Ajker Patrika

খোলা আকাশের নিচে ক্লাস প্রতিদিন বেঞ্চ টানাটানি

ক্ষেতলাল (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
খোলা আকাশের নিচে ক্লাস প্রতিদিন বেঞ্চ টানাটানি

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার শাখারুঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয় চলতি বছরের ৬ এপ্রিল। তবে নতুন ভবন নির্মাণে এখনো কোনো উদ্যোগ নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। এতে ছয় মাস ধরে খোলা আকাশের নিচে চলছে পাঠদান।

আলাদা কক্ষ না থাকায় কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে এ ব্যবস্থা নিয়েছেন শিক্ষকেরা। তাঁরা জানান, প্রতিদিন খোলা আকাশের নিচে চেয়ার-টেবিল ও বেঞ্চ আনা-নেওয়া করতে বিড়ম্বনায় পড়তে হলেও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য তাঁরা এভাবেই পাঠদান করছেন।

বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ বিদ্যালয়ে ১০৭ জন শিক্ষার্থী ও ৫ জন শিক্ষক রয়েছেন। বিদ্যালয়ের তিন কক্ষের একমাত্র পাকা ভবনটি ২০০০ সালে নির্মাণ করা হয়। কিন্তু মাত্র ২২ বছরেই ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে। ভবনটির ছাদ এবং গ্রেড বিমে দেখা দিয়েছে ফাটল। খসে পড়ছে পলেস্তারা। বের হয়ে থাকা গ্রেড বিমের রডেও জং ধরেছে। দেবে গেছে মেঝে।

দুর্ঘটনায় আশঙ্কায় বিষয়টি জেলা ও উপজেলা কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়। পরে প্রকৌশল বিভাগের  একটি তদন্ত দল পরিদর্শন করে চলতি বছরের ৬ এপ্রিল বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে।

এরপর কক্ষসংকটের কারণে বিদ্যালয় মাঠে সাময়িকভাবে একটি টিনের বেড়ার ঘর নির্মাণ করা হলেও গরমে হাঁসফাঁস করে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। এতে খোলা আকাশের নিচে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস চলছে। ফলে কখনো রোদ কখনো বৃষ্টির কারণে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা। আর ঝুঁকি নিয়ে পরিত্যক্ত ভবনেই প্রশাসনিক কার্যক্রম চালাচ্ছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা।

বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী আপন বলে, ‘খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করতে আমাদের খুব অসুবিধা হয়। বৃষ্টিতে বই খাতা ভিজে যায়।’ পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী সেঁজুতি বলে, ‘শ্রেণিকক্ষ ফেটে যাওয়ায় ক্লাস নেওয়া হয় টিনের ঘরে। কিন্তু রোদ উঠলে টিনের ঘর খুবই গরম হয়। বসে থাকা যায় না।’

সহকারী শিক্ষক মেহেদি হাসান বলেন, ‘পরিত্যক্ত ঘোষণা করার পর তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের খোলা আকাশের নিচে নিচ্ছি। এতে প্রতিদিন ভারী ভারী বেঞ্চ তুলতে ও নামাতে খুবই সমস্যা হয়।’

প্রধান শিক্ষক নাজমা বানু বলেন, ‘শ্রেণিকক্ষ-সংকটের কারণে পাঠদান কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কারণে খোলা আকাশের নিচে পাঠদান চললেও ঝুঁকি নিয়ে পরিত্যক্ত ভবনেই আমাদের প্রশাসনিক কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’

ক্ষেতলাল উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোজাম্মেল হক শাহ বলেন, ‘ভবনের ভগ্নদশার কারণে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য ছয় মাস আগে তা পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে।

ফলে বিদ্যালয়ের শিশুশিক্ষার্থীদের বাইরে পাঠদান চলছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন মহলকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত