Ajker Patrika

৫৮১টি মন্দিরে চলছে প্রস্তুতি

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
আপডেট : ০৯ অক্টোবর ২০২১, ১৫: ২৯
৫৮১টি মন্দিরে চলছে প্রস্তুতি

সাতক্ষীরায় দুর্গাপূজা উদ্‌যাপনে সদরে ১০৫টিসহ জেলায় ৫৮১টি সর্বজনীন ও পারিবারিক মণ্ডপে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। আগামী সোমবার ষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু হবে। সাতক্ষীরা সদরসহ জেলার অধিকাংশ মন্দিরে চলছে এর প্রস্তুতি। কারিগরেরা ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমার সৌন্দর্য বর্ধনে।

সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রতিমা কারিগরেরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। মন্দিরের প্রতিমা পরিপূর্ণভাবে সাজাতে মন্দিরগুলোতে দিনরাত চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি।

সরেজমিনে সদরের রসুলপুর, আলিপুর, ভোমরা, কাথণ্ডা, ছয়ঘরিয়া, সোনাবাড়িয়া, ঝিটকি, ধুলিহর, নলতা, কুমারখালি দোবহাটা, বাকা, বুধহাটা এলাকা ঘুরে দেখা যায় অধিকাংশ মন্দিরগুলোতে ইতিমধ্যে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। চলছে রং তুলির আঁচড় লাগানোর কাজ।

পলাশপোল সার্বজনীন পূজা মণ্ডপের সভাপতি শম্ভু কুমার দে বলেন, ‘আমাদের পূজা মণ্ডপে এবার প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন সদরের ব্যাংদাহ থেকে আসা কারিগর (মৃৎশিল্পী) মধু দাস ও মৃত্যুজ্ঞয় দাস।’

তাঁদের কাছে জানতে চাইলে বলেন, বংশ পরম্পরায় এ পেশায় জড়িত আছেন তাঁরা। নির্দিষ্ট সময়ের আগেই প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ হবে বলেও জানান তিনি।

ঝিটকি এলাকার কারিগর অজয় পাল বলেন, ‘বছরের সব সময় কাজ থাকে না তাই অধিকাংশ সময় বেকার থাকতে হয়। কিন্তু এখন দুর্গাপূজা উপলক্ষে কাজের চাপ বেশি তাই রাত দিন পরিশ্রম করে মা দুর্গার প্রতিমা তৈরি করছি। গত বুধবার থেকে প্রতিমা রং করা হচ্ছে।’

কালীগঞ্জের চম্পা ফুল ইউনিয়নের কুমারখালি গ্রামের অ্যাড. সত্য রঞ্জন মণ্ডল জানান, তাঁর বাড়িতে পারিবারিক দুর্গাপূজা হলেও প্রতিবেশীরাই একটি বড় খরচ বহন করে থাকেন। এবার প্রতিমা তৈরিতে খরচ হচ্ছে ১৮ হাজার টাকা। গতবার করোনার কারণে পূজা নামে মাত্রই হয়েছে। ছিল না কোনো বাজনা বা শোভাযাত্রা। এবার করোনা পরিস্থিতি বজায় থাকলেও বৃষ্টি বাদলের মধ্যেও মানুষের মধ্যে আনন্দের বন্যা বইছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই মণ্ডপে জনসমাগম নিয়ন্ত্রণ করা হবে।

নলতা চৌমুহুনী এলাকার অগ্রদূত সর্বজনীন দুর্গা পূজা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ডা. শংকর কুমার পাল বলেন, নির্ধারিত সময়ের একটু আগে থেকেই তাঁরা প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করেছেন। সাবেক সভাপতিসহ একটি মহল এবার পূজা বন্ধ করার জন্য নানাবিধ ষড়যন্ত্র করেছিল। স্থানীয় প্রশাসন ও সাংসদ সাবেক পরিবার ও পরিকল্পনা মন্ত্রীর ইচ্ছায় সে সমস্যার সমাধান হয়েছে। বৃষ্টি না হলে পূজা ভালোভাবেই কাটবে।

সাতক্ষীরা জেলা মন্দির কমিটির সভাপতি বিশ্বনাথ ঘোষ বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদ্‌যাপনের লক্ষ্যে তাঁদের প্রস্তুতি শেষের দিকে। গত ৫ অক্টোবর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এই বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তাঁরা বিশ্বাস করেন যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের পক্ষ থেকে যে মনিটরিং সেল খোলা হয়েছে তাঁরা আন্তরিক ভাবে কাজ করলে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না। জেলায় ৫৮১টি বারোয়ারি ও পারিবারিক পূজা অনুষ্ঠিত হবে।

শারদীয় দুর্গাপূজার নিরাপত্তার বিষয়ে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। একসময় জামায়াতের তাণ্ডবে সাতক্ষীরা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। বর্তমানে সে পরিস্থিতি নেই। যাতে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ নির্বিঘ্নে পূজা পালন করতে পারে সে জন্য সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...