Ajker Patrika

মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ

শাহীন রহমান, পাবনা
আপডেট : ১৮ অক্টোবর ২০২১, ১৩: ১৩
মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে দলীয় মনোনয়ন বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নড়াইল সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. নিজাম উদ্দিন খান নিলু ও কালিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান কৃষ্ণপদ ঘোষের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেছেন নড়াইল ১ আসনের সাংসদ বিএম কবিরুল হক।

এ কারণে বিভিন্ন ইউনিয়নের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ক্ষুব্ধ হয়ে গত শনিবার বিকেলে কালিয়া উপজেলা প্রার্থী সংগ্রহে যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া সংক্রান্ত আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় হৈ-হট্টগোল ও চেয়ার ভাঙচুর করে পণ্ড করে দিয়েছে বলে তিনি দাবি করেছেন। গতকাল রোববার সকাল ১১টায় তিনি তাঁর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেছেন।

গত শনিবার সকাল ১১টায় কালিয়া সদরে সাংসদ কবিরুল হকের নিজ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি ওই দুই নেতার মনোনয়ন বাণিজ্যের হাত থেকে দলীয় নেতা কর্মীদের রক্ষা, দলের বিভেদ ও মনোনয়নের সুপারিশ জালিয়াতির হাত থেকে দলীয় নেতা কর্মীদের রক্ষার জন্য দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে কালিয়া উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন ছাড়া প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা উন্মুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন।

তিনি অভিযোগ করে আরও বলেছেন, দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের সুপারিশপত্র জালিয়াতি করে নিজের পছন্দমতো প্রার্থীর নাম বসিয়ে কেন্দ্র পাঠান সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন খান নিলু। যে কারণে তৃণমূলের নেতা কর্মীদের মধ্যে সৃষ্টি হচ্ছে বিভেদ ও ক্ষোভের। আর সেই ক্ষোভের কারণেই মনোনয়ন প্রত্যাশী ও তাঁদের সমর্থকেরা গত শনিবারের বর্ধিত সভায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কৃষ্ণপদ ঘোষের ওপর ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে সভা পণ্ড করে দিয়েছে।

গত শনিবার রাতে নড়াইলে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে নিজাম উদ্দিন খান নিলু সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি এসব অভিযোগকে মিথ্যাচার বলে দাবি করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে কালিয়া পৌরসভার ১ ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার অশিত কুমার ঘোষ অভিযোগ করে বলেছেন, গত পৌরসভা নির্বাচনে কৃষ্ণপদ ঘোষ তাঁকে নির্বাচিত করে দেওয়ার নাম করে ৩ লাখ টাকা নিয়ে শেষ মুহূর্তে ফেরত দিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শেখ তরিকুল আলম মুন্নু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মোল্লা ইমদাদুল হক, সাবেক পৌর চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা মো. একরামুল হক টুকু, ও বিএম এমদাদুল হক টুলু, সাবেক মেয়র মুশফিকুর রহমান লিটন, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. নজরুল ইসলাম, সাবেক ছাত্র নেতা আব্দুল গফ্ফার, কালিয়া থানা যুবলীগের আহ্বায়ক খান রবিউল ইসলাম, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ইব্রাহিম শেখ প্রমুখ।

নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নড়াইল সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. নিজাম উদ্দিন খান নিলুর সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি। তবে কালিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান কৃষ্ণপদ ঘোষ ওই সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, তাঁদের সামাজিক ও রাজনৈতিক মানসম্মান ক্ষুণ্ন করতে ওই সব অভিযোগ তোলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে উপজেলার কালিয়া থানার ৬টি ইউনিয়নে ৬০ জন ও নড়াগাতী থানার ৬টি ইউনয়নের চেয়ারম্যান পদে ৬২ জন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী নিজ নিজ থানা কমিটির কাছে আবেদন জমা দিয়েছেন। আগামী ২৮ নভেম্বর কালিয়া উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত