Ajker Patrika

ত্যাগের পবিত্র ঈদুল আজহা

সম্পাদকীয়
ত্যাগের পবিত্র ঈদুল আজহা

পবিত্র ঈদুল আজহা মুসলমানদের দ্বিতীয় প্রধান ধর্মীয় উৎসব। প্রতিবছর ১০ জিলহজ ঈদের নামাজ ও পশু কোরবানির মাধ্যমে পালিত হয় এই উৎসব। জানমালের মায়া বিসর্জন দিয়ে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনই পবিত্র ঈদুল আজহার পরম লক্ষ্য। পাশাপাশি কোরবানি সমাজের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠায় দারুণ ভূমিকা রাখে।

প্রায় ৫ হাজার বছর আগে হজরত ইবরাহিম (আ.) পুত্র হজরত ইসমাইল (আ.)কে কোরবানি করার প্রস্তুতি নিয়ে অনন্য ত্যাগের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। আল্লাহর নির্দেশে তিনি ইসমাইল (আ.)কে কোরবানি দিতে প্রস্তুত হয়েছিলেন মক্কার মরু প্রান্তরে। মহান আল্লাহ হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর সংকল্পের দৃঢ়তা দেখে তাঁর কোরবানি কবুল করেন এবং হজরত ইসমাইল (আ.)-এর স্থলে একটি দুম্বা কোরবানি মঞ্জুর করেন। ইবরাহিম (আ.)-এর এই কাজ আল্লাহর কাছে এতই পছন্দ হয় যে তিনি হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর উম্মতের সামর্থ্যবানদের জন্য তা আবশ্যক করে দেন।

কোরবানি মুসলিম উম্মাহর গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। যাঁদের ওপর জাকাত ফরজ, তাঁদের ওপর কোরবানিও ওয়াজিব। পশু কোরবানির মাধ্যমে গরিব-দুঃখী ও পাড়া-প্রতিবেশীর আপ্যায়নের ব্যবস্থা হয়। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য স্বার্থত্যাগ, আত্মত্যাগ ও সম্পদত্যাগই হলো কোরবানি। কোরবানি শুধু একটি আনন্দ-উৎসব নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে ইতিহাস, ঐতিহ্য, শিক্ষা ও দর্শন। যে সত্য, সুন্দর ও কল্যাণ মূর্ত হয় মানুষের জীবনে, তার জন্য চরম ত্যাগ স্বীকারের এক প্রতীকী আচার এই কোরবানি।

ঈদুল আজহার প্রকৃত উদ্দেশ্য নিজের অহমিকা ও উচ্চাভিলাষ উৎসর্গ করা। পশু কোরবানির মধ্য দিয়ে মানুষের ভেতরে থাকা পশুশক্তি, কাম-ক্রোধ, লোভ, মোহ, পরনিন্দা, পরশ্রীকাতরতা ইত্যাদি রিপুকেই ত্যাগ করতে হয়। তাই শুধু পশু নয়, প্রয়োজন পশুত্বের কোরবানি। কোরবানিদাতা শুধু পশুর গলায় ছুরি চালান না, তিনি তাঁর সব কুপ্রবৃত্তির ওপরও ছুরি চালিয়ে তাকে নির্মূল করেন। এটাই হলো কোরবানির মূল শিক্ষা। পশু কোরবানির ক্ষেত্রে এই অনুভূতি অবশ্যই প্রয়োজন। 
আমাদের সমাজের অধিকাংশ মানুষেরই এখনো কোরবানি করার সামর্থ্য নেই। কোরবানির দিনগুলোতে যেন তারা কোনোভাবেই হীনম্মন্যতায় না ভোগে, সে জন্য তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে হবে। তাই অহেতুক বিত্তবৈভবের প্রতিযোগিতা ও মহড়া না দেখিয়ে সত্যিকারের ইবাদত ও সমাজসেবার মানসে গরিব-দুঃখী-মেহনতি মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে।

ইসলাম পরিচ্ছন্নতায় সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়। তাই কোরবানির বর্জ্যের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে সব নাগরিকের আন্তরিকতা ও সহযোগিতা একান্ত জরুরি। যত্রতত্র বর্জ্য ফেলে কোরবানির মাহাত্ম্যকে ম্লান করা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

আত্মীয়স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীদের সঙ্গে আপনার ঈদ সুন্দর কাটুক। ত্যাগের আনন্দে উদ্ভাসিত হোক আপনার কোরবানি। আপনার ঈদ ভ্রমণ নিরাপদ হোক। 
সবাইকে পবিত্র ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা। ঈদ মোবারক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের বিপক্ষে সেমির আগেই ধাক্কা খেল অস্ট্রেলিয়া

পরমাণু শক্তিধর হতে চেয়েছিল তাইওয়ান, সিআইএ এজেন্টের বিশ্বাসঘাতকতায় স্বপ্নভঙ্গ

এলপি গ্যাস, তেল, আটাসহ বেশ কিছু পণ্যে ভ্যাট তুলে দিল এনবিআর

চ্যাম্পিয়নস ট্রফি: রিজার্ভ-ডেতেও সেমিফাইনাল না হলে হৃদয়বিদারক সমীকরণ

বগুড়ায় ইফতারের পর ডেকে নিয়ে যুবককে হত্যা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত