Ajker Patrika

১০ মাস পর জানলেন ভাইই খুনের আসামি

বগুড়া প্রতিনিধি
১০ মাস পর জানলেন ভাইই খুনের আসামি

প্রায় ১০ মাস আগে ছুরিকাহত এক সবজি বিক্রেতাকে হাসপাতালে নিয়েছিলেন বেলাল হোসেন শাহ। ছিনতাইকারীর কবলে পড়া ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এত দিন পর এসে বেলাল জানতে পারলেন, ওই খুনের মামলার আসামি তাঁরই ছোট ভাই বুলবুল আহম্মেদ শাহ।
বগুড়া পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) বুলবুলকে গ্রেপ্তার করে এই খুনের রহস্য উদ্‌ঘাটনের দাবি করেছে। তবে বেলালের অভিযোগ, মামলার সুষ্ঠু তদন্ত না করে বুলবুলকে ফাঁসিয়ে দিয়েছে পুলিশ।

বেলাল ও বুলবুল বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের বাসিন্দা। গতকাল বৃহস্পতিবার বুলবুলকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয় বলে আদালতের পরিদর্শক সুব্রত ব্যানার্জি জানিয়েছেন।

নিহত সবজি বিক্রেতা আজিজুল হক ওরফে আজাহার আলী একই উপজেলার নন্দীগ্রামের বাসিন্দা। মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আজাহার গত বছরের ১৫ নভেম্বর বনানী হাঁটে সবজি বিক্রি করে রাত সোয়া ১২টার দিকে ভ্যানযোগে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে শাজাহানপুরের দ্বিতীয় বাইপাস (বেতগাড়ী-মাটিডালি) মহাসড়কের নিশ্চিন্তপুর হেলেঞ্চাপাড়া এলাকায় একটি মোটরসাইকেলে করে আসা তিনজন পথরোধ করে ভ্যানের সামনে দাঁড়ান।

তাঁরা সবজি বিক্রির টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় আজাহার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাঁকে ছুরিকাঘাত করা হয়। তখন তাঁর চিৎকারে বেলালসহ কয়েকজন ছুটে আসেন। তাঁরা আজাহারকে উদ্ধার করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় পরদিন অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে শাজাহানপুর থানায় মামলা করেন নিহতের ছেলে শাহ আলী। মামলা তদন্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হয় কৈগাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) রাজু কামালকে; কিন্তু প্রায় তিন মাসেও কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় মামলাটি সিআইডিকে দেওয়া হয়।

গত বুধবার রাতে সিআইডির এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আজাহার হত্যা মামলার আসামি বুলবুলকে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নিশ্চিন্তপুর চারমাথা বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সিআইডির দাবি, আসামি বুলবুল একটি ধারালো ছুরি দিয়ে আজাহারকে হত্যা করেন। পরে তাঁর পকেট থেকে টাকা নিয়ে পালিয়ে যান। বুলবুল ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। তাঁর বিরুদ্ধে শাজাহানপুর থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

এদিকে বেলাল বলেন, ‘ঘটনার দিন রাতে চিৎকার শুনে আমিসহ কয়েকজন এগিয়ে যাই। সেখানে এক ব্যক্তিকে শরীরের একাধিক জায়গায় ছুরিকাহত অবস্থায় পাই। আশপাশে আর কাউকে দেখতে পাইনি। আমরা আহত ব্যক্তিকে তুলে হাসপাতালে নিয়ে যাই।’

বেলাল আরও বলেন, ‘ওই দিন আমার ভাইয়ের জ্বর ছিল। সে রাতে বাড়িতেই ছিল। আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগে চারটি মামলা রয়েছে। সে সুযোগে পুলিশ সুষ্ঠুভাবে তদন্ত না করে এই মার্ডার মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়েছে আমার ভাইকে।’

যোগাযোগ করা হলে মামলার বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক জাহিদ হোসেন বলেন, ‘মামলাটি তদন্তাধীন। এ অবস্থায় আমি কোনো মন্তব্য করতে পারব না।’

এ বিষয়ে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ কাওছার সিকদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বুলবুল আহম্মেদ এই মামলার সন্দেহভাজন আসামি। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁকে গতকাল আদালতে পাঠানো হয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নতুন মেট্রো নয়, রুট বাড়ানোর চিন্তা

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত