Ajker Patrika

তেজপাতায় কোটি টাকা আয়ের আশা

বাঘাইছড়ি (রাঙামাটি) প্রতিনিধি
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২১, ১২: ২৭
তেজপাতায় কোটি টাকা আয়ের আশা

রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে এবার কোটি টাকার তেজপাতার কেনাবেচার সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। উপজেলায় মিশ্র বাগানের পাশাপাশি আলাদাভাবে তেজপাতর চাষ হচ্ছে। এবার তেজপাতার বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে তেজপাতা চাষে আলাদা কোনো প্রকল্প না থাকায় সার বীজ, কীটনাশক দিতে পারছে কৃষি বিভাগ।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর তথ্য মতে, উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা মিলে ছোট বড় প্রায় ২০০টি তেজপাতা বাগান রয়েছে প্রতিটি বাগানেই এবার আশানুরূপ ফলন হয়েছে। আর বাজারেও তেজপাতার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ফলে মসলা ও ঔষধি গুনে সমাহার তেজপাতা চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা দেখছে কৃষি বিভাগ।

মূলত মিশ্র বাগানের সঙ্গে তেজপাতা চাষ করেন স্থানীয় পাহাড়ি ও বাঙালি জনগোষ্ঠীর মানুষ। তবে বাজারে তেজপাতর ব্যাপক চাহিদা থাকায় আলাদাভাবে তেজপাতর চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন অনেক কৃষক। গাছ পূর্ণবয়স্ক হওয়ার পর থেকেই ডাল পালা ছেঁটে তেজপাতা সংগ্রহ করা যায়। অল্প খরচে বেশি লাভ হওয়ায় মসলাজাতীয় ফসল চাষ হচ্ছে। বাজারে পাইকারি দরে প্রতি কেজি পাতা ৪০ থেকে ৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা।

গতকাল সকালে উপজেলার প্রশিক্ষণ টিলা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলামের বাগান থেকে ডাল-পালাসহ সংগ্রহ করা তেজপাতা স্থানীয় নারী শ্রমিকেরা আলাদা করছেন। এবার পাহাড়ে তেজপাতার ভালো ফলন হয়েছে, তাই তাঁর ব্যবসাও ভালো হবে আশা করছে এই ব্যবসায়ী।

রফিকুল ইসলাম জানান, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে গিয়ে বাগান কিনে স্থানীয় শ্রমিকদের মাধ্যমে পাতা সংগ্রহ করে বাজারজাত করেন। পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে তেজপাতা সরবরাহ করে যা আয় হয়, তা দিয়ে তাঁর ৬ সদস্যের সংসার চলে।

উপজেলার চার কিলোমিটার বাঙালি পাড়া এলাকার তেজপাতা চাষি মোহাম্মদ আলী জানান, কৃষি বিভাগের পরামর্শে তিনিসহ ২০ জন চাষি প্রায় ৩০ একর জায়গায় তেজপাতার আবাদ করেছেন। সব মিলিয়ে এলাকায় প্রায় ৩ হাজার গাছ রয়েছে। প্রতিটি গাছ ১ হাজার ৬০০ টাকা করে বিক্রি হলে প্রায় ৪৮ লাখ টাকার লেনদেন আশা করা হচ্ছে।

কালামোড়া এলাকার তেজপাতা চাষি রাঙ্গু চাকমা বলেন, ‘আমি প্রায় ২ একর জায়গায় নিজ উদ্যোগে তেজপাত চাষ করেছি। কৃষি বিভাগ পরামর্শ দিলেও কোনো ধরনের হতাহত করেনি। সরকারি সহায়তা পেলে আরও ভালো ভাবে চাষ করা যেত।’ পাহাড়ে তেজপাতা চাষিদের সরকারি সহায়তা আশা করেন তিনি।

বাঘাইছড়িতে এবার কোটি টাকার তেজপাতার কেনাবেচার সম্ভাবনা রয়েছে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা তোফায়েল আহম্মেদ। তিন বলেন, পাহাড়ে জুমচাষ বন্ধে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মিশ্র ফল বাগান ও বিভিন্ন ধরনের মসলা বাগান করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করছে। এর ধারাবাহিকতায় পাহাড়ে বাণিজ্যিকভাবে তেজপাতা চাষ করা হয়েছে। কৃষি বিভাগ পরামর্শ প্রদান করলেও তেজপাতা চাষে আলাদা কোনো প্রকল্প না থাকায় সার বীজ, কীটনাশক দিয়ে সহায়তা সম্ভব হয়নি। বাঘাইছড়িতে এবার কোটি টাকার তেজপাতার কেনাবেচার সম্ভাবনা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত