেজেটেড চাকরি (অর্থাৎ নিয়োগপত্রে রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষরিত বা রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে স্বাক্ষরিত লেখা থাকে)। এ ছাড়া পিএসসি নিয়োগের বাইরে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (জেসিএস), দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) প্রভৃতি ১ম ও ২য় শ্রেণির গেজেটেড চাকরি রয়েছে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা (গেজেটেড কর্মকর্তা) ডকুমেন্ট সত্যায়িত করতে পারেন। 

পেনশন ও গ্র্যাচুইটি
রাজস্ব খাতভুক্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার সময় এককালীন গ্র্যাচুইটি (আনুতোষিক) ও পরে মাসে মাসে পেনশন পেয়ে থাকেন। অন্যদিকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি এবং বিভিন্ন করপোরেশন, বোর্ড সাধারণত শুধু গ্র্যাচুইটি পেয়ে থাকেন। তাই কোনো চাকরিতে যোগদানের আগে সেখানে শুধু গ্র্যাচুইটি নাকি গ্র্যাচুইটি ও পেনশন দুটো সুবিধাই রয়েছে জেনে নেওয়া ভালো।

রবিউল আলম লুইপা, সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার, ৩৫তম বিসিএস 

চাকরির খবর সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত