রাহুল শর্মা, ঢাকা

প্রশিক্ষণ ভেন্যুর ভাড়া দিতেই খরচ ৯ কোটি ৩০ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ টাকা! এই খরচ দেখানো হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের একটি প্রকল্পের প্রশিক্ষণে। ১২টি প্রতিষ্ঠানে এই প্রশিক্ষণ হলেও একটি প্রতিষ্ঠানকে একক ভেন্যু না দেখিয়ে প্রতিটি কক্ষকে একেকটি ভেন্যু হিসেবে ভাড়া উত্তোলন করা হয়েছে। এমন অনিয়ম ধরা পড়েছে বাংলাদেশ মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের অধীন শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের নিরীক্ষা প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রাপ্য না হলেও কর্মকর্তা, প্রশিক্ষক, প্রশিক্ষণার্থী ও সহায়ক কর্মচারীদের সম্মানী এবং ভাতা দিয়ে সরকারের ৩ কোটি ১৪ লাখ ৯২ হাজার ২৮৮ টাকা আর্থিক ক্ষতি করা হয়েছে। ভেন্যুতে উপস্থিত না থেকেও এক কর্মকর্তার পক্ষে অন্যজনের স্বাক্ষরে এবং কর্মকর্তার নামের বিপরীতে ভুয়া স্বাক্ষরের মাধ্যমেও সম্মানী তোলা হয়েছে। এ ছাড়া মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ স্থাপিত না হলেও সাড়ে ১৩ হাজারের বেশি ইন্টারনেট মডেম কিনে বিতরণ করা হয় এবং সেগুলো ব্যবহৃত না হওয়ায় ৩ কোটি ৪৩ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬ টাকা অপচয় করা হয়েছে।
নয়ছয়ের এই ব্যয় হয়েছে মাউশির ‘আইসিটির মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার প্রচলন (দ্বিতীয় পর্যায়)’ শীর্ষক প্রকল্পে প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে। শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে এই প্রশিক্ষণের খরচে অনিয়ম তুলে ধরে ১২টি অডিট ফাইন্ডিংস উল্লেখ করা হয়েছে। এই অনিয়ম হয়েছে চার অর্থবছরে, ২০১৭-২০১৮ থেকে ২০২০-২০২১ অর্থবছর পর্যন্ত। পারফরম্যান্স অডিটের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রশিক্ষণে অনিয়মের মাধ্যমে সরকারের ১৭ কোটি ৩৮ লাখ ৫৩ হাজার ৪৮৫ টাকার আর্থিক ক্ষতি ও অপচয় হয়েছে। প্রতিবেদনটি গত ২০ আগস্ট মাউশিতে পাঠানো হয়। অনিয়ম হওয়া টাকা আদায়ের পাশাপাশি দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আমীমুল এহসান কবীর আজকের পত্রিকাকে বলেন, পারফরম্যান্স অডিট ইন্সপেকশন প্রতিবেদনটি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। তিন সপ্তাহের মধ্যে আপত্তিগুলোর জবাব দিতে অনুরোধ করা হয়েছে।
তবে প্রতিবেদনের বিষয়ে মাউশির পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন উইং) অধ্যাপক ড. এ কিউ এম শফিউল আজম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই, অবশ্যই খোঁজ নেব।’
দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে শ্রেণিকক্ষের পাঠদান আধুনিকায়ন এবং আইসিটিভিত্তিক জ্ঞান বিকাশের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর অংশ হিসেবে ২০১৬ সালের জুনে আইসিটির মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার প্রচলন (দ্বিতীয় পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্পটি নেওয়া হয়। এতে ব্যয় ধরা হয় মোট ১ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকা। এই প্রকল্পের আওতায় ৫ লাখ ৭২ হাজার ৮৪০ জন শিক্ষককে প্রশিক্ষণ, ৪৬ হাজার ৩৪০টি মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ তৈরি, ২ হাজার ১২০টি স্মার্ট শ্রেণিকক্ষ তৈরি, ৬৬৮টি মাল্টিমিডিয়া প্রশিক্ষণ কক্ষ ও কনফারেন্স রুম তৈরি, ৩৩টি সেমিনার আয়োজনের কথা। তবে প্রকল্প শুরুর পর সাড়ে ছয় বছরে অগ্রগতি মাত্র ৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ। নতুন করে আবার প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনের বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. মোরশীদুল হাসান ৩১ আগস্ট আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নেওয়ার আগে এই প্রশিক্ষণগুলো হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী অডিট আপত্তিগুলোর জবাব দেওয়া হবে। এর আগেও কমপ্লায়েন্স অডিট আপত্তির জবাব দিয়েছি।’
প্রতিটি কক্ষই একেকটি ভেন্যু
শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১২টি সরকারি শিক্ষক প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান ও প্রকল্প কার্যালয়ে প্রশিক্ষণ হয়েছে। এতে ১২ ক্যাটাগরিতে অংশ নিয়েছেন ১ লাখ ৪৭ হাজার ৯১৩ জন শিক্ষক-প্রশিক্ষক ও কর্মকর্তা। প্রশিক্ষণ ভেন্যুগুলো হলো: সরকারি শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ, রাজশাহী; উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, রাজশাহী; সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, যশোর; সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, বরিশাল; উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, বরিশাল; সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ (পুরুষ), ময়মনসিংহ; সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ (মহিলা), ময়মনসিংহ; সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, কুমিল্লা; উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, কুমিল্লা; সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, সিলেট; সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, চট্টগ্রাম; সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, ঢাকা। প্রতিষ্ঠানগুলোতে একই সময়ে একাধিক ব্যাচে ভিন্ন ভিন্ন কক্ষে একই প্রশিক্ষণ হয়েছে। অথচ প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে একক ভেন্যু হিসেবে বিবেচনা না করে প্রতিটি কক্ষকে একেকটি ভেন্যু দেখানো হয়েছে। এসব ভেন্যুর এবং মাউশির প্রকল্প কার্যালয়ের ভাড়া বাবদ খরচ দেখানো হয়েছে মোট ৯ কোটি ৩০ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ টাকা। এর মধ্যে মাউশির প্রকল্প কার্যালয়ের ভাড়া দেখানো হয়েছে ১২ লাখ ৫৫ হাজার ৫০০ টাকা। তবে এসব ভাড়া নির্দেশনা অনুযায়ী সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়নি।
নিরীক্ষা প্রতিবেদনে এই অর্থ আদায় করে সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
প্রাপ্য না হলেও সম্মানী ভাতা
নিরীক্ষা প্রতিবেদন বলছে, ঢাকায় প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত প্রকল্প পরিচালক, উপপরিচালক, সহকারী পরিচালক পদের একাধিক কর্মকর্তা প্রশিক্ষণ ভেন্যুতে না গিয়েও এক কর্মকর্তার পক্ষে অন্য কর্মকর্তার স্বাক্ষরে এবং কর্মকর্তার নামের বিপরীতে ভুয়া স্বাক্ষরের মাধ্যমে সম্মানী নিয়েছেন। এ ছাড়া প্রশিক্ষণ ভেন্যুতে কর্মরত প্রশিক্ষকেরা ভ্রমণ ভাতা, ভ্রমণ ভাতা-সংক্রান্ত নির্দেশনা লঙ্ঘন করে সব প্রশিক্ষণার্থীকে ভ্রমণ ভাতা এবং বাজেট না থাকলেও বিধিবহির্ভূতভাবে ডেটা এন্ট্রি অপারেটরদের সম্মানী দেওয়া হয়েছে। প্রাপ্য না হলেও এসব সম্মানী ও ভাতা দিয়ে সরকারের ৩ কোটি ১৪ লাখ ৯২ হাজার ২৮৮ টাকা ক্ষতি করা হয়েছে। চাকরিবিধি অনুযায়ী, ৫ মাইল বা ৮ কিলোমিটারের কম দূরত্বে ভ্রমণ ভাতা প্রাপ্য নয়।
প্রশিক্ষণ উপকরণ কেনায়ও অনিয়ম
নিরীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রশিক্ষণের জন্য উপকরণ কেনাকাটায়ও অনিয়ম হয়েছে। প্রয়োজন না থাকলেও প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল, সনদ ছাপানো হয়েছে। একটি ভাউচার একাধিকবার ফটোকপি করে প্রশিক্ষণ উপকরণ কেনা এবং খাবারের একাধিক বিলে সংযোজন করা হয়েছে। ভেন্যুগুলো সরবরাহকারীর কাছ থেকে নগদে প্রশিক্ষণ উপকরণ কিনলেও পরিবহন খরচ দেওয়া হয়েছে। একই পণ্য বারবার কেনা দেখানো হয়েছে। কোনো কোনো ভেন্যুতে কেনা পণ্যের সুনির্দিষ্ট আইটেমও উল্লেখ করা হয়নি। এসব অনিয়মে ক্ষতি ৫৮ লাখ ২৫ হাজার ৯৬১ টাকা।
মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষের আগেই মডেম কেনা
প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ স্থাপনের জন্য ল্যাপটপ, প্রজেক্টর, ইন্টারনেট মডেম, স্টেরিও স্পিকার নির্ধারিত ছিল। কিন্তু অন্য সামগ্রী না কিনে শুধু ১৩ হাজার ৫৭৪টি ইন্টারনেট মডেম কেনা ও বিতরণ করা হয়। কিন্তু মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ স্থাপিত না হওয়ায় মডেমগুলো মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ পরিচালনায় ব্যবহৃত হয়নি। এতে সরকারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ৩ কোটি ৪৩ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬ টাকা।
কনসালট্যান্সি ফি প্রদান
নিরীক্ষার তথ্য বলছে, প্রকল্পের কেনাকাটার জন্য অধ্যাপক খবিরুল হক চৌধুরীকে পরামর্শক (কনসালট্যান্ট) নিয়োগ করা হয়। ২৪ মাস মেয়াদ থাকলেও তিনি কাজ করেন ১৮ মাস ২২ দিন। তবে ডিপিপি অনুসারে নির্ধারিত কেনাকাটা সম্পন্ন না হওয়ায় পরামর্শক সম্মানী বাবদ অপচয় হয়েছে ৫৬ লাখ ২০ হাজার টাকা।
জানতে চাইলে খবিরুল হক চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তাঁদের তথ্য সত্য নয়। উল্টো বেআইনিভাবে তাঁরা আমার প্রাপ্য সম্মানী আটকে রেখেছেন। এ জন্য তাঁদের চিঠিও দিয়েছি।’
ইন্টারনেট না থাকলেও বিল
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রশিক্ষণ কক্ষে ইন্টারনেট সংযোগ না থাকলেও ১৯ লাখ ৪১ হাজার টাকা ইন্টারনেটের বিল পরিশোধ করা হয়েছে বলে দেখানো হয়েছে। এ ছাড়া নির্দিষ্ট বরাদ্দের বাইরে ১৬ লাখ ২৩ হাজার ৬০০ টাকার অতিরিক্ত ইন্টারনেট বিল পরিশোধ দেখানো হয়েছে।
নিরীক্ষা প্রতিবেদনের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এ প্রকল্পে প্রশিক্ষণের নামে যেভাবে রাষ্ট্রীয় অর্থ লুটপাট করা হয়েছে, তা নজিরবিহীন। এর সঙ্গে জড়িত সবাইকে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে; যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের অনিয়ম বন্ধ হয়।
শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের এই অডিট আপত্তিগুলোর বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব (নিরীক্ষা ও আইন) মূকেশ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, এখনো প্রতিবেদনটি পাননি। অডিট আপত্তি হলে নিয়ম অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ব্রডশিটে জবাব দেবেন। এরপর তা নিষ্পত্তির জন্য ত্রিপক্ষীয় বৈঠক ডাকা হবে। এতেও নিষ্পত্তি না হলে আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

প্রশিক্ষণ ভেন্যুর ভাড়া দিতেই খরচ ৯ কোটি ৩০ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ টাকা! এই খরচ দেখানো হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের একটি প্রকল্পের প্রশিক্ষণে। ১২টি প্রতিষ্ঠানে এই প্রশিক্ষণ হলেও একটি প্রতিষ্ঠানকে একক ভেন্যু না দেখিয়ে প্রতিটি কক্ষকে একেকটি ভেন্যু হিসেবে ভাড়া উত্তোলন করা হয়েছে। এমন অনিয়ম ধরা পড়েছে বাংলাদেশ মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের অধীন শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের নিরীক্ষা প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রাপ্য না হলেও কর্মকর্তা, প্রশিক্ষক, প্রশিক্ষণার্থী ও সহায়ক কর্মচারীদের সম্মানী এবং ভাতা দিয়ে সরকারের ৩ কোটি ১৪ লাখ ৯২ হাজার ২৮৮ টাকা আর্থিক ক্ষতি করা হয়েছে। ভেন্যুতে উপস্থিত না থেকেও এক কর্মকর্তার পক্ষে অন্যজনের স্বাক্ষরে এবং কর্মকর্তার নামের বিপরীতে ভুয়া স্বাক্ষরের মাধ্যমেও সম্মানী তোলা হয়েছে। এ ছাড়া মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ স্থাপিত না হলেও সাড়ে ১৩ হাজারের বেশি ইন্টারনেট মডেম কিনে বিতরণ করা হয় এবং সেগুলো ব্যবহৃত না হওয়ায় ৩ কোটি ৪৩ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬ টাকা অপচয় করা হয়েছে।
নয়ছয়ের এই ব্যয় হয়েছে মাউশির ‘আইসিটির মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার প্রচলন (দ্বিতীয় পর্যায়)’ শীর্ষক প্রকল্পে প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে। শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে এই প্রশিক্ষণের খরচে অনিয়ম তুলে ধরে ১২টি অডিট ফাইন্ডিংস উল্লেখ করা হয়েছে। এই অনিয়ম হয়েছে চার অর্থবছরে, ২০১৭-২০১৮ থেকে ২০২০-২০২১ অর্থবছর পর্যন্ত। পারফরম্যান্স অডিটের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রশিক্ষণে অনিয়মের মাধ্যমে সরকারের ১৭ কোটি ৩৮ লাখ ৫৩ হাজার ৪৮৫ টাকার আর্থিক ক্ষতি ও অপচয় হয়েছে। প্রতিবেদনটি গত ২০ আগস্ট মাউশিতে পাঠানো হয়। অনিয়ম হওয়া টাকা আদায়ের পাশাপাশি দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আমীমুল এহসান কবীর আজকের পত্রিকাকে বলেন, পারফরম্যান্স অডিট ইন্সপেকশন প্রতিবেদনটি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। তিন সপ্তাহের মধ্যে আপত্তিগুলোর জবাব দিতে অনুরোধ করা হয়েছে।
তবে প্রতিবেদনের বিষয়ে মাউশির পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন উইং) অধ্যাপক ড. এ কিউ এম শফিউল আজম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই, অবশ্যই খোঁজ নেব।’
দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে শ্রেণিকক্ষের পাঠদান আধুনিকায়ন এবং আইসিটিভিত্তিক জ্ঞান বিকাশের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর অংশ হিসেবে ২০১৬ সালের জুনে আইসিটির মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার প্রচলন (দ্বিতীয় পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্পটি নেওয়া হয়। এতে ব্যয় ধরা হয় মোট ১ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকা। এই প্রকল্পের আওতায় ৫ লাখ ৭২ হাজার ৮৪০ জন শিক্ষককে প্রশিক্ষণ, ৪৬ হাজার ৩৪০টি মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ তৈরি, ২ হাজার ১২০টি স্মার্ট শ্রেণিকক্ষ তৈরি, ৬৬৮টি মাল্টিমিডিয়া প্রশিক্ষণ কক্ষ ও কনফারেন্স রুম তৈরি, ৩৩টি সেমিনার আয়োজনের কথা। তবে প্রকল্প শুরুর পর সাড়ে ছয় বছরে অগ্রগতি মাত্র ৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ। নতুন করে আবার প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনের বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. মোরশীদুল হাসান ৩১ আগস্ট আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নেওয়ার আগে এই প্রশিক্ষণগুলো হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী অডিট আপত্তিগুলোর জবাব দেওয়া হবে। এর আগেও কমপ্লায়েন্স অডিট আপত্তির জবাব দিয়েছি।’
প্রতিটি কক্ষই একেকটি ভেন্যু
শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১২টি সরকারি শিক্ষক প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান ও প্রকল্প কার্যালয়ে প্রশিক্ষণ হয়েছে। এতে ১২ ক্যাটাগরিতে অংশ নিয়েছেন ১ লাখ ৪৭ হাজার ৯১৩ জন শিক্ষক-প্রশিক্ষক ও কর্মকর্তা। প্রশিক্ষণ ভেন্যুগুলো হলো: সরকারি শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ, রাজশাহী; উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, রাজশাহী; সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, যশোর; সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, বরিশাল; উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, বরিশাল; সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ (পুরুষ), ময়মনসিংহ; সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ (মহিলা), ময়মনসিংহ; সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, কুমিল্লা; উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, কুমিল্লা; সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, সিলেট; সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, চট্টগ্রাম; সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, ঢাকা। প্রতিষ্ঠানগুলোতে একই সময়ে একাধিক ব্যাচে ভিন্ন ভিন্ন কক্ষে একই প্রশিক্ষণ হয়েছে। অথচ প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে একক ভেন্যু হিসেবে বিবেচনা না করে প্রতিটি কক্ষকে একেকটি ভেন্যু দেখানো হয়েছে। এসব ভেন্যুর এবং মাউশির প্রকল্প কার্যালয়ের ভাড়া বাবদ খরচ দেখানো হয়েছে মোট ৯ কোটি ৩০ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ টাকা। এর মধ্যে মাউশির প্রকল্প কার্যালয়ের ভাড়া দেখানো হয়েছে ১২ লাখ ৫৫ হাজার ৫০০ টাকা। তবে এসব ভাড়া নির্দেশনা অনুযায়ী সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়নি।
নিরীক্ষা প্রতিবেদনে এই অর্থ আদায় করে সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
প্রাপ্য না হলেও সম্মানী ভাতা
নিরীক্ষা প্রতিবেদন বলছে, ঢাকায় প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত প্রকল্প পরিচালক, উপপরিচালক, সহকারী পরিচালক পদের একাধিক কর্মকর্তা প্রশিক্ষণ ভেন্যুতে না গিয়েও এক কর্মকর্তার পক্ষে অন্য কর্মকর্তার স্বাক্ষরে এবং কর্মকর্তার নামের বিপরীতে ভুয়া স্বাক্ষরের মাধ্যমে সম্মানী নিয়েছেন। এ ছাড়া প্রশিক্ষণ ভেন্যুতে কর্মরত প্রশিক্ষকেরা ভ্রমণ ভাতা, ভ্রমণ ভাতা-সংক্রান্ত নির্দেশনা লঙ্ঘন করে সব প্রশিক্ষণার্থীকে ভ্রমণ ভাতা এবং বাজেট না থাকলেও বিধিবহির্ভূতভাবে ডেটা এন্ট্রি অপারেটরদের সম্মানী দেওয়া হয়েছে। প্রাপ্য না হলেও এসব সম্মানী ও ভাতা দিয়ে সরকারের ৩ কোটি ১৪ লাখ ৯২ হাজার ২৮৮ টাকা ক্ষতি করা হয়েছে। চাকরিবিধি অনুযায়ী, ৫ মাইল বা ৮ কিলোমিটারের কম দূরত্বে ভ্রমণ ভাতা প্রাপ্য নয়।
প্রশিক্ষণ উপকরণ কেনায়ও অনিয়ম
নিরীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রশিক্ষণের জন্য উপকরণ কেনাকাটায়ও অনিয়ম হয়েছে। প্রয়োজন না থাকলেও প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল, সনদ ছাপানো হয়েছে। একটি ভাউচার একাধিকবার ফটোকপি করে প্রশিক্ষণ উপকরণ কেনা এবং খাবারের একাধিক বিলে সংযোজন করা হয়েছে। ভেন্যুগুলো সরবরাহকারীর কাছ থেকে নগদে প্রশিক্ষণ উপকরণ কিনলেও পরিবহন খরচ দেওয়া হয়েছে। একই পণ্য বারবার কেনা দেখানো হয়েছে। কোনো কোনো ভেন্যুতে কেনা পণ্যের সুনির্দিষ্ট আইটেমও উল্লেখ করা হয়নি। এসব অনিয়মে ক্ষতি ৫৮ লাখ ২৫ হাজার ৯৬১ টাকা।
মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষের আগেই মডেম কেনা
প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ স্থাপনের জন্য ল্যাপটপ, প্রজেক্টর, ইন্টারনেট মডেম, স্টেরিও স্পিকার নির্ধারিত ছিল। কিন্তু অন্য সামগ্রী না কিনে শুধু ১৩ হাজার ৫৭৪টি ইন্টারনেট মডেম কেনা ও বিতরণ করা হয়। কিন্তু মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ স্থাপিত না হওয়ায় মডেমগুলো মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ পরিচালনায় ব্যবহৃত হয়নি। এতে সরকারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ৩ কোটি ৪৩ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬ টাকা।
কনসালট্যান্সি ফি প্রদান
নিরীক্ষার তথ্য বলছে, প্রকল্পের কেনাকাটার জন্য অধ্যাপক খবিরুল হক চৌধুরীকে পরামর্শক (কনসালট্যান্ট) নিয়োগ করা হয়। ২৪ মাস মেয়াদ থাকলেও তিনি কাজ করেন ১৮ মাস ২২ দিন। তবে ডিপিপি অনুসারে নির্ধারিত কেনাকাটা সম্পন্ন না হওয়ায় পরামর্শক সম্মানী বাবদ অপচয় হয়েছে ৫৬ লাখ ২০ হাজার টাকা।
জানতে চাইলে খবিরুল হক চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তাঁদের তথ্য সত্য নয়। উল্টো বেআইনিভাবে তাঁরা আমার প্রাপ্য সম্মানী আটকে রেখেছেন। এ জন্য তাঁদের চিঠিও দিয়েছি।’
ইন্টারনেট না থাকলেও বিল
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রশিক্ষণ কক্ষে ইন্টারনেট সংযোগ না থাকলেও ১৯ লাখ ৪১ হাজার টাকা ইন্টারনেটের বিল পরিশোধ করা হয়েছে বলে দেখানো হয়েছে। এ ছাড়া নির্দিষ্ট বরাদ্দের বাইরে ১৬ লাখ ২৩ হাজার ৬০০ টাকার অতিরিক্ত ইন্টারনেট বিল পরিশোধ দেখানো হয়েছে।
নিরীক্ষা প্রতিবেদনের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এ প্রকল্পে প্রশিক্ষণের নামে যেভাবে রাষ্ট্রীয় অর্থ লুটপাট করা হয়েছে, তা নজিরবিহীন। এর সঙ্গে জড়িত সবাইকে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে; যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের অনিয়ম বন্ধ হয়।
শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের এই অডিট আপত্তিগুলোর বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব (নিরীক্ষা ও আইন) মূকেশ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, এখনো প্রতিবেদনটি পাননি। অডিট আপত্তি হলে নিয়ম অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ব্রডশিটে জবাব দেবেন। এরপর তা নিষ্পত্তির জন্য ত্রিপক্ষীয় বৈঠক ডাকা হবে। এতেও নিষ্পত্তি না হলে আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
রাহুল শর্মা, ঢাকা

প্রশিক্ষণ ভেন্যুর ভাড়া দিতেই খরচ ৯ কোটি ৩০ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ টাকা! এই খরচ দেখানো হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের একটি প্রকল্পের প্রশিক্ষণে। ১২টি প্রতিষ্ঠানে এই প্রশিক্ষণ হলেও একটি প্রতিষ্ঠানকে একক ভেন্যু না দেখিয়ে প্রতিটি কক্ষকে একেকটি ভেন্যু হিসেবে ভাড়া উত্তোলন করা হয়েছে। এমন অনিয়ম ধরা পড়েছে বাংলাদেশ মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের অধীন শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের নিরীক্ষা প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রাপ্য না হলেও কর্মকর্তা, প্রশিক্ষক, প্রশিক্ষণার্থী ও সহায়ক কর্মচারীদের সম্মানী এবং ভাতা দিয়ে সরকারের ৩ কোটি ১৪ লাখ ৯২ হাজার ২৮৮ টাকা আর্থিক ক্ষতি করা হয়েছে। ভেন্যুতে উপস্থিত না থেকেও এক কর্মকর্তার পক্ষে অন্যজনের স্বাক্ষরে এবং কর্মকর্তার নামের বিপরীতে ভুয়া স্বাক্ষরের মাধ্যমেও সম্মানী তোলা হয়েছে। এ ছাড়া মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ স্থাপিত না হলেও সাড়ে ১৩ হাজারের বেশি ইন্টারনেট মডেম কিনে বিতরণ করা হয় এবং সেগুলো ব্যবহৃত না হওয়ায় ৩ কোটি ৪৩ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬ টাকা অপচয় করা হয়েছে।
নয়ছয়ের এই ব্যয় হয়েছে মাউশির ‘আইসিটির মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার প্রচলন (দ্বিতীয় পর্যায়)’ শীর্ষক প্রকল্পে প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে। শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে এই প্রশিক্ষণের খরচে অনিয়ম তুলে ধরে ১২টি অডিট ফাইন্ডিংস উল্লেখ করা হয়েছে। এই অনিয়ম হয়েছে চার অর্থবছরে, ২০১৭-২০১৮ থেকে ২০২০-২০২১ অর্থবছর পর্যন্ত। পারফরম্যান্স অডিটের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রশিক্ষণে অনিয়মের মাধ্যমে সরকারের ১৭ কোটি ৩৮ লাখ ৫৩ হাজার ৪৮৫ টাকার আর্থিক ক্ষতি ও অপচয় হয়েছে। প্রতিবেদনটি গত ২০ আগস্ট মাউশিতে পাঠানো হয়। অনিয়ম হওয়া টাকা আদায়ের পাশাপাশি দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আমীমুল এহসান কবীর আজকের পত্রিকাকে বলেন, পারফরম্যান্স অডিট ইন্সপেকশন প্রতিবেদনটি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। তিন সপ্তাহের মধ্যে আপত্তিগুলোর জবাব দিতে অনুরোধ করা হয়েছে।
তবে প্রতিবেদনের বিষয়ে মাউশির পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন উইং) অধ্যাপক ড. এ কিউ এম শফিউল আজম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই, অবশ্যই খোঁজ নেব।’
দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে শ্রেণিকক্ষের পাঠদান আধুনিকায়ন এবং আইসিটিভিত্তিক জ্ঞান বিকাশের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর অংশ হিসেবে ২০১৬ সালের জুনে আইসিটির মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার প্রচলন (দ্বিতীয় পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্পটি নেওয়া হয়। এতে ব্যয় ধরা হয় মোট ১ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকা। এই প্রকল্পের আওতায় ৫ লাখ ৭২ হাজার ৮৪০ জন শিক্ষককে প্রশিক্ষণ, ৪৬ হাজার ৩৪০টি মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ তৈরি, ২ হাজার ১২০টি স্মার্ট শ্রেণিকক্ষ তৈরি, ৬৬৮টি মাল্টিমিডিয়া প্রশিক্ষণ কক্ষ ও কনফারেন্স রুম তৈরি, ৩৩টি সেমিনার আয়োজনের কথা। তবে প্রকল্প শুরুর পর সাড়ে ছয় বছরে অগ্রগতি মাত্র ৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ। নতুন করে আবার প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনের বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. মোরশীদুল হাসান ৩১ আগস্ট আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নেওয়ার আগে এই প্রশিক্ষণগুলো হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী অডিট আপত্তিগুলোর জবাব দেওয়া হবে। এর আগেও কমপ্লায়েন্স অডিট আপত্তির জবাব দিয়েছি।’
প্রতিটি কক্ষই একেকটি ভেন্যু
শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১২টি সরকারি শিক্ষক প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান ও প্রকল্প কার্যালয়ে প্রশিক্ষণ হয়েছে। এতে ১২ ক্যাটাগরিতে অংশ নিয়েছেন ১ লাখ ৪৭ হাজার ৯১৩ জন শিক্ষক-প্রশিক্ষক ও কর্মকর্তা। প্রশিক্ষণ ভেন্যুগুলো হলো: সরকারি শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ, রাজশাহী; উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, রাজশাহী; সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, যশোর; সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, বরিশাল; উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, বরিশাল; সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ (পুরুষ), ময়মনসিংহ; সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ (মহিলা), ময়মনসিংহ; সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, কুমিল্লা; উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, কুমিল্লা; সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, সিলেট; সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, চট্টগ্রাম; সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, ঢাকা। প্রতিষ্ঠানগুলোতে একই সময়ে একাধিক ব্যাচে ভিন্ন ভিন্ন কক্ষে একই প্রশিক্ষণ হয়েছে। অথচ প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে একক ভেন্যু হিসেবে বিবেচনা না করে প্রতিটি কক্ষকে একেকটি ভেন্যু দেখানো হয়েছে। এসব ভেন্যুর এবং মাউশির প্রকল্প কার্যালয়ের ভাড়া বাবদ খরচ দেখানো হয়েছে মোট ৯ কোটি ৩০ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ টাকা। এর মধ্যে মাউশির প্রকল্প কার্যালয়ের ভাড়া দেখানো হয়েছে ১২ লাখ ৫৫ হাজার ৫০০ টাকা। তবে এসব ভাড়া নির্দেশনা অনুযায়ী সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়নি।
নিরীক্ষা প্রতিবেদনে এই অর্থ আদায় করে সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
প্রাপ্য না হলেও সম্মানী ভাতা
নিরীক্ষা প্রতিবেদন বলছে, ঢাকায় প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত প্রকল্প পরিচালক, উপপরিচালক, সহকারী পরিচালক পদের একাধিক কর্মকর্তা প্রশিক্ষণ ভেন্যুতে না গিয়েও এক কর্মকর্তার পক্ষে অন্য কর্মকর্তার স্বাক্ষরে এবং কর্মকর্তার নামের বিপরীতে ভুয়া স্বাক্ষরের মাধ্যমে সম্মানী নিয়েছেন। এ ছাড়া প্রশিক্ষণ ভেন্যুতে কর্মরত প্রশিক্ষকেরা ভ্রমণ ভাতা, ভ্রমণ ভাতা-সংক্রান্ত নির্দেশনা লঙ্ঘন করে সব প্রশিক্ষণার্থীকে ভ্রমণ ভাতা এবং বাজেট না থাকলেও বিধিবহির্ভূতভাবে ডেটা এন্ট্রি অপারেটরদের সম্মানী দেওয়া হয়েছে। প্রাপ্য না হলেও এসব সম্মানী ও ভাতা দিয়ে সরকারের ৩ কোটি ১৪ লাখ ৯২ হাজার ২৮৮ টাকা ক্ষতি করা হয়েছে। চাকরিবিধি অনুযায়ী, ৫ মাইল বা ৮ কিলোমিটারের কম দূরত্বে ভ্রমণ ভাতা প্রাপ্য নয়।
প্রশিক্ষণ উপকরণ কেনায়ও অনিয়ম
নিরীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রশিক্ষণের জন্য উপকরণ কেনাকাটায়ও অনিয়ম হয়েছে। প্রয়োজন না থাকলেও প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল, সনদ ছাপানো হয়েছে। একটি ভাউচার একাধিকবার ফটোকপি করে প্রশিক্ষণ উপকরণ কেনা এবং খাবারের একাধিক বিলে সংযোজন করা হয়েছে। ভেন্যুগুলো সরবরাহকারীর কাছ থেকে নগদে প্রশিক্ষণ উপকরণ কিনলেও পরিবহন খরচ দেওয়া হয়েছে। একই পণ্য বারবার কেনা দেখানো হয়েছে। কোনো কোনো ভেন্যুতে কেনা পণ্যের সুনির্দিষ্ট আইটেমও উল্লেখ করা হয়নি। এসব অনিয়মে ক্ষতি ৫৮ লাখ ২৫ হাজার ৯৬১ টাকা।
মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষের আগেই মডেম কেনা
প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ স্থাপনের জন্য ল্যাপটপ, প্রজেক্টর, ইন্টারনেট মডেম, স্টেরিও স্পিকার নির্ধারিত ছিল। কিন্তু অন্য সামগ্রী না কিনে শুধু ১৩ হাজার ৫৭৪টি ইন্টারনেট মডেম কেনা ও বিতরণ করা হয়। কিন্তু মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ স্থাপিত না হওয়ায় মডেমগুলো মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ পরিচালনায় ব্যবহৃত হয়নি। এতে সরকারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ৩ কোটি ৪৩ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬ টাকা।
কনসালট্যান্সি ফি প্রদান
নিরীক্ষার তথ্য বলছে, প্রকল্পের কেনাকাটার জন্য অধ্যাপক খবিরুল হক চৌধুরীকে পরামর্শক (কনসালট্যান্ট) নিয়োগ করা হয়। ২৪ মাস মেয়াদ থাকলেও তিনি কাজ করেন ১৮ মাস ২২ দিন। তবে ডিপিপি অনুসারে নির্ধারিত কেনাকাটা সম্পন্ন না হওয়ায় পরামর্শক সম্মানী বাবদ অপচয় হয়েছে ৫৬ লাখ ২০ হাজার টাকা।
জানতে চাইলে খবিরুল হক চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তাঁদের তথ্য সত্য নয়। উল্টো বেআইনিভাবে তাঁরা আমার প্রাপ্য সম্মানী আটকে রেখেছেন। এ জন্য তাঁদের চিঠিও দিয়েছি।’
ইন্টারনেট না থাকলেও বিল
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রশিক্ষণ কক্ষে ইন্টারনেট সংযোগ না থাকলেও ১৯ লাখ ৪১ হাজার টাকা ইন্টারনেটের বিল পরিশোধ করা হয়েছে বলে দেখানো হয়েছে। এ ছাড়া নির্দিষ্ট বরাদ্দের বাইরে ১৬ লাখ ২৩ হাজার ৬০০ টাকার অতিরিক্ত ইন্টারনেট বিল পরিশোধ দেখানো হয়েছে।
নিরীক্ষা প্রতিবেদনের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এ প্রকল্পে প্রশিক্ষণের নামে যেভাবে রাষ্ট্রীয় অর্থ লুটপাট করা হয়েছে, তা নজিরবিহীন। এর সঙ্গে জড়িত সবাইকে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে; যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের অনিয়ম বন্ধ হয়।
শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের এই অডিট আপত্তিগুলোর বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব (নিরীক্ষা ও আইন) মূকেশ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, এখনো প্রতিবেদনটি পাননি। অডিট আপত্তি হলে নিয়ম অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ব্রডশিটে জবাব দেবেন। এরপর তা নিষ্পত্তির জন্য ত্রিপক্ষীয় বৈঠক ডাকা হবে। এতেও নিষ্পত্তি না হলে আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

প্রশিক্ষণ ভেন্যুর ভাড়া দিতেই খরচ ৯ কোটি ৩০ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ টাকা! এই খরচ দেখানো হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের একটি প্রকল্পের প্রশিক্ষণে। ১২টি প্রতিষ্ঠানে এই প্রশিক্ষণ হলেও একটি প্রতিষ্ঠানকে একক ভেন্যু না দেখিয়ে প্রতিটি কক্ষকে একেকটি ভেন্যু হিসেবে ভাড়া উত্তোলন করা হয়েছে। এমন অনিয়ম ধরা পড়েছে বাংলাদেশ মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের অধীন শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের নিরীক্ষা প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রাপ্য না হলেও কর্মকর্তা, প্রশিক্ষক, প্রশিক্ষণার্থী ও সহায়ক কর্মচারীদের সম্মানী এবং ভাতা দিয়ে সরকারের ৩ কোটি ১৪ লাখ ৯২ হাজার ২৮৮ টাকা আর্থিক ক্ষতি করা হয়েছে। ভেন্যুতে উপস্থিত না থেকেও এক কর্মকর্তার পক্ষে অন্যজনের স্বাক্ষরে এবং কর্মকর্তার নামের বিপরীতে ভুয়া স্বাক্ষরের মাধ্যমেও সম্মানী তোলা হয়েছে। এ ছাড়া মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ স্থাপিত না হলেও সাড়ে ১৩ হাজারের বেশি ইন্টারনেট মডেম কিনে বিতরণ করা হয় এবং সেগুলো ব্যবহৃত না হওয়ায় ৩ কোটি ৪৩ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬ টাকা অপচয় করা হয়েছে।
নয়ছয়ের এই ব্যয় হয়েছে মাউশির ‘আইসিটির মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার প্রচলন (দ্বিতীয় পর্যায়)’ শীর্ষক প্রকল্পে প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে। শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে এই প্রশিক্ষণের খরচে অনিয়ম তুলে ধরে ১২টি অডিট ফাইন্ডিংস উল্লেখ করা হয়েছে। এই অনিয়ম হয়েছে চার অর্থবছরে, ২০১৭-২০১৮ থেকে ২০২০-২০২১ অর্থবছর পর্যন্ত। পারফরম্যান্স অডিটের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রশিক্ষণে অনিয়মের মাধ্যমে সরকারের ১৭ কোটি ৩৮ লাখ ৫৩ হাজার ৪৮৫ টাকার আর্থিক ক্ষতি ও অপচয় হয়েছে। প্রতিবেদনটি গত ২০ আগস্ট মাউশিতে পাঠানো হয়। অনিয়ম হওয়া টাকা আদায়ের পাশাপাশি দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আমীমুল এহসান কবীর আজকের পত্রিকাকে বলেন, পারফরম্যান্স অডিট ইন্সপেকশন প্রতিবেদনটি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। তিন সপ্তাহের মধ্যে আপত্তিগুলোর জবাব দিতে অনুরোধ করা হয়েছে।
তবে প্রতিবেদনের বিষয়ে মাউশির পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন উইং) অধ্যাপক ড. এ কিউ এম শফিউল আজম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই, অবশ্যই খোঁজ নেব।’
দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে শ্রেণিকক্ষের পাঠদান আধুনিকায়ন এবং আইসিটিভিত্তিক জ্ঞান বিকাশের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর অংশ হিসেবে ২০১৬ সালের জুনে আইসিটির মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার প্রচলন (দ্বিতীয় পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্পটি নেওয়া হয়। এতে ব্যয় ধরা হয় মোট ১ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকা। এই প্রকল্পের আওতায় ৫ লাখ ৭২ হাজার ৮৪০ জন শিক্ষককে প্রশিক্ষণ, ৪৬ হাজার ৩৪০টি মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ তৈরি, ২ হাজার ১২০টি স্মার্ট শ্রেণিকক্ষ তৈরি, ৬৬৮টি মাল্টিমিডিয়া প্রশিক্ষণ কক্ষ ও কনফারেন্স রুম তৈরি, ৩৩টি সেমিনার আয়োজনের কথা। তবে প্রকল্প শুরুর পর সাড়ে ছয় বছরে অগ্রগতি মাত্র ৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ। নতুন করে আবার প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনের বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. মোরশীদুল হাসান ৩১ আগস্ট আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নেওয়ার আগে এই প্রশিক্ষণগুলো হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী অডিট আপত্তিগুলোর জবাব দেওয়া হবে। এর আগেও কমপ্লায়েন্স অডিট আপত্তির জবাব দিয়েছি।’
প্রতিটি কক্ষই একেকটি ভেন্যু
শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১২টি সরকারি শিক্ষক প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান ও প্রকল্প কার্যালয়ে প্রশিক্ষণ হয়েছে। এতে ১২ ক্যাটাগরিতে অংশ নিয়েছেন ১ লাখ ৪৭ হাজার ৯১৩ জন শিক্ষক-প্রশিক্ষক ও কর্মকর্তা। প্রশিক্ষণ ভেন্যুগুলো হলো: সরকারি শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ, রাজশাহী; উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, রাজশাহী; সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, যশোর; সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, বরিশাল; উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, বরিশাল; সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ (পুরুষ), ময়মনসিংহ; সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ (মহিলা), ময়মনসিংহ; সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, কুমিল্লা; উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, কুমিল্লা; সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, সিলেট; সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, চট্টগ্রাম; সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, ঢাকা। প্রতিষ্ঠানগুলোতে একই সময়ে একাধিক ব্যাচে ভিন্ন ভিন্ন কক্ষে একই প্রশিক্ষণ হয়েছে। অথচ প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে একক ভেন্যু হিসেবে বিবেচনা না করে প্রতিটি কক্ষকে একেকটি ভেন্যু দেখানো হয়েছে। এসব ভেন্যুর এবং মাউশির প্রকল্প কার্যালয়ের ভাড়া বাবদ খরচ দেখানো হয়েছে মোট ৯ কোটি ৩০ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ টাকা। এর মধ্যে মাউশির প্রকল্প কার্যালয়ের ভাড়া দেখানো হয়েছে ১২ লাখ ৫৫ হাজার ৫০০ টাকা। তবে এসব ভাড়া নির্দেশনা অনুযায়ী সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়নি।
নিরীক্ষা প্রতিবেদনে এই অর্থ আদায় করে সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
প্রাপ্য না হলেও সম্মানী ভাতা
নিরীক্ষা প্রতিবেদন বলছে, ঢাকায় প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত প্রকল্প পরিচালক, উপপরিচালক, সহকারী পরিচালক পদের একাধিক কর্মকর্তা প্রশিক্ষণ ভেন্যুতে না গিয়েও এক কর্মকর্তার পক্ষে অন্য কর্মকর্তার স্বাক্ষরে এবং কর্মকর্তার নামের বিপরীতে ভুয়া স্বাক্ষরের মাধ্যমে সম্মানী নিয়েছেন। এ ছাড়া প্রশিক্ষণ ভেন্যুতে কর্মরত প্রশিক্ষকেরা ভ্রমণ ভাতা, ভ্রমণ ভাতা-সংক্রান্ত নির্দেশনা লঙ্ঘন করে সব প্রশিক্ষণার্থীকে ভ্রমণ ভাতা এবং বাজেট না থাকলেও বিধিবহির্ভূতভাবে ডেটা এন্ট্রি অপারেটরদের সম্মানী দেওয়া হয়েছে। প্রাপ্য না হলেও এসব সম্মানী ও ভাতা দিয়ে সরকারের ৩ কোটি ১৪ লাখ ৯২ হাজার ২৮৮ টাকা ক্ষতি করা হয়েছে। চাকরিবিধি অনুযায়ী, ৫ মাইল বা ৮ কিলোমিটারের কম দূরত্বে ভ্রমণ ভাতা প্রাপ্য নয়।
প্রশিক্ষণ উপকরণ কেনায়ও অনিয়ম
নিরীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রশিক্ষণের জন্য উপকরণ কেনাকাটায়ও অনিয়ম হয়েছে। প্রয়োজন না থাকলেও প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল, সনদ ছাপানো হয়েছে। একটি ভাউচার একাধিকবার ফটোকপি করে প্রশিক্ষণ উপকরণ কেনা এবং খাবারের একাধিক বিলে সংযোজন করা হয়েছে। ভেন্যুগুলো সরবরাহকারীর কাছ থেকে নগদে প্রশিক্ষণ উপকরণ কিনলেও পরিবহন খরচ দেওয়া হয়েছে। একই পণ্য বারবার কেনা দেখানো হয়েছে। কোনো কোনো ভেন্যুতে কেনা পণ্যের সুনির্দিষ্ট আইটেমও উল্লেখ করা হয়নি। এসব অনিয়মে ক্ষতি ৫৮ লাখ ২৫ হাজার ৯৬১ টাকা।
মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষের আগেই মডেম কেনা
প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ স্থাপনের জন্য ল্যাপটপ, প্রজেক্টর, ইন্টারনেট মডেম, স্টেরিও স্পিকার নির্ধারিত ছিল। কিন্তু অন্য সামগ্রী না কিনে শুধু ১৩ হাজার ৫৭৪টি ইন্টারনেট মডেম কেনা ও বিতরণ করা হয়। কিন্তু মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ স্থাপিত না হওয়ায় মডেমগুলো মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ পরিচালনায় ব্যবহৃত হয়নি। এতে সরকারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ৩ কোটি ৪৩ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬ টাকা।
কনসালট্যান্সি ফি প্রদান
নিরীক্ষার তথ্য বলছে, প্রকল্পের কেনাকাটার জন্য অধ্যাপক খবিরুল হক চৌধুরীকে পরামর্শক (কনসালট্যান্ট) নিয়োগ করা হয়। ২৪ মাস মেয়াদ থাকলেও তিনি কাজ করেন ১৮ মাস ২২ দিন। তবে ডিপিপি অনুসারে নির্ধারিত কেনাকাটা সম্পন্ন না হওয়ায় পরামর্শক সম্মানী বাবদ অপচয় হয়েছে ৫৬ লাখ ২০ হাজার টাকা।
জানতে চাইলে খবিরুল হক চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তাঁদের তথ্য সত্য নয়। উল্টো বেআইনিভাবে তাঁরা আমার প্রাপ্য সম্মানী আটকে রেখেছেন। এ জন্য তাঁদের চিঠিও দিয়েছি।’
ইন্টারনেট না থাকলেও বিল
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রশিক্ষণ কক্ষে ইন্টারনেট সংযোগ না থাকলেও ১৯ লাখ ৪১ হাজার টাকা ইন্টারনেটের বিল পরিশোধ করা হয়েছে বলে দেখানো হয়েছে। এ ছাড়া নির্দিষ্ট বরাদ্দের বাইরে ১৬ লাখ ২৩ হাজার ৬০০ টাকার অতিরিক্ত ইন্টারনেট বিল পরিশোধ দেখানো হয়েছে।
নিরীক্ষা প্রতিবেদনের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এ প্রকল্পে প্রশিক্ষণের নামে যেভাবে রাষ্ট্রীয় অর্থ লুটপাট করা হয়েছে, তা নজিরবিহীন। এর সঙ্গে জড়িত সবাইকে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে; যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের অনিয়ম বন্ধ হয়।
শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের এই অডিট আপত্তিগুলোর বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব (নিরীক্ষা ও আইন) মূকেশ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, এখনো প্রতিবেদনটি পাননি। অডিট আপত্তি হলে নিয়ম অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ব্রডশিটে জবাব দেবেন। এরপর তা নিষ্পত্তির জন্য ত্রিপক্ষীয় বৈঠক ডাকা হবে। এতেও নিষ্পত্তি না হলে আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৩ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

প্রশিক্ষণ ভেন্যুর ভাড়া দিতেই খরচ ৯ কোটি ৩০ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ টাকা! এই খরচ দেখানো হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের একটি প্রকল্পের প্রশিক্ষণে। ১২টি প্রতিষ্ঠানে এই প্রশিক্ষণ হলেও একটি প্রতিষ্ঠানকে একক ভেন্যু না দেখিয়ে প্রতিটি কক্ষকে একেকটি ভেন্যু হিসেবে ভাড়া উত্তোলন কর
০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

প্রশিক্ষণ ভেন্যুর ভাড়া দিতেই খরচ ৯ কোটি ৩০ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ টাকা! এই খরচ দেখানো হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের একটি প্রকল্পের প্রশিক্ষণে। ১২টি প্রতিষ্ঠানে এই প্রশিক্ষণ হলেও একটি প্রতিষ্ঠানকে একক ভেন্যু না দেখিয়ে প্রতিটি কক্ষকে একেকটি ভেন্যু হিসেবে ভাড়া উত্তোলন কর
০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৩ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

প্রশিক্ষণ ভেন্যুর ভাড়া দিতেই খরচ ৯ কোটি ৩০ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ টাকা! এই খরচ দেখানো হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের একটি প্রকল্পের প্রশিক্ষণে। ১২টি প্রতিষ্ঠানে এই প্রশিক্ষণ হলেও একটি প্রতিষ্ঠানকে একক ভেন্যু না দেখিয়ে প্রতিটি কক্ষকে একেকটি ভেন্যু হিসেবে ভাড়া উত্তোলন কর
০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৩ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

প্রশিক্ষণ ভেন্যুর ভাড়া দিতেই খরচ ৯ কোটি ৩০ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ টাকা! এই খরচ দেখানো হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের একটি প্রকল্পের প্রশিক্ষণে। ১২টি প্রতিষ্ঠানে এই প্রশিক্ষণ হলেও একটি প্রতিষ্ঠানকে একক ভেন্যু না দেখিয়ে প্রতিটি কক্ষকে একেকটি ভেন্যু হিসেবে ভাড়া উত্তোলন কর
০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৩ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫