Ajker Patrika

বীরাঙ্গনা সখিনার সমাধি ঘিরে পর্যটনকেন্দ্রের সম্ভাবনা

আরিফ আহম্মেদ, গৌরীপুর
আপডেট : ৩০ অক্টোবর ২০২১, ১৮: ০৪
বীরাঙ্গনা সখিনার সমাধি  ঘিরে পর্যটনকেন্দ্রের সম্ভাবনা

অমর প্রেমের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা বীরাঙ্গনা সখিনার সমাধি পর্যটন শিল্পের গুরুত্বপূর্ণ খাত হয়ে উঠতে পারে। এই সমাধি সখিনা বিবির মাজার হিসেবে পরিচিত। দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন ছুটে আসেন সমাধিটি একনজর দেখতে। সরকারিভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করলে সমাধিটিকে ঘিরে গড়ে উঠতে পারে পর্যটনকেন্দ্র। অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হতে পারে পশ্চাৎপদ এই অঞ্চলটি।

ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার মাওহা ইউনিয়নের কুমড়ী গ্রাম। সপ্তদশ শতকে এই গ্রামের নাম ছিল কেল্লা তাজপুর। ঈশা খাঁর দৌহিত্র ফিরোজ খাঁ ও কেল্লা তাজপুরের মোগল দেওয়ান উমর খাঁর কন্যা সখিনা বিবির স্মৃতিধন্য এই গ্রাম। এই গ্রামেরই কুমড়ী নামক স্থানে প্রকৃতির সান্নিধ্যে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন সখিনা।

ইতিহাসে স্থান পেলেও রাষ্ট্রের কাছে আজও অবহেলিত সমাধিটি। অথচ পর্যটন শিল্পের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে এই সমাধি। পাল্টে যেতে পারে অবহেলিত গৌরীপুর পূর্বাঞ্চলের অর্থনৈতিক চেহারা। জমিদার কন্যা সখিনার বীরাঙ্গনা হয়ে ওঠার এই কাহিনি বেশ চমকপ্রদ ও হৃদয়বিদারক। সাধারণ মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে থাকা সেই কাহিনি বীরাঙ্গনা সখিনাকে অমর করে রেখেছে।

কুমড়ী গ্রামের বাসিন্দা মো. মজিবুর রহমান (৭২) বলেন, বীরাঙ্গনা সখিনার এই সমাধিটি দীর্ঘকাল যাবৎ ছিল সম্পূর্ণ অরক্ষিত। সমাধির পাশে দুর্লভ প্রজাতির গাছগুলোই কেবল দাঁড়িয়ে ছিল তাঁর মহত্ত্বের সাক্ষী হয়ে। তবে এ অঞ্চলের কবিয়াল ও সাধারণ মানুষের মুখে মুখে ঘুরে ফিরত ফিরোজ-সখিনার অমর প্রেমের এই কাহিনি।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ কে এম এহসানুল হক সর্বপ্রথম প্রশাসনিকভাবে এই সমাধিটির সংরক্ষণের উদ্যোগ নেন। তাঁর সময় চারপাশে সীমানা প্রাচীর ও গেট নির্মাণ করা হয়। অবসরপ্রাপ্ত যুগ্মসচিব ইফতেখার আহমেদ ও আনন্দ মোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক কাজী আব্দুল মোনায়েমের দেওয়া তথ্যে প্রাবন্ধিক রণজিৎ করের গ্রন্থনায় ফিরোজ-সখিনার প্রেমের কাহিনি গ্রথিত হয় পাথরের ফলকে।

দীর্ঘসময় অতিবাহিত হলেও ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে আজও রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি পায়নি সমাধিটি। সে সুযোগে স্থানীয় কিছু স্বার্থান্বেষী মহল এই সমাধিটিকে মাজার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তাদের প্রতিহত করতে ঐতিহাসিক নিদর্শনটির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এখন সময়ের দাবি।

গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাসান মারুফ বলেন, ‘বীরাঙ্গনা সখিনার সমাধিকে ঘিরে পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সরকারিভাবে এর স্বীকৃতির কোনো কাগজপত্র আমি পাইনি। এ বিষয়ে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের কোনো নির্দেশনাও নেই। বর্তমানে ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে কমিটি করে এর তত্ত্বাবধান করা হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত