Ajker Patrika

শিকলবন্দী সয়াবিন তেল নারায়ণগঞ্জের বাজারে

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ০৯ মে ২০২২, ১১: ০৬
শিকলবন্দী সয়াবিন তেল নারায়ণগঞ্জের বাজারে

নতুন করে মূল্যবৃদ্ধির পরেও সয়াবিন তেলের পর্যাপ্ত সরবরাহ নেই নারায়ণগঞ্জের সর্ববৃহৎ খুচরা বাজার দ্বিগুবাবুর বাজারে। অধিকাংশ দোকানেই তেলের তাক খালি। কয়েকটি দোকানে অল্প পরিমাণে তেল থাকলেও দাম চাওয়া হচ্ছে অনেক বেশি। মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারগুলো তেল কিনতে হিমশিম খাচ্ছে। এমন অবস্থায় সয়াবিন তেল চুরি ঠেকাতে শিকলের আশ্রয় নিয়েছেন এক ব্যবসায়ী।

রোববার দ্বিগুবাবুর বাজারে ফলপট্টি অংশে অবস্থিত শরীফ স্টোরের সামনে দেখা যায়, দুটি পাঁচ লিটারের তেলের বোতল শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছেন দোকানি। কারণ জানতে চাইলে মুচকি হেসে বলেন, ‘যেন কেউ নিয়ে দৌড় দিতে না পারে, এ জন্য বাঁধছি।’ তবে গণমাধ্যমকর্মী পরিচয় পেতেই নিজেকে আড়াল করার চেষ্টা করেন তিনি। কত টাকা দরে বিক্রি করছেন, তা-ও বলতে চাননি মুখ খুলে।

শরীফ স্টোরের মালিক বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় শুনেছি তেল চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। এখন তো তেলের চাহিদা অনেক। চুরি হওয়াটাই স্বাভাবিক। আর আমার দোকানের সামনে কাঁচাবাজার। প্রচুর মানুষের ভিড় হয় সকাল সন্ধ্যায়। এজন্য তেলের বোতল শিকল দিয়ে বেঁধে রাখছি। ঈদের আগে থেকেই এই সিস্টেম করছি।’

এদিকে দ্বিগুবাবুর বাজারে ঈদের আগ থেকে চলা সয়াবিন তেলের সংকট এখনো কাটেনি। কোনো কোনো দোকানে ৫ লিটারের কিছু বোতল থাকলেও এক লিটারের বোতলের চাহিদা বেশি। বিকল্প হিসেবে আধা লিটারের বোতল বিক্রি হচ্ছে। তবে ঈদের ছুটি শেষে এখনো ক্রেতাদের ভিড় জমেনি তেলের বাজারে।

বাজারে আসা ক্রেতারা বলছেন, তাঁদের কাছে সয়াবিন তেল এখন তরল সোনা। দুই বছর আগেও কল্পনা করেননি খোলা তেল ২০০ টাকায় কিনতে হবে। এখন সেটাই বাস্তবতা। তেলের দাম মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাওয়াতেই দোকানিরা তেলের বোতলে শেকল দিতে বাধ্য হয়েছেন। তেলের নতুন দাম নির্ধারণ করেও ব্যবসায়ীদের ঠেকানো যাচ্ছে না। তাঁরা বেশি দাম হাঁকছেন।

তেলের বাজারে এমন অস্থিরতার বিষয়ে দ্বিগুবাবুর বাজার কমিটির কোনো নেতাকে পাওয়া যায়নি। তবে এই বিষয়ে বৃহত্তর নিতাইগঞ্জ পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল কাদির আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তেলের দাম এত বেড়েছে যে মধ্যবিত্তরা অসহায় হয়ে পড়েছে। দেশে পর্যাপ্ত তেল মজুত থাকলেও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান তেল সাপ্লাই দিচ্ছে না। সরকার যদি এঁদের চাপ দিয়ে তেল বাজারে ছাড়তে বাধ্য করে, তাহলে তেলের দাম কিছু হলেও কমবে। ডিলাররা এসে চুপে চুপে তেল দিচ্ছেন কয়েকজনকে। বিশেষ করে তাঁরা খুচরা ব্যবসায়ীদের থেকে তেল দিয়ে যান। এভাবে বাজারে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়েছে।’

কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ক্যাব) নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি হাসমত উল্লাহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার মতে, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী তেল মজুত রেখে বাজারে অস্থিরতা তৈরি করেছেন। বিশেষ করে বোতলজাত তেল গুদামে মজুত রেখে অল্প অল্প করে দোকানে তোলা হয়। প্রশাসনের নজরদারির যথেষ্ট অভাব রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত