Ajker Patrika

জুমের ফসলে জমজমাট বাজার

কামরুল হাসান জনি, মাটিরাঙ্গা (খাগড়াছড়ি)
আপডেট : ০৩ অক্টোবর ২০২১, ১২: ৪৪
Thumbnail image

জুমের ফসলে জমজমাট হয়ে উঠছে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা বাজার। হাটের দিনে কলার পাশাপাশি সবজিতে ভরপুর হয়ে উঠছে এই বাজার। গতকাল শনিবার ওই হাটে গিয়ে এই অবস্থা দেখা যায়। মাটিরাঙ্গার জুমখেতে এবার ভালো ফলন হওয়ায় বাজারে তার প্রভাব পড়ছে বলে মনে করছেন জুমিয়ারা। এ বছর মাটিরাঙ্গায় ৩০০ দশমিক ১২ হেক্টর জুমের জমিতে ২০০ মেট্রিক টন ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

খাগড়াছড়ি শহর থেকে প্রায় ১৭ কিলোমিটার দূরের উপজেলা মাটিরাঙ্গা। এর পূর্ব-দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত মাটিরাঙ্গা বাজার। এই বাজারে বেচাকেনার জন্য সমবেত হন উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের বাসিন্দা। বাজারে বাঙালি ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের মানুষের সমান উপস্থিতি দেখা যায়। তবে হাটে জুমের ফসল বিক্রেতা হিসেবে স্থানীয় ত্রিপুরা মেয়েরাই বেশি।

গতকাল শনিবার সাপ্তাহিক হাটের দিনে মাটিরাঙ্গা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, জমজমাট হাটে কলার পাশাপাশি জুমখেতে জন্মানো হরেক পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। সকাল ৬টা থেকে বিকেল পর্যন্ত চলে বেচাকেনা। আশপাশের খেতে উৎপাদিত শাক সবজি সরাসরি এই বাজারে আসে। এগুলো যেমন তরতাজা, তেমনি দামেও সস্তা।

বিক্রেতা ইন্দুবালা ত্রিপুরা জানান, বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে জুমের মাটিতে একসঙ্গে বিভিন্ন রকম বীজ বপন করা হয়। ভাদ্র-আশ্বিন মাসে জুমের ফসল কাটা হয়। পাহাড়ের ঢাল থেকে জুমের পাকা ধান সংগ্রহ করে বাজারে নিয়ে আসি। ধানের পাশাপাশি মারফা, বেগুন, ধনি মরিচ, ঢ্যাঁড়স, কাঁকরোল, কুমড়াসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি ও চাষ করা হয়।

জুম চাষি হেরেন্দ্র ত্রিপুরা ও মনিকা ত্রিপুরা জানান, জুমে বীজ বপনের পাঁচ মাস পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণের পর ফসল পাওয়া যায়। জুমে ধানের পাশাপাশি অন্তত ৩৩ জাতের মিশ্র ফসল চাষ হয়। এ বছর জুমের বাম্পার ফলন হয়েছে। তাই জুমিয়াদের চোখে-মুখে হাসি ফুটেছে।

মাটিরাঙ্গাসহ জেলা অধিকাংশ এলাকার পলি নির্ভর জমিতে মূল ফসলের পাশাপাশি সারা বছর শাকসবজি ফলে। উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা দেবাশীষ চাকমা বলেন, এ বছর মাটিরাঙ্গায় জুমে চাষ হয়েছে ৩০০ দশমিক ১২ হেক্টর জমিতে। এ থেকে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২০০ মেট্রিক টন। গত বছরের তুলনায় এবার জুমের ব্যাপক ফলন হয়েছে।

খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. মর্তুজা আলী বলেন, এ বছর খাগড়াছড়ি জেলায় জুমচাষ হয়েছে ১ হাজার ৯১০ হেক্টর জমিতে। এতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ হাজার ৯৮৬ মেট্রিক টন। গত বছরের তুলনায় এবার জুমের ব্যাপক ফলন হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত