সৌগত বসু, ঢাকা
সরকারের অন্যতম মেগা প্রকল্প খুলনা-মোংলা রেললাইন নির্মাণকাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ হওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে। প্রকল্প কর্তৃপক্ষ কাজের অগ্রগতি ৯৭ দশমিক ৫ শতাংশ দাবি করলেও বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। কাজ শেষ করার তোড়জোড় থাকলেও এখনো বেশ কিছু স্থানে রেললাইনের কাজ শেষ হয়নি। তিনটি সেতুতে কাজ চলছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে ও প্রকল্প কর্তৃপক্ষ বলছে, নিম্নাঞ্চল হওয়ায় মাটিতে সমস্যার কারণে সময় বেশি লাগছে। এ ছাড়া বৃষ্টিও কাজের গতিকে বাধাগ্রস্ত করছে। এসব কারণে চলতি মাসে উদ্বোধনের কথা থাকলেও এটি পিছিয়ে আগামী মাসে অর্থাৎ অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহে যেতে পারে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ৬৪ কিলোমিটার দীর্ঘ খুলনা-মোংলা রেললাইনের নির্মাণকাজ তিন বছরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রায় ১৩ বছরেও হয়নি। পাঁচ দফা সময় বেড়ে চলতি সেপ্টেম্বরে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা।
অগ্রগতি না হওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষ দুষছে নরম মাটিকে। খরচও বেড়েছে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। সংযোগ লাইনসহ এই রেলপথের মোট দৈর্ঘ্য ৯১ কিলোমিটার। উদ্বোধনের জন্য এখন কাজের গতি বাড়লেও এই পথে ট্রেন চলতে তিন মাস লাগতে পারে বলে মত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তার।
এই রেললাইনে কিছু সমস্যা ধরা পড়ার কথা রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনও সম্প্রতি আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, এটি ঠিক করতে সময় লাগবে। অবশ্য প্রকল্প পরিচালক মো. আরিফুজ্জামান বলেছেন, তাঁরা অক্টোবরের মধ্যেই এই রেললাইনে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চালানোর ব্যাপারে আশাবাদী।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোংলা বন্দরে পণ্য পরিবহনে গতিশীলতা বাড়াতে এবং প্রতিবেশী দেশ ভারত, নেপাল ও ভুটানের পণ্য পরিবহনের কেন্দ্র করতে সরকার খুলনা-মোংলা রেলসংযোগ প্রকল্প হাতে নেয়। প্রথমে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩ হাজার ৮০১ কোটি ৬১ লাখ টাকা।
প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১০ সালের ১ ডিসেম্বর। কথা ছিল, ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পটি শেষ হবে। কিন্তু কাজের অগ্রগতি না হওয়ায় প্রথমে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়। এরপর মেয়াদ বাড়ানো হয় ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত। তৃতীয় দফায় আবার দুই বছর মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়। কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি না হওয়ায় ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করা হয়।
সর্বশেষ পঞ্চম ধাপে মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৪ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ধরা হয়েছে। তবে নির্মাণকাজ শেষ করার মেয়াদ চলতি সেপ্টেম্বরে। বাকি এক বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পের ‘ডিফেক্ট লায়াবিলিটি পিরিয়ড’ হিসেবে ধরা আছে। প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ২৬০ কোটি ৮৮ লাখ ৫৯ হাজার টাকা। এতে করে সংযোগ লাইনসহ ৯১ কিলোমিটার রেললাইনের জন্য প্রতি কিলোমিটারে খরচ হচ্ছে ৪৬ কোটি ৮২ লাখ টাকা।
ভারত সরকারের ঋণ সহায়তা চুক্তির আওতায় এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান লার্সেন অ্যান্ড টুব্রো। ট্র্যাক সংযোগ করছে আরেক ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ইরকন ইন্টারন্যাশনাল।
ঠিকাদার সূত্র জানায়, এই রেললাইনে রূপসা সেতুসহ ২১টি সেতু ও ১১০টি কালভার্ট রয়েছে। এগুলোর আশপাশের মাটিতে সমস্যা ছিল; বিশেষ করে জলাভূমি হওয়ায় মাটি দেবে যায়। এর মধ্যে ফুলতলা সেতুতে সর্বশেষ এমন সমস্যা ছিল।
এ ছাড়া প্রকল্প এলাকার নরম মাটির জন্য নকশা পর্যালোচনাকেও বিলম্বের অন্যতম কারণ হিসেবে দায়ী করেছেন প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা। এই পথে আটটি স্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে। এগুলো হলো ফুলতলা, আড়ংঘাটা, মোহম্মদনগর, কাটাখালী, চুলকাটী, ভাগা, দিগরাজ ও মোংলা রেলওয়ে স্টেশন।
গত বুধবার খুলনার আড়ংঘাটা ও ফুলতলা স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, এখনো রেললাইনের সব কাজ শেষ হয়নি। নতুন নির্মিত আড়ংঘাটা স্টেশনে যাওয়ার সড়কে পিচ ঢালাই হয়নি। স্টেশন ভবনের ফটক তালাবদ্ধ। দুটি জানালার কাচ ভাঙা। রেললাইনে পাথর দেওয়া শেষ হয়নি। ট্র্যাকের সঙ্গে সংযোগ বাকি। ফুলতলা স্টেশন আগেই ছিল। এই স্টেশনে আলাদা রেললাইন করা হয়েছে। লাইনের পাতে ঢালাইয়ের সঙ্গে ট্র্যাক লাগানো হয়নি। লাইনে দেওয়ার জন্য পাশেই পাথর স্তূপ করে রাখা হয়েছে।
খুলনা অংশে প্রকল্পের কাজ তত্ত্বাবধানকারী ইরকনের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, অক্টোবর উদ্বোধন করা হলেও এই পথে ট্রেন চলতে আরও তিন মাস লাগবে। এ জন্য কর্মীর সংখ্যাও অনেক বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, এখন মোংলা অংশে কাজ বেশি হচ্ছে। কারণ, উদ্বোধনের জন্য ওই অংশে প্রস্তুত করা হচ্ছে।
কাটাখালী থেকে মোংলা স্টেশন পর্যন্ত কাজের তোড়জোড় বেশি। সেপ্টেম্বর ধরেই কাজ এগোনো হচ্ছিল। তবে সমস্যা বেশি হওয়ায় সময় বাড়ানো হয়েছে। মোংলার বাইরে অনেক জায়গায় রেলের ট্র্যাক বসানো ও পাথর ফেলার কাজ চলছে।
কয়েকটি সেতুকে এই রেললাইনের প্রধান সমস্যা উল্লেখ করে ওই কর্মকর্তা বলেন, লতা, বরইতলা ও আড়ংঘাটা অংশে ৫, ৬ ও ৯ নম্বর সেতুতে কাজ চলছে। সেখানে মাটিতে সমস্যা রয়েছে। এখানে রেললাইন যাচ্ছে বিলের মধ্য দিয়ে। তিনি বলেন, সময় বেশি পেলে কাজও ভালো হবে।
ঠিকাদার সূত্রে জানা যায়, গত দুই বছরে প্রকল্প এলাকা থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকার সরঞ্জাম চুরি হয়েছে। এর বেশির ভাগই রেললাইনের সঙ্গে লাগানো থাকা ক্লিপ। যার একেকটির দাম ১ হাজার টাকা। এভাবে চুরির কারণে কাজে সমস্যা হয়। কিন্তু চুরির বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক বলেন, চুরির বিষয়ে স্থানীয় থানা ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। চুরি বন্ধ করা যাচ্ছে না। যারা ধরা পড়ছে, তারা অপ্রাপ্তবয়স্ক বলে ছেড়ে দিতে হচ্ছে। ঠিকাদার এই অভিযোগ করলেও এর দায় বাংলাদেশ রেলওয়ের বা সরকারের নয়।
রেলওয়ে সূত্র বলছে, খুলনা থেকে মোংলা বন্দর পর্যন্ত ৬৪ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার রেলপথ নির্মিত হচ্ছে খুলনার রূপসা ও বাগেরহাটের পশুর নদের অববাহিকায় জেগে ওঠা ভূমির ওপর দিয়ে। এ কারণে এই অঞ্চলের মাটির গঠন শক্তিশালী নয়। ফলে ভারী রেলপথের কারণে কিছু অংশে দেবে গেছে। রেলপথ সমান্তরাল না হলে চলাচল উপযোগী হয় না। তাই এখন মাটি, বালু, ইটের খোয়া ফেলে দেবে যাওয়া অংশ সমান্তরাল করার কাজ চলছে। সব দেখে মনে হয়েছে, আগামী এক থেকে দুই মাসের মধ্যে কাজ শেষ করা সম্ভব হবে না।
তবে প্রকল্প পরিচালক মো. আরিফুজ্জামান প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে শুক্রবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রকল্পের ৯৭ দশমিক ৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বৃষ্টির কারণে কাজ ব্যাহত হচ্ছে। এ কারণে এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না, প্রকল্পটি অক্টোবরে উদ্বোধন হবে। মাটি দেবে যাওয়া বা লাইন সমান্তরাল করার বিষয়ে তিনি বলেন, এগুলো সব পুরোনো সমস্যা। এখন যেসব সমস্যা আছে, সেগুলোর মধ্যে বৃষ্টি অন্যতম।
মো. আরিফুজ্জামান আরও বলেন, অক্টোবরের মধ্যেই পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচলের জন্য রেললাইন প্রস্তুত করা হবে। যাত্রীবাহী ট্রেন চলতে কিছুটা সময় লাগবে। ভারতীয় হাইকমিশনের সঙ্গে আলোচনা করে উদ্বোধনের সময় ঠিক করা হবে। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী অনলাইনে যুক্ত হয়ে এটি উদ্বোধন করবেন।
সরকারের অন্যতম মেগা প্রকল্প খুলনা-মোংলা রেললাইন নির্মাণকাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ হওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে। প্রকল্প কর্তৃপক্ষ কাজের অগ্রগতি ৯৭ দশমিক ৫ শতাংশ দাবি করলেও বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। কাজ শেষ করার তোড়জোড় থাকলেও এখনো বেশ কিছু স্থানে রেললাইনের কাজ শেষ হয়নি। তিনটি সেতুতে কাজ চলছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে ও প্রকল্প কর্তৃপক্ষ বলছে, নিম্নাঞ্চল হওয়ায় মাটিতে সমস্যার কারণে সময় বেশি লাগছে। এ ছাড়া বৃষ্টিও কাজের গতিকে বাধাগ্রস্ত করছে। এসব কারণে চলতি মাসে উদ্বোধনের কথা থাকলেও এটি পিছিয়ে আগামী মাসে অর্থাৎ অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহে যেতে পারে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ৬৪ কিলোমিটার দীর্ঘ খুলনা-মোংলা রেললাইনের নির্মাণকাজ তিন বছরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রায় ১৩ বছরেও হয়নি। পাঁচ দফা সময় বেড়ে চলতি সেপ্টেম্বরে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা।
অগ্রগতি না হওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষ দুষছে নরম মাটিকে। খরচও বেড়েছে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। সংযোগ লাইনসহ এই রেলপথের মোট দৈর্ঘ্য ৯১ কিলোমিটার। উদ্বোধনের জন্য এখন কাজের গতি বাড়লেও এই পথে ট্রেন চলতে তিন মাস লাগতে পারে বলে মত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তার।
এই রেললাইনে কিছু সমস্যা ধরা পড়ার কথা রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনও সম্প্রতি আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, এটি ঠিক করতে সময় লাগবে। অবশ্য প্রকল্প পরিচালক মো. আরিফুজ্জামান বলেছেন, তাঁরা অক্টোবরের মধ্যেই এই রেললাইনে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চালানোর ব্যাপারে আশাবাদী।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোংলা বন্দরে পণ্য পরিবহনে গতিশীলতা বাড়াতে এবং প্রতিবেশী দেশ ভারত, নেপাল ও ভুটানের পণ্য পরিবহনের কেন্দ্র করতে সরকার খুলনা-মোংলা রেলসংযোগ প্রকল্প হাতে নেয়। প্রথমে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩ হাজার ৮০১ কোটি ৬১ লাখ টাকা।
প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১০ সালের ১ ডিসেম্বর। কথা ছিল, ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পটি শেষ হবে। কিন্তু কাজের অগ্রগতি না হওয়ায় প্রথমে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়। এরপর মেয়াদ বাড়ানো হয় ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত। তৃতীয় দফায় আবার দুই বছর মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়। কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি না হওয়ায় ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করা হয়।
সর্বশেষ পঞ্চম ধাপে মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৪ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ধরা হয়েছে। তবে নির্মাণকাজ শেষ করার মেয়াদ চলতি সেপ্টেম্বরে। বাকি এক বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পের ‘ডিফেক্ট লায়াবিলিটি পিরিয়ড’ হিসেবে ধরা আছে। প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ২৬০ কোটি ৮৮ লাখ ৫৯ হাজার টাকা। এতে করে সংযোগ লাইনসহ ৯১ কিলোমিটার রেললাইনের জন্য প্রতি কিলোমিটারে খরচ হচ্ছে ৪৬ কোটি ৮২ লাখ টাকা।
ভারত সরকারের ঋণ সহায়তা চুক্তির আওতায় এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান লার্সেন অ্যান্ড টুব্রো। ট্র্যাক সংযোগ করছে আরেক ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ইরকন ইন্টারন্যাশনাল।
ঠিকাদার সূত্র জানায়, এই রেললাইনে রূপসা সেতুসহ ২১টি সেতু ও ১১০টি কালভার্ট রয়েছে। এগুলোর আশপাশের মাটিতে সমস্যা ছিল; বিশেষ করে জলাভূমি হওয়ায় মাটি দেবে যায়। এর মধ্যে ফুলতলা সেতুতে সর্বশেষ এমন সমস্যা ছিল।
এ ছাড়া প্রকল্প এলাকার নরম মাটির জন্য নকশা পর্যালোচনাকেও বিলম্বের অন্যতম কারণ হিসেবে দায়ী করেছেন প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা। এই পথে আটটি স্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে। এগুলো হলো ফুলতলা, আড়ংঘাটা, মোহম্মদনগর, কাটাখালী, চুলকাটী, ভাগা, দিগরাজ ও মোংলা রেলওয়ে স্টেশন।
গত বুধবার খুলনার আড়ংঘাটা ও ফুলতলা স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, এখনো রেললাইনের সব কাজ শেষ হয়নি। নতুন নির্মিত আড়ংঘাটা স্টেশনে যাওয়ার সড়কে পিচ ঢালাই হয়নি। স্টেশন ভবনের ফটক তালাবদ্ধ। দুটি জানালার কাচ ভাঙা। রেললাইনে পাথর দেওয়া শেষ হয়নি। ট্র্যাকের সঙ্গে সংযোগ বাকি। ফুলতলা স্টেশন আগেই ছিল। এই স্টেশনে আলাদা রেললাইন করা হয়েছে। লাইনের পাতে ঢালাইয়ের সঙ্গে ট্র্যাক লাগানো হয়নি। লাইনে দেওয়ার জন্য পাশেই পাথর স্তূপ করে রাখা হয়েছে।
খুলনা অংশে প্রকল্পের কাজ তত্ত্বাবধানকারী ইরকনের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, অক্টোবর উদ্বোধন করা হলেও এই পথে ট্রেন চলতে আরও তিন মাস লাগবে। এ জন্য কর্মীর সংখ্যাও অনেক বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, এখন মোংলা অংশে কাজ বেশি হচ্ছে। কারণ, উদ্বোধনের জন্য ওই অংশে প্রস্তুত করা হচ্ছে।
কাটাখালী থেকে মোংলা স্টেশন পর্যন্ত কাজের তোড়জোড় বেশি। সেপ্টেম্বর ধরেই কাজ এগোনো হচ্ছিল। তবে সমস্যা বেশি হওয়ায় সময় বাড়ানো হয়েছে। মোংলার বাইরে অনেক জায়গায় রেলের ট্র্যাক বসানো ও পাথর ফেলার কাজ চলছে।
কয়েকটি সেতুকে এই রেললাইনের প্রধান সমস্যা উল্লেখ করে ওই কর্মকর্তা বলেন, লতা, বরইতলা ও আড়ংঘাটা অংশে ৫, ৬ ও ৯ নম্বর সেতুতে কাজ চলছে। সেখানে মাটিতে সমস্যা রয়েছে। এখানে রেললাইন যাচ্ছে বিলের মধ্য দিয়ে। তিনি বলেন, সময় বেশি পেলে কাজও ভালো হবে।
ঠিকাদার সূত্রে জানা যায়, গত দুই বছরে প্রকল্প এলাকা থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকার সরঞ্জাম চুরি হয়েছে। এর বেশির ভাগই রেললাইনের সঙ্গে লাগানো থাকা ক্লিপ। যার একেকটির দাম ১ হাজার টাকা। এভাবে চুরির কারণে কাজে সমস্যা হয়। কিন্তু চুরির বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক বলেন, চুরির বিষয়ে স্থানীয় থানা ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। চুরি বন্ধ করা যাচ্ছে না। যারা ধরা পড়ছে, তারা অপ্রাপ্তবয়স্ক বলে ছেড়ে দিতে হচ্ছে। ঠিকাদার এই অভিযোগ করলেও এর দায় বাংলাদেশ রেলওয়ের বা সরকারের নয়।
রেলওয়ে সূত্র বলছে, খুলনা থেকে মোংলা বন্দর পর্যন্ত ৬৪ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার রেলপথ নির্মিত হচ্ছে খুলনার রূপসা ও বাগেরহাটের পশুর নদের অববাহিকায় জেগে ওঠা ভূমির ওপর দিয়ে। এ কারণে এই অঞ্চলের মাটির গঠন শক্তিশালী নয়। ফলে ভারী রেলপথের কারণে কিছু অংশে দেবে গেছে। রেলপথ সমান্তরাল না হলে চলাচল উপযোগী হয় না। তাই এখন মাটি, বালু, ইটের খোয়া ফেলে দেবে যাওয়া অংশ সমান্তরাল করার কাজ চলছে। সব দেখে মনে হয়েছে, আগামী এক থেকে দুই মাসের মধ্যে কাজ শেষ করা সম্ভব হবে না।
তবে প্রকল্প পরিচালক মো. আরিফুজ্জামান প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে শুক্রবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রকল্পের ৯৭ দশমিক ৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বৃষ্টির কারণে কাজ ব্যাহত হচ্ছে। এ কারণে এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না, প্রকল্পটি অক্টোবরে উদ্বোধন হবে। মাটি দেবে যাওয়া বা লাইন সমান্তরাল করার বিষয়ে তিনি বলেন, এগুলো সব পুরোনো সমস্যা। এখন যেসব সমস্যা আছে, সেগুলোর মধ্যে বৃষ্টি অন্যতম।
মো. আরিফুজ্জামান আরও বলেন, অক্টোবরের মধ্যেই পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচলের জন্য রেললাইন প্রস্তুত করা হবে। যাত্রীবাহী ট্রেন চলতে কিছুটা সময় লাগবে। ভারতীয় হাইকমিশনের সঙ্গে আলোচনা করে উদ্বোধনের সময় ঠিক করা হবে। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী অনলাইনে যুক্ত হয়ে এটি উদ্বোধন করবেন।
সৌগত বসু, ঢাকা
সরকারের অন্যতম মেগা প্রকল্প খুলনা-মোংলা রেললাইন নির্মাণকাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ হওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে। প্রকল্প কর্তৃপক্ষ কাজের অগ্রগতি ৯৭ দশমিক ৫ শতাংশ দাবি করলেও বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। কাজ শেষ করার তোড়জোড় থাকলেও এখনো বেশ কিছু স্থানে রেললাইনের কাজ শেষ হয়নি। তিনটি সেতুতে কাজ চলছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে ও প্রকল্প কর্তৃপক্ষ বলছে, নিম্নাঞ্চল হওয়ায় মাটিতে সমস্যার কারণে সময় বেশি লাগছে। এ ছাড়া বৃষ্টিও কাজের গতিকে বাধাগ্রস্ত করছে। এসব কারণে চলতি মাসে উদ্বোধনের কথা থাকলেও এটি পিছিয়ে আগামী মাসে অর্থাৎ অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহে যেতে পারে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ৬৪ কিলোমিটার দীর্ঘ খুলনা-মোংলা রেললাইনের নির্মাণকাজ তিন বছরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রায় ১৩ বছরেও হয়নি। পাঁচ দফা সময় বেড়ে চলতি সেপ্টেম্বরে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা।
অগ্রগতি না হওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষ দুষছে নরম মাটিকে। খরচও বেড়েছে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। সংযোগ লাইনসহ এই রেলপথের মোট দৈর্ঘ্য ৯১ কিলোমিটার। উদ্বোধনের জন্য এখন কাজের গতি বাড়লেও এই পথে ট্রেন চলতে তিন মাস লাগতে পারে বলে মত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তার।
এই রেললাইনে কিছু সমস্যা ধরা পড়ার কথা রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনও সম্প্রতি আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, এটি ঠিক করতে সময় লাগবে। অবশ্য প্রকল্প পরিচালক মো. আরিফুজ্জামান বলেছেন, তাঁরা অক্টোবরের মধ্যেই এই রেললাইনে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চালানোর ব্যাপারে আশাবাদী।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোংলা বন্দরে পণ্য পরিবহনে গতিশীলতা বাড়াতে এবং প্রতিবেশী দেশ ভারত, নেপাল ও ভুটানের পণ্য পরিবহনের কেন্দ্র করতে সরকার খুলনা-মোংলা রেলসংযোগ প্রকল্প হাতে নেয়। প্রথমে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩ হাজার ৮০১ কোটি ৬১ লাখ টাকা।
প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১০ সালের ১ ডিসেম্বর। কথা ছিল, ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পটি শেষ হবে। কিন্তু কাজের অগ্রগতি না হওয়ায় প্রথমে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়। এরপর মেয়াদ বাড়ানো হয় ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত। তৃতীয় দফায় আবার দুই বছর মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়। কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি না হওয়ায় ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করা হয়।
সর্বশেষ পঞ্চম ধাপে মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৪ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ধরা হয়েছে। তবে নির্মাণকাজ শেষ করার মেয়াদ চলতি সেপ্টেম্বরে। বাকি এক বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পের ‘ডিফেক্ট লায়াবিলিটি পিরিয়ড’ হিসেবে ধরা আছে। প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ২৬০ কোটি ৮৮ লাখ ৫৯ হাজার টাকা। এতে করে সংযোগ লাইনসহ ৯১ কিলোমিটার রেললাইনের জন্য প্রতি কিলোমিটারে খরচ হচ্ছে ৪৬ কোটি ৮২ লাখ টাকা।
ভারত সরকারের ঋণ সহায়তা চুক্তির আওতায় এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান লার্সেন অ্যান্ড টুব্রো। ট্র্যাক সংযোগ করছে আরেক ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ইরকন ইন্টারন্যাশনাল।
ঠিকাদার সূত্র জানায়, এই রেললাইনে রূপসা সেতুসহ ২১টি সেতু ও ১১০টি কালভার্ট রয়েছে। এগুলোর আশপাশের মাটিতে সমস্যা ছিল; বিশেষ করে জলাভূমি হওয়ায় মাটি দেবে যায়। এর মধ্যে ফুলতলা সেতুতে সর্বশেষ এমন সমস্যা ছিল।
এ ছাড়া প্রকল্প এলাকার নরম মাটির জন্য নকশা পর্যালোচনাকেও বিলম্বের অন্যতম কারণ হিসেবে দায়ী করেছেন প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা। এই পথে আটটি স্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে। এগুলো হলো ফুলতলা, আড়ংঘাটা, মোহম্মদনগর, কাটাখালী, চুলকাটী, ভাগা, দিগরাজ ও মোংলা রেলওয়ে স্টেশন।
গত বুধবার খুলনার আড়ংঘাটা ও ফুলতলা স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, এখনো রেললাইনের সব কাজ শেষ হয়নি। নতুন নির্মিত আড়ংঘাটা স্টেশনে যাওয়ার সড়কে পিচ ঢালাই হয়নি। স্টেশন ভবনের ফটক তালাবদ্ধ। দুটি জানালার কাচ ভাঙা। রেললাইনে পাথর দেওয়া শেষ হয়নি। ট্র্যাকের সঙ্গে সংযোগ বাকি। ফুলতলা স্টেশন আগেই ছিল। এই স্টেশনে আলাদা রেললাইন করা হয়েছে। লাইনের পাতে ঢালাইয়ের সঙ্গে ট্র্যাক লাগানো হয়নি। লাইনে দেওয়ার জন্য পাশেই পাথর স্তূপ করে রাখা হয়েছে।
খুলনা অংশে প্রকল্পের কাজ তত্ত্বাবধানকারী ইরকনের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, অক্টোবর উদ্বোধন করা হলেও এই পথে ট্রেন চলতে আরও তিন মাস লাগবে। এ জন্য কর্মীর সংখ্যাও অনেক বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, এখন মোংলা অংশে কাজ বেশি হচ্ছে। কারণ, উদ্বোধনের জন্য ওই অংশে প্রস্তুত করা হচ্ছে।
কাটাখালী থেকে মোংলা স্টেশন পর্যন্ত কাজের তোড়জোড় বেশি। সেপ্টেম্বর ধরেই কাজ এগোনো হচ্ছিল। তবে সমস্যা বেশি হওয়ায় সময় বাড়ানো হয়েছে। মোংলার বাইরে অনেক জায়গায় রেলের ট্র্যাক বসানো ও পাথর ফেলার কাজ চলছে।
কয়েকটি সেতুকে এই রেললাইনের প্রধান সমস্যা উল্লেখ করে ওই কর্মকর্তা বলেন, লতা, বরইতলা ও আড়ংঘাটা অংশে ৫, ৬ ও ৯ নম্বর সেতুতে কাজ চলছে। সেখানে মাটিতে সমস্যা রয়েছে। এখানে রেললাইন যাচ্ছে বিলের মধ্য দিয়ে। তিনি বলেন, সময় বেশি পেলে কাজও ভালো হবে।
ঠিকাদার সূত্রে জানা যায়, গত দুই বছরে প্রকল্প এলাকা থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকার সরঞ্জাম চুরি হয়েছে। এর বেশির ভাগই রেললাইনের সঙ্গে লাগানো থাকা ক্লিপ। যার একেকটির দাম ১ হাজার টাকা। এভাবে চুরির কারণে কাজে সমস্যা হয়। কিন্তু চুরির বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক বলেন, চুরির বিষয়ে স্থানীয় থানা ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। চুরি বন্ধ করা যাচ্ছে না। যারা ধরা পড়ছে, তারা অপ্রাপ্তবয়স্ক বলে ছেড়ে দিতে হচ্ছে। ঠিকাদার এই অভিযোগ করলেও এর দায় বাংলাদেশ রেলওয়ের বা সরকারের নয়।
রেলওয়ে সূত্র বলছে, খুলনা থেকে মোংলা বন্দর পর্যন্ত ৬৪ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার রেলপথ নির্মিত হচ্ছে খুলনার রূপসা ও বাগেরহাটের পশুর নদের অববাহিকায় জেগে ওঠা ভূমির ওপর দিয়ে। এ কারণে এই অঞ্চলের মাটির গঠন শক্তিশালী নয়। ফলে ভারী রেলপথের কারণে কিছু অংশে দেবে গেছে। রেলপথ সমান্তরাল না হলে চলাচল উপযোগী হয় না। তাই এখন মাটি, বালু, ইটের খোয়া ফেলে দেবে যাওয়া অংশ সমান্তরাল করার কাজ চলছে। সব দেখে মনে হয়েছে, আগামী এক থেকে দুই মাসের মধ্যে কাজ শেষ করা সম্ভব হবে না।
তবে প্রকল্প পরিচালক মো. আরিফুজ্জামান প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে শুক্রবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রকল্পের ৯৭ দশমিক ৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বৃষ্টির কারণে কাজ ব্যাহত হচ্ছে। এ কারণে এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না, প্রকল্পটি অক্টোবরে উদ্বোধন হবে। মাটি দেবে যাওয়া বা লাইন সমান্তরাল করার বিষয়ে তিনি বলেন, এগুলো সব পুরোনো সমস্যা। এখন যেসব সমস্যা আছে, সেগুলোর মধ্যে বৃষ্টি অন্যতম।
মো. আরিফুজ্জামান আরও বলেন, অক্টোবরের মধ্যেই পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচলের জন্য রেললাইন প্রস্তুত করা হবে। যাত্রীবাহী ট্রেন চলতে কিছুটা সময় লাগবে। ভারতীয় হাইকমিশনের সঙ্গে আলোচনা করে উদ্বোধনের সময় ঠিক করা হবে। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী অনলাইনে যুক্ত হয়ে এটি উদ্বোধন করবেন।
সরকারের অন্যতম মেগা প্রকল্প খুলনা-মোংলা রেললাইন নির্মাণকাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ হওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে। প্রকল্প কর্তৃপক্ষ কাজের অগ্রগতি ৯৭ দশমিক ৫ শতাংশ দাবি করলেও বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। কাজ শেষ করার তোড়জোড় থাকলেও এখনো বেশ কিছু স্থানে রেললাইনের কাজ শেষ হয়নি। তিনটি সেতুতে কাজ চলছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে ও প্রকল্প কর্তৃপক্ষ বলছে, নিম্নাঞ্চল হওয়ায় মাটিতে সমস্যার কারণে সময় বেশি লাগছে। এ ছাড়া বৃষ্টিও কাজের গতিকে বাধাগ্রস্ত করছে। এসব কারণে চলতি মাসে উদ্বোধনের কথা থাকলেও এটি পিছিয়ে আগামী মাসে অর্থাৎ অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহে যেতে পারে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ৬৪ কিলোমিটার দীর্ঘ খুলনা-মোংলা রেললাইনের নির্মাণকাজ তিন বছরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রায় ১৩ বছরেও হয়নি। পাঁচ দফা সময় বেড়ে চলতি সেপ্টেম্বরে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা।
অগ্রগতি না হওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষ দুষছে নরম মাটিকে। খরচও বেড়েছে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। সংযোগ লাইনসহ এই রেলপথের মোট দৈর্ঘ্য ৯১ কিলোমিটার। উদ্বোধনের জন্য এখন কাজের গতি বাড়লেও এই পথে ট্রেন চলতে তিন মাস লাগতে পারে বলে মত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তার।
এই রেললাইনে কিছু সমস্যা ধরা পড়ার কথা রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনও সম্প্রতি আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, এটি ঠিক করতে সময় লাগবে। অবশ্য প্রকল্প পরিচালক মো. আরিফুজ্জামান বলেছেন, তাঁরা অক্টোবরের মধ্যেই এই রেললাইনে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চালানোর ব্যাপারে আশাবাদী।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোংলা বন্দরে পণ্য পরিবহনে গতিশীলতা বাড়াতে এবং প্রতিবেশী দেশ ভারত, নেপাল ও ভুটানের পণ্য পরিবহনের কেন্দ্র করতে সরকার খুলনা-মোংলা রেলসংযোগ প্রকল্প হাতে নেয়। প্রথমে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩ হাজার ৮০১ কোটি ৬১ লাখ টাকা।
প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১০ সালের ১ ডিসেম্বর। কথা ছিল, ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পটি শেষ হবে। কিন্তু কাজের অগ্রগতি না হওয়ায় প্রথমে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়। এরপর মেয়াদ বাড়ানো হয় ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত। তৃতীয় দফায় আবার দুই বছর মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়। কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি না হওয়ায় ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করা হয়।
সর্বশেষ পঞ্চম ধাপে মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৪ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ধরা হয়েছে। তবে নির্মাণকাজ শেষ করার মেয়াদ চলতি সেপ্টেম্বরে। বাকি এক বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পের ‘ডিফেক্ট লায়াবিলিটি পিরিয়ড’ হিসেবে ধরা আছে। প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ২৬০ কোটি ৮৮ লাখ ৫৯ হাজার টাকা। এতে করে সংযোগ লাইনসহ ৯১ কিলোমিটার রেললাইনের জন্য প্রতি কিলোমিটারে খরচ হচ্ছে ৪৬ কোটি ৮২ লাখ টাকা।
ভারত সরকারের ঋণ সহায়তা চুক্তির আওতায় এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান লার্সেন অ্যান্ড টুব্রো। ট্র্যাক সংযোগ করছে আরেক ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ইরকন ইন্টারন্যাশনাল।
ঠিকাদার সূত্র জানায়, এই রেললাইনে রূপসা সেতুসহ ২১টি সেতু ও ১১০টি কালভার্ট রয়েছে। এগুলোর আশপাশের মাটিতে সমস্যা ছিল; বিশেষ করে জলাভূমি হওয়ায় মাটি দেবে যায়। এর মধ্যে ফুলতলা সেতুতে সর্বশেষ এমন সমস্যা ছিল।
এ ছাড়া প্রকল্প এলাকার নরম মাটির জন্য নকশা পর্যালোচনাকেও বিলম্বের অন্যতম কারণ হিসেবে দায়ী করেছেন প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা। এই পথে আটটি স্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে। এগুলো হলো ফুলতলা, আড়ংঘাটা, মোহম্মদনগর, কাটাখালী, চুলকাটী, ভাগা, দিগরাজ ও মোংলা রেলওয়ে স্টেশন।
গত বুধবার খুলনার আড়ংঘাটা ও ফুলতলা স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, এখনো রেললাইনের সব কাজ শেষ হয়নি। নতুন নির্মিত আড়ংঘাটা স্টেশনে যাওয়ার সড়কে পিচ ঢালাই হয়নি। স্টেশন ভবনের ফটক তালাবদ্ধ। দুটি জানালার কাচ ভাঙা। রেললাইনে পাথর দেওয়া শেষ হয়নি। ট্র্যাকের সঙ্গে সংযোগ বাকি। ফুলতলা স্টেশন আগেই ছিল। এই স্টেশনে আলাদা রেললাইন করা হয়েছে। লাইনের পাতে ঢালাইয়ের সঙ্গে ট্র্যাক লাগানো হয়নি। লাইনে দেওয়ার জন্য পাশেই পাথর স্তূপ করে রাখা হয়েছে।
খুলনা অংশে প্রকল্পের কাজ তত্ত্বাবধানকারী ইরকনের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, অক্টোবর উদ্বোধন করা হলেও এই পথে ট্রেন চলতে আরও তিন মাস লাগবে। এ জন্য কর্মীর সংখ্যাও অনেক বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, এখন মোংলা অংশে কাজ বেশি হচ্ছে। কারণ, উদ্বোধনের জন্য ওই অংশে প্রস্তুত করা হচ্ছে।
কাটাখালী থেকে মোংলা স্টেশন পর্যন্ত কাজের তোড়জোড় বেশি। সেপ্টেম্বর ধরেই কাজ এগোনো হচ্ছিল। তবে সমস্যা বেশি হওয়ায় সময় বাড়ানো হয়েছে। মোংলার বাইরে অনেক জায়গায় রেলের ট্র্যাক বসানো ও পাথর ফেলার কাজ চলছে।
কয়েকটি সেতুকে এই রেললাইনের প্রধান সমস্যা উল্লেখ করে ওই কর্মকর্তা বলেন, লতা, বরইতলা ও আড়ংঘাটা অংশে ৫, ৬ ও ৯ নম্বর সেতুতে কাজ চলছে। সেখানে মাটিতে সমস্যা রয়েছে। এখানে রেললাইন যাচ্ছে বিলের মধ্য দিয়ে। তিনি বলেন, সময় বেশি পেলে কাজও ভালো হবে।
ঠিকাদার সূত্রে জানা যায়, গত দুই বছরে প্রকল্প এলাকা থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকার সরঞ্জাম চুরি হয়েছে। এর বেশির ভাগই রেললাইনের সঙ্গে লাগানো থাকা ক্লিপ। যার একেকটির দাম ১ হাজার টাকা। এভাবে চুরির কারণে কাজে সমস্যা হয়। কিন্তু চুরির বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক বলেন, চুরির বিষয়ে স্থানীয় থানা ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। চুরি বন্ধ করা যাচ্ছে না। যারা ধরা পড়ছে, তারা অপ্রাপ্তবয়স্ক বলে ছেড়ে দিতে হচ্ছে। ঠিকাদার এই অভিযোগ করলেও এর দায় বাংলাদেশ রেলওয়ের বা সরকারের নয়।
রেলওয়ে সূত্র বলছে, খুলনা থেকে মোংলা বন্দর পর্যন্ত ৬৪ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার রেলপথ নির্মিত হচ্ছে খুলনার রূপসা ও বাগেরহাটের পশুর নদের অববাহিকায় জেগে ওঠা ভূমির ওপর দিয়ে। এ কারণে এই অঞ্চলের মাটির গঠন শক্তিশালী নয়। ফলে ভারী রেলপথের কারণে কিছু অংশে দেবে গেছে। রেলপথ সমান্তরাল না হলে চলাচল উপযোগী হয় না। তাই এখন মাটি, বালু, ইটের খোয়া ফেলে দেবে যাওয়া অংশ সমান্তরাল করার কাজ চলছে। সব দেখে মনে হয়েছে, আগামী এক থেকে দুই মাসের মধ্যে কাজ শেষ করা সম্ভব হবে না।
তবে প্রকল্প পরিচালক মো. আরিফুজ্জামান প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে শুক্রবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রকল্পের ৯৭ দশমিক ৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বৃষ্টির কারণে কাজ ব্যাহত হচ্ছে। এ কারণে এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না, প্রকল্পটি অক্টোবরে উদ্বোধন হবে। মাটি দেবে যাওয়া বা লাইন সমান্তরাল করার বিষয়ে তিনি বলেন, এগুলো সব পুরোনো সমস্যা। এখন যেসব সমস্যা আছে, সেগুলোর মধ্যে বৃষ্টি অন্যতম।
মো. আরিফুজ্জামান আরও বলেন, অক্টোবরের মধ্যেই পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচলের জন্য রেললাইন প্রস্তুত করা হবে। যাত্রীবাহী ট্রেন চলতে কিছুটা সময় লাগবে। ভারতীয় হাইকমিশনের সঙ্গে আলোচনা করে উদ্বোধনের সময় ঠিক করা হবে। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী অনলাইনে যুক্ত হয়ে এটি উদ্বোধন করবেন।
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৭ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।
সরকারের অন্যতম মেগা প্রকল্প খুলনা-মোংলা রেললাইন নির্মাণকাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ হওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে। প্রকল্প কর্তৃপক্ষ কাজের অগ্রগতি ৯৭ দশমিক ৫ শতাংশ দাবি করলেও বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। কাজ শেষ করার তোড়জোড় থাকলেও এখনো বেশ কিছু স্থানে রেললাইনের কাজ শেষ হয়নি। তিনটি সেতুতে কাজ চলছে।
১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]
সরকারের অন্যতম মেগা প্রকল্প খুলনা-মোংলা রেললাইন নির্মাণকাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ হওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে। প্রকল্প কর্তৃপক্ষ কাজের অগ্রগতি ৯৭ দশমিক ৫ শতাংশ দাবি করলেও বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। কাজ শেষ করার তোড়জোড় থাকলেও এখনো বেশ কিছু স্থানে রেললাইনের কাজ শেষ হয়নি। তিনটি সেতুতে কাজ চলছে।
১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৭ দিন আগেভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।
সরকারের অন্যতম মেগা প্রকল্প খুলনা-মোংলা রেললাইন নির্মাণকাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ হওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে। প্রকল্প কর্তৃপক্ষ কাজের অগ্রগতি ৯৭ দশমিক ৫ শতাংশ দাবি করলেও বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। কাজ শেষ করার তোড়জোড় থাকলেও এখনো বেশ কিছু স্থানে রেললাইনের কাজ শেষ হয়নি। তিনটি সেতুতে কাজ চলছে।
১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৭ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।
সরকারের অন্যতম মেগা প্রকল্প খুলনা-মোংলা রেললাইন নির্মাণকাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ হওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে। প্রকল্প কর্তৃপক্ষ কাজের অগ্রগতি ৯৭ দশমিক ৫ শতাংশ দাবি করলেও বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। কাজ শেষ করার তোড়জোড় থাকলেও এখনো বেশ কিছু স্থানে রেললাইনের কাজ শেষ হয়নি। তিনটি সেতুতে কাজ চলছে।
১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৭ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫