বাসব রায়
মহাভারতে দেখেছি, কৌরবকুল শিরোমণি রাজাধিরাজ ধৃতরাষ্ট্র জন্মান্ধ ছিলেন, কিন্তু তাঁর জ্ঞানচক্ষু ছিল সব সময়ই খোলা। বিচক্ষণ জন্মান্ধ ধৃতরাষ্ট্র ধর্ম ও রাজনৈতিকভাবে সচেতন ছিলেন। তিনি যুদ্ধবিগ্রহ, রক্তপাত—এসব কিছুই পছন্দ করতেন না। ধর্মীয় রীতিনীতির সঠিক প্রয়োগ হোক এটি তিনি চেয়েছেন, কিন্তু তাঁর শত পুত্রের বিরাট দল যুদ্ধবিগ্রহ ছাড়া বুঝতেন না। যা-ই হোক, আমার আলোচ্য বিষয় মহাভারত নিয়ে নয়। আর মহাভারতীয় দর্শন বা শিক্ষাদীক্ষা বিষয়টি আমার জন্য বরাবরই আতঙ্কের বিষয়। জানাশোনা ও প্রচুর পড়ালেখা না থাকলে এমন গুরুত্বপূর্ণ গভীর দর্শনাশ্রয়ী ভাবাদর্শ নিয়ে বলার সক্ষমতা যে আমার নেই তা আমি জানি, মানি এবং অকপটে স্বীকারও করি।
জন্মান্ধ বা অসুস্থতাজনিত অন্ধত্ব ছাড়াও নানা ধরনের অন্ধতা আছে আমাদের চারপাশে। আমরা কেউ জেনে অন্ধ, কেউ না জেনে বা শুনে অন্ধ। আবার কেউ ইচ্ছে-অন্ধ হয়ে আছি। সমাজে প্রচলিত এসব অন্ধ আমাদের পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতিকে বিষিয়ে তুলতে পারে খুব সহজেই; এদের বড় গুণ হলো এরা সাধারণ মানুষকে খুব সহজেই অন্ধ বানিয়ে ফেলে। আর সহজ-সরল মানুষগুলোও এমন অন্ধ সাজতে দ্বিতীয়বার ভাবে না। আমরা অতিপ্রাকৃত বিষয় নিয়ে জন্মের পর থেকেই শারীরিক ও মানসিকভাবে আতঙ্কিত থাকি। কারণ জুজুবুড়ির ভয় আমরা পারিবারিক জীবনের শুরুতেই লাভ করি। ভূত-পেতনির ভয় আমাদের অন্তরে একদম ঠাসা। ঈশ্বরের প্রতি শ্রদ্ধা-ভক্তি থাকবেই, এটা ভিন্ন বিষয় নয়। আমরা ব্যক্তিজীবনে যে যতটা পেরেছি কেউ জীবনমানকে অনেক ওপরে তুলেছি, কেউ মাঝামাঝি আছি, আবার কেউ নিম্নস্তরে গড়াগড়ি খাচ্ছি। সব স্তরেই ভগবানের ইচ্ছা বা অনিচ্ছা যে চিরজাগরূক, সে বিষয়ে বিন্দুমাত্র সন্দেহ আমাদের নেই এবং এ ক্ষেত্রে আমরা সর্বোচ্চ অন্ধত্বকে সাদর সম্ভাষণ জানিয়ে এসেছি সব সময়। তবুও মোক্ষপ্রাপ্তি ঘটুক এই দিশেহারা মানবকুলের—এটিই বড় প্রার্থনা।
ভগবানকে পেতে বা তাঁর অনুসারীদের সান্নিধ্য লাভে যদি কিছুটা অন্ধ হতে হয় নিজেকে, তাতে ক্ষতি তো নেই! বিশ্বব্রহ্মাণ্ড পরিচালনাকারীদের কাউকে যদি কাছাকাছি পেয়ে যাই তাহলে সরাসরি চোখ দুটোকে উৎসর্গ করতেও তো কেউ দ্বিধা করবে না। পারমার্থিক বিষয়গুলো বরাবর ধরাছোঁয়ার বাইরেই থাকে, এগুলো কেবল অনুভূতির বিষয়। জাগতিক জীবনে থেকে পারমার্থিক এমন গভীর অনুভূতি বা ভাবনা খুব সহজ ব্যাপার নয়। শাস্ত্রীয় রীতিতে পরিপূর্ণ বিশ্বাস স্থাপনপূর্বক প্রভূত জ্ঞানার্জন সেরে যুগের পর যুগ সাধনায় সিদ্ধি লাভ করে, তবেই ভগবানের কাছাকাছি আসার একটা পথ তৈরি হয়; এ তো সহজ বিষয় নয়। এরপর মনের অন্ধকার বা অন্ধত্বকে সরিয়ে সাধারণদের মাঝে ঈশ্বরপ্রাপ্তির নানাবিধ পথ ও উপায় সম্পর্কে জ্ঞানদান করা বড় জটিল একটি কর্ম। এসব প্রচলিত পদ্ধতির অনুসরণ করে পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্র উপকৃত হয়, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিন্তু মত ও পথের ঊর্ধ্বে উঠে যখন আমরা কোনো ব্যক্তিকে ঈশ্বর সাজাই বা বানাই বা মানি, তখন স্বয়ং ঈশ্বর কি তা মানতে পারেন? এখানেই আমরা আমাদের সুতীব্র অন্ধত্বকে স্বীকার করি।
মনের ভেতর পুষে রাখা কঠিন অন্ধকার নিয়ে আলো জ্বালাতে চাওয়া হলো চরম ধৃষ্টতা। আবেগ যখন সব নিয়মকানুন আর আচার-আচরণকে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়, তখন মানুষ প্রকৃতপক্ষে অন্ধ হয়ে যায় এবং নিজের প্রচলিত আদর্শকে একমুহূর্তেই জলাঞ্জলি দিতে দ্বিধা করে না। পারিবারিক বা সামাজিক রীতিনীতিকে তোয়াক্কা না করে নিছক গালগল্পের চেরাগ জ্বালিয়ে যারা আলো দেখতে চায় বা অন্যকে দেখাতে চায়, মূলত তারাই অন্ধকারকে লালন-পালন করে। ঔপনিবেশিক ভাবধারায় প্রথিত চেতনাকে জীবনমুখী না করে পশ্চাৎ-মুখী করাটাই একদল সচেতন অন্ধের কাজ। কূপমণ্ডূক একদল সেসবের অনুসরণ করে সেজে যায় কংসের মতো আস্ত একেকটা অসুর। বিপর্যয় নামে চলমান জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই; দুর্বিনীতের কোপে ছিন্নভিন্ন হয় মানুষের বিবেক-বুদ্ধি। মানুষ আর মানুষ থাকে না! স্বাভাবিক বোধশক্তিকে অকেজো করে শুরু হয় অশুভ তৎপরতা। ফলে পুরো সমাজ পতিত হয় ঘোর-অন্ধকারে। আগ্রাসী এবং ধ্বংসাত্মক এসব কার্যকলাপ কারও জন্যই সুখকর নয়।
ঈশ্বরকে স্বীকার করতে এবং ঈশ্বরের অস্তিত্বকে মেনে নিতে খুব বেশি হইচইয়ের দরকার পড়ে কি? তথাকথিত খ্যাতিমান মানুষদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে পরোক্ষভাবে যখন ঈশ্বরের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়ে, তখন ঘোষিত আস্তিকেরা মুখোশপরা বিশৃঙ্খলাকারী ছাড়া আর কিছুই নয়। আমরা আর অন্ধ না হই, চোখ-কান খোলা রেখেই বিবেকবোধকে সমুন্নত রেখে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারি। ইচ্ছে করে অন্ধ সেজে নিজেদের ক্ষতি আর না করি।
মহাভারতে দেখেছি, কৌরবকুল শিরোমণি রাজাধিরাজ ধৃতরাষ্ট্র জন্মান্ধ ছিলেন, কিন্তু তাঁর জ্ঞানচক্ষু ছিল সব সময়ই খোলা। বিচক্ষণ জন্মান্ধ ধৃতরাষ্ট্র ধর্ম ও রাজনৈতিকভাবে সচেতন ছিলেন। তিনি যুদ্ধবিগ্রহ, রক্তপাত—এসব কিছুই পছন্দ করতেন না। ধর্মীয় রীতিনীতির সঠিক প্রয়োগ হোক এটি তিনি চেয়েছেন, কিন্তু তাঁর শত পুত্রের বিরাট দল যুদ্ধবিগ্রহ ছাড়া বুঝতেন না। যা-ই হোক, আমার আলোচ্য বিষয় মহাভারত নিয়ে নয়। আর মহাভারতীয় দর্শন বা শিক্ষাদীক্ষা বিষয়টি আমার জন্য বরাবরই আতঙ্কের বিষয়। জানাশোনা ও প্রচুর পড়ালেখা না থাকলে এমন গুরুত্বপূর্ণ গভীর দর্শনাশ্রয়ী ভাবাদর্শ নিয়ে বলার সক্ষমতা যে আমার নেই তা আমি জানি, মানি এবং অকপটে স্বীকারও করি।
জন্মান্ধ বা অসুস্থতাজনিত অন্ধত্ব ছাড়াও নানা ধরনের অন্ধতা আছে আমাদের চারপাশে। আমরা কেউ জেনে অন্ধ, কেউ না জেনে বা শুনে অন্ধ। আবার কেউ ইচ্ছে-অন্ধ হয়ে আছি। সমাজে প্রচলিত এসব অন্ধ আমাদের পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতিকে বিষিয়ে তুলতে পারে খুব সহজেই; এদের বড় গুণ হলো এরা সাধারণ মানুষকে খুব সহজেই অন্ধ বানিয়ে ফেলে। আর সহজ-সরল মানুষগুলোও এমন অন্ধ সাজতে দ্বিতীয়বার ভাবে না। আমরা অতিপ্রাকৃত বিষয় নিয়ে জন্মের পর থেকেই শারীরিক ও মানসিকভাবে আতঙ্কিত থাকি। কারণ জুজুবুড়ির ভয় আমরা পারিবারিক জীবনের শুরুতেই লাভ করি। ভূত-পেতনির ভয় আমাদের অন্তরে একদম ঠাসা। ঈশ্বরের প্রতি শ্রদ্ধা-ভক্তি থাকবেই, এটা ভিন্ন বিষয় নয়। আমরা ব্যক্তিজীবনে যে যতটা পেরেছি কেউ জীবনমানকে অনেক ওপরে তুলেছি, কেউ মাঝামাঝি আছি, আবার কেউ নিম্নস্তরে গড়াগড়ি খাচ্ছি। সব স্তরেই ভগবানের ইচ্ছা বা অনিচ্ছা যে চিরজাগরূক, সে বিষয়ে বিন্দুমাত্র সন্দেহ আমাদের নেই এবং এ ক্ষেত্রে আমরা সর্বোচ্চ অন্ধত্বকে সাদর সম্ভাষণ জানিয়ে এসেছি সব সময়। তবুও মোক্ষপ্রাপ্তি ঘটুক এই দিশেহারা মানবকুলের—এটিই বড় প্রার্থনা।
ভগবানকে পেতে বা তাঁর অনুসারীদের সান্নিধ্য লাভে যদি কিছুটা অন্ধ হতে হয় নিজেকে, তাতে ক্ষতি তো নেই! বিশ্বব্রহ্মাণ্ড পরিচালনাকারীদের কাউকে যদি কাছাকাছি পেয়ে যাই তাহলে সরাসরি চোখ দুটোকে উৎসর্গ করতেও তো কেউ দ্বিধা করবে না। পারমার্থিক বিষয়গুলো বরাবর ধরাছোঁয়ার বাইরেই থাকে, এগুলো কেবল অনুভূতির বিষয়। জাগতিক জীবনে থেকে পারমার্থিক এমন গভীর অনুভূতি বা ভাবনা খুব সহজ ব্যাপার নয়। শাস্ত্রীয় রীতিতে পরিপূর্ণ বিশ্বাস স্থাপনপূর্বক প্রভূত জ্ঞানার্জন সেরে যুগের পর যুগ সাধনায় সিদ্ধি লাভ করে, তবেই ভগবানের কাছাকাছি আসার একটা পথ তৈরি হয়; এ তো সহজ বিষয় নয়। এরপর মনের অন্ধকার বা অন্ধত্বকে সরিয়ে সাধারণদের মাঝে ঈশ্বরপ্রাপ্তির নানাবিধ পথ ও উপায় সম্পর্কে জ্ঞানদান করা বড় জটিল একটি কর্ম। এসব প্রচলিত পদ্ধতির অনুসরণ করে পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্র উপকৃত হয়, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিন্তু মত ও পথের ঊর্ধ্বে উঠে যখন আমরা কোনো ব্যক্তিকে ঈশ্বর সাজাই বা বানাই বা মানি, তখন স্বয়ং ঈশ্বর কি তা মানতে পারেন? এখানেই আমরা আমাদের সুতীব্র অন্ধত্বকে স্বীকার করি।
মনের ভেতর পুষে রাখা কঠিন অন্ধকার নিয়ে আলো জ্বালাতে চাওয়া হলো চরম ধৃষ্টতা। আবেগ যখন সব নিয়মকানুন আর আচার-আচরণকে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়, তখন মানুষ প্রকৃতপক্ষে অন্ধ হয়ে যায় এবং নিজের প্রচলিত আদর্শকে একমুহূর্তেই জলাঞ্জলি দিতে দ্বিধা করে না। পারিবারিক বা সামাজিক রীতিনীতিকে তোয়াক্কা না করে নিছক গালগল্পের চেরাগ জ্বালিয়ে যারা আলো দেখতে চায় বা অন্যকে দেখাতে চায়, মূলত তারাই অন্ধকারকে লালন-পালন করে। ঔপনিবেশিক ভাবধারায় প্রথিত চেতনাকে জীবনমুখী না করে পশ্চাৎ-মুখী করাটাই একদল সচেতন অন্ধের কাজ। কূপমণ্ডূক একদল সেসবের অনুসরণ করে সেজে যায় কংসের মতো আস্ত একেকটা অসুর। বিপর্যয় নামে চলমান জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই; দুর্বিনীতের কোপে ছিন্নভিন্ন হয় মানুষের বিবেক-বুদ্ধি। মানুষ আর মানুষ থাকে না! স্বাভাবিক বোধশক্তিকে অকেজো করে শুরু হয় অশুভ তৎপরতা। ফলে পুরো সমাজ পতিত হয় ঘোর-অন্ধকারে। আগ্রাসী এবং ধ্বংসাত্মক এসব কার্যকলাপ কারও জন্যই সুখকর নয়।
ঈশ্বরকে স্বীকার করতে এবং ঈশ্বরের অস্তিত্বকে মেনে নিতে খুব বেশি হইচইয়ের দরকার পড়ে কি? তথাকথিত খ্যাতিমান মানুষদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে পরোক্ষভাবে যখন ঈশ্বরের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়ে, তখন ঘোষিত আস্তিকেরা মুখোশপরা বিশৃঙ্খলাকারী ছাড়া আর কিছুই নয়। আমরা আর অন্ধ না হই, চোখ-কান খোলা রেখেই বিবেকবোধকে সমুন্নত রেখে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারি। ইচ্ছে করে অন্ধ সেজে নিজেদের ক্ষতি আর না করি।
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
২০ দিন আগেআধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫পাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
০৮ মে ২০২৫ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছিল। তা তুঙ্গে উঠল এবার পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা দিয়ে। পাশাপাশি সীমান্তেও দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে...
০৮ মে ২০২৫