Ajker Patrika

কৃষিনির্ভর অর্থনীতি থেকে চীনের উত্থান

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২১, ১১: ৫১
কৃষিনির্ভর অর্থনীতি থেকে চীনের উত্থান

হংকংয়ের ব্যবসায়ী চই কোং-ওয়াহ ১৯৯৩ সালে যখন শেনজেনে একটি কারখানা খোলার সিদ্ধান্ত নেন, তখন তাঁর খেলনা ব্যবসার জন্য শীর্ষ বিবেচ্য বিষয় ছিল সস্তা জমি ও শ্রম। স্থানীয় সরকার চইকে মাত্র ১ লাখ ৫৭ হাজার মার্কিন ডলারে ৩০ বছরের জন্য প্রায় দেড় একর জমি দিয়েছিল। কারণ, ছোট সীমান্ত শহর শেনজেনকে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং রপ্তানিকেন্দ্র হিসেবে মনোনীত করেছিলেন দেশটির তৎকালীন নেতা দেং জিয়াওপিং।

তবে চই কোং-ওয়াহর ব্যবসা আলোর মুখ দেখতে শুরু করে ২০০১ সালের পর, যখন মূল ভূখণ্ডটি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (ডব্লিউটিও) প্রবেশ করে। বিভিন্ন দেশ থেকে শত শত অর্ডার পেতে শুরু করেন এই ব্যবসায়ী।

৭২ বছর বয়সী চই সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টকে বলেছেন, ‘চীন তখন আমার প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি উন্নতি করছিল।’

এরপরই ধীরে ধীরে চীনের উপকূলীয় এই প্রদেশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে ব্যক্তিগত মালিকানাধীন, সরকারনিয়ন্ত্রিত বা বিদেশি অর্থায়নে পরিচালিত লাখ লাখ প্রতিষ্ঠান। এর মাধ্যমেই ঘরে ঘরে সস্তা কিন্তু ভালো মানের ভোগ্যপণ্য পৌঁছে দিয়ে কৃষিপ্রধান অর্থনীতির দেশ থেকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে রূপান্তরিত হয় চীন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীন এখন বিশ্ব অর্থনীতির প্রায় ১৮ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে এবং এক দশকে এর আকার যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে যেতে পারে। তবে বহুপক্ষীয় বাণিজ্যব্যবস্থায় চীনের প্রবেশ ঝুঁকিমুক্ত ছিল না। সম্প্রতি বেইজিংয়ে একটি সেমিনারে বক্তৃতাকালে দেশটির সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী চেন ডেমিং চাকরি হারানো এবং সামাজিক স্থিতিশীলতার বিষয়টি উত্থাপন করেন।

জমি, শ্রম এবং অন্যান্য খরচ বাড়তে থাকায় অনেক ব্যবসাই স্থানান্তরিত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের বাণিজ্য যখন ভারসাম্যপূর্ণ থাকে, তখন আমাদের অবশ্যই শ্রম ফাঁদের সমস্যার দিকে মনোযোগ দিতে হবে।’

রপ্তানি খাতই এখন চীনের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের মূল চালিকাশক্তি। চলতি বছরের ১১ মাসে দেশটির রপ্তানি বেড়েছে আগের বছরের তুলনায় ৩১ দশমিক ১ শতাংশ।

এ ছাড়া চলতি বছরের শুরুর দিকে ২০৩৫ উন্নয়ন রূপকল্প প্রকাশ করেছে বেইজিং। একই সময়ের মধ্যে চীন নেতৃত্ব টিপিপি এবং ডিজিটাল ইকোনমি পার্টনারশিপ চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য আবেদন করেছে। এর মাধ্যমে বেইজিং পুরো বিশ্বকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছে যে, দেশটি আন্তর্জাতিক নিয়মকানুন অনুসরণ করবে। এটি বাস্তবায়িত হলে চীন বিশ্ব অর্থনীতিতে আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে যাবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত