Ajker Patrika

কেন ক্লাব কিনতে আগ্রহী মরুর ধনকুবেররা

আপডেট : ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১৩: ১৮
কেন ক্লাব কিনতে আগ্রহী মরুর ধনকুবেররা

কয়েক বছর ধরে ফুটবল-ক্রিকেটের মতো জনপ্রিয় ক্রীড়াক্ষেত্র বিশাল অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগ করে আসছে উপসাগরীয় দেশগুলো। নিজেদের ঘরোয়া লিগগুলোয় তারকা ফুটবলারদের নিয়ে আসার পাশাপাশি সৌদি আরব ও কাতারের ধনকুবেররা যেন প্রতিযোগিতায় নেমেছে ইউরোপীয় ক্লাব কেনায়।

২০২১ সালের অক্টোবরে প্রায় ৩ হাজার ৪৯৮ কোটি টাকায় নিউক্যাসল কিনে নেয় সৌদি মালিকানাধীন কনসোর্টিয়াম সৌদি পাবলিক ইনভেস্ট ফান্ড (পিআইএফ)। এটির প্রধান সৌদি যুবরাজ প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। রাতারাতি নিউক্যাসল হয়ে ওঠে ইউরোপের সবচেয়ে ধনী ক্লাব। 

এবার ৬৭ হাজার কোটি টাকায়  ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড কিনতে চান কাতারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ও ব্যাংকার শেখ জসিম বিন হামাদ আল থানি। রেড ডেভিলদের মালিকানা পেতে চান স্যার জিম র‍্যাটক্লিফের ইনিওস গ্রুপও। দুজনই শেষদিনে দরপত্র জমা দিয়েছেন। গ্লেজার্স পরিবার ইউনাইটেডের মালিকানা ছাড়ার ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে আগ্রহ জানিয়ে আসছেন এই দুই ধনকুবের।

ইউরোপের বেশ কয়েকটি ক্লাবের মালিক মধ্যপ্রাচ্যের ধনকুবেররা। আরব আমিরাতের ধনকুবের শেখ মনসুর কিনে নেন ম্যানচেস্টার সিটি ও পিএসজি কিনেছেন কাতারের আমির তামিম বিন হামাদ আল থানি। অ্যাস্টন ভিলার মালিকানা মিসরের নাসেফ সাউয়িরিসের হাতে। ইউরোপীয় ফুটবলে শত শত মিলিয়ন ডলারের চুক্তি রয়েছে এমিরেটস, ইতিহাদ এয়ারওয়েজ ও কাতার এয়ারওয়েজের মতো জনপ্রিয় অ্যাভিয়েশন কোম্পানির।

কেন এত বিশাল অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগ করছে মরুর দেশগুলো? এ নিয়ে এপ্রিলের শুরুতে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েবসাইট ‘আটলান্টিক কাউন্সিল’। কারণ হিসেবে তারা অর্থনৈতিক সুবিধা, সামাজিক সুবিধা, ইউরোপিয়ান ফুটবলে মধ্যপ্রাচ্যের সম্পৃক্ততার ভবিষ্যৎকে উল্লেখ করেছে।

অর্থনৈতিক সুবিধা
উপসাগরীয় দেশগুলো বিদেশে বিনিয়োগের পথ খুঁজছে বহু আগে থেকে। এ ক্ষেত্রে ফুটবলে বিনিয়োগকেই নিরাপদ ভাবছে তারা। তেল-পরবর্তী বিশ্ব অর্থনীতিকে চাঙা রাখতে এই পদক্ষেপ। আর ইউরোপীয় ক্লাবগুলো চায় ভালো বিনিয়োগ। আট বছরে তাদের রাজস্বও বৃদ্ধি পেয়েছে ৬৫ শতাংশ। ১৩ বছরে ইউরোপীয় ফুটবলে প্রচুর বিনিয়োগ করেছে মধ্যপ্রাচ্যের ধনকুবেররা আর বাজারও বাড়ছে দ্রুতগতিতে। 

সামাজিক সুবিধা
অর্থনৈতিক সুবিধার পাশাপাশি সামাজিক সুনামের কথাও চিন্তা করছে মধ্যপ্রাচ্যের ধনীরা। সামাজিক পরিবর্তনে ক্রীড়াক্ষেত্রে বিনিয়োগকে চালিকাশক্তি ভাবছেন তাঁরা। অনেকে মনে করেন, লিভারপুলের যোগ দেওয়া মিসরীয় ফরোয়ার্ড মোহামেদ সালাহর জনপ্রিয়তা ‘ইসলামফোবিয়া’ কমিয়েছে। ক্লাব কেনাকেও মধ্যপ্রাচ্যের ধনীদের পশ্চিমে নিজেদের অবস্থান শক্ত করা এবং নমনীয় ক্ষমতা প্রয়োগ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

মধ্যপ্রাচ্যের সম্পৃক্ততার ভবিষ্যৎ
পিআইএফ গ্রুপ নিউক্যাসলের মালিক হয়েছে দুই বছরও হয়নি। এমনকি চেলসি কিনতে ৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারে দরপত্রও জমা দিয়েছিল তারা। সৌদিও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক উন্নয়ন ও হারানো ভাবমূর্তি উদ্ধারে উঠেপড়ে লেগেছে। ২০১৮ সালে সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যার পর মানবাধিকার কর্মীদের তোপের মুখে পড়ে দেশটি। তাদের সঙ্গে আমিরাত ও কাতারের সঙ্গে অর্থনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে ফুটবলে বিনিয়োগ করে নিজেদের সুনাম উদ্ধারের চেষ্টা করছে তারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত