এম এ মান্নান, পরিকল্পনামন্ত্রী

বাংলাদেশ সরকারের চারবারের প্রধানমন্ত্রী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনার ৭৬তম জন্মদিনে তাঁকে উষ্ণ অভিনন্দন ও ভ্রাতৃপ্রতিম শুভেচ্ছা জানাই! তাঁর সঙ্গে আমার সরাসরি পরিচয় ১৯৮৬ সালে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যা হিসেবে তাঁর নাম আমরা আগে থেকেই জানতাম। আমি তাঁর থেকে বয়োজ্যেষ্ঠ; কিন্তু প্রায় সমসাময়িক। সে পরিপ্রেক্ষিতে এখানে আমার ব্যক্তিগত কিছু অনুভূতি প্রকাশ করছি।
জননেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আমার প্রথম সরাসরি সাক্ষাৎ হয় ১৯৮৬ সালে, আমার ময়মনসিংহে জেলা প্রশাসক থাকাকালে। তিনি তখন সামরিক শাসক জেনারেল এরশাদের সময়কার জাতীয় সংসদে কেবিনেট মন্ত্রীর মর্যাদায় বিরোধীদলীয় নেতা। সার্কিট হাউসে আলাপচারিতার সময় আমি তাঁর পিতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি আমার স্বাভাবিক আনুগত্যের কথা সবিনয়ে জানাই এবং বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণে, প্রয়োজনে জেলা প্রশাসকের পদ ছেড়ে দিয়ে তাঁর সঙ্গে কাজ করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করি। তিনি তখন অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে আমাকে বলেন, বাংলাদেশে চেপে বসা তখনকার সামরিক শাসন যথানিয়মে অচিরেই শেষ হবে এবং তাঁর দৃঢ়বিশ্বাস, বাংলাদেশের মানুষ পুনরায় আওয়ামী লীগের হাতে তাদের দেশের শাসনভার তুলে দেবে। ভবিষ্যতে, তিনি আমাকে তাঁর সঙ্গে কাজ করার সুযোগ দেবেন বলেও ‘প্রতিশ্রুতি’ দেন। পরবর্তী সময়ে ২০০০ সালে পুনরায় তাঁর সঙ্গে জেনেভায় আমার সাক্ষাৎ হয়; তখন তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
তিনি আমাকে অবাক করে ১৫ বছর আগে তাঁর দেওয়া ‘প্রতিশ্রুতি’ পুনর্ব্যক্ত করেন। আমি তাঁর স্মরণশক্তি ও ‘প্রতিশ্রুতি’ রক্ষার মানসিকতা দেখে অভিভূত হই।
২০০৩ সালে আমি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করি। ২০০৫ সালে সুনামগঞ্জের হাওর এলাকায় আওয়ামী লীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম মেম্বার, সাবেক কৃষি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুস সামাদ আজাদের শূন্য আসনে উপনির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়ে তাঁর সমর্থনের আশায় আমি তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করি। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নেয়নি। তাই তিনি আমাকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে উপনির্বাচনে অংশগ্রহণের পক্ষে মত দেন। তাঁর এই প্রচ্ছন্ন সমর্থনের পটভূমিতে আমি সাহস করে একজন প্রায় অচেনা ব্যক্তি হিসেবে উপনির্বাচনে অংশ নিই এবং নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও বিএনপির প্রার্থীর কাছে অল্প ভোটে পরাজিত হই। উপনির্বাচনে পরাজয়ের পর আমি নেত্রীর সঙ্গে ঢাকায় সাক্ষাৎ করি এবং ২০০৫ সালের জুলাই মাসে তাঁর আহ্বানে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগ দিই। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনি আমাকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেন, এতে আমি বিপুল ভোটে জয়লাভ করি। তিনি আমাকে তিনটি সংসদীয় কমিটিতে সদস্য হিসেবে মনোনয়ন দেন। এই সংসদের শেষের দিকে তিনি আমাকে সরকারি হিসাবসংক্রান্ত সংসদীয় কমিটিতে চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনয়ন দেন। এর বাইরেও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটিতে তাঁর নিজের স্থলাভিষিক্ত সদস্য হিসেবে আমাকে মনোনয়ন দেন। এটিও আমার জন্য অত্যন্ত সম্মানের একটি দায়িত্ব ছিল।
এরপর ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে আমি পুনরায় নির্বাচিত হই এবং প্রথমে অর্থ মন্ত্রণালয় এবং দুই মাসের মাথায় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবেও সমান্তরাল দায়িত্ব দেওয়া হয়। একই সঙ্গে দুই মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া একটি অভূতপূর্ব ঘটনা।
পরবর্তী সময়ে ২০১০ ও ২০১৩ সালে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে তিনি আমাকে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করে দলীয় কাজে সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ করে দেন। ২০১৮ সালে নির্বাচনে জয়লাভের পর আমাকে তিনি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব অর্পণ করেন। এখন আমি সে দায়িত্ব পালন করছি। মূলত পরিকল্পনামন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পরই জাতীয় ইস্যুতে তাঁর যে দক্ষতা, বিচক্ষণতা আর রাষ্ট্র পরিচালনায় দূরদর্শী চিন্তাভাবনা–এসব চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছি। তারই কিছু এখানে আজকে তাঁর শুভ জন্মদিন উপলক্ষে বলব।
সত্যি কথা বলতে কি–জননেত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় ব্যক্তিত্ব, সাহস, দেশপ্রেম ও পোড় খাওয়া অভিজ্ঞতার প্রকাশ আমাকে প্রতিনিয়ত মুগ্ধ করেছে। তাঁর সহজাত সৌজন্যমূলক আচরণ, তীক্ষ্ণ দায়িত্ববোধ, আমার মতো একজন বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি ও রাজনৈতিক সহকর্মীর প্রতি সৌজন্যমূলক আচরণ—এসবই চিরদিনের জন্য আমাকে কৃতজ্ঞতার পাশে আবদ্ধ করেছে। তাঁর মহান পিতা আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে দূর থেকে দেখে যেভাবে আশৈশব মুগ্ধ হয়েছি, এখন পরিণত বয়সে তাঁর কন্যাকে কাছে থেকে দেখে প্রতিটি মুহূর্ত তাঁর মহান পিতার কথা স্মরণ করছি।
প্রায় ৯ বছর ধরে আমি সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদনের অন্যতম সর্বোচ্চ ফোরাম একনেকের সভাগুলোতে তাঁর প্রাণবন্ত উপস্থিতি এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা মুগ্ধ হয়ে উপভোগ করেছি। বাংলাদেশের মাটি, জল, হাওয়া ও মানুষের প্রতি তাঁর সহজাত ভালোবাসা ও আনুগত্য প্রতিটি ক্ষেত্রে সার্বক্ষণিকভাবে সমুজ্জ্বল রয়েছে। আমাদের স্বপ্নের পদ্মা সেতুর বিষয়ে তাঁর সাহসিকতা এখন সর্বজনস্বীকৃত।
বাংলাদেশের আনাচকানাচে কোথায় কোন নদীর চর বা জলাশয় রয়েছে, সেগুলো তাঁর নখদর্পণে। একনেক সভায় প্রকল্প পর্যালোচনাকালে তিনি প্রতিটি প্রকল্পের খুঁটিনাটি বিষয়ে খোঁজখবর নেন এবং অন্তর্ভেদী প্রশ্ন উত্থাপন করেন। উপস্থাপিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে জনকল্যাণসংশ্লিষ্টতা, পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য সম্ভাব্য সুযোগ, নারীর ক্ষমতায়ন ও খেটে খাওয়া মানুষের কল্যাণ—এসব বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে এবং নির্দেশনা দিয়ে তিনি একনেক সভাগুলোকে প্রাণবন্ত আলোচনার ক্ষেত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
জননেত্রী শেখ হাসিনার সময়ানুবর্তিতা, একজন বাঙালি হিসেবে আমি তাঁর এক অনন্যসাধারণ বৈশিষ্ট্য হিসেবে গণ্য করি। কোনো সভায়ই তিনি দেরিতে আসেননি। রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে দেরি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলে তিনি আগেই সভাকে অবহিত করেছেন। এ প্রজন্মের মানুষের কাছে এটিকে আমি খুবই গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষণীয় বিষয় হিসেবে গণ্য করি। ব্যয়সাশ্রয়ী প্রকল্প ও তা দ্রুত বাস্তবায়নের বিষয়ে তিনি পরিষ্কার ও বোধগম্য নির্দেশনা দিয়ে থাকেন, যা আমার মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সবার কাজের ক্ষেত্রে সহায়ক হচ্ছে।
নেতৃত্বের অপার গুণাবলির জন্য বিশ্ব অঙ্গনেও সমানভাবে তাঁর বিচরণ করছেন। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য বা এমডিজি এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য বা এসডিজি বাস্তবায়নেও তিনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এসব ক্ষেত্রে তাঁর বলিষ্ঠ ভূমিকার জন্য তিনি জাতিসংঘ ও অন্যান্য অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থা কর্তৃক বারবার পুরস্কৃত হয়েছেন। গর্বের সঙ্গে বলতে পারি, বিশ্বমঞ্চের একজন প্রথম সারির নেতা হিসেবে তিনি স্বীকৃতি পেয়েছেন।
বেশভূষায়, আহারে, আচরণে তিনি আবহমান বাঙালি নারীর প্রতিভূরূপে বর্তমান প্রজন্মের কাছে নিজেকে উপস্থাপন করতে পেরেছেন। বাংলা ভাষায় তাঁর সমৃদ্ধ জ্ঞান, লেখনী এবং বাচনিক দক্ষতা একনেক সভাসমূহ এবং অন্য সব ক্ষেত্রে সবার কাছে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। তিনি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ভোজ পর্বে মর্যাদায় কনিষ্ঠতম ব্যক্তিরও সমানভাবে খোঁজখবর নিয়ে থাকেন। সব অনুষ্ঠানে তিনি সাদামাটা দৈনন্দিন বাঙালি খাবার পরিবেশন করতে উৎসাহ দেন এবং আমার মন্ত্রণালয়ের সব সভায় একই ধরনের অনাড়ম্বর বাঙালি খাবারসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনা সহজ করার নির্দেশনা দেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী থাকাকালে কখনো আমার বা আমার সহকর্মীদের কোনো কাজের প্রতি তিনি বিরক্তি বা রূঢ় মনোভাব দেখাননি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে একমত না হলেও তিনি তাঁর মতামত দৃঢ়ভাবে উপস্থাপন করেছেন এবং সভাপ্রধান হিসেবে চূড়ান্ত মতামত প্রদর্শন করেছেন। সভায় প্রত্যেক সদস্যকে মত প্রকাশের ও কথা বলার সুযোগ তিনি অবারিত করে দিয়েছেন।
দীর্ঘ চাকরিজীবনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সভায় আমি উপস্থিত থাকার সুযোগ পেয়েছি। তবে শেখ হাসিনার সভাসমূহে উপস্থিতির আনন্দ চিরদিন আমার মনে অম্লান থাকবে। একনেক ছাড়াও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য বিভাগের সংশ্লিষ্ট সরকারি সারসংক্ষেপগুলো তাঁর কাছে পাঠিয়ে দ্রুততম সময়ে ফেরত পেয়েছি। বিদেশ থেকে দীর্ঘ উড়ালের পরও স্বল্পতম সময়ের মধ্যে একনেক সভায় তিনি উপস্থিত হয়ে আমাদের অবাক করেছেন সব সময়। তিনি ‘জেট ল্যাগ’ জয় করার শক্তি কোথায় পান, তা আমাকে ভাবায়।
২০০৯ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত এত বছর কোনো বিষয়ে তিনি আমাকে ফোনে বা সাক্ষাতে অথবা লিখিত কোনো নেতিবাচক বা উষ্মামূলক নির্দেশনা দেননি। তাঁর অভিপ্রায় দৃঢ়ভাবে সভায় সবার সামনে উপস্থাপন করেছেন। এটিই তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের অনন্যসাধারণ দিক। আমি তাঁর ৭৬তম জন্মদিনে তাঁর প্রতি আমার ব্যক্তিগত আনুগত্য ও বিপুল শ্রদ্ধা পুনরায় ব্যক্ত করছি। আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়ে মাতৃভূমির সেবায় আমি উৎসর্গ করতে পেরেছি; তাঁর সান্নিধ্যে সরাসরি নির্দেশনা পেয়ে দায়িত্ব পালন করেছি। আমি তাঁর কাছে চির কৃতজ্ঞ, শুভ জন্মদিন মাননীয় জননেত্রী।

বাংলাদেশ সরকারের চারবারের প্রধানমন্ত্রী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনার ৭৬তম জন্মদিনে তাঁকে উষ্ণ অভিনন্দন ও ভ্রাতৃপ্রতিম শুভেচ্ছা জানাই! তাঁর সঙ্গে আমার সরাসরি পরিচয় ১৯৮৬ সালে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যা হিসেবে তাঁর নাম আমরা আগে থেকেই জানতাম। আমি তাঁর থেকে বয়োজ্যেষ্ঠ; কিন্তু প্রায় সমসাময়িক। সে পরিপ্রেক্ষিতে এখানে আমার ব্যক্তিগত কিছু অনুভূতি প্রকাশ করছি।
জননেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আমার প্রথম সরাসরি সাক্ষাৎ হয় ১৯৮৬ সালে, আমার ময়মনসিংহে জেলা প্রশাসক থাকাকালে। তিনি তখন সামরিক শাসক জেনারেল এরশাদের সময়কার জাতীয় সংসদে কেবিনেট মন্ত্রীর মর্যাদায় বিরোধীদলীয় নেতা। সার্কিট হাউসে আলাপচারিতার সময় আমি তাঁর পিতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি আমার স্বাভাবিক আনুগত্যের কথা সবিনয়ে জানাই এবং বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণে, প্রয়োজনে জেলা প্রশাসকের পদ ছেড়ে দিয়ে তাঁর সঙ্গে কাজ করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করি। তিনি তখন অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে আমাকে বলেন, বাংলাদেশে চেপে বসা তখনকার সামরিক শাসন যথানিয়মে অচিরেই শেষ হবে এবং তাঁর দৃঢ়বিশ্বাস, বাংলাদেশের মানুষ পুনরায় আওয়ামী লীগের হাতে তাদের দেশের শাসনভার তুলে দেবে। ভবিষ্যতে, তিনি আমাকে তাঁর সঙ্গে কাজ করার সুযোগ দেবেন বলেও ‘প্রতিশ্রুতি’ দেন। পরবর্তী সময়ে ২০০০ সালে পুনরায় তাঁর সঙ্গে জেনেভায় আমার সাক্ষাৎ হয়; তখন তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
তিনি আমাকে অবাক করে ১৫ বছর আগে তাঁর দেওয়া ‘প্রতিশ্রুতি’ পুনর্ব্যক্ত করেন। আমি তাঁর স্মরণশক্তি ও ‘প্রতিশ্রুতি’ রক্ষার মানসিকতা দেখে অভিভূত হই।
২০০৩ সালে আমি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করি। ২০০৫ সালে সুনামগঞ্জের হাওর এলাকায় আওয়ামী লীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম মেম্বার, সাবেক কৃষি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুস সামাদ আজাদের শূন্য আসনে উপনির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়ে তাঁর সমর্থনের আশায় আমি তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করি। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নেয়নি। তাই তিনি আমাকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে উপনির্বাচনে অংশগ্রহণের পক্ষে মত দেন। তাঁর এই প্রচ্ছন্ন সমর্থনের পটভূমিতে আমি সাহস করে একজন প্রায় অচেনা ব্যক্তি হিসেবে উপনির্বাচনে অংশ নিই এবং নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও বিএনপির প্রার্থীর কাছে অল্প ভোটে পরাজিত হই। উপনির্বাচনে পরাজয়ের পর আমি নেত্রীর সঙ্গে ঢাকায় সাক্ষাৎ করি এবং ২০০৫ সালের জুলাই মাসে তাঁর আহ্বানে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগ দিই। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনি আমাকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেন, এতে আমি বিপুল ভোটে জয়লাভ করি। তিনি আমাকে তিনটি সংসদীয় কমিটিতে সদস্য হিসেবে মনোনয়ন দেন। এই সংসদের শেষের দিকে তিনি আমাকে সরকারি হিসাবসংক্রান্ত সংসদীয় কমিটিতে চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনয়ন দেন। এর বাইরেও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটিতে তাঁর নিজের স্থলাভিষিক্ত সদস্য হিসেবে আমাকে মনোনয়ন দেন। এটিও আমার জন্য অত্যন্ত সম্মানের একটি দায়িত্ব ছিল।
এরপর ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে আমি পুনরায় নির্বাচিত হই এবং প্রথমে অর্থ মন্ত্রণালয় এবং দুই মাসের মাথায় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবেও সমান্তরাল দায়িত্ব দেওয়া হয়। একই সঙ্গে দুই মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া একটি অভূতপূর্ব ঘটনা।
পরবর্তী সময়ে ২০১০ ও ২০১৩ সালে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে তিনি আমাকে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করে দলীয় কাজে সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ করে দেন। ২০১৮ সালে নির্বাচনে জয়লাভের পর আমাকে তিনি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব অর্পণ করেন। এখন আমি সে দায়িত্ব পালন করছি। মূলত পরিকল্পনামন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পরই জাতীয় ইস্যুতে তাঁর যে দক্ষতা, বিচক্ষণতা আর রাষ্ট্র পরিচালনায় দূরদর্শী চিন্তাভাবনা–এসব চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছি। তারই কিছু এখানে আজকে তাঁর শুভ জন্মদিন উপলক্ষে বলব।
সত্যি কথা বলতে কি–জননেত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় ব্যক্তিত্ব, সাহস, দেশপ্রেম ও পোড় খাওয়া অভিজ্ঞতার প্রকাশ আমাকে প্রতিনিয়ত মুগ্ধ করেছে। তাঁর সহজাত সৌজন্যমূলক আচরণ, তীক্ষ্ণ দায়িত্ববোধ, আমার মতো একজন বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি ও রাজনৈতিক সহকর্মীর প্রতি সৌজন্যমূলক আচরণ—এসবই চিরদিনের জন্য আমাকে কৃতজ্ঞতার পাশে আবদ্ধ করেছে। তাঁর মহান পিতা আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে দূর থেকে দেখে যেভাবে আশৈশব মুগ্ধ হয়েছি, এখন পরিণত বয়সে তাঁর কন্যাকে কাছে থেকে দেখে প্রতিটি মুহূর্ত তাঁর মহান পিতার কথা স্মরণ করছি।
প্রায় ৯ বছর ধরে আমি সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদনের অন্যতম সর্বোচ্চ ফোরাম একনেকের সভাগুলোতে তাঁর প্রাণবন্ত উপস্থিতি এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা মুগ্ধ হয়ে উপভোগ করেছি। বাংলাদেশের মাটি, জল, হাওয়া ও মানুষের প্রতি তাঁর সহজাত ভালোবাসা ও আনুগত্য প্রতিটি ক্ষেত্রে সার্বক্ষণিকভাবে সমুজ্জ্বল রয়েছে। আমাদের স্বপ্নের পদ্মা সেতুর বিষয়ে তাঁর সাহসিকতা এখন সর্বজনস্বীকৃত।
বাংলাদেশের আনাচকানাচে কোথায় কোন নদীর চর বা জলাশয় রয়েছে, সেগুলো তাঁর নখদর্পণে। একনেক সভায় প্রকল্প পর্যালোচনাকালে তিনি প্রতিটি প্রকল্পের খুঁটিনাটি বিষয়ে খোঁজখবর নেন এবং অন্তর্ভেদী প্রশ্ন উত্থাপন করেন। উপস্থাপিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে জনকল্যাণসংশ্লিষ্টতা, পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য সম্ভাব্য সুযোগ, নারীর ক্ষমতায়ন ও খেটে খাওয়া মানুষের কল্যাণ—এসব বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে এবং নির্দেশনা দিয়ে তিনি একনেক সভাগুলোকে প্রাণবন্ত আলোচনার ক্ষেত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
জননেত্রী শেখ হাসিনার সময়ানুবর্তিতা, একজন বাঙালি হিসেবে আমি তাঁর এক অনন্যসাধারণ বৈশিষ্ট্য হিসেবে গণ্য করি। কোনো সভায়ই তিনি দেরিতে আসেননি। রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে দেরি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলে তিনি আগেই সভাকে অবহিত করেছেন। এ প্রজন্মের মানুষের কাছে এটিকে আমি খুবই গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষণীয় বিষয় হিসেবে গণ্য করি। ব্যয়সাশ্রয়ী প্রকল্প ও তা দ্রুত বাস্তবায়নের বিষয়ে তিনি পরিষ্কার ও বোধগম্য নির্দেশনা দিয়ে থাকেন, যা আমার মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সবার কাজের ক্ষেত্রে সহায়ক হচ্ছে।
নেতৃত্বের অপার গুণাবলির জন্য বিশ্ব অঙ্গনেও সমানভাবে তাঁর বিচরণ করছেন। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য বা এমডিজি এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য বা এসডিজি বাস্তবায়নেও তিনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এসব ক্ষেত্রে তাঁর বলিষ্ঠ ভূমিকার জন্য তিনি জাতিসংঘ ও অন্যান্য অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থা কর্তৃক বারবার পুরস্কৃত হয়েছেন। গর্বের সঙ্গে বলতে পারি, বিশ্বমঞ্চের একজন প্রথম সারির নেতা হিসেবে তিনি স্বীকৃতি পেয়েছেন।
বেশভূষায়, আহারে, আচরণে তিনি আবহমান বাঙালি নারীর প্রতিভূরূপে বর্তমান প্রজন্মের কাছে নিজেকে উপস্থাপন করতে পেরেছেন। বাংলা ভাষায় তাঁর সমৃদ্ধ জ্ঞান, লেখনী এবং বাচনিক দক্ষতা একনেক সভাসমূহ এবং অন্য সব ক্ষেত্রে সবার কাছে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। তিনি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ভোজ পর্বে মর্যাদায় কনিষ্ঠতম ব্যক্তিরও সমানভাবে খোঁজখবর নিয়ে থাকেন। সব অনুষ্ঠানে তিনি সাদামাটা দৈনন্দিন বাঙালি খাবার পরিবেশন করতে উৎসাহ দেন এবং আমার মন্ত্রণালয়ের সব সভায় একই ধরনের অনাড়ম্বর বাঙালি খাবারসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনা সহজ করার নির্দেশনা দেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী থাকাকালে কখনো আমার বা আমার সহকর্মীদের কোনো কাজের প্রতি তিনি বিরক্তি বা রূঢ় মনোভাব দেখাননি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে একমত না হলেও তিনি তাঁর মতামত দৃঢ়ভাবে উপস্থাপন করেছেন এবং সভাপ্রধান হিসেবে চূড়ান্ত মতামত প্রদর্শন করেছেন। সভায় প্রত্যেক সদস্যকে মত প্রকাশের ও কথা বলার সুযোগ তিনি অবারিত করে দিয়েছেন।
দীর্ঘ চাকরিজীবনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সভায় আমি উপস্থিত থাকার সুযোগ পেয়েছি। তবে শেখ হাসিনার সভাসমূহে উপস্থিতির আনন্দ চিরদিন আমার মনে অম্লান থাকবে। একনেক ছাড়াও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য বিভাগের সংশ্লিষ্ট সরকারি সারসংক্ষেপগুলো তাঁর কাছে পাঠিয়ে দ্রুততম সময়ে ফেরত পেয়েছি। বিদেশ থেকে দীর্ঘ উড়ালের পরও স্বল্পতম সময়ের মধ্যে একনেক সভায় তিনি উপস্থিত হয়ে আমাদের অবাক করেছেন সব সময়। তিনি ‘জেট ল্যাগ’ জয় করার শক্তি কোথায় পান, তা আমাকে ভাবায়।
২০০৯ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত এত বছর কোনো বিষয়ে তিনি আমাকে ফোনে বা সাক্ষাতে অথবা লিখিত কোনো নেতিবাচক বা উষ্মামূলক নির্দেশনা দেননি। তাঁর অভিপ্রায় দৃঢ়ভাবে সভায় সবার সামনে উপস্থাপন করেছেন। এটিই তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের অনন্যসাধারণ দিক। আমি তাঁর ৭৬তম জন্মদিনে তাঁর প্রতি আমার ব্যক্তিগত আনুগত্য ও বিপুল শ্রদ্ধা পুনরায় ব্যক্ত করছি। আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়ে মাতৃভূমির সেবায় আমি উৎসর্গ করতে পেরেছি; তাঁর সান্নিধ্যে সরাসরি নির্দেশনা পেয়ে দায়িত্ব পালন করেছি। আমি তাঁর কাছে চির কৃতজ্ঞ, শুভ জন্মদিন মাননীয় জননেত্রী।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৪ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

বাংলাদেশ সরকারের চারবারের প্রধানমন্ত্রী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনার ৭৬তম জন্মদিনে তাঁকে উষ্ণ অভিনন্দন ও ভ্রাতৃপ্রতিম শুভেচ্ছা জানাই! তাঁর সঙ্গে আমার সরাসরি পরিচয় ১৯৮৬ সালে। কিন্তু...
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

বাংলাদেশ সরকারের চারবারের প্রধানমন্ত্রী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনার ৭৬তম জন্মদিনে তাঁকে উষ্ণ অভিনন্দন ও ভ্রাতৃপ্রতিম শুভেচ্ছা জানাই! তাঁর সঙ্গে আমার সরাসরি পরিচয় ১৯৮৬ সালে। কিন্তু...
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৪ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

বাংলাদেশ সরকারের চারবারের প্রধানমন্ত্রী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনার ৭৬তম জন্মদিনে তাঁকে উষ্ণ অভিনন্দন ও ভ্রাতৃপ্রতিম শুভেচ্ছা জানাই! তাঁর সঙ্গে আমার সরাসরি পরিচয় ১৯৮৬ সালে। কিন্তু...
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৪ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

বাংলাদেশ সরকারের চারবারের প্রধানমন্ত্রী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনার ৭৬তম জন্মদিনে তাঁকে উষ্ণ অভিনন্দন ও ভ্রাতৃপ্রতিম শুভেচ্ছা জানাই! তাঁর সঙ্গে আমার সরাসরি পরিচয় ১৯৮৬ সালে। কিন্তু...
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৪ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫