Ajker Patrika

সেপটিক ট্যাংকে গৃহবধূর লাশ

বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৯ অক্টোবর ২০২১, ১৪: ০৯
সেপটিক ট্যাংকে গৃহবধূর লাশ

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে এক গৃহবধূর বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার রাতে পৌর সদরের আঁধারকোঠা মহল্লা থেকে মোসা. নিলুফার ইয়াসমিন নামে ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় শুক্রবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি।

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মোসা. নিলুফার ইয়াসমিন ওই বাড়িতে অধিকাংশ সময় একাই থাকতেন। তাঁর দুই ছেলে চট্টগ্রামে জাহাজে চাকরি করেন। একমাত্র মেয়ের বিয়ে হয়েছে পাশের আলফাডাঙ্গা উপজেলার ফলিয়া গ্রামে। নিলুফার স্বামী অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য মো. আবুল খায়ের মণ্ডল ২০১৭ সালে মারা যান।

নিহতের বড় মেয়ে প্রিয়াংকা খানম (২৩) জানান, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে মায়ের সঙ্গে তাঁর মোবাইলে কথা হয়। এ সময় তাঁর মা জানান, ব্যাংকে যাওয়ার সময় তিনি তাঁর (প্রিয়াংকা) সঙ্গে দেখা করে যাবেন। এ জন্য তিনি সকাল ৯টার দিকে মাকে ফোন দেন। কিন্তু রিং বাজলেও কেউ ফোন ধরেনি। এর আধা ঘণ্টা পর থেকে তিনি মায়ের ফোন বন্ধ পান।

তিনি আরও জানান, এরপর বেলা ১২টার দিকে প্রতিবেশী পান্না রানী রাজবংশীকে ফোন করেন। প্রিয়াংকাদের বাড়ির ফটক বাইরে থেকে তালা দেওয়া রয়েছে বলে জানান ওই নারী। এরপর প্রিয়াংকা তাঁর মাকে ফোনে না পাওয়ার ঘটনা পাশের ধুলপুকুরিয়া গ্রামের নানা বাড়িতে জানান।

নিহত গৃহবধূর ছোট বোন কবিতা ইসলাম (২৭) জানান, তিনি ও তাঁর মা বোনের খোঁজে ওই বাড়িতে এসে প্রধান ফটকে তালা লাগানো দেখতে পান। এ সময় তিনি বাড়ির প্রধান ফটক টপকে ভেতরে প্রবেশ করেন তিনি।

কবিতা বলেন, ‘ভেতরে ঢুকে আমি বিছানার ওপর বোনের ব্যবহৃত শাড়ি, ভ্যানিটি ব্যাগসহ চাবি পেয়ে যাই। চাবি দিয়ে ফটকের তালা খুলে আমার মাকে ভেতরে নিয়ে আসি। এরপর বোনের সন্ধানে বিভিন্ন জায়গায় ফোন করি ও আশপাশে খুঁজতে থাকি। একপর্যায়ে বাড়ির উঠোন দিয়ে বস্তা টেনে নেওয়ার দাগ ও আমার বোনের হাতের চুড়ির ভাঙা অংশ দেখতে পেয়ে আমাদের সন্দেহ বাড়তে থাকে।’

নিহত নিলুফার অপর বোন দক্ষিণ হাসামদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তানজুন নাহার পলি বলেন, ‘টিভিতে দেখা বিভিন্ন অপরাধ সিরিয়ালের অভিজ্ঞতার আলোকে আমি পানির ড্রাম ও সেপটিক ট্যাংকের ভেতর আমার বোনকে খুঁজতে স্বজনদের পরামর্শ দিই। একপর্যায়ে বাড়ির পেছন দিকে সীমানা দেওয়ালের মধ্যে রিং বসিয়ে তৈরি করা সেপটিক ট্যাংকের ঢাকনা তুলে মানুষের পায়ের পাতার সামান্য অংশ দেখা যায়। বস্তায় ভরা লাশের বাকি অংশ ট্যাংকের পানিতে ডুবে ছিল। এরপর পুলিশ এসে ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় ট্যাংকের ভেতর থেকে বস্তাবন্দী অবস্থায় আমার বোনের লাশ উদ্ধার করে।’

এ ব্যাপারে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নুরুল আলম বলেন, ‘ঘটনার খবর পাওয়ার পরপরই মধুখালী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সুমন করসহ পুলিশের বিভিন্ন বিশেষায়িত ইউনিট ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। আমরা এখন পর্যন্ত হত্যার ঘটনার কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র পাইনি। তবে ঘটনাটি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত