Ajker Patrika

সরকারের ব্যাংকঋণ বেড়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২২, ০৮: ৩৯
সরকারের ব্যাংকঋণ বেড়েছে

ঘাটতি বাজেটের ব্যয় মেটাতে ব্যাংকিং খাত থেকে ঋণ নিচ্ছে সরকার। এতে এই খাত থেকে ঋণ বেড়েই চলছে। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের নভেম্বর মাস পর্যন্ত পাঁচ মাসে সরকারের মোট ঋণ বেড়েছে ২৮ হাজার ৮৩৪ কোটি টাকা। তবে ঋণ পরিশোধের পরে নিট ঋণের পরিমাণ ২৪ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের নভেম্বর পর্যন্ত সরকারের ব্যাংকিং খাতে ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৯৯ হাজার ১১৯ কোটি টাকা। যা গত অর্থবছরের জুন শেষে ছিল ২ লাখ ৭০ হাজার ২৮৫ কোটি টাকা। সেই হিসাবে জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে সরকারের ব্যাংকঋণ বেড়েছে ২৮ হাজার ৮৩৪ কোটি টাকা।

এদিকে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের আগস্ট শেষে ব্যাংক থেকে সরকারের নেওয়া ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছিল ২ লাখ ৬৭ হাজার ৫২ কোটি টাকা। এরপর সেপ্টেম্বর মাসে ঋণ স্থিতি দাঁড়ায় ২ লাখ ৮২ হাজার ৭১২ কোটি টাকা। যা অক্টোবর শেষে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৮৮ হাজার ৫০৮ কোটি টাকা। সবশেষে নভেম্বর মাসে ব্যাংকিং খাতে সরকারের ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৯৯ হাজার ১১৯ কোটি টাকা।

এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, ‘সরকারের রাজস্ব আয় কমে গেলে তখন ঋণ নেয়। বর্তমানে সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণও কম। কারণ, সঞ্চয়পত্রে বিভিন্ন শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে কমানো হয়েছে সুদের হার। তাই সরকারকে ঋণ নিতে হলে এখন ব্যাংকিং খাত থেকেই নিতে হবে। এসব কারণে ব্যাংকিং খাত থেকে সরকারের ঋণ বাড়ছে।’

এদিকে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট ঘাটতি পূরণে ১ লাখ ৬ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকার ব্যাংকঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে সরকার। আগের অর্থবছরে ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ছিল ৭৬ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা। অর্থাৎ এবার প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা বেশি ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকার। আর চলতি অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকেও ৩৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এমনিতেই ব্যাংকিং খাত তারল্য চাপে রয়েছে। এর ওপর সরকারের এই ঋণ চাপ আরও বাড়বে। সরকারের এই মুহূর্তে উচিত হবে, যেসব মেগা প্রজেক্টে বড় অঙ্কের অর্থ খরচ হয়, সেগুলো আপাতত বন্ধ করা।’

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রানীতির লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বাজারে টাকার প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না। এতে মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে যায়। বর্তমানে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে সৃষ্ট বৈশ্বিক সংকটের কারণে ও দেশীয় পরিস্থিতিতে মূল্যস্ফীতির হার ঊর্ধ্বমুখী। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক চলতি অর্থবছরের শুরুতে সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি অনুসরণের ঘোষণা দিয়েছে। এর আওতায় বাজারে টাকার প্রবাহ কমাতে তিন দফা নীতিনির্ধারণী সুদের হার বাড়িয়েছে। তারপরও সরকারি ও বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবাহ বেড়েছে। এর মধ্যে সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে লাগামহীনভাবে ঋণ নিচ্ছে। সব মিলিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকও নগদ টাকার চাপে রয়েছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত