অরুণ কর্মকার

দেশে এখন গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয় সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ানো এবং চলতি ব্যয় নির্বাহের (ব্যালান্স অব পেমেন্টস) ঘাটতি কাটিয়ে ওঠা।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪৭০ কোটি ডলার শর্তসাপেক্ষ ঋণপ্রাপ্তি নিশ্চিত হওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্যভিত্তিক আলোচনা হচ্ছে। সেই আলোচনায় অর্থনীতিবিদ, গবেষক, ব্যাংকার প্রভৃতি বিশেষজ্ঞরা যেমন যোগ দিচ্ছেন, তেমনি সমাজের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ এবং বিশেষ অজ্ঞরাও পিছিয়ে নেই।
কয়েক দিনে নগরীর অনেকগুলো জায়গায় আমার যাওয়া হয়েছে। কোথাও নিজের কাজে। কোথাও-বা কিছু তথ্য সংগ্রহের প্রয়োজনে। এর প্রতিটি জায়গাতেই লক্ষ করে দেখেছি, আলাপ-আলোচনা ঘুরেফিরে ওই রাজস্ব এবং চলতি ব্যয় নির্বাহের সংকট প্রসঙ্গে চলে যায়।
এই সব আলোচনায় আরেকটি বিষয়ে দেখলাম, মোটামুটি সবাই একমত। বিষয়টি হলো—সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ানোর বিস্তীর্ণ ক্ষেত্র পড়ে আছে। সেগুলো ব্যবহার করতে পারলে আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী রাজস্ব আয় বাড়াতেও কোনো সমস্যা হবে না। তবে বিদ্যমান কর প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা দিয়ে তা সম্ভব কি না, সে বিষয়ে সবারই সন্দেহ আছে।
সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ানোর সবচেয়ে বড় সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র হচ্ছে আয়কর। আয়কর না দেওয়া এবং ফাঁকি দেওয়া লোকের সংখ্যা দেশে এত বিপুলসংখ্যক যে তা নিরূপণ করা কঠিন। কয়েক দিনে যেসব জায়গায় যেতে হয়েছে বলেছি, তার মধ্যে একটি জায়গা হলো ভূমি রেজিস্ট্রেশন অফিস; অর্থাৎ সাব-রেজিস্ট্রার অফিস। সেখান থেকে অর্জিত একটি বাস্তব অভিজ্ঞতার কথা এখানে উল্লেখ করা প্রাসঙ্গিক হবে।
মিরপুর এলাকার একটি ফ্ল্যাট কেনাবেচার রেজিস্ট্রেশন হবে। বিক্রেতা, মানে দলিলদাতা ছয়জন। তাঁরা জায়গা কিনে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আটতলা একটি বাড়ি বানিয়েছেন। সেই বাড়ির কয়েকটি ফ্ল্যাট বিক্রি করেছেন। তারই একটির রেজিস্ট্রেশন হবে। ফ্ল্যাট ক্রেতা এক দম্পতি। তাঁরা দুজনই অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবী।
দলিল লেখক উভয় পক্ষের কাছে যে কটি প্রয়োজনীয় কাগজ চাইলেন, তার একটি হচ্ছে কর শনাক্তকরণ নম্বর বা টিআইএন। সঙ্গে ট্যাক্স রিটার্ন জমার স্লিপ। ফ্ল্যাট ক্রেতার সব কাগজপত্র দেওয়া হলো। বিক্রেতা ছয়জনের মধ্যে দেখা গেল তিনজনের টিআইএন নেই। বাকি তিনজনের আছে। কিন্তু তার মধ্যেও একজনের ট্যাক্স রিটার্ন জমার স্লিপ নেই; অর্থাৎ তিনি রিটার্ন দাখিল করেননি।
এখন কী হবে! যে তিনজন বিক্রেতার টিআইএন নেই তাঁদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ৫০০ করে টাকা নেওয়া হলো। পাশেই ল্যাপটপ নিয়ে বসে আছেন এক তরুণ। তিনি তাঁদের জন্য নতুন টিআইএন বানিয়ে দিলেন। টিআইএন নতুন হলে রিটার্ন জমার স্লিপ লাগে না। ঢাকার কোনো কোনো এলাকার সাব রেজিস্ট্রার অফিসের নাকি নতুন টিআইএন হলে সঙ্গে ‘নো রিটার্ন সার্টিফিকেট’ দিতে হয়। মিরপুর এখনো সে নিয়মের বাইরে।
কিন্তু যে বিক্রেতার পুরোনো টিআইএন আছে, তাঁর তো রিটার্ন জমার স্লিপ লাগবে। শেষ পর্যন্ত দুই-একটি তথ্য এদিক-সেদিক করে তাঁর জন্যও নতুন টিআইএন করে আনা হলো। সমস্যার সমাধান হয়ে গেল। দলিল রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন।
এই যে ফ্ল্যাট বিক্রেতা ভদ্রলোকেরা তাঁরা কিন্তু প্রত্যেকেই ছোটখাটো ব্যবসা-বাণিজ্য করেন। বাড়ি-ফ্ল্যাটও তাঁদের শুধু এই একটি নয়। তাঁরা এই শহরের সম্পন্ন মধ্যবিত্ত। স্থানীয় সমাজে তাঁরা সুপরিচিতও বটে। আইন অনুযায়ী তাঁদের প্রত্যেকেই আয়করের আওতায় পড়েন। কিন্তু দেন না। এমন অসংখ্য লোক আছেন আমার নিজের চেনা-জানা মহলের মধ্যেও। তাঁদের অনেকে বহু কোটিপতি। কিন্তু দিব্যি আছেন আয়কর জালের বাইরে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুযায়ী, চার বছর আগে দেশে টিআইএনধারীর সংখ্যা ছিল ৪১ লাখের মতো। এখন সেই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৮৫ লাখ। অথচ এ বছর রিটার্ন জমা পড়েছে সাড়ে ২৮ লাখ।
পত্রিকান্তরে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, আয়কর রিটার্ন দেওয়া বাধ্যতামূলক, এমন ব্যবসায়ী কোম্পানির সংখ্যা দেশে প্রায় পৌনে তিন লাখ। কিন্তু গত অর্থবছরে রিটার্ন জমা দিয়েছে মাত্র ২৮১টি কোম্পানি এবং এই কোম্পানিগুলোর ৯৮৭ জন পরিচালক। এসব তথ্য জানার পর আর কীই-বা বলার থাকে!
তবে আমরা এসব তথ্য যতই চেপে-ঢেকে রাখতে চাই আইএমএফের মতো সংস্থাগুলোর এসব জানা আছে। সে জন্যই তারা রাজস্ব আদায় বাড়ানোর সুনির্দিষ্ট পরিমাণ ও সময় উল্লেখ করে শর্ত দিয়েছে। তাতে আগামী তিন অর্থবছরে মোট ২ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকা কর আদায় বাড়ানোর যে কথা বলা হয়েছে, তা শুধু আয়কর থেকেই তুলে আনা সম্ভব। সে জন্য যাঁরা আয়করের আওতায় পড়েন, তাঁদের প্রত্যেকের কাছ থেকে আয়কর আদায় করতে হবে। এখানেই প্রশ্ন—বর্তমান ব্যবস্থাপনায় এবং বিদ্যমান কর প্রশাসন এই কাজের উপযুক্ত কি না। আয়করের পর রাজস্ব আয় বাড়ানোর আরেকটি বড় ক্ষেত্র হচ্ছে মূসক বা ভ্যাট। নতুন ভ্যাট আইন চালু করা হয়েছে তিন বছর আগে। কিন্তু ভ্যাট আদায়ে অগ্রগতি কম। অথচ খুচরা দোকানদারেরা পর্যন্ত পারলে ক্রেতার কাছ থেকে ভ্যাট আদায় করেন। ধারণা করা হয়, ভ্যাট যত আদায় হয়, সরকারি কোষাগারে ততটা জমা হয় না।
কাস্টমস থেকেও অন্তত আগামী দুই বছর বাড়তি শুল্ক আদায়ের সুযোগ আছে। ২০২৬ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে আসার পর অবশ্য এই সুযোগ আর থাকবে না।
রাজস্ব আদায় বাড়ানোর বিষয়ে এনবিআর সুনির্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত কিংবা ক্ষেত্র অথবা কর্মপদ্ধতি চূড়ান্ত করেনি। তবে রাজস্ব আয় বাড়ানো যে সম্ভব হবে, সে বিষয়ে তারাও মোটামুটি নিশ্চিত। আগামী বাজেটে তার প্রতিফলন ঘটতে দেখা যাবে।

দেশে এখন গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয় সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ানো এবং চলতি ব্যয় নির্বাহের (ব্যালান্স অব পেমেন্টস) ঘাটতি কাটিয়ে ওঠা।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪৭০ কোটি ডলার শর্তসাপেক্ষ ঋণপ্রাপ্তি নিশ্চিত হওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্যভিত্তিক আলোচনা হচ্ছে। সেই আলোচনায় অর্থনীতিবিদ, গবেষক, ব্যাংকার প্রভৃতি বিশেষজ্ঞরা যেমন যোগ দিচ্ছেন, তেমনি সমাজের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ এবং বিশেষ অজ্ঞরাও পিছিয়ে নেই।
কয়েক দিনে নগরীর অনেকগুলো জায়গায় আমার যাওয়া হয়েছে। কোথাও নিজের কাজে। কোথাও-বা কিছু তথ্য সংগ্রহের প্রয়োজনে। এর প্রতিটি জায়গাতেই লক্ষ করে দেখেছি, আলাপ-আলোচনা ঘুরেফিরে ওই রাজস্ব এবং চলতি ব্যয় নির্বাহের সংকট প্রসঙ্গে চলে যায়।
এই সব আলোচনায় আরেকটি বিষয়ে দেখলাম, মোটামুটি সবাই একমত। বিষয়টি হলো—সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ানোর বিস্তীর্ণ ক্ষেত্র পড়ে আছে। সেগুলো ব্যবহার করতে পারলে আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী রাজস্ব আয় বাড়াতেও কোনো সমস্যা হবে না। তবে বিদ্যমান কর প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা দিয়ে তা সম্ভব কি না, সে বিষয়ে সবারই সন্দেহ আছে।
সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ানোর সবচেয়ে বড় সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র হচ্ছে আয়কর। আয়কর না দেওয়া এবং ফাঁকি দেওয়া লোকের সংখ্যা দেশে এত বিপুলসংখ্যক যে তা নিরূপণ করা কঠিন। কয়েক দিনে যেসব জায়গায় যেতে হয়েছে বলেছি, তার মধ্যে একটি জায়গা হলো ভূমি রেজিস্ট্রেশন অফিস; অর্থাৎ সাব-রেজিস্ট্রার অফিস। সেখান থেকে অর্জিত একটি বাস্তব অভিজ্ঞতার কথা এখানে উল্লেখ করা প্রাসঙ্গিক হবে।
মিরপুর এলাকার একটি ফ্ল্যাট কেনাবেচার রেজিস্ট্রেশন হবে। বিক্রেতা, মানে দলিলদাতা ছয়জন। তাঁরা জায়গা কিনে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আটতলা একটি বাড়ি বানিয়েছেন। সেই বাড়ির কয়েকটি ফ্ল্যাট বিক্রি করেছেন। তারই একটির রেজিস্ট্রেশন হবে। ফ্ল্যাট ক্রেতা এক দম্পতি। তাঁরা দুজনই অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবী।
দলিল লেখক উভয় পক্ষের কাছে যে কটি প্রয়োজনীয় কাগজ চাইলেন, তার একটি হচ্ছে কর শনাক্তকরণ নম্বর বা টিআইএন। সঙ্গে ট্যাক্স রিটার্ন জমার স্লিপ। ফ্ল্যাট ক্রেতার সব কাগজপত্র দেওয়া হলো। বিক্রেতা ছয়জনের মধ্যে দেখা গেল তিনজনের টিআইএন নেই। বাকি তিনজনের আছে। কিন্তু তার মধ্যেও একজনের ট্যাক্স রিটার্ন জমার স্লিপ নেই; অর্থাৎ তিনি রিটার্ন দাখিল করেননি।
এখন কী হবে! যে তিনজন বিক্রেতার টিআইএন নেই তাঁদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ৫০০ করে টাকা নেওয়া হলো। পাশেই ল্যাপটপ নিয়ে বসে আছেন এক তরুণ। তিনি তাঁদের জন্য নতুন টিআইএন বানিয়ে দিলেন। টিআইএন নতুন হলে রিটার্ন জমার স্লিপ লাগে না। ঢাকার কোনো কোনো এলাকার সাব রেজিস্ট্রার অফিসের নাকি নতুন টিআইএন হলে সঙ্গে ‘নো রিটার্ন সার্টিফিকেট’ দিতে হয়। মিরপুর এখনো সে নিয়মের বাইরে।
কিন্তু যে বিক্রেতার পুরোনো টিআইএন আছে, তাঁর তো রিটার্ন জমার স্লিপ লাগবে। শেষ পর্যন্ত দুই-একটি তথ্য এদিক-সেদিক করে তাঁর জন্যও নতুন টিআইএন করে আনা হলো। সমস্যার সমাধান হয়ে গেল। দলিল রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন।
এই যে ফ্ল্যাট বিক্রেতা ভদ্রলোকেরা তাঁরা কিন্তু প্রত্যেকেই ছোটখাটো ব্যবসা-বাণিজ্য করেন। বাড়ি-ফ্ল্যাটও তাঁদের শুধু এই একটি নয়। তাঁরা এই শহরের সম্পন্ন মধ্যবিত্ত। স্থানীয় সমাজে তাঁরা সুপরিচিতও বটে। আইন অনুযায়ী তাঁদের প্রত্যেকেই আয়করের আওতায় পড়েন। কিন্তু দেন না। এমন অসংখ্য লোক আছেন আমার নিজের চেনা-জানা মহলের মধ্যেও। তাঁদের অনেকে বহু কোটিপতি। কিন্তু দিব্যি আছেন আয়কর জালের বাইরে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুযায়ী, চার বছর আগে দেশে টিআইএনধারীর সংখ্যা ছিল ৪১ লাখের মতো। এখন সেই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৮৫ লাখ। অথচ এ বছর রিটার্ন জমা পড়েছে সাড়ে ২৮ লাখ।
পত্রিকান্তরে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, আয়কর রিটার্ন দেওয়া বাধ্যতামূলক, এমন ব্যবসায়ী কোম্পানির সংখ্যা দেশে প্রায় পৌনে তিন লাখ। কিন্তু গত অর্থবছরে রিটার্ন জমা দিয়েছে মাত্র ২৮১টি কোম্পানি এবং এই কোম্পানিগুলোর ৯৮৭ জন পরিচালক। এসব তথ্য জানার পর আর কীই-বা বলার থাকে!
তবে আমরা এসব তথ্য যতই চেপে-ঢেকে রাখতে চাই আইএমএফের মতো সংস্থাগুলোর এসব জানা আছে। সে জন্যই তারা রাজস্ব আদায় বাড়ানোর সুনির্দিষ্ট পরিমাণ ও সময় উল্লেখ করে শর্ত দিয়েছে। তাতে আগামী তিন অর্থবছরে মোট ২ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকা কর আদায় বাড়ানোর যে কথা বলা হয়েছে, তা শুধু আয়কর থেকেই তুলে আনা সম্ভব। সে জন্য যাঁরা আয়করের আওতায় পড়েন, তাঁদের প্রত্যেকের কাছ থেকে আয়কর আদায় করতে হবে। এখানেই প্রশ্ন—বর্তমান ব্যবস্থাপনায় এবং বিদ্যমান কর প্রশাসন এই কাজের উপযুক্ত কি না। আয়করের পর রাজস্ব আয় বাড়ানোর আরেকটি বড় ক্ষেত্র হচ্ছে মূসক বা ভ্যাট। নতুন ভ্যাট আইন চালু করা হয়েছে তিন বছর আগে। কিন্তু ভ্যাট আদায়ে অগ্রগতি কম। অথচ খুচরা দোকানদারেরা পর্যন্ত পারলে ক্রেতার কাছ থেকে ভ্যাট আদায় করেন। ধারণা করা হয়, ভ্যাট যত আদায় হয়, সরকারি কোষাগারে ততটা জমা হয় না।
কাস্টমস থেকেও অন্তত আগামী দুই বছর বাড়তি শুল্ক আদায়ের সুযোগ আছে। ২০২৬ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে আসার পর অবশ্য এই সুযোগ আর থাকবে না।
রাজস্ব আদায় বাড়ানোর বিষয়ে এনবিআর সুনির্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত কিংবা ক্ষেত্র অথবা কর্মপদ্ধতি চূড়ান্ত করেনি। তবে রাজস্ব আয় বাড়ানো যে সম্ভব হবে, সে বিষয়ে তারাও মোটামুটি নিশ্চিত। আগামী বাজেটে তার প্রতিফলন ঘটতে দেখা যাবে।

অরুণ কর্মকার

দেশে এখন গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয় সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ানো এবং চলতি ব্যয় নির্বাহের (ব্যালান্স অব পেমেন্টস) ঘাটতি কাটিয়ে ওঠা।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪৭০ কোটি ডলার শর্তসাপেক্ষ ঋণপ্রাপ্তি নিশ্চিত হওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্যভিত্তিক আলোচনা হচ্ছে। সেই আলোচনায় অর্থনীতিবিদ, গবেষক, ব্যাংকার প্রভৃতি বিশেষজ্ঞরা যেমন যোগ দিচ্ছেন, তেমনি সমাজের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ এবং বিশেষ অজ্ঞরাও পিছিয়ে নেই।
কয়েক দিনে নগরীর অনেকগুলো জায়গায় আমার যাওয়া হয়েছে। কোথাও নিজের কাজে। কোথাও-বা কিছু তথ্য সংগ্রহের প্রয়োজনে। এর প্রতিটি জায়গাতেই লক্ষ করে দেখেছি, আলাপ-আলোচনা ঘুরেফিরে ওই রাজস্ব এবং চলতি ব্যয় নির্বাহের সংকট প্রসঙ্গে চলে যায়।
এই সব আলোচনায় আরেকটি বিষয়ে দেখলাম, মোটামুটি সবাই একমত। বিষয়টি হলো—সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ানোর বিস্তীর্ণ ক্ষেত্র পড়ে আছে। সেগুলো ব্যবহার করতে পারলে আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী রাজস্ব আয় বাড়াতেও কোনো সমস্যা হবে না। তবে বিদ্যমান কর প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা দিয়ে তা সম্ভব কি না, সে বিষয়ে সবারই সন্দেহ আছে।
সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ানোর সবচেয়ে বড় সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র হচ্ছে আয়কর। আয়কর না দেওয়া এবং ফাঁকি দেওয়া লোকের সংখ্যা দেশে এত বিপুলসংখ্যক যে তা নিরূপণ করা কঠিন। কয়েক দিনে যেসব জায়গায় যেতে হয়েছে বলেছি, তার মধ্যে একটি জায়গা হলো ভূমি রেজিস্ট্রেশন অফিস; অর্থাৎ সাব-রেজিস্ট্রার অফিস। সেখান থেকে অর্জিত একটি বাস্তব অভিজ্ঞতার কথা এখানে উল্লেখ করা প্রাসঙ্গিক হবে।
মিরপুর এলাকার একটি ফ্ল্যাট কেনাবেচার রেজিস্ট্রেশন হবে। বিক্রেতা, মানে দলিলদাতা ছয়জন। তাঁরা জায়গা কিনে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আটতলা একটি বাড়ি বানিয়েছেন। সেই বাড়ির কয়েকটি ফ্ল্যাট বিক্রি করেছেন। তারই একটির রেজিস্ট্রেশন হবে। ফ্ল্যাট ক্রেতা এক দম্পতি। তাঁরা দুজনই অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবী।
দলিল লেখক উভয় পক্ষের কাছে যে কটি প্রয়োজনীয় কাগজ চাইলেন, তার একটি হচ্ছে কর শনাক্তকরণ নম্বর বা টিআইএন। সঙ্গে ট্যাক্স রিটার্ন জমার স্লিপ। ফ্ল্যাট ক্রেতার সব কাগজপত্র দেওয়া হলো। বিক্রেতা ছয়জনের মধ্যে দেখা গেল তিনজনের টিআইএন নেই। বাকি তিনজনের আছে। কিন্তু তার মধ্যেও একজনের ট্যাক্স রিটার্ন জমার স্লিপ নেই; অর্থাৎ তিনি রিটার্ন দাখিল করেননি।
এখন কী হবে! যে তিনজন বিক্রেতার টিআইএন নেই তাঁদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ৫০০ করে টাকা নেওয়া হলো। পাশেই ল্যাপটপ নিয়ে বসে আছেন এক তরুণ। তিনি তাঁদের জন্য নতুন টিআইএন বানিয়ে দিলেন। টিআইএন নতুন হলে রিটার্ন জমার স্লিপ লাগে না। ঢাকার কোনো কোনো এলাকার সাব রেজিস্ট্রার অফিসের নাকি নতুন টিআইএন হলে সঙ্গে ‘নো রিটার্ন সার্টিফিকেট’ দিতে হয়। মিরপুর এখনো সে নিয়মের বাইরে।
কিন্তু যে বিক্রেতার পুরোনো টিআইএন আছে, তাঁর তো রিটার্ন জমার স্লিপ লাগবে। শেষ পর্যন্ত দুই-একটি তথ্য এদিক-সেদিক করে তাঁর জন্যও নতুন টিআইএন করে আনা হলো। সমস্যার সমাধান হয়ে গেল। দলিল রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন।
এই যে ফ্ল্যাট বিক্রেতা ভদ্রলোকেরা তাঁরা কিন্তু প্রত্যেকেই ছোটখাটো ব্যবসা-বাণিজ্য করেন। বাড়ি-ফ্ল্যাটও তাঁদের শুধু এই একটি নয়। তাঁরা এই শহরের সম্পন্ন মধ্যবিত্ত। স্থানীয় সমাজে তাঁরা সুপরিচিতও বটে। আইন অনুযায়ী তাঁদের প্রত্যেকেই আয়করের আওতায় পড়েন। কিন্তু দেন না। এমন অসংখ্য লোক আছেন আমার নিজের চেনা-জানা মহলের মধ্যেও। তাঁদের অনেকে বহু কোটিপতি। কিন্তু দিব্যি আছেন আয়কর জালের বাইরে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুযায়ী, চার বছর আগে দেশে টিআইএনধারীর সংখ্যা ছিল ৪১ লাখের মতো। এখন সেই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৮৫ লাখ। অথচ এ বছর রিটার্ন জমা পড়েছে সাড়ে ২৮ লাখ।
পত্রিকান্তরে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, আয়কর রিটার্ন দেওয়া বাধ্যতামূলক, এমন ব্যবসায়ী কোম্পানির সংখ্যা দেশে প্রায় পৌনে তিন লাখ। কিন্তু গত অর্থবছরে রিটার্ন জমা দিয়েছে মাত্র ২৮১টি কোম্পানি এবং এই কোম্পানিগুলোর ৯৮৭ জন পরিচালক। এসব তথ্য জানার পর আর কীই-বা বলার থাকে!
তবে আমরা এসব তথ্য যতই চেপে-ঢেকে রাখতে চাই আইএমএফের মতো সংস্থাগুলোর এসব জানা আছে। সে জন্যই তারা রাজস্ব আদায় বাড়ানোর সুনির্দিষ্ট পরিমাণ ও সময় উল্লেখ করে শর্ত দিয়েছে। তাতে আগামী তিন অর্থবছরে মোট ২ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকা কর আদায় বাড়ানোর যে কথা বলা হয়েছে, তা শুধু আয়কর থেকেই তুলে আনা সম্ভব। সে জন্য যাঁরা আয়করের আওতায় পড়েন, তাঁদের প্রত্যেকের কাছ থেকে আয়কর আদায় করতে হবে। এখানেই প্রশ্ন—বর্তমান ব্যবস্থাপনায় এবং বিদ্যমান কর প্রশাসন এই কাজের উপযুক্ত কি না। আয়করের পর রাজস্ব আয় বাড়ানোর আরেকটি বড় ক্ষেত্র হচ্ছে মূসক বা ভ্যাট। নতুন ভ্যাট আইন চালু করা হয়েছে তিন বছর আগে। কিন্তু ভ্যাট আদায়ে অগ্রগতি কম। অথচ খুচরা দোকানদারেরা পর্যন্ত পারলে ক্রেতার কাছ থেকে ভ্যাট আদায় করেন। ধারণা করা হয়, ভ্যাট যত আদায় হয়, সরকারি কোষাগারে ততটা জমা হয় না।
কাস্টমস থেকেও অন্তত আগামী দুই বছর বাড়তি শুল্ক আদায়ের সুযোগ আছে। ২০২৬ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে আসার পর অবশ্য এই সুযোগ আর থাকবে না।
রাজস্ব আদায় বাড়ানোর বিষয়ে এনবিআর সুনির্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত কিংবা ক্ষেত্র অথবা কর্মপদ্ধতি চূড়ান্ত করেনি। তবে রাজস্ব আয় বাড়ানো যে সম্ভব হবে, সে বিষয়ে তারাও মোটামুটি নিশ্চিত। আগামী বাজেটে তার প্রতিফলন ঘটতে দেখা যাবে।

দেশে এখন গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয় সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ানো এবং চলতি ব্যয় নির্বাহের (ব্যালান্স অব পেমেন্টস) ঘাটতি কাটিয়ে ওঠা।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪৭০ কোটি ডলার শর্তসাপেক্ষ ঋণপ্রাপ্তি নিশ্চিত হওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্যভিত্তিক আলোচনা হচ্ছে। সেই আলোচনায় অর্থনীতিবিদ, গবেষক, ব্যাংকার প্রভৃতি বিশেষজ্ঞরা যেমন যোগ দিচ্ছেন, তেমনি সমাজের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ এবং বিশেষ অজ্ঞরাও পিছিয়ে নেই।
কয়েক দিনে নগরীর অনেকগুলো জায়গায় আমার যাওয়া হয়েছে। কোথাও নিজের কাজে। কোথাও-বা কিছু তথ্য সংগ্রহের প্রয়োজনে। এর প্রতিটি জায়গাতেই লক্ষ করে দেখেছি, আলাপ-আলোচনা ঘুরেফিরে ওই রাজস্ব এবং চলতি ব্যয় নির্বাহের সংকট প্রসঙ্গে চলে যায়।
এই সব আলোচনায় আরেকটি বিষয়ে দেখলাম, মোটামুটি সবাই একমত। বিষয়টি হলো—সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ানোর বিস্তীর্ণ ক্ষেত্র পড়ে আছে। সেগুলো ব্যবহার করতে পারলে আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী রাজস্ব আয় বাড়াতেও কোনো সমস্যা হবে না। তবে বিদ্যমান কর প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা দিয়ে তা সম্ভব কি না, সে বিষয়ে সবারই সন্দেহ আছে।
সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ানোর সবচেয়ে বড় সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র হচ্ছে আয়কর। আয়কর না দেওয়া এবং ফাঁকি দেওয়া লোকের সংখ্যা দেশে এত বিপুলসংখ্যক যে তা নিরূপণ করা কঠিন। কয়েক দিনে যেসব জায়গায় যেতে হয়েছে বলেছি, তার মধ্যে একটি জায়গা হলো ভূমি রেজিস্ট্রেশন অফিস; অর্থাৎ সাব-রেজিস্ট্রার অফিস। সেখান থেকে অর্জিত একটি বাস্তব অভিজ্ঞতার কথা এখানে উল্লেখ করা প্রাসঙ্গিক হবে।
মিরপুর এলাকার একটি ফ্ল্যাট কেনাবেচার রেজিস্ট্রেশন হবে। বিক্রেতা, মানে দলিলদাতা ছয়জন। তাঁরা জায়গা কিনে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আটতলা একটি বাড়ি বানিয়েছেন। সেই বাড়ির কয়েকটি ফ্ল্যাট বিক্রি করেছেন। তারই একটির রেজিস্ট্রেশন হবে। ফ্ল্যাট ক্রেতা এক দম্পতি। তাঁরা দুজনই অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবী।
দলিল লেখক উভয় পক্ষের কাছে যে কটি প্রয়োজনীয় কাগজ চাইলেন, তার একটি হচ্ছে কর শনাক্তকরণ নম্বর বা টিআইএন। সঙ্গে ট্যাক্স রিটার্ন জমার স্লিপ। ফ্ল্যাট ক্রেতার সব কাগজপত্র দেওয়া হলো। বিক্রেতা ছয়জনের মধ্যে দেখা গেল তিনজনের টিআইএন নেই। বাকি তিনজনের আছে। কিন্তু তার মধ্যেও একজনের ট্যাক্স রিটার্ন জমার স্লিপ নেই; অর্থাৎ তিনি রিটার্ন দাখিল করেননি।
এখন কী হবে! যে তিনজন বিক্রেতার টিআইএন নেই তাঁদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ৫০০ করে টাকা নেওয়া হলো। পাশেই ল্যাপটপ নিয়ে বসে আছেন এক তরুণ। তিনি তাঁদের জন্য নতুন টিআইএন বানিয়ে দিলেন। টিআইএন নতুন হলে রিটার্ন জমার স্লিপ লাগে না। ঢাকার কোনো কোনো এলাকার সাব রেজিস্ট্রার অফিসের নাকি নতুন টিআইএন হলে সঙ্গে ‘নো রিটার্ন সার্টিফিকেট’ দিতে হয়। মিরপুর এখনো সে নিয়মের বাইরে।
কিন্তু যে বিক্রেতার পুরোনো টিআইএন আছে, তাঁর তো রিটার্ন জমার স্লিপ লাগবে। শেষ পর্যন্ত দুই-একটি তথ্য এদিক-সেদিক করে তাঁর জন্যও নতুন টিআইএন করে আনা হলো। সমস্যার সমাধান হয়ে গেল। দলিল রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন।
এই যে ফ্ল্যাট বিক্রেতা ভদ্রলোকেরা তাঁরা কিন্তু প্রত্যেকেই ছোটখাটো ব্যবসা-বাণিজ্য করেন। বাড়ি-ফ্ল্যাটও তাঁদের শুধু এই একটি নয়। তাঁরা এই শহরের সম্পন্ন মধ্যবিত্ত। স্থানীয় সমাজে তাঁরা সুপরিচিতও বটে। আইন অনুযায়ী তাঁদের প্রত্যেকেই আয়করের আওতায় পড়েন। কিন্তু দেন না। এমন অসংখ্য লোক আছেন আমার নিজের চেনা-জানা মহলের মধ্যেও। তাঁদের অনেকে বহু কোটিপতি। কিন্তু দিব্যি আছেন আয়কর জালের বাইরে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুযায়ী, চার বছর আগে দেশে টিআইএনধারীর সংখ্যা ছিল ৪১ লাখের মতো। এখন সেই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৮৫ লাখ। অথচ এ বছর রিটার্ন জমা পড়েছে সাড়ে ২৮ লাখ।
পত্রিকান্তরে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, আয়কর রিটার্ন দেওয়া বাধ্যতামূলক, এমন ব্যবসায়ী কোম্পানির সংখ্যা দেশে প্রায় পৌনে তিন লাখ। কিন্তু গত অর্থবছরে রিটার্ন জমা দিয়েছে মাত্র ২৮১টি কোম্পানি এবং এই কোম্পানিগুলোর ৯৮৭ জন পরিচালক। এসব তথ্য জানার পর আর কীই-বা বলার থাকে!
তবে আমরা এসব তথ্য যতই চেপে-ঢেকে রাখতে চাই আইএমএফের মতো সংস্থাগুলোর এসব জানা আছে। সে জন্যই তারা রাজস্ব আদায় বাড়ানোর সুনির্দিষ্ট পরিমাণ ও সময় উল্লেখ করে শর্ত দিয়েছে। তাতে আগামী তিন অর্থবছরে মোট ২ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকা কর আদায় বাড়ানোর যে কথা বলা হয়েছে, তা শুধু আয়কর থেকেই তুলে আনা সম্ভব। সে জন্য যাঁরা আয়করের আওতায় পড়েন, তাঁদের প্রত্যেকের কাছ থেকে আয়কর আদায় করতে হবে। এখানেই প্রশ্ন—বর্তমান ব্যবস্থাপনায় এবং বিদ্যমান কর প্রশাসন এই কাজের উপযুক্ত কি না। আয়করের পর রাজস্ব আয় বাড়ানোর আরেকটি বড় ক্ষেত্র হচ্ছে মূসক বা ভ্যাট। নতুন ভ্যাট আইন চালু করা হয়েছে তিন বছর আগে। কিন্তু ভ্যাট আদায়ে অগ্রগতি কম। অথচ খুচরা দোকানদারেরা পর্যন্ত পারলে ক্রেতার কাছ থেকে ভ্যাট আদায় করেন। ধারণা করা হয়, ভ্যাট যত আদায় হয়, সরকারি কোষাগারে ততটা জমা হয় না।
কাস্টমস থেকেও অন্তত আগামী দুই বছর বাড়তি শুল্ক আদায়ের সুযোগ আছে। ২০২৬ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে আসার পর অবশ্য এই সুযোগ আর থাকবে না।
রাজস্ব আদায় বাড়ানোর বিষয়ে এনবিআর সুনির্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত কিংবা ক্ষেত্র অথবা কর্মপদ্ধতি চূড়ান্ত করেনি। তবে রাজস্ব আয় বাড়ানো যে সম্ভব হবে, সে বিষয়ে তারাও মোটামুটি নিশ্চিত। আগামী বাজেটে তার প্রতিফলন ঘটতে দেখা যাবে।


গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৫ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।


দেশে এখন গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয় সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ানো এবং চলতি ব্যয় নির্বাহের (ব্যালান্স অব পেমেন্টস) ঘাটতি কাটিয়ে ওঠা।
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]


দেশে এখন গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয় সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ানো এবং চলতি ব্যয় নির্বাহের (ব্যালান্স অব পেমেন্টস) ঘাটতি কাটিয়ে ওঠা।
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৫ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।


দেশে এখন গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয় সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ানো এবং চলতি ব্যয় নির্বাহের (ব্যালান্স অব পেমেন্টস) ঘাটতি কাটিয়ে ওঠা।
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৫ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।


দেশে এখন গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয় সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ানো এবং চলতি ব্যয় নির্বাহের (ব্যালান্স অব পেমেন্টস) ঘাটতি কাটিয়ে ওঠা।
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৫ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫