এ কে এম শামসুদ্দিন

পাকিস্তানে নির্বাচনের জন্য প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি ১৪ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আনোয়ারুল হক কাকারকে শপথবাক্য পাঠ করান। এই শপথ নেওয়ার অনুষ্ঠানটি এমন দিনে অনুষ্ঠিত হলো; যে দিনটি ছিল পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস। অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ছাড়াও সেনাবাহিনীপ্রধানসহ গুরুত্বপূর্ণ উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। শপথ নেওয়ার পর অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারুল হক কাকারকে বিশেষ আগ্রহ নিয়ে সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করতে ও করমর্দন করতে দেখা গেছে। সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে আনোয়ারুল হকের আন্তরিকতা প্রকাশের এই বিশেষ মুহূর্তটুকু সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। কারণ সবাই জানেন, নির্বাচন অনুষ্ঠানের যে গুরুদায়িত্ব তাঁর কাঁধে অর্পিত হয়েছে, তা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার জন্য সামরিক বাহিনীর সাহায্য ছাড়া উপায় নেই। আনোয়ারুল হক নিজেও জানেন আগামী দিনে যা কিছু করতে হবে, সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেই তাঁকে তা করতে হবে।
এর আগে ১২ আগস্ট পাকিস্তানের বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এবং ইমরান খান প্রতিষ্ঠিত জাতীয় পরিষদের বিরোধী দল তেহরিক-ই-ইনসাফ বা পিটিআইয়ের নেতা রাজা রিয়াজ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, সে বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছান। তাঁদের উভয়ের সম্মতিতে আনোয়ারুল হক কাকার নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। পাকিস্তানের সংবিধানের ২২৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার তিন দিনের মধ্যে বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলের নেতাকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রীর নাম প্রস্তাব করতে হয়, সেই অনুসারে ১২ আগস্টের মধ্যে তাঁরা অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রীর নাম প্রেসিডেন্টের কাছে প্রেরণ করেন।
তারও আগে পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার তিন দিন আগে ৯ আগস্ট জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। পাকিস্তানের সংবিধানে বলা আছে, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই যদি জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়া হয়, তাহলে ৯০ দিনের মধ্যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। আর জাতীয় পরিষদ পূর্ণ করলে ৬০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হবে। এ ক্ষেত্রে যেহেতু মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে, তাই ৯০ দিনের মধ্যে পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
পাকিস্তানের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারুল হক কাকার বেলুচিস্তান আওয়ামী পার্টির একজন আইনপ্রণেতা। তিনি পশতুন জাতিগোষ্ঠীর মানুষ। তাই তিনি পশতুন ও বেলুচ উভয়ের প্রতিনিধিত্ব করেন। আনোয়ারুল হক সিনেটে (উচ্চ কক্ষে) তাঁর দলের সংসদীয় নেতার দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তিনি ২০১৮ সালে বেলুচিস্তান থেকে ছয় বছরের জন্য সিনেটর নির্বাচিত হন। ২০২৪ সালের মার্চে তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। আনোয়ারুল হক বরাবরই বেশ সক্রিয় রাজনীতিবিদ। সিনেটর নির্বাচিত হওয়ার আগে তিনি প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করেছেন। রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকলেও আনোয়ারুল হককে দেশের একজন বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী হিসেবে গণ্য করা হয়। তিনি বেলুচিস্তান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজনীতিবিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞানে ডিগ্রি নেন। রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার আগে নিজ শহরের এক স্কুলে শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন তিনি।
শাহবাজ শরিফ ও বিরোধীদলীয় নেতার সম্মতিতে পাকিস্তানের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী একটি ছোট প্রদেশ থেকে আনোয়ারুল হক কাকারকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করায় খুশি কারাগারে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে পিটিআইয়ের কোনো পরামর্শ নেওয়া হয়নি।
তারপরও তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আনোয়ারুল হক কাকারের মনোনয়নে খুশি হয়েছে দলটি। ইমরান খান জেলে থাকা অবস্থায় পিটিআইয়ের ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মাহমুদ কোরেশি এক প্রতিক্রিয়ায় তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রীকে শিক্ষিত ও ভদ্রলোক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। আনোয়ারুল হক কাকার একটি ছোট প্রদেশের হওয়ায় দেশের মৌলিক সমস্যাগুলো আরও ভালোভাবে বুঝতে পারবেন এবং সেই অনুসারে তাঁর ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন বলে কোরেশি আশা প্রকাশ করেন। পাকিস্তানের বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফও আনোয়ারুল হকের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়া নিয়ে মন্তব্য করেন। আনোয়ারুল হক স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করবেন বলে শাহবাজ আস্থা প্রকাশ করেন। তিনি বলেছেন, তত্ত্বাবধয়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আনোয়ারুল হকের প্রতি সব পক্ষের আস্থাই প্রমাণ করে তাঁদের সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল। শাহবাজ আনোয়ারুল হককে একজন শিক্ষিত ও দেশপ্রেমিক মানুষ বলে স্বীকার করেন।
পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী, তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে অবশ্যই ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। তবে এই সময়ের মধ্যে তাঁরা নির্বাচন আয়োজন করতে পারবেন কি না, সন্দেহ আছে। কারণ, বিদায়ী শাহবাজ সরকার মেয়াদের শেষের দিকে একটি নতুন আদমশুমারি অনুমোদন করার ফলে নির্বাচন কমিশনকে আবার নতুন করে নির্বাচনী সীমানা নির্ধারণ করতে হবে।
উল্লেখ্য, চলতি মাসের শুরুর দিকে পাকিস্তানের প্রথম ডিজিটাল জনশুমারির তথ্য প্রকাশ হয়। সেই অনুযায়ী নির্বাচনী আসনগুলোর নতুন সীমানা নির্ধারণের পথে এগোচ্ছে নির্বাচন কমিশন। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, সীমানা নির্ধারণে চার থেকে ছয় মাস সময় লাগতে পারে। যদি তা-ই হয়, তাহলে চলতি বছর পাকিস্তানে আর জাতীয় নির্বাচন হওয়ার সুযোগ থাকছে না। এটি সবারই জানা, পাকিস্তানের রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর প্রভাব অনস্বীকার্য। ইমরান খানের গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানব্যাপী যে রাজনৈতিক অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছিল তাতে সেনাবাহিনীও কিছুটা নাজুক পরিস্থিতিতে পড়ে গিয়েছিল। তবে ক্ষমতাসীনদের ব্যবহার করে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি সামাল দিয়ে সেনাবাহিনী পুনরায় তাদের কর্তৃত্বের জায়গায় ফিরে এসেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ যদি সাংবিধানিক সময়সীমার চেয়ে বৃদ্ধি পায়, তাহলে সেনাবাহিনীই লাভবান হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার যদি দীর্ঘদিন দেশ পরিচালনায় থাকে, তাহলে এ বিষয়টি যেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে তার নিয়ন্ত্রণ আরও সুসংহত করার সুযোগ তৈরি করে দেবে।
নির্বাচন বিলম্বিত হলে কিছু জটিলতারও সৃষ্টি হতে পারে। এ ক্ষেত্রে সাংবিধানিক ও আইনগত নানা প্রশ্ন সামনে চলে আসতে পারে। যদি সাংবিধানিক প্রশ্ন ওঠে, তাহলে তার সুরাহায় দেশটির সুপ্রিম কোর্টের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের প্রয়োজন পড়বে। অতীতে এমন পরিস্থিতিতে সে দেশের সুপ্রিম কোর্টের সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণের রেকর্ড আছে।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর রোষানলে পড়ে ইমরান খানের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ যে সত্যিই দোদুল্যমান, তা সহজেই অনুমেয়। ইমরান খানকে আরও কত দিন কারা-অন্তরালে কাটাতে হবে, তা বলা মুশকিল। ১৫ আগস্ট স্থানীয় ‘হিংসাত্মক বিক্ষোভ’-এর অভিযোগে ইমরানের বিরুদ্ধে করা ৯টি মামলায় জামিনের জন্য যে আবেদন করা হয়েছিল, তার সবগুলোই আদালত খারিজ করে দিয়েছেন। গত ৯ মে তোষাখানা মামলায় ইমরানকে গ্রেপ্তার করা হলে যে সহিংস বিক্ষোভ হয়, সেই বিক্ষোভের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে অভিযুক্ত করে এই মামলাগুলো করা হয়েছিল। ইমরান খানকে নিয়ে এখন চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে; বিশেষ করে তিনি আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন কি না, এ বিষয়টিই গুরুত্বসহকারে আলোচিত হচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, ইমরান খানের বিরুদ্ধে চলমান মামলার মীমাংসা হতে মাসের পর মাস পার হয়ে যাবে। ফলে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সম্ভাবনা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। তা ছাড়া, দুর্নীতির অভিযোগে নিম্ন আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর, দেশটির নির্বাচন কমিশন ইমরান খানকে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণে অযোগ্য ঘোষণা করেই রেখেছে। ইমরান খান এই ঘোষণার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করেছেন। দুর্নীতির মামলায় যদি আদালত থেকে ইমরান পরিত্রাণ পানও, তারপরও বিভিন্ন বেসামরিক আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে দুই শতাধিক মামলা বিচারাধীন রয়ে গেছে। এ ছাড়া সবশেষে একটি সামরিক আদালতও তো তাঁর জন্য অপেক্ষা করছেই। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এখানে বিবেচনা করা যেতে পারে। পাকিস্তানের বর্তমান প্রধান বিচারপতি আগামী মাসে তাঁর মেয়াদ শেষ করবেন। পরবর্তী প্রধান বিচারপতি হবেন কাজী ফয়েজ ঈসা, যিনি ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে অযোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছিলেন। যদিও পাকিস্তানের রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, নতুন প্রধান বিচারপতি হয়তো প্রতিশোধ নেবেন না। তিনি সংবিধান অনুযায়ী কাজ করতে পারেন। তাঁরা আরও মনে করেন, পাকিস্তানের নতুন প্রধান বিচারপতি যদি শত বাধা সত্ত্বেও সংবিধান টিকিয়ে রাখার ব্যাপারে শক্ত ভূমিকা পালন করতে পারেন, তাহলে ইমরান নির্বাচনে অংশ নিতে না পারলেও, রাজনৈতিকভাবে টিকে থাকতে পারবেন। অতীতে নওয়াজ শরিফ দোষী সাব্যস্ত হওয়া সত্ত্বেও যদি টিকে থাকতে পারেন, তাহলে ইমরান খানও টিকে যাবেন।
পাকিস্তানের ইতিহাস বলে, সামরিক বাহিনীর আশীর্বাদ ছাড়া কোনো বেসামরিক শাসকের পক্ষে ক্ষমতায় টিকে থাকা সম্ভব নয়। ইমরান খানের ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে। তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরাতে সেনাবাহিনী যে নেপথ্যে থেকে কাজ করেছে, তা এখন দিবালোকের মতো স্পষ্ট। যদিও মুসলিম লীগের নওয়াজ শরিফ, পিপিপির আসিফ আলী জারদারির সঙ্গে জোট বেঁধে সংসদে অনাস্থা প্রস্তাবের মাধ্যমে ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে। তাই বলে, এই দুটি দলের সঙ্গে সেনাবাহিনীর ভালো সখ্য রয়েছে বলা যাবে না। অতীতে নওয়াজ শরিফকে সরিয়ে দিয়ে জেনারেল পারভেজ মোশাররফকে ক্ষমতায় বসিয়েছিল সেনাবাহিনী। জুলফিকার আলী ভুট্টোর পতনও হয়েছিল সামরিক বাহিনীর হাতে। ফলে মুসলিম লীগ ও পিপিপির সঙ্গে সেনাবাহিনীর সম্পর্ক যে সহজ নয় তা বোঝা যায়। এই সবকিছু মিলিয়েই বলা যায়, ভবিষ্যতেও পাকিস্তানের রাজনীতিতে উচ্চাভিলাষী সামরিক কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ থাকবেই। পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীও সেনাবাহিনীর প্রভাবমুক্ত হয়ে কিছু করতে পারবে বলে মনে হয় না। স্বাধীনতার ৭৬ বছর পরও এভাবেই সেনাবাহিনীর ছায়াতলেই পাকিস্তানের রাজনীতি ঘুরপাক খাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে।
এ কে এম শামসুদ্দিন, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ও কলাম লেখক

পাকিস্তানে নির্বাচনের জন্য প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি ১৪ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আনোয়ারুল হক কাকারকে শপথবাক্য পাঠ করান। এই শপথ নেওয়ার অনুষ্ঠানটি এমন দিনে অনুষ্ঠিত হলো; যে দিনটি ছিল পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস। অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ছাড়াও সেনাবাহিনীপ্রধানসহ গুরুত্বপূর্ণ উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। শপথ নেওয়ার পর অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারুল হক কাকারকে বিশেষ আগ্রহ নিয়ে সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করতে ও করমর্দন করতে দেখা গেছে। সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে আনোয়ারুল হকের আন্তরিকতা প্রকাশের এই বিশেষ মুহূর্তটুকু সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। কারণ সবাই জানেন, নির্বাচন অনুষ্ঠানের যে গুরুদায়িত্ব তাঁর কাঁধে অর্পিত হয়েছে, তা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার জন্য সামরিক বাহিনীর সাহায্য ছাড়া উপায় নেই। আনোয়ারুল হক নিজেও জানেন আগামী দিনে যা কিছু করতে হবে, সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেই তাঁকে তা করতে হবে।
এর আগে ১২ আগস্ট পাকিস্তানের বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এবং ইমরান খান প্রতিষ্ঠিত জাতীয় পরিষদের বিরোধী দল তেহরিক-ই-ইনসাফ বা পিটিআইয়ের নেতা রাজা রিয়াজ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, সে বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছান। তাঁদের উভয়ের সম্মতিতে আনোয়ারুল হক কাকার নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। পাকিস্তানের সংবিধানের ২২৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার তিন দিনের মধ্যে বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলের নেতাকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রীর নাম প্রস্তাব করতে হয়, সেই অনুসারে ১২ আগস্টের মধ্যে তাঁরা অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রীর নাম প্রেসিডেন্টের কাছে প্রেরণ করেন।
তারও আগে পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার তিন দিন আগে ৯ আগস্ট জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। পাকিস্তানের সংবিধানে বলা আছে, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই যদি জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়া হয়, তাহলে ৯০ দিনের মধ্যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। আর জাতীয় পরিষদ পূর্ণ করলে ৬০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হবে। এ ক্ষেত্রে যেহেতু মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে, তাই ৯০ দিনের মধ্যে পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
পাকিস্তানের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারুল হক কাকার বেলুচিস্তান আওয়ামী পার্টির একজন আইনপ্রণেতা। তিনি পশতুন জাতিগোষ্ঠীর মানুষ। তাই তিনি পশতুন ও বেলুচ উভয়ের প্রতিনিধিত্ব করেন। আনোয়ারুল হক সিনেটে (উচ্চ কক্ষে) তাঁর দলের সংসদীয় নেতার দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তিনি ২০১৮ সালে বেলুচিস্তান থেকে ছয় বছরের জন্য সিনেটর নির্বাচিত হন। ২০২৪ সালের মার্চে তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। আনোয়ারুল হক বরাবরই বেশ সক্রিয় রাজনীতিবিদ। সিনেটর নির্বাচিত হওয়ার আগে তিনি প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করেছেন। রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকলেও আনোয়ারুল হককে দেশের একজন বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী হিসেবে গণ্য করা হয়। তিনি বেলুচিস্তান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজনীতিবিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞানে ডিগ্রি নেন। রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার আগে নিজ শহরের এক স্কুলে শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন তিনি।
শাহবাজ শরিফ ও বিরোধীদলীয় নেতার সম্মতিতে পাকিস্তানের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী একটি ছোট প্রদেশ থেকে আনোয়ারুল হক কাকারকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করায় খুশি কারাগারে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে পিটিআইয়ের কোনো পরামর্শ নেওয়া হয়নি।
তারপরও তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আনোয়ারুল হক কাকারের মনোনয়নে খুশি হয়েছে দলটি। ইমরান খান জেলে থাকা অবস্থায় পিটিআইয়ের ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মাহমুদ কোরেশি এক প্রতিক্রিয়ায় তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রীকে শিক্ষিত ও ভদ্রলোক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। আনোয়ারুল হক কাকার একটি ছোট প্রদেশের হওয়ায় দেশের মৌলিক সমস্যাগুলো আরও ভালোভাবে বুঝতে পারবেন এবং সেই অনুসারে তাঁর ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন বলে কোরেশি আশা প্রকাশ করেন। পাকিস্তানের বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফও আনোয়ারুল হকের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়া নিয়ে মন্তব্য করেন। আনোয়ারুল হক স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করবেন বলে শাহবাজ আস্থা প্রকাশ করেন। তিনি বলেছেন, তত্ত্বাবধয়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আনোয়ারুল হকের প্রতি সব পক্ষের আস্থাই প্রমাণ করে তাঁদের সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল। শাহবাজ আনোয়ারুল হককে একজন শিক্ষিত ও দেশপ্রেমিক মানুষ বলে স্বীকার করেন।
পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী, তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে অবশ্যই ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। তবে এই সময়ের মধ্যে তাঁরা নির্বাচন আয়োজন করতে পারবেন কি না, সন্দেহ আছে। কারণ, বিদায়ী শাহবাজ সরকার মেয়াদের শেষের দিকে একটি নতুন আদমশুমারি অনুমোদন করার ফলে নির্বাচন কমিশনকে আবার নতুন করে নির্বাচনী সীমানা নির্ধারণ করতে হবে।
উল্লেখ্য, চলতি মাসের শুরুর দিকে পাকিস্তানের প্রথম ডিজিটাল জনশুমারির তথ্য প্রকাশ হয়। সেই অনুযায়ী নির্বাচনী আসনগুলোর নতুন সীমানা নির্ধারণের পথে এগোচ্ছে নির্বাচন কমিশন। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, সীমানা নির্ধারণে চার থেকে ছয় মাস সময় লাগতে পারে। যদি তা-ই হয়, তাহলে চলতি বছর পাকিস্তানে আর জাতীয় নির্বাচন হওয়ার সুযোগ থাকছে না। এটি সবারই জানা, পাকিস্তানের রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর প্রভাব অনস্বীকার্য। ইমরান খানের গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানব্যাপী যে রাজনৈতিক অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছিল তাতে সেনাবাহিনীও কিছুটা নাজুক পরিস্থিতিতে পড়ে গিয়েছিল। তবে ক্ষমতাসীনদের ব্যবহার করে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি সামাল দিয়ে সেনাবাহিনী পুনরায় তাদের কর্তৃত্বের জায়গায় ফিরে এসেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ যদি সাংবিধানিক সময়সীমার চেয়ে বৃদ্ধি পায়, তাহলে সেনাবাহিনীই লাভবান হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার যদি দীর্ঘদিন দেশ পরিচালনায় থাকে, তাহলে এ বিষয়টি যেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে তার নিয়ন্ত্রণ আরও সুসংহত করার সুযোগ তৈরি করে দেবে।
নির্বাচন বিলম্বিত হলে কিছু জটিলতারও সৃষ্টি হতে পারে। এ ক্ষেত্রে সাংবিধানিক ও আইনগত নানা প্রশ্ন সামনে চলে আসতে পারে। যদি সাংবিধানিক প্রশ্ন ওঠে, তাহলে তার সুরাহায় দেশটির সুপ্রিম কোর্টের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের প্রয়োজন পড়বে। অতীতে এমন পরিস্থিতিতে সে দেশের সুপ্রিম কোর্টের সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণের রেকর্ড আছে।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর রোষানলে পড়ে ইমরান খানের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ যে সত্যিই দোদুল্যমান, তা সহজেই অনুমেয়। ইমরান খানকে আরও কত দিন কারা-অন্তরালে কাটাতে হবে, তা বলা মুশকিল। ১৫ আগস্ট স্থানীয় ‘হিংসাত্মক বিক্ষোভ’-এর অভিযোগে ইমরানের বিরুদ্ধে করা ৯টি মামলায় জামিনের জন্য যে আবেদন করা হয়েছিল, তার সবগুলোই আদালত খারিজ করে দিয়েছেন। গত ৯ মে তোষাখানা মামলায় ইমরানকে গ্রেপ্তার করা হলে যে সহিংস বিক্ষোভ হয়, সেই বিক্ষোভের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে অভিযুক্ত করে এই মামলাগুলো করা হয়েছিল। ইমরান খানকে নিয়ে এখন চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে; বিশেষ করে তিনি আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন কি না, এ বিষয়টিই গুরুত্বসহকারে আলোচিত হচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, ইমরান খানের বিরুদ্ধে চলমান মামলার মীমাংসা হতে মাসের পর মাস পার হয়ে যাবে। ফলে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সম্ভাবনা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। তা ছাড়া, দুর্নীতির অভিযোগে নিম্ন আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর, দেশটির নির্বাচন কমিশন ইমরান খানকে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণে অযোগ্য ঘোষণা করেই রেখেছে। ইমরান খান এই ঘোষণার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করেছেন। দুর্নীতির মামলায় যদি আদালত থেকে ইমরান পরিত্রাণ পানও, তারপরও বিভিন্ন বেসামরিক আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে দুই শতাধিক মামলা বিচারাধীন রয়ে গেছে। এ ছাড়া সবশেষে একটি সামরিক আদালতও তো তাঁর জন্য অপেক্ষা করছেই। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এখানে বিবেচনা করা যেতে পারে। পাকিস্তানের বর্তমান প্রধান বিচারপতি আগামী মাসে তাঁর মেয়াদ শেষ করবেন। পরবর্তী প্রধান বিচারপতি হবেন কাজী ফয়েজ ঈসা, যিনি ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে অযোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছিলেন। যদিও পাকিস্তানের রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, নতুন প্রধান বিচারপতি হয়তো প্রতিশোধ নেবেন না। তিনি সংবিধান অনুযায়ী কাজ করতে পারেন। তাঁরা আরও মনে করেন, পাকিস্তানের নতুন প্রধান বিচারপতি যদি শত বাধা সত্ত্বেও সংবিধান টিকিয়ে রাখার ব্যাপারে শক্ত ভূমিকা পালন করতে পারেন, তাহলে ইমরান নির্বাচনে অংশ নিতে না পারলেও, রাজনৈতিকভাবে টিকে থাকতে পারবেন। অতীতে নওয়াজ শরিফ দোষী সাব্যস্ত হওয়া সত্ত্বেও যদি টিকে থাকতে পারেন, তাহলে ইমরান খানও টিকে যাবেন।
পাকিস্তানের ইতিহাস বলে, সামরিক বাহিনীর আশীর্বাদ ছাড়া কোনো বেসামরিক শাসকের পক্ষে ক্ষমতায় টিকে থাকা সম্ভব নয়। ইমরান খানের ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে। তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরাতে সেনাবাহিনী যে নেপথ্যে থেকে কাজ করেছে, তা এখন দিবালোকের মতো স্পষ্ট। যদিও মুসলিম লীগের নওয়াজ শরিফ, পিপিপির আসিফ আলী জারদারির সঙ্গে জোট বেঁধে সংসদে অনাস্থা প্রস্তাবের মাধ্যমে ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে। তাই বলে, এই দুটি দলের সঙ্গে সেনাবাহিনীর ভালো সখ্য রয়েছে বলা যাবে না। অতীতে নওয়াজ শরিফকে সরিয়ে দিয়ে জেনারেল পারভেজ মোশাররফকে ক্ষমতায় বসিয়েছিল সেনাবাহিনী। জুলফিকার আলী ভুট্টোর পতনও হয়েছিল সামরিক বাহিনীর হাতে। ফলে মুসলিম লীগ ও পিপিপির সঙ্গে সেনাবাহিনীর সম্পর্ক যে সহজ নয় তা বোঝা যায়। এই সবকিছু মিলিয়েই বলা যায়, ভবিষ্যতেও পাকিস্তানের রাজনীতিতে উচ্চাভিলাষী সামরিক কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ থাকবেই। পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীও সেনাবাহিনীর প্রভাবমুক্ত হয়ে কিছু করতে পারবে বলে মনে হয় না। স্বাধীনতার ৭৬ বছর পরও এভাবেই সেনাবাহিনীর ছায়াতলেই পাকিস্তানের রাজনীতি ঘুরপাক খাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে।
এ কে এম শামসুদ্দিন, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ও কলাম লেখক

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

পাকিস্তানে নির্বাচনের জন্য প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি ১৪ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আনোয়ারুল হক কাকারকে শপথবাক্য পাঠ করান। এই শপথ নেওয়ার অনুষ্ঠানটি এমন দিনে অনুষ্ঠিত হলো; যে দিনটি ছিল পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস। অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ছাড়াও সেনাবাহিনীপ্রধান
১৯ আগস্ট ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

পাকিস্তানে নির্বাচনের জন্য প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি ১৪ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আনোয়ারুল হক কাকারকে শপথবাক্য পাঠ করান। এই শপথ নেওয়ার অনুষ্ঠানটি এমন দিনে অনুষ্ঠিত হলো; যে দিনটি ছিল পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস। অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ছাড়াও সেনাবাহিনীপ্রধান
১৯ আগস্ট ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

পাকিস্তানে নির্বাচনের জন্য প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি ১৪ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আনোয়ারুল হক কাকারকে শপথবাক্য পাঠ করান। এই শপথ নেওয়ার অনুষ্ঠানটি এমন দিনে অনুষ্ঠিত হলো; যে দিনটি ছিল পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস। অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ছাড়াও সেনাবাহিনীপ্রধান
১৯ আগস্ট ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

পাকিস্তানে নির্বাচনের জন্য প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি ১৪ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আনোয়ারুল হক কাকারকে শপথবাক্য পাঠ করান। এই শপথ নেওয়ার অনুষ্ঠানটি এমন দিনে অনুষ্ঠিত হলো; যে দিনটি ছিল পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস। অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ছাড়াও সেনাবাহিনীপ্রধান
১৯ আগস্ট ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫