Ajker Patrika

অনলাইনে ঋণ দেওয়ার নামে প্রতারণার ফাঁদ

হিরামন মণ্ডল সাগর, বটিয়াঘাটা
আপডেট : ১৫ জানুয়ারি ২০২২, ১১: ৩৪
অনলাইনে ঋণ দেওয়ার নামে প্রতারণার ফাঁদ

খুলনার বটিয়াঘাটায় অনলাইনভিত্তিক বিভিন্ন ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের ঋণ দেওয়ার কথা বলে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তা ছাড়া এসব প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণ দেওয়ার জন্য কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই বলেও জানা গেছে।

তেমনি একটি প্রতিষ্ঠান র‍্যাপিড ক্যাশ। যাদের নেই কোনো বৈধ কাগজপত্র। তাঁরা স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়ার নামে প্রতারণার ফাঁদে ফেলছেন বলে অভিযোগ করেছেন কয়েকজন ঋণগ্রহীতা।

এ প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নেওয়া ভূক্তভোগী তৃপ্তি পাল টুকটুকি বলেন, ‘র‍্যাপিড ক্যাশ থেকে আমি এক হাজার টাকা লোন নিয়েছিলাম। লোনটি পরিশোধের কথা ছিল ৭ দিনের মধ্যে। আমি যখন ৭ দিন পর টাকা পরিশোধ করতে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করি তখন তাঁরা বলে দুই হাজার টাকা দিতে হবে। কারণ জানতে চাইলে নানাবিধ ভয়ভীতি দেখায় তাঁরা।’

ভুক্তভোগী একাধিক ঋণগ্রহীতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকারি আইন না মেনেই এসব অনলাইন ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহকদের মাঝে ঋণ দিয়ে হয়রানি করে চলেছে। তাঁদের ঋণের টাকা যথাসময়ে পরিশোধ করতে না পারলে পরের দিন থেকে শতকরা ৮০ শতাংশ করে লভ্যাংশ নিচ্ছে ঋণ গ্রহীতাদের কাছ থেকে।

ঋণের ব্যবসা করতে হলে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক এবং মাইক্রোক্রেডিট অথরিটির অনুমোদন ও কাগজপত্র নিতে হয়। কিন্তু এসব প্রতিষ্ঠানের কোনো কাগজপত্র বা অনুমোদন নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম নীতিবহির্ভূত এসব প্রতিষ্ঠানগুলো অবৈধ অর্থনৈতিক লেনদেন নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাচ্ছে।

এইভাবে প্রতিনিয়ত হাজার হাজার গ্রাহককে প্রচারণার মাধ্যমে ভুল বুঝিয়ে প্রথমে সদস্য করে তাঁদের। অনলাইনে স্বল্প সুদে ঋণের কথা বলে টাকা দেওয়া হয়। ঋণ দেওয়ার পর শুরু হয় এসব অনলাইনে অবৈধ লাইসেন্সবিহীন রিপেইড ক্যাশ কোম্পানির বাণিজ্য।

এসব প্রতিষ্ঠান প্রথমে একজন গ্রাহককে অনলাইনে তাঁদের সাইটের সদস্য করে। এরপর সদস্যকে জানানো হয় ৭ দিন, ৯০ দিন ও ১২০ দিনসহ বিভিন্ন মেয়াদে তিনি ওই প্রতিষ্ঠান থেকে স্বল্প সুদে অনলাইনে ঋণ নিতে পারবেন।

কিন্তু ঋণ দেওয়ার পর হঠাৎ তাঁদের কথা আর কাজের সঙ্গে মিল পাওয়া যায় না। অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন নম্বরে গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে তাঁরা। গ্রাহকদের ঋণের তারিখ শেষ হওয়ার পরের দিন থেকে ঋণ পরিশোধ না করতে পারলে শতকরা ৪৫ টাকা প্রতিদিন আসল টাকার সঙ্গে লভ্যাংশ যোগ করা হয়। এত টাকা কেন সুদ বললে তারা বলে, এটা তাঁদের কোম্পানির নিয়ম।

এ বিষয়ে বটিয়াঘাটা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা অমিত সমাদ্দার বলেন, ‘এই ধরনের কোনো বিষয় আমার জানা নাই। তবে শুনেছি এক ধরনের প্রতারক চক্র বিভিন্ন প্রলোভনের কথা বলে জন সাধারণকে প্রতারণায় ফেলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত