Ajker Patrika

ঠাকুরগাঁও-৩: মহাজোটের মারপ্যাঁচে জটিল সমীকরণ

সাদ্দাম হোসেন, ঠাকুরগাঁও ও  খুরশিদ আলম শাওন, রাণীশংকৈল
আপডেট : ১৫ মে ২০২৩, ১৩: ৩৯
ঠাকুরগাঁও-৩: মহাজোটের মারপ্যাঁচে জটিল সমীকরণ

কোন কোন দলে জোট হবে? কোন নেতা কার সঙ্গে হাত মেলাবেন? মহাজোট হলে আওয়ামী লীগ কি জোটসঙ্গী কোনো দলকে এবারও আসন ছেড়ে দেবে? বিএনপি কি নির্বাচনে আসবে?

জাতীয় নির্বাচনের আর বেশি দিন বাকি নেই। এরই মধ্যে ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের ভোটের মাঠ পীরগঞ্জ এবং রাণীশংকৈল উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ভোটারদের মুখে মুখে এসব প্রশ্ন। বাজারে, চায়ের স্টলে আলোচনা আর জল্পনা। তবে আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, এবার আর ছাড় দেওয়া হবে না। আসনে সাংগঠনিক কার্যক্রম চাঙা করতে দলীয় কাউকে করতে হবে এমপি।

জোট-মহাজোটের রাজনৈতিক সমীকরণ নিয়ে ভাবতে হচ্ছে বাকি দলগুলোকেও। জাতীয় পার্টি (জাপা) তাকিয়ে আছে আওয়ামী লীগের দিকে। মহাজোট না হলে নিজেদের মতো করে এগিয়ে যেতে হবে তাদের। ওয়ার্কার্স পার্টির নেতারাও সে দিকেই তাকিয়ে। আর বিএনপির হিসাবটা একটু ভিন্ন। বহুদিনের চেষ্টার পর ২০১৮ সালের নির্বাচনে প্রথমবার এ আসনে এমপি হন দলটির মনোনীত প্রার্থী। কিন্তু দলীয় সিদ্ধান্তে পদত্যাগ করার কারণে হারাতে হয় আসন। আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারে এখন দলটির নেতারা রয়েছেন অনিশ্চয়তায়। সে কারণে মাঠেও তেমন দেখা যাচ্ছে না তাঁদের।

সবকিছু ঠিক থাকলে এবারও নিজেদের দল থেকে মনোনয়ন চাইবেন আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রেসিডিয়াম সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ এবং সাবেক সংসদ সদস্য ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা ইয়াসিন আলী। আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নের ক্ষেত্রে আলোচনায় আছেন উপজেলা কমিটির সভাপতি ইমদাদুল হক, সংরক্ষিত আসনের সাবেক নারী এমপি এবং জেলা কমিটির সহসভাপতি সেলিনা জাহান লিটা, রাণীশংকৈল উপজেলা কমিটির সভাপতি এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সইদুল হক, পীরগঞ্জ উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রেজওয়ানুল হক বিপ্লব। বিএনপি নির্বাচনে গেলে দলীয় মনোনয়ন চাইবেন সাবেক এমপি জাহিদুর রহমান।

স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা সবাই অভিন্ন সুরে মাঠে রয়েছেন। কথা একটাই, এবার কোনো ছাড় নয়। নেতা-কর্মীরা বলছেন, জোটগত নির্বাচন না হলে মূল লড়াই হবে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির মধ্যে। নির্বাচনী ভাবনা জানতে চাইলে মনোনয়নপ্রত্যাশী ইমদাদুল হক বলেন, ‘জোটের রাজনীতির কারণে আসনটি ছাড় দেওয়া হয়েছিল। তবে ওই সিদ্ধান্ত ছিল ভুল। এর খেসারত দিতে হচ্ছে দলকে। দলের সাংগঠনিক অবস্থা দুর্বল হয়ে পড়েছে। নেতা-কর্মীদের মাঝেও হতাশা দেখা দিয়েছে। ওয়ার্কার্স পার্টি ও এরশাদের জাতীয় পার্টিকে রাজনীতির সমীকরণের কারণে ছাড় দিয়ে এ ভুলের স্বীকার হয় আওয়ামী লীগ। এবার আর ছাড় নয়।’

আসনের বর্তমান এমপি হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে দল নমিনেশন দিলে আমি প্রার্থী হব। আমাকে প্রার্থী করা না হলে আসনটি সহজেই বিএনপি-জামায়াতের কবজায় চলে যাবে।’ 

ওয়ার্কার্স পার্টির ইয়াসিন আলী বলেন, উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা তাঁর সঙ্গে ‘ভানুমতির খেল’ খেলেছেন। এটা বুঝে উঠতে পারেননি তিনি।আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা পার্টির ব্যাপার।’ এ ছাড়া রাণীশংকৈল ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও ওয়ার্কার্স পার্টির সদস্য তাজুল ইসলামও দলের মনোনয়ন চাইবেন বলে জানা গেছে।

বিএনপির জাহিদুর রহমান জানিয়েছেন, রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে আগামী নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তিনি। দীর্ঘ ২৭ বছর লড়ে ২০১৮ সালে বিজয়ের মুকুট ছিনিয়ে এনেছিলেন এ নেতা। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর বিভাগের মধ্যে তিনিই একমাত্র বিএনপির প্রার্থী, যিনি জয়ী হতে পেরেছিলেন। কিন্তু দলীয় কারণে আসনটি হারাতে হয়। এবার নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি আদায় করে আসনটি নিজেদের কবজায় নিতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন দলটির নেতা-কর্মীরা।

ভোটের মাঠে বেশ কয়েকজন ভোটারের সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। যাঁরা মহাজোটের ব্যাপারে ধারণা রাখেন তাঁরা বলছেন, আসনটিতে গত কয়েকটি নির্বাচনে এই জোট নিয়েই মারপ্যাঁচ ছিল। এ কারণে একসময়ের শক্ত ঘাঁটিতেও তৎপরতা কমে গেছে আওয়ামী লীগের। এবার সেই ‘গেরো’ খুলতে পারবে বলেই মনে হচ্ছে। তবে ভোটের আগেই মিলবে সব হিসাব। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল, ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

ঘন ঘন নাক খুঁটিয়ে স্মৃতিভ্রংশ ডেকে আনছেন না তো!

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত