Ajker Patrika

মাটি খননে ঝুঁকিতে সেতু

রোবেল মাহমুদ, গফরগাঁও
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২১, ১৬: ৪৩
মাটি খননে ঝুঁকিতে সেতু

গফরগাঁওয়ের চরআলগী ইউনিয়নে পুরোনো ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর নির্মিত সেতুর নিচ থেকে খনন যন্ত্রের সাহায্যে মাটি কেটে বিক্রি করছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হলেও থামেনি মাটি কাটা। এলাকাবাসী জানায়, এক সপ্তাহ ধরে স্থানীয় কয়েকজন বালু ব্যবসায়ী দেওয়ানগঞ্জ বাজার সংলগ্ন পুরোনো ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর নির্মিত সেতুর নিচ থেকে যন্ত্র দিয়ে মাটি কেটে ট্রাকে ভরে বিক্রি করছে। এতে সেতুটি দেবে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সেতুটি নির্মাণ করে।

শুক্রবার দুপুরে চরআলগী ইউনিয়নের চরমছলন্দ পূর্বপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেতুর নিচের পূর্ব দিকের দ্বিতীয় পিলারের পাশ থেকে যন্ত্র দিয়ে মাটি কেটে বেশ কয়েকটি ট্রাক্টরে মাটি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ট্রাক্টরচালকেরা জানান, প্রতিদিন ৪-৫টি ট্রাক্টর ৮০ থেকে ৯০ বার মাটি নিয়ে যায়। প্রতি ট্রাক্টরে প্রায় ১০০ ঘনফুট মাটি পরিবহন করতে পারে। আশপাশের কয়েকটি গ্রামে এই মাটি বিক্রি হয়। প্রতি ট্রাক্টর মাটি বিক্রেতা ৪০০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। আর ক্রেতারা দূরত্ব অনুযায়ী ট্রাক্টরের ভাড়া দেন।

প্রতিদিন হাজার হাজার ঘনফুট মাটি সেতুর নিচ থেকে কেটে নিয়ে গেলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা কেউ বাধা দিচ্ছেন না অভিযোগ করে অশীতিপর জব্বার আলী বলেন, ‘এখন ভোটের মৌসুম বইল্যা চেয়ারম্যান, মেম্বাররা ইলেকশন লইয়া পড়ছে। কার কতা কেডা কয়।’

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, কিছু অসাধু বালু ব্যবসায়ী প্রভাবশালীদের হাত করে সেতুর নিচ থেকে এভাবে মাটি কেটে বিক্রি করছে। প্রতিদিন প্রায় দশ হাজার ঘনফুট মাটি সেতুর নিচ থেকে কেটে নিয়ে যাচ্ছে তাঁরা। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সেতুটি। যেকোনো সময় এটি দেবে যেতে পারে। এই সেতু দিয়ে পার্শ্ববর্তী নান্দাইল, হোসেনপুর উপজেলাসহ কয়েকটি এলাকার মানুষ যাতায়াত করে।

চরমছলন্দ গ্রামের বাসিন্দা সানোয়ার আলী বলেন, ‘বালু ব্যবসায়ী আকরাম হোসেন, হারুন ও ফারুক পুরোনো ব্রহ্মপুত্র নদের এই সেতুর নিচ থেকে যন্ত্রের সাহায্যে মাটি কেটে ট্রাক্টর দিয়ে বিক্রি করছেন। এতে পূর্ব দিকের দ্বিতীয় পিলারের অনেকটুকু জায়গাজুড়ে গর্ত হয়েছে।’

সেতু দিয়ে হেঁটে দেওয়ানগঞ্জ বাজারে যাওয়ার পথে আলিম উদ্দিন বলেন, ‘এখন সেতুর ওপর দিয়ে ভারী যানবাহন গেলে আগের চেয়ে বেশি কাঁপুনি হয়।’

এ বিষয়ে বালু ব্যবসায়ী আকরাম হোসেন বলেন, ‘মাটি কাটলেও সেতুর কোনো ক্ষতি হবে না। আগামী বর্ষায় আবারও মাটি ভরাট হয়ে যাবে।’

উপজেলা প্রকৌশলী মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘সেতুর নিচ থেকে মাটি কাটার বিষয়টি আমার জানা নেই। আইন অনুযায়ী সেতুর নিচে কিংবা আশপাশ থেকে মাটি কাঠা বা বালু উত্তোলন অপরাধ। বিষয়টি সরেজমিন জানতে সংশ্লিষ্ট এলাকায় লোক পাঠানো হবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘নিচ থেকে মাটি কেটে নিলে সেতুটি হুমকির মুখে পড়বে। এই অপরাধতুল্য কাজ যদি কেউ করে থাকে, তবে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত