উবায়দুল্লাহ বাদল, ঢাকা

অংশীজনদের মতামতের জন্য উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়া উন্মুক্ত করার পর থেকেই প্রস্তাবিত আইনটির বেশ কিছু ধারা নিয়ে সুশীল সমাজসহ দেশি-বিদেশি নানা মহল থেকে আপত্তি উঠেছে। কিন্তু এসব আপত্তির মূল দিকগুলো উপেক্ষা করেই আইনটির চূড়ান্ত খসড়া তৈরি করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই খসড়াটি যাচাই-বাছাই করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ।
জনপ্রশাসন ও আইন মন্ত্রণালয়ের সম্মতি সাপেক্ষে অনুমোদনের জন্য শিগগিরই তা মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থাপন করা হতে পারে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের সচিব মো. সামসুল আরেফিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যাচাই-বাছাইয়ের জন্য খসড়া জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অংশীজনদের সঙ্গে এ বিষয়ে আরও বৈঠক হবে। তারপরই আইনের খসড়া চূড়ান্ত করে যথাযথ প্রক্রিয়ায় মন্ত্রিসভায় পাঠানো হবে।’
প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী, অপরাধ প্রতিরোধ, শনাক্ত ও তদন্তের প্রয়োজনে যেকোনো উপাত্তধারীর কাছ থেকে উপাত্ত (ব্যক্তিগত তথ্যসহ) সংগ্রহ করা যাবে। আইনে উপাত্ত সুরক্ষা এজেন্সি নামে একটি কর্তৃপক্ষ গঠনের কথা বলা হয়েছে। এই এজেন্সি
যেকোনো ব্যক্তিকে প্রয়োজনীয় উপাত্ত সরবরাহ করার নির্দেশ দিতে পারবে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এ নির্দেশনা মানতে বাধ্য থাকবেন। সরকার দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা, বিদেশিদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বা জনশৃঙ্খলার স্বার্থে উপাত্ত সুরক্ষা এজেন্সিকে যেকোনো সময় যেকোনে নির্দেশনা দিতে পারবে। এজেন্সি তা মানতে বাধ্য থাকবে।
মোট ৫৬ পৃষ্ঠার এই খসড়া আইনে ১৪ অনুচ্ছেদ ও ৭২টি ধারা রাখা হয়েছে, যার বেশ কিছু বিষয় নিয়ে উদ্বেগ ও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন দেশের বিশিষ্টজনেরা। তাঁদের মতে, এই আইনের মাধ্যমে সরকার তথ্যের নিয়ন্ত্রণ করবে নাকি সুরক্ষা দেবে, তা পরিষ্কার নয়।
তবে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের দাবি, কয়েক বছর ধরেই উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়া প্রণয়নে কাজ চলছে। এ জন্য একাধিক পর্যালোচনা সভাসহ আন্তমন্ত্রণালয় সভা করা হয়েছে, যেখানে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, বিভিন্ন সংস্থা, আইনবিদ, সাংবাদিকসহ অংশীজনেরা উপস্থিত হয়ে মতামত দিয়েছেন। এমনকি জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থা ও কূটনীতিবিদরাও এ বিষয়ে তাঁদের মতামত দিয়েছেন। তাঁদের মতামতের ভিত্তিতে প্রস্তাবিত আইনের খসড়া তৈরি করা হয়েছে।
যেকোনো আইনের খসড়া মন্ত্রিসভায় তোলার আগের ধাপ হলো জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও আইন মন্ত্রণালয়ের সম্মতি গ্রহণ। উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়াটিও এখন মন্ত্রিসভার বৈঠকে তোলার পূর্ববর্তী ধাপে আছে।
কিন্তু আপত্তির বিষয়গুলো নিষ্পত্তি না হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দুর্নীতিবিরোধী গবেষণা প্রতিষ্ঠান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি বলছে, যেভাবে উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়া তৈরি করা হয়েছে, তা ঝুঁকিপূর্ণ। এটি জনগণের সংবিধানস্বীকৃত বাক্-স্বাধীনতা ও গোপনীয়তার অধিকার ক্ষুণ্ন করবে। এর মধ্য দিয়ে সমাজ নজরদারির সমাজে রূপান্তরিত হবে।
এ প্রসঙ্গে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান গত শনিবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, আইনের সংজ্ঞাসহ অনেক বিষয়ই স্পষ্ট নয়। খসড়ার মৌলিক কিছু জায়গা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এমন কিছু ধারা রয়েছে, যা দিয়ে আইনটি যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ওপর অপপ্রয়োগ করা সম্ভব। এই অবস্থায় আইনটি পাস হলে উপাত্ত সুরক্ষা নয়, নিয়ন্ত্রণই মুখ্য হবে। ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষার কথা বলা হলেও এই আইনের মাধ্যমে মূলত ব্যক্তিগত তথ্যের ওপর সীমাহীন নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা অর্পণ করা হয়েছে। উপাত্তের সংজ্ঞা সেই আগের মতোই অস্পষ্ট। ব্যক্তিগত গোপনীয়তার সংজ্ঞা ও মানদণ্ড কী হবে, তা-ও খসড়ায় স্পষ্ট নয়। সরকার চাইলেই যেকোনো ব্যক্তির ডিজিটাল তথ্য নিতে পারবে। এই আইনবলে সরকার ব্যক্তিগত তথ্যও নিতে পারবে। উপাত্ত সুরক্ষা এজেন্সি নামে যে কর্তৃপক্ষ গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে, সেটাও সরকারের হাতেই রাখা হয়েছে।
ইফতেখারুজ্জামান অভিযোগ করে বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে আমাদের সঙ্গে গত ১৪ মার্চ আইনমন্ত্রী, তথ্যমন্ত্রী ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রীর বৈঠক হয়েছিল। সেখানে উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়া দিয়ে বলা হয়েছিল, এটি নিয়ে ৬ এপ্রিল বসা হবে, কিন্তু বসা হয়নি। আমাদের কিছু সুপারিশ বিবেচনা করা হলেও বেশির ভাগই আমলে নেওয়া হয়নি। আমরা চাই সরকার আমাদের সঙ্গে বসে সংশ্লিষ্ট আপত্তি বিবেচনায় নিয়ে খসড়া চূড়ান্ত করুক।’
আইনটির খসড়ার কিছু ধারা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত আট দেশ।
প্রস্তাবিত খসড়ায় ধারা ১০-এ বলা হয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তার জন্য বা অপরাধ প্রতিরোধ, শনাক্ত ও তদন্ত করার উদ্দেশ্যেই উপাত্তধারীর কাছ থেকে উপাত্ত সংগ্রহ করা যাবে। নবম অধ্যায়ে উপাত্ত সুরক্ষা এজেন্সি গঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সরকারকে। উপাত্তের ওপর সরকারের ক্ষমতা প্রসঙ্গে ৬৭ ধারায় বলা হয়েছে, ‘সরকার প্রয়োজনে সময়ে সময়ে এজেন্সির মহাপরিচালকের কাছে এই আইনের অধীন সম্পাদিত যেকোনো বিষয়ে প্রতিবেদন বা বিবরণী চাইতে পারবে এবং উক্তরূপে কোনো প্রতিবেদন চাইলে মহাপরিচালক তা সরবরাহ করবেন।’ এসব ধারা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘ বলেছিল, ‘এই ধারা থাকলে বাংলাদেশের ডেটা সেন্টার (উপাত্ত সংরক্ষণ কেন্দ্র) ও সার্ভারগুলোয় সংরক্ষিত উপাত্ত নজরদারির আওতায় আসবে। বেসরকারি সংস্থাগুলোর ওপর গোপনীয় তথ্য প্রকাশের চাপ সৃষ্টি হবে। এই ধারা গণতান্ত্রিক শাসনকে দুর্বল করতে পারে।’
উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র সরকারও। ঢাকায় দেশটির রাষ্ট্রদূত পিটার হাস গত ৬ ফেব্রুয়ারি ‘বাংলাদেশে অনলাইন স্বাধীনতা ও ব্যবসায় বিনিয়োগ’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, ‘যদি ডেটা স্থানীয়করণের শর্তকে কঠোরভাবে আরোপের মাধ্যমে ডেটা সুরক্ষা আইন পাস করা হয়, তাহলে বর্তমানে বাংলাদেশে কাজ করছে—এমন কিছু আমেরিকান কোম্পানি বাজার ছেড়ে যেতে বাধ্য হতে পারে। প্রতিদিন যে কোটি কোটি বাংলাদেশি ব্যবহারকারী তাদের সেবা নিচ্ছেন, তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।’
উপাত্ত সুরক্ষা আইন ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার পরিবর্তে নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে—এমন আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন অনেকেই। টিআইবি বলছে, খসড়ায় সরকারি নজরদারি আর ভিন্নমত দমনের ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করা হয়েছে। সরকার ব্যক্তির ওপর নজরদারির ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করবে। পাশাপাশি মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ বাড়বে।
সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং সাংবাদিক মহল থেকেও উপাত্ত সুরক্ষা আইনের কিছু বিষয় নিয়ে আপত্তি আছে। কিন্তু এসব আপত্তির মূল বিষয়গুলো সুরাহা না করেই আইনটি চূড়ান্ত করছে সরকার।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উপাত্ত সুরক্ষা আইন দরকার। কিন্তু এই আইনের মাধ্যমে সরকার ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা দেবে নাকি নিয়ন্ত্রণ করবে, তা স্পষ্ট করতে হবে। খসড়ায় ব্যক্তিগত সুরক্ষা কী, তা সংজ্ঞায় স্পষ্ট নয়। পাশাপাশি উপাত্তকারী ও নিয়ন্ত্রণকারী দুজনের মধ্যে আন্তসম্পর্ক, ব্যক্তিগত জায়গা এবং সংবেদনশীল তথ্যের সংজ্ঞাও পরিষ্কার নয়। এমন অনেক বিষয়েই অস্পষ্টতা রয়েছে। এ ছাড়া জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও দেশ যে কারণে আপত্তি তুলেছে, সে বিষয়ে বা ব্যবসায়িক তথ্যের স্পষ্টতা দরকার। এসব বিষয় সরকারকে পরিষ্কার করতে হবে।’
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁর কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়া নিয়ে একাধিকবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন আইনমন্ত্রী। সর্বশেষ গত ৯ মার্চ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত আটটি দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠকের পরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়া মন্ত্রিপরিষদে যাওয়ার আগে অংশীজনদের সঙ্গে আবারও আলাপ-আলোচনা করা হবে। এর আগেও আমরা অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আইনটি উপাত্ত নিয়ন্ত্রণের জন্য নয়, সুরক্ষার জন্য করা হচ্ছে।’

অংশীজনদের মতামতের জন্য উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়া উন্মুক্ত করার পর থেকেই প্রস্তাবিত আইনটির বেশ কিছু ধারা নিয়ে সুশীল সমাজসহ দেশি-বিদেশি নানা মহল থেকে আপত্তি উঠেছে। কিন্তু এসব আপত্তির মূল দিকগুলো উপেক্ষা করেই আইনটির চূড়ান্ত খসড়া তৈরি করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই খসড়াটি যাচাই-বাছাই করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ।
জনপ্রশাসন ও আইন মন্ত্রণালয়ের সম্মতি সাপেক্ষে অনুমোদনের জন্য শিগগিরই তা মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থাপন করা হতে পারে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের সচিব মো. সামসুল আরেফিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যাচাই-বাছাইয়ের জন্য খসড়া জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অংশীজনদের সঙ্গে এ বিষয়ে আরও বৈঠক হবে। তারপরই আইনের খসড়া চূড়ান্ত করে যথাযথ প্রক্রিয়ায় মন্ত্রিসভায় পাঠানো হবে।’
প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী, অপরাধ প্রতিরোধ, শনাক্ত ও তদন্তের প্রয়োজনে যেকোনো উপাত্তধারীর কাছ থেকে উপাত্ত (ব্যক্তিগত তথ্যসহ) সংগ্রহ করা যাবে। আইনে উপাত্ত সুরক্ষা এজেন্সি নামে একটি কর্তৃপক্ষ গঠনের কথা বলা হয়েছে। এই এজেন্সি
যেকোনো ব্যক্তিকে প্রয়োজনীয় উপাত্ত সরবরাহ করার নির্দেশ দিতে পারবে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এ নির্দেশনা মানতে বাধ্য থাকবেন। সরকার দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা, বিদেশিদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বা জনশৃঙ্খলার স্বার্থে উপাত্ত সুরক্ষা এজেন্সিকে যেকোনো সময় যেকোনে নির্দেশনা দিতে পারবে। এজেন্সি তা মানতে বাধ্য থাকবে।
মোট ৫৬ পৃষ্ঠার এই খসড়া আইনে ১৪ অনুচ্ছেদ ও ৭২টি ধারা রাখা হয়েছে, যার বেশ কিছু বিষয় নিয়ে উদ্বেগ ও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন দেশের বিশিষ্টজনেরা। তাঁদের মতে, এই আইনের মাধ্যমে সরকার তথ্যের নিয়ন্ত্রণ করবে নাকি সুরক্ষা দেবে, তা পরিষ্কার নয়।
তবে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের দাবি, কয়েক বছর ধরেই উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়া প্রণয়নে কাজ চলছে। এ জন্য একাধিক পর্যালোচনা সভাসহ আন্তমন্ত্রণালয় সভা করা হয়েছে, যেখানে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, বিভিন্ন সংস্থা, আইনবিদ, সাংবাদিকসহ অংশীজনেরা উপস্থিত হয়ে মতামত দিয়েছেন। এমনকি জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থা ও কূটনীতিবিদরাও এ বিষয়ে তাঁদের মতামত দিয়েছেন। তাঁদের মতামতের ভিত্তিতে প্রস্তাবিত আইনের খসড়া তৈরি করা হয়েছে।
যেকোনো আইনের খসড়া মন্ত্রিসভায় তোলার আগের ধাপ হলো জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও আইন মন্ত্রণালয়ের সম্মতি গ্রহণ। উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়াটিও এখন মন্ত্রিসভার বৈঠকে তোলার পূর্ববর্তী ধাপে আছে।
কিন্তু আপত্তির বিষয়গুলো নিষ্পত্তি না হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দুর্নীতিবিরোধী গবেষণা প্রতিষ্ঠান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি বলছে, যেভাবে উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়া তৈরি করা হয়েছে, তা ঝুঁকিপূর্ণ। এটি জনগণের সংবিধানস্বীকৃত বাক্-স্বাধীনতা ও গোপনীয়তার অধিকার ক্ষুণ্ন করবে। এর মধ্য দিয়ে সমাজ নজরদারির সমাজে রূপান্তরিত হবে।
এ প্রসঙ্গে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান গত শনিবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, আইনের সংজ্ঞাসহ অনেক বিষয়ই স্পষ্ট নয়। খসড়ার মৌলিক কিছু জায়গা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এমন কিছু ধারা রয়েছে, যা দিয়ে আইনটি যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ওপর অপপ্রয়োগ করা সম্ভব। এই অবস্থায় আইনটি পাস হলে উপাত্ত সুরক্ষা নয়, নিয়ন্ত্রণই মুখ্য হবে। ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষার কথা বলা হলেও এই আইনের মাধ্যমে মূলত ব্যক্তিগত তথ্যের ওপর সীমাহীন নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা অর্পণ করা হয়েছে। উপাত্তের সংজ্ঞা সেই আগের মতোই অস্পষ্ট। ব্যক্তিগত গোপনীয়তার সংজ্ঞা ও মানদণ্ড কী হবে, তা-ও খসড়ায় স্পষ্ট নয়। সরকার চাইলেই যেকোনো ব্যক্তির ডিজিটাল তথ্য নিতে পারবে। এই আইনবলে সরকার ব্যক্তিগত তথ্যও নিতে পারবে। উপাত্ত সুরক্ষা এজেন্সি নামে যে কর্তৃপক্ষ গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে, সেটাও সরকারের হাতেই রাখা হয়েছে।
ইফতেখারুজ্জামান অভিযোগ করে বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে আমাদের সঙ্গে গত ১৪ মার্চ আইনমন্ত্রী, তথ্যমন্ত্রী ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রীর বৈঠক হয়েছিল। সেখানে উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়া দিয়ে বলা হয়েছিল, এটি নিয়ে ৬ এপ্রিল বসা হবে, কিন্তু বসা হয়নি। আমাদের কিছু সুপারিশ বিবেচনা করা হলেও বেশির ভাগই আমলে নেওয়া হয়নি। আমরা চাই সরকার আমাদের সঙ্গে বসে সংশ্লিষ্ট আপত্তি বিবেচনায় নিয়ে খসড়া চূড়ান্ত করুক।’
আইনটির খসড়ার কিছু ধারা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত আট দেশ।
প্রস্তাবিত খসড়ায় ধারা ১০-এ বলা হয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তার জন্য বা অপরাধ প্রতিরোধ, শনাক্ত ও তদন্ত করার উদ্দেশ্যেই উপাত্তধারীর কাছ থেকে উপাত্ত সংগ্রহ করা যাবে। নবম অধ্যায়ে উপাত্ত সুরক্ষা এজেন্সি গঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সরকারকে। উপাত্তের ওপর সরকারের ক্ষমতা প্রসঙ্গে ৬৭ ধারায় বলা হয়েছে, ‘সরকার প্রয়োজনে সময়ে সময়ে এজেন্সির মহাপরিচালকের কাছে এই আইনের অধীন সম্পাদিত যেকোনো বিষয়ে প্রতিবেদন বা বিবরণী চাইতে পারবে এবং উক্তরূপে কোনো প্রতিবেদন চাইলে মহাপরিচালক তা সরবরাহ করবেন।’ এসব ধারা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘ বলেছিল, ‘এই ধারা থাকলে বাংলাদেশের ডেটা সেন্টার (উপাত্ত সংরক্ষণ কেন্দ্র) ও সার্ভারগুলোয় সংরক্ষিত উপাত্ত নজরদারির আওতায় আসবে। বেসরকারি সংস্থাগুলোর ওপর গোপনীয় তথ্য প্রকাশের চাপ সৃষ্টি হবে। এই ধারা গণতান্ত্রিক শাসনকে দুর্বল করতে পারে।’
উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র সরকারও। ঢাকায় দেশটির রাষ্ট্রদূত পিটার হাস গত ৬ ফেব্রুয়ারি ‘বাংলাদেশে অনলাইন স্বাধীনতা ও ব্যবসায় বিনিয়োগ’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, ‘যদি ডেটা স্থানীয়করণের শর্তকে কঠোরভাবে আরোপের মাধ্যমে ডেটা সুরক্ষা আইন পাস করা হয়, তাহলে বর্তমানে বাংলাদেশে কাজ করছে—এমন কিছু আমেরিকান কোম্পানি বাজার ছেড়ে যেতে বাধ্য হতে পারে। প্রতিদিন যে কোটি কোটি বাংলাদেশি ব্যবহারকারী তাদের সেবা নিচ্ছেন, তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।’
উপাত্ত সুরক্ষা আইন ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার পরিবর্তে নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে—এমন আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন অনেকেই। টিআইবি বলছে, খসড়ায় সরকারি নজরদারি আর ভিন্নমত দমনের ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করা হয়েছে। সরকার ব্যক্তির ওপর নজরদারির ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করবে। পাশাপাশি মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ বাড়বে।
সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং সাংবাদিক মহল থেকেও উপাত্ত সুরক্ষা আইনের কিছু বিষয় নিয়ে আপত্তি আছে। কিন্তু এসব আপত্তির মূল বিষয়গুলো সুরাহা না করেই আইনটি চূড়ান্ত করছে সরকার।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উপাত্ত সুরক্ষা আইন দরকার। কিন্তু এই আইনের মাধ্যমে সরকার ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা দেবে নাকি নিয়ন্ত্রণ করবে, তা স্পষ্ট করতে হবে। খসড়ায় ব্যক্তিগত সুরক্ষা কী, তা সংজ্ঞায় স্পষ্ট নয়। পাশাপাশি উপাত্তকারী ও নিয়ন্ত্রণকারী দুজনের মধ্যে আন্তসম্পর্ক, ব্যক্তিগত জায়গা এবং সংবেদনশীল তথ্যের সংজ্ঞাও পরিষ্কার নয়। এমন অনেক বিষয়েই অস্পষ্টতা রয়েছে। এ ছাড়া জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও দেশ যে কারণে আপত্তি তুলেছে, সে বিষয়ে বা ব্যবসায়িক তথ্যের স্পষ্টতা দরকার। এসব বিষয় সরকারকে পরিষ্কার করতে হবে।’
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁর কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়া নিয়ে একাধিকবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন আইনমন্ত্রী। সর্বশেষ গত ৯ মার্চ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত আটটি দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠকের পরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়া মন্ত্রিপরিষদে যাওয়ার আগে অংশীজনদের সঙ্গে আবারও আলাপ-আলোচনা করা হবে। এর আগেও আমরা অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আইনটি উপাত্ত নিয়ন্ত্রণের জন্য নয়, সুরক্ষার জন্য করা হচ্ছে।’
উবায়দুল্লাহ বাদল, ঢাকা

অংশীজনদের মতামতের জন্য উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়া উন্মুক্ত করার পর থেকেই প্রস্তাবিত আইনটির বেশ কিছু ধারা নিয়ে সুশীল সমাজসহ দেশি-বিদেশি নানা মহল থেকে আপত্তি উঠেছে। কিন্তু এসব আপত্তির মূল দিকগুলো উপেক্ষা করেই আইনটির চূড়ান্ত খসড়া তৈরি করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই খসড়াটি যাচাই-বাছাই করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ।
জনপ্রশাসন ও আইন মন্ত্রণালয়ের সম্মতি সাপেক্ষে অনুমোদনের জন্য শিগগিরই তা মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থাপন করা হতে পারে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের সচিব মো. সামসুল আরেফিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যাচাই-বাছাইয়ের জন্য খসড়া জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অংশীজনদের সঙ্গে এ বিষয়ে আরও বৈঠক হবে। তারপরই আইনের খসড়া চূড়ান্ত করে যথাযথ প্রক্রিয়ায় মন্ত্রিসভায় পাঠানো হবে।’
প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী, অপরাধ প্রতিরোধ, শনাক্ত ও তদন্তের প্রয়োজনে যেকোনো উপাত্তধারীর কাছ থেকে উপাত্ত (ব্যক্তিগত তথ্যসহ) সংগ্রহ করা যাবে। আইনে উপাত্ত সুরক্ষা এজেন্সি নামে একটি কর্তৃপক্ষ গঠনের কথা বলা হয়েছে। এই এজেন্সি
যেকোনো ব্যক্তিকে প্রয়োজনীয় উপাত্ত সরবরাহ করার নির্দেশ দিতে পারবে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এ নির্দেশনা মানতে বাধ্য থাকবেন। সরকার দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা, বিদেশিদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বা জনশৃঙ্খলার স্বার্থে উপাত্ত সুরক্ষা এজেন্সিকে যেকোনো সময় যেকোনে নির্দেশনা দিতে পারবে। এজেন্সি তা মানতে বাধ্য থাকবে।
মোট ৫৬ পৃষ্ঠার এই খসড়া আইনে ১৪ অনুচ্ছেদ ও ৭২টি ধারা রাখা হয়েছে, যার বেশ কিছু বিষয় নিয়ে উদ্বেগ ও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন দেশের বিশিষ্টজনেরা। তাঁদের মতে, এই আইনের মাধ্যমে সরকার তথ্যের নিয়ন্ত্রণ করবে নাকি সুরক্ষা দেবে, তা পরিষ্কার নয়।
তবে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের দাবি, কয়েক বছর ধরেই উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়া প্রণয়নে কাজ চলছে। এ জন্য একাধিক পর্যালোচনা সভাসহ আন্তমন্ত্রণালয় সভা করা হয়েছে, যেখানে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, বিভিন্ন সংস্থা, আইনবিদ, সাংবাদিকসহ অংশীজনেরা উপস্থিত হয়ে মতামত দিয়েছেন। এমনকি জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থা ও কূটনীতিবিদরাও এ বিষয়ে তাঁদের মতামত দিয়েছেন। তাঁদের মতামতের ভিত্তিতে প্রস্তাবিত আইনের খসড়া তৈরি করা হয়েছে।
যেকোনো আইনের খসড়া মন্ত্রিসভায় তোলার আগের ধাপ হলো জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও আইন মন্ত্রণালয়ের সম্মতি গ্রহণ। উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়াটিও এখন মন্ত্রিসভার বৈঠকে তোলার পূর্ববর্তী ধাপে আছে।
কিন্তু আপত্তির বিষয়গুলো নিষ্পত্তি না হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দুর্নীতিবিরোধী গবেষণা প্রতিষ্ঠান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি বলছে, যেভাবে উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়া তৈরি করা হয়েছে, তা ঝুঁকিপূর্ণ। এটি জনগণের সংবিধানস্বীকৃত বাক্-স্বাধীনতা ও গোপনীয়তার অধিকার ক্ষুণ্ন করবে। এর মধ্য দিয়ে সমাজ নজরদারির সমাজে রূপান্তরিত হবে।
এ প্রসঙ্গে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান গত শনিবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, আইনের সংজ্ঞাসহ অনেক বিষয়ই স্পষ্ট নয়। খসড়ার মৌলিক কিছু জায়গা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এমন কিছু ধারা রয়েছে, যা দিয়ে আইনটি যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ওপর অপপ্রয়োগ করা সম্ভব। এই অবস্থায় আইনটি পাস হলে উপাত্ত সুরক্ষা নয়, নিয়ন্ত্রণই মুখ্য হবে। ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষার কথা বলা হলেও এই আইনের মাধ্যমে মূলত ব্যক্তিগত তথ্যের ওপর সীমাহীন নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা অর্পণ করা হয়েছে। উপাত্তের সংজ্ঞা সেই আগের মতোই অস্পষ্ট। ব্যক্তিগত গোপনীয়তার সংজ্ঞা ও মানদণ্ড কী হবে, তা-ও খসড়ায় স্পষ্ট নয়। সরকার চাইলেই যেকোনো ব্যক্তির ডিজিটাল তথ্য নিতে পারবে। এই আইনবলে সরকার ব্যক্তিগত তথ্যও নিতে পারবে। উপাত্ত সুরক্ষা এজেন্সি নামে যে কর্তৃপক্ষ গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে, সেটাও সরকারের হাতেই রাখা হয়েছে।
ইফতেখারুজ্জামান অভিযোগ করে বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে আমাদের সঙ্গে গত ১৪ মার্চ আইনমন্ত্রী, তথ্যমন্ত্রী ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রীর বৈঠক হয়েছিল। সেখানে উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়া দিয়ে বলা হয়েছিল, এটি নিয়ে ৬ এপ্রিল বসা হবে, কিন্তু বসা হয়নি। আমাদের কিছু সুপারিশ বিবেচনা করা হলেও বেশির ভাগই আমলে নেওয়া হয়নি। আমরা চাই সরকার আমাদের সঙ্গে বসে সংশ্লিষ্ট আপত্তি বিবেচনায় নিয়ে খসড়া চূড়ান্ত করুক।’
আইনটির খসড়ার কিছু ধারা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত আট দেশ।
প্রস্তাবিত খসড়ায় ধারা ১০-এ বলা হয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তার জন্য বা অপরাধ প্রতিরোধ, শনাক্ত ও তদন্ত করার উদ্দেশ্যেই উপাত্তধারীর কাছ থেকে উপাত্ত সংগ্রহ করা যাবে। নবম অধ্যায়ে উপাত্ত সুরক্ষা এজেন্সি গঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সরকারকে। উপাত্তের ওপর সরকারের ক্ষমতা প্রসঙ্গে ৬৭ ধারায় বলা হয়েছে, ‘সরকার প্রয়োজনে সময়ে সময়ে এজেন্সির মহাপরিচালকের কাছে এই আইনের অধীন সম্পাদিত যেকোনো বিষয়ে প্রতিবেদন বা বিবরণী চাইতে পারবে এবং উক্তরূপে কোনো প্রতিবেদন চাইলে মহাপরিচালক তা সরবরাহ করবেন।’ এসব ধারা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘ বলেছিল, ‘এই ধারা থাকলে বাংলাদেশের ডেটা সেন্টার (উপাত্ত সংরক্ষণ কেন্দ্র) ও সার্ভারগুলোয় সংরক্ষিত উপাত্ত নজরদারির আওতায় আসবে। বেসরকারি সংস্থাগুলোর ওপর গোপনীয় তথ্য প্রকাশের চাপ সৃষ্টি হবে। এই ধারা গণতান্ত্রিক শাসনকে দুর্বল করতে পারে।’
উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র সরকারও। ঢাকায় দেশটির রাষ্ট্রদূত পিটার হাস গত ৬ ফেব্রুয়ারি ‘বাংলাদেশে অনলাইন স্বাধীনতা ও ব্যবসায় বিনিয়োগ’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, ‘যদি ডেটা স্থানীয়করণের শর্তকে কঠোরভাবে আরোপের মাধ্যমে ডেটা সুরক্ষা আইন পাস করা হয়, তাহলে বর্তমানে বাংলাদেশে কাজ করছে—এমন কিছু আমেরিকান কোম্পানি বাজার ছেড়ে যেতে বাধ্য হতে পারে। প্রতিদিন যে কোটি কোটি বাংলাদেশি ব্যবহারকারী তাদের সেবা নিচ্ছেন, তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।’
উপাত্ত সুরক্ষা আইন ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার পরিবর্তে নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে—এমন আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন অনেকেই। টিআইবি বলছে, খসড়ায় সরকারি নজরদারি আর ভিন্নমত দমনের ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করা হয়েছে। সরকার ব্যক্তির ওপর নজরদারির ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করবে। পাশাপাশি মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ বাড়বে।
সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং সাংবাদিক মহল থেকেও উপাত্ত সুরক্ষা আইনের কিছু বিষয় নিয়ে আপত্তি আছে। কিন্তু এসব আপত্তির মূল বিষয়গুলো সুরাহা না করেই আইনটি চূড়ান্ত করছে সরকার।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উপাত্ত সুরক্ষা আইন দরকার। কিন্তু এই আইনের মাধ্যমে সরকার ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা দেবে নাকি নিয়ন্ত্রণ করবে, তা স্পষ্ট করতে হবে। খসড়ায় ব্যক্তিগত সুরক্ষা কী, তা সংজ্ঞায় স্পষ্ট নয়। পাশাপাশি উপাত্তকারী ও নিয়ন্ত্রণকারী দুজনের মধ্যে আন্তসম্পর্ক, ব্যক্তিগত জায়গা এবং সংবেদনশীল তথ্যের সংজ্ঞাও পরিষ্কার নয়। এমন অনেক বিষয়েই অস্পষ্টতা রয়েছে। এ ছাড়া জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও দেশ যে কারণে আপত্তি তুলেছে, সে বিষয়ে বা ব্যবসায়িক তথ্যের স্পষ্টতা দরকার। এসব বিষয় সরকারকে পরিষ্কার করতে হবে।’
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁর কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়া নিয়ে একাধিকবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন আইনমন্ত্রী। সর্বশেষ গত ৯ মার্চ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত আটটি দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠকের পরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়া মন্ত্রিপরিষদে যাওয়ার আগে অংশীজনদের সঙ্গে আবারও আলাপ-আলোচনা করা হবে। এর আগেও আমরা অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আইনটি উপাত্ত নিয়ন্ত্রণের জন্য নয়, সুরক্ষার জন্য করা হচ্ছে।’

অংশীজনদের মতামতের জন্য উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়া উন্মুক্ত করার পর থেকেই প্রস্তাবিত আইনটির বেশ কিছু ধারা নিয়ে সুশীল সমাজসহ দেশি-বিদেশি নানা মহল থেকে আপত্তি উঠেছে। কিন্তু এসব আপত্তির মূল দিকগুলো উপেক্ষা করেই আইনটির চূড়ান্ত খসড়া তৈরি করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই খসড়াটি যাচাই-বাছাই করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ।
জনপ্রশাসন ও আইন মন্ত্রণালয়ের সম্মতি সাপেক্ষে অনুমোদনের জন্য শিগগিরই তা মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থাপন করা হতে পারে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের সচিব মো. সামসুল আরেফিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যাচাই-বাছাইয়ের জন্য খসড়া জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অংশীজনদের সঙ্গে এ বিষয়ে আরও বৈঠক হবে। তারপরই আইনের খসড়া চূড়ান্ত করে যথাযথ প্রক্রিয়ায় মন্ত্রিসভায় পাঠানো হবে।’
প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী, অপরাধ প্রতিরোধ, শনাক্ত ও তদন্তের প্রয়োজনে যেকোনো উপাত্তধারীর কাছ থেকে উপাত্ত (ব্যক্তিগত তথ্যসহ) সংগ্রহ করা যাবে। আইনে উপাত্ত সুরক্ষা এজেন্সি নামে একটি কর্তৃপক্ষ গঠনের কথা বলা হয়েছে। এই এজেন্সি
যেকোনো ব্যক্তিকে প্রয়োজনীয় উপাত্ত সরবরাহ করার নির্দেশ দিতে পারবে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এ নির্দেশনা মানতে বাধ্য থাকবেন। সরকার দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা, বিদেশিদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বা জনশৃঙ্খলার স্বার্থে উপাত্ত সুরক্ষা এজেন্সিকে যেকোনো সময় যেকোনে নির্দেশনা দিতে পারবে। এজেন্সি তা মানতে বাধ্য থাকবে।
মোট ৫৬ পৃষ্ঠার এই খসড়া আইনে ১৪ অনুচ্ছেদ ও ৭২টি ধারা রাখা হয়েছে, যার বেশ কিছু বিষয় নিয়ে উদ্বেগ ও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন দেশের বিশিষ্টজনেরা। তাঁদের মতে, এই আইনের মাধ্যমে সরকার তথ্যের নিয়ন্ত্রণ করবে নাকি সুরক্ষা দেবে, তা পরিষ্কার নয়।
তবে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের দাবি, কয়েক বছর ধরেই উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়া প্রণয়নে কাজ চলছে। এ জন্য একাধিক পর্যালোচনা সভাসহ আন্তমন্ত্রণালয় সভা করা হয়েছে, যেখানে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, বিভিন্ন সংস্থা, আইনবিদ, সাংবাদিকসহ অংশীজনেরা উপস্থিত হয়ে মতামত দিয়েছেন। এমনকি জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থা ও কূটনীতিবিদরাও এ বিষয়ে তাঁদের মতামত দিয়েছেন। তাঁদের মতামতের ভিত্তিতে প্রস্তাবিত আইনের খসড়া তৈরি করা হয়েছে।
যেকোনো আইনের খসড়া মন্ত্রিসভায় তোলার আগের ধাপ হলো জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও আইন মন্ত্রণালয়ের সম্মতি গ্রহণ। উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়াটিও এখন মন্ত্রিসভার বৈঠকে তোলার পূর্ববর্তী ধাপে আছে।
কিন্তু আপত্তির বিষয়গুলো নিষ্পত্তি না হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দুর্নীতিবিরোধী গবেষণা প্রতিষ্ঠান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি বলছে, যেভাবে উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়া তৈরি করা হয়েছে, তা ঝুঁকিপূর্ণ। এটি জনগণের সংবিধানস্বীকৃত বাক্-স্বাধীনতা ও গোপনীয়তার অধিকার ক্ষুণ্ন করবে। এর মধ্য দিয়ে সমাজ নজরদারির সমাজে রূপান্তরিত হবে।
এ প্রসঙ্গে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান গত শনিবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, আইনের সংজ্ঞাসহ অনেক বিষয়ই স্পষ্ট নয়। খসড়ার মৌলিক কিছু জায়গা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এমন কিছু ধারা রয়েছে, যা দিয়ে আইনটি যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ওপর অপপ্রয়োগ করা সম্ভব। এই অবস্থায় আইনটি পাস হলে উপাত্ত সুরক্ষা নয়, নিয়ন্ত্রণই মুখ্য হবে। ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষার কথা বলা হলেও এই আইনের মাধ্যমে মূলত ব্যক্তিগত তথ্যের ওপর সীমাহীন নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা অর্পণ করা হয়েছে। উপাত্তের সংজ্ঞা সেই আগের মতোই অস্পষ্ট। ব্যক্তিগত গোপনীয়তার সংজ্ঞা ও মানদণ্ড কী হবে, তা-ও খসড়ায় স্পষ্ট নয়। সরকার চাইলেই যেকোনো ব্যক্তির ডিজিটাল তথ্য নিতে পারবে। এই আইনবলে সরকার ব্যক্তিগত তথ্যও নিতে পারবে। উপাত্ত সুরক্ষা এজেন্সি নামে যে কর্তৃপক্ষ গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে, সেটাও সরকারের হাতেই রাখা হয়েছে।
ইফতেখারুজ্জামান অভিযোগ করে বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে আমাদের সঙ্গে গত ১৪ মার্চ আইনমন্ত্রী, তথ্যমন্ত্রী ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রীর বৈঠক হয়েছিল। সেখানে উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়া দিয়ে বলা হয়েছিল, এটি নিয়ে ৬ এপ্রিল বসা হবে, কিন্তু বসা হয়নি। আমাদের কিছু সুপারিশ বিবেচনা করা হলেও বেশির ভাগই আমলে নেওয়া হয়নি। আমরা চাই সরকার আমাদের সঙ্গে বসে সংশ্লিষ্ট আপত্তি বিবেচনায় নিয়ে খসড়া চূড়ান্ত করুক।’
আইনটির খসড়ার কিছু ধারা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত আট দেশ।
প্রস্তাবিত খসড়ায় ধারা ১০-এ বলা হয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তার জন্য বা অপরাধ প্রতিরোধ, শনাক্ত ও তদন্ত করার উদ্দেশ্যেই উপাত্তধারীর কাছ থেকে উপাত্ত সংগ্রহ করা যাবে। নবম অধ্যায়ে উপাত্ত সুরক্ষা এজেন্সি গঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সরকারকে। উপাত্তের ওপর সরকারের ক্ষমতা প্রসঙ্গে ৬৭ ধারায় বলা হয়েছে, ‘সরকার প্রয়োজনে সময়ে সময়ে এজেন্সির মহাপরিচালকের কাছে এই আইনের অধীন সম্পাদিত যেকোনো বিষয়ে প্রতিবেদন বা বিবরণী চাইতে পারবে এবং উক্তরূপে কোনো প্রতিবেদন চাইলে মহাপরিচালক তা সরবরাহ করবেন।’ এসব ধারা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘ বলেছিল, ‘এই ধারা থাকলে বাংলাদেশের ডেটা সেন্টার (উপাত্ত সংরক্ষণ কেন্দ্র) ও সার্ভারগুলোয় সংরক্ষিত উপাত্ত নজরদারির আওতায় আসবে। বেসরকারি সংস্থাগুলোর ওপর গোপনীয় তথ্য প্রকাশের চাপ সৃষ্টি হবে। এই ধারা গণতান্ত্রিক শাসনকে দুর্বল করতে পারে।’
উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র সরকারও। ঢাকায় দেশটির রাষ্ট্রদূত পিটার হাস গত ৬ ফেব্রুয়ারি ‘বাংলাদেশে অনলাইন স্বাধীনতা ও ব্যবসায় বিনিয়োগ’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, ‘যদি ডেটা স্থানীয়করণের শর্তকে কঠোরভাবে আরোপের মাধ্যমে ডেটা সুরক্ষা আইন পাস করা হয়, তাহলে বর্তমানে বাংলাদেশে কাজ করছে—এমন কিছু আমেরিকান কোম্পানি বাজার ছেড়ে যেতে বাধ্য হতে পারে। প্রতিদিন যে কোটি কোটি বাংলাদেশি ব্যবহারকারী তাদের সেবা নিচ্ছেন, তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।’
উপাত্ত সুরক্ষা আইন ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার পরিবর্তে নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে—এমন আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন অনেকেই। টিআইবি বলছে, খসড়ায় সরকারি নজরদারি আর ভিন্নমত দমনের ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করা হয়েছে। সরকার ব্যক্তির ওপর নজরদারির ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করবে। পাশাপাশি মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ বাড়বে।
সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং সাংবাদিক মহল থেকেও উপাত্ত সুরক্ষা আইনের কিছু বিষয় নিয়ে আপত্তি আছে। কিন্তু এসব আপত্তির মূল বিষয়গুলো সুরাহা না করেই আইনটি চূড়ান্ত করছে সরকার।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উপাত্ত সুরক্ষা আইন দরকার। কিন্তু এই আইনের মাধ্যমে সরকার ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা দেবে নাকি নিয়ন্ত্রণ করবে, তা স্পষ্ট করতে হবে। খসড়ায় ব্যক্তিগত সুরক্ষা কী, তা সংজ্ঞায় স্পষ্ট নয়। পাশাপাশি উপাত্তকারী ও নিয়ন্ত্রণকারী দুজনের মধ্যে আন্তসম্পর্ক, ব্যক্তিগত জায়গা এবং সংবেদনশীল তথ্যের সংজ্ঞাও পরিষ্কার নয়। এমন অনেক বিষয়েই অস্পষ্টতা রয়েছে। এ ছাড়া জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও দেশ যে কারণে আপত্তি তুলেছে, সে বিষয়ে বা ব্যবসায়িক তথ্যের স্পষ্টতা দরকার। এসব বিষয় সরকারকে পরিষ্কার করতে হবে।’
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁর কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়া নিয়ে একাধিকবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন আইনমন্ত্রী। সর্বশেষ গত ৯ মার্চ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত আটটি দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠকের পরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়া মন্ত্রিপরিষদে যাওয়ার আগে অংশীজনদের সঙ্গে আবারও আলাপ-আলোচনা করা হবে। এর আগেও আমরা অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আইনটি উপাত্ত নিয়ন্ত্রণের জন্য নয়, সুরক্ষার জন্য করা হচ্ছে।’

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

অংশীজনদের মতামতের জন্য উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়া উন্মুক্ত করার পর থেকেই প্রস্তাবিত আইনটির বেশ কিছু ধারা নিয়ে সুশীল সমাজসহ দেশি-বিদেশি নানা মহল থেকে আপত্তি উঠেছে। কিন্তু এসব আপত্তির মূল দিকগুলো উপেক্ষা করেই আইনটির চূড়ান্ত খসড়া তৈরি করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই খসড়াটি যাচাই-বাছাই করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পা
০৯ মে ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

অংশীজনদের মতামতের জন্য উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়া উন্মুক্ত করার পর থেকেই প্রস্তাবিত আইনটির বেশ কিছু ধারা নিয়ে সুশীল সমাজসহ দেশি-বিদেশি নানা মহল থেকে আপত্তি উঠেছে। কিন্তু এসব আপত্তির মূল দিকগুলো উপেক্ষা করেই আইনটির চূড়ান্ত খসড়া তৈরি করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই খসড়াটি যাচাই-বাছাই করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পা
০৯ মে ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

অংশীজনদের মতামতের জন্য উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়া উন্মুক্ত করার পর থেকেই প্রস্তাবিত আইনটির বেশ কিছু ধারা নিয়ে সুশীল সমাজসহ দেশি-বিদেশি নানা মহল থেকে আপত্তি উঠেছে। কিন্তু এসব আপত্তির মূল দিকগুলো উপেক্ষা করেই আইনটির চূড়ান্ত খসড়া তৈরি করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই খসড়াটি যাচাই-বাছাই করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পা
০৯ মে ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

অংশীজনদের মতামতের জন্য উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়া উন্মুক্ত করার পর থেকেই প্রস্তাবিত আইনটির বেশ কিছু ধারা নিয়ে সুশীল সমাজসহ দেশি-বিদেশি নানা মহল থেকে আপত্তি উঠেছে। কিন্তু এসব আপত্তির মূল দিকগুলো উপেক্ষা করেই আইনটির চূড়ান্ত খসড়া তৈরি করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই খসড়াটি যাচাই-বাছাই করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পা
০৯ মে ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫