Ajker Patrika

খালের মুখ বন্ধ, তলিয়ে আছে ১০ একর জমি

সিরাজদিখান (মুন্সিগঞ্জ) প্রতিনিধি
খালের মুখ বন্ধ, তলিয়ে আছে ১০ একর জমি

মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে জলাবদ্ধতার কারণে প্রায় ১০ একর জমিতে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় চলতি বোরো মৌসুমে আবাদ করতে পারছেন না কৃষকেরা। এতে এসব জমি ক্রমেই অনাবাদি পড়ে থাকার আশঙ্কা করছে উপজেলা কৃষি কার্যালয়।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার কেয়াইন ইউনিয়নের নিমতলা-কুচিয়ামোড়া এলাকা এই অবস্থা দেখা গেছে। পানি নিষ্কাশনের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত দিয়েছেন ওই এলাকার কৃষকেরা। রেললাইন তৈরি ও বিভিন্ন হাউজিংয়ের কারণে কালভার্টের মুখ বন্ধ হয়ে এই অবস্থা তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

জানা গেছে, উপজেলার রাজানগর ও কেয়াইন ইউনিয়নে বর্ষার বিলের পানি হরি-খাল দিয়ে ধলেশ্বরী নদীতে প্রবাহিত হতো। কিন্তু রেললাইন নির্মাণের কাজে কুচিয়ামোড়া এলাকায় খালের মুখ বন্ধ হওয়ায় বিলের পানি সরতে পারছে না। ফলে কেয়াইন ইউনিয়নের কেয়াইন, কুচিয়ামোড়া, বড়বর্তা, ঘোড়ামারাসহ কয়েকটি গ্রামের কৃষকের অন্তত ১০ একর কৃষিজমি এখনো পানির নিচে রয়েছে।

কুচিয়ামোড়া এলাকার কৃষক ওয়াসিম ব্যাপারী জানান, ‘আমাদের প্রায় ছয় একর জমি এখনো পানির নিচে আছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না নিলে আমরা খুবই বিপদে পড়ে যাব। এ বিষয়ে ইউএনও বরাবর লিখিত আবেদন করেছি।’

আরেক কৃষক রবিউল ভূঁইয়া বলেন, ‘আমাদের কৃষিজমিতে এখনো জলাবদ্ধতা। আমরা ধানের চারা করে রেখেছি, কিন্তু জমিতে এখন পর্যন্ত পানি থাকায় চারা রোপণ করতে পারছি না। তাই চারাগুলো নষ্ট হচ্ছে।’

কৃষক ইয়াসিন ব্যাপারী বলেন, ‘আমাদের এই চকে (ফসলি মাঠ) ধান, সরিষার আবাদ করা হয়। কয়েক বছর ধরে রেললাইনের কাজ ও বিভিন্ন হাউজিংয়ের কারণে জমিগুলোতে বছরের বেশির ভাগ সময়ই জমিগুলো পানির নিচে পড়ে থাকে। আমাদের লাখ লাখ টাকা লোকসান হয়। যদি ফসল ফলাতে পারতাম, তবে সংসারের বাড়তি উপার্জন হতো। উপজেলা প্রশাসন গুরুত্বসহকারে না দেখলে আমাদের উপার্জনও বন্ধ হয়ে যাবে।’

কেয়াইন ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ জাহিদ হোসেন বলেন, ‘রেললাইন তৈরি, বিভিন্ন হাউজিং ও কালভার্টের মুখ বন্ধের কারণে প্রায় ১০ একর কৃষিজমি জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এই সমস্যা সমাধানে ইউএনও বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন কৃষকেরা। পানি নিষ্কাশন না হলে ফসল আবাদ বন্ধ হয়ে যাবে।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আবু সাঈদ শুভ্র বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি, ইউএনওর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।’

ইউএনও মো. শরীফুল আলম তানভীর বলেন, ‘কুচিয়ামোড়া এলাকার কৃষকেরা আমাকে জলাবদ্ধতার বিষয়টি জানিয়েছেন। আমি রেললাইন নির্মাণকাজের কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। যদি এখনো জমিতে পানি থেকে থাকে, আর তারা যদি ব্যবস্থা গ্রহণ না করে, তবে আমি আজকে আবারও বলব, তারা যেন অতি দ্রুত এই কৃষিজমি থেকে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে দেয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত