Ajker Patrika

ছোট কাঁধে বড় দায়িত্ব

নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
আপডেট : ১২ জানুয়ারি ২০২২, ১২: ১৯
ছোট কাঁধে বড় দায়িত্ব

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার কচাকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী হাফিজা (১০)। টানা তিন মাস স্কুল ছেড়ে খেত থেকে মরিচ তোলার কাজ করে সে। তিন মাস মরিচ তুলে যে পারিশ্রমিক পায় তা দিয়ে কয়েক মাস সংসারের খরচের পাশাপাশি নিজের লেখাপড়ার খরচ চলে যায়। তৃতীয় শ্রেণিতে থাকা অবস্থায় সংসারের এই বড় দায়িত্ব পড়েছে হাফিজার ছোট কাঁধে।

জানা গেছে, মাত্র চার বছর বয়সে বাবাকে হারিয়েছে হাফিজা। চার বোনের মধ্যে সবার ছোট। বড় বোন আফরোজার বিয়ে হয়েছে। স্বামীর সংসারে থাকেন। দ্বিতীয় বোন আরিফা। স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে বাড়িতে রয়েছেন দুই বছর থেকে। তৃতীয় বোন খাদিজা একই স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী। মা মোহসেনা অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। চার সদস্যের ভরণপোষণ ও সংসার চালাতে হিমশিম খান তিনি। তাই পরিবারের ছোট মেয়ে হাফিজা পুরো তিন মাস স্কুল ছেড়ে মরিচ তোলার কাজ করে সংসারে আয়ের জোগান দেয়। মাঝে মধ্যে তার কাজের সঙ্গী হয় বড় বোন খাদিজা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার জলার কেদার ইউনিয়নের সাতানা গ্রামের মৃত আজিজার রহমানের মেয়ে হাফিজা। মাত্র এক শতক জমির ওপর তাঁদের মাথা গোঁজার একটি ঘর। এখানেই পরিবারের চার সদস্য কোনোমতে রাত পার করেন। চার সদস্যের প্রতিদিনের আহার জোগাতে সবাইকে শ্রম বিক্রি করতে হয়। প্রতিদিন স্কুলে যেতে পারে না সে। এখন এলাকায় মরিচ তোলার মৌসুম হওয়ায় প্রতিদিন অন্যদের সঙ্গে মরিচ তুলতে যেতে হয় তাকে। সারা দিন মরিচ তুলে ১০০-১৫০ টাকা পায় হাফিজা। আয়ের বড় অংশ মায়ের হাতে তুলে দেয় সে। অল্প কিছু টাকা তার লেখাপড়ায় ব্যয় হয়। মরিচ তোলার কাজ চলবে ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ পর্যন্ত। এই পুরো সময়টা স্কুলে যেতে পারবে না সে।

হাফিজার মা মোহসেনা জানান, মেয়েদের মরিচ তোলার আয়ে তিন চার মাস কোনোমতে সংসার চলে।

কেদার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আ. খ. ম ওয়াজিদুল কবির রাশেদ বলেন, ‘হাফিজার পরিবার সম্পর্কে আমি জানতে পেরেছি। ইতিমধ্যে তার মায়ের বিধবা ভাতা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত