Ajker Patrika

লক্ষ্যমাত্রা ১১৮৩, সংগ্রহ ৬ মে. টন

আশরাফুল আলম আপন, বদরগঞ্জ
আপডেট : ১৫ জানুয়ারি ২০২২, ১৩: ৩২
Thumbnail image

বদরগঞ্জে প্রথমবারের মতো অ্যাপের মাধ্যমে ধান সংগ্রহ করছে খাদ্য বিভাগ। তবে কৃষকদের কাছে ব্যবস্থাটি ঝামেলাপূর্ণ মনে হওয়ায় এবং বাজারে ভালো দাম থাকায় সরকারি গুদামে ধান দিতে তাঁরা সাড়া দিচ্ছেন না।

উপজেলা খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বদরগঞ্জে ১ হাজার ১৮৩ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ধান ক্রয় অভিযান ৭ নভেম্বর শুরু হয়, চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত দুই কৃষকের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ছয় মেট্রিক টন।

বদরগঞ্জ কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, উপজেলায় আমনচাষির সংখ্যা প্রায় ৫৫ হাজার। ধান চাষ হয় ১৯ হাজার ৬১০ হেক্টর জমিতে।

অনিয়ম ও দুর্নীতি রোধে উপজেলায় এবার অ্যাপের মাধ্যমে ধান কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ধান দিতে কৃষি কার্ড ও জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে নিবন্ধন করেন ১ হাজার ১৭৩ কৃষক। এরপর তাঁরা অ্যাপের মাধ্যমে সরকারি গুদামে ধান বিক্রির জন্য আবেদন করেন। ধান সংগ্রহ কমিটি নিবন্ধন করা কৃষকদের মধ্যে স্বয়ংক্রিয়ভাবে লটারি করে ৩৯৪ জনকে নির্বাচিত করে। একজন কৃষক ২৭ টাকা কেজি দরে সর্বোচ্চ তিন মেট্রিক টন ধান সরকারি গুদামে দেওয়ার জন্য মনোনীত হন।

বদরগঞ্জে গতকাল শুক্রবার খোলা বাজারে ধান বিক্রি হয়েছে স্থানীয় হিসেবে প্রতি মণ (২৮ কেজি) ৬৯০ থেকে ৭০০ টাকায়। এতে এক কেজি ধানের দাম পড়েছে ২৫ টাকা। এই দর সরকারি দামের কাছাকাছি হওয়ায় কৃষকেরা আর গুদামে যাচ্ছেন না।

উপজেলার জামালপুর গ্রামের সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘এখন ধান বিক্রি করতে বাজারে যাইতে হয় না। ব্যবসায়ীরা বাড়ি থেকে ধান নিয়া যায়। তাঁদের কাছে ধুলাবালু, পাতানসহ ধান বিক্রি করি। আর সরকারি গুদামে ধান দিতে গেইলে কয় আরও শুকান, ধুলা-পাতান চলবে না। আবার টাকা নিতে গেইলে এক ওক স্যার কন, ঘুষও দিবার নাগে। অরচাইতে হামার এক-দুই টাকা কম পাইলেও বাড়িতে ধান বিক্রি করা ভালো। ভ্যান ভাড়াও নাগে না। নগদ টাকাও পাই।’

আমরুলবাড়ি গ্রামের কৃষক আখরুজ্জামান বলেন, ‘ধান দেই গুদামে আর টাকা নিতে অ্যাকাউন্ট খুলতে নাগে ব্যাংকে। অ্যাকাউন্ট খুলতে যে কত ঝামেলা। ব্যাংকে নিজের ছবি-আইডি ও কৃষি কার্ড দেও, আবার নমিনির ছবি-আইডি কার্ড দেও। ধান দেওয়ার পর টাকার জন্য গুদামোত ঘোরো আর ঘোরো, অফিসারোক স্যার, স্যার বলতে বলতে হাফসি (ক্লান্ত) যাইতে হয়। নিজের ধান সরকারি গুদামোত দিয়া ওতো ঝামেলাত কায় পড়ে?’

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে উপজেলা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘খোলা বাজারে ধানের দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকেরা সরকারি গুদামে আসছেন না। এখন পর্যন্ত মাত্র দুজন কৃষকের কাছ থেকে ছয় মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করেছি। অ্যাপ না থাকলে অন্যান্য কৃষকের কিছু ধান পাওয়া যেত।’

তবে আশরাফুল ইসলাম জানান, এখনো সময় আছে। সংগ্রহ ব্যবস্থা উন্মুক্ত করে দেওয়া হলে কিছু ধান পাওয়া যাবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিধির বাইরে ধান সংগ্রহ করতে পারি না। তবে ধান নিতে কাউকে হয়রানি করা হয় না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত