Ajker Patrika

ক্রিকেটারদের চুক্তি নিয়ে বিসিবির দ্বৈত নীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৯ মে ২০২২, ১১: ৪৪
ক্রিকেটারদের চুক্তি নিয়ে বিসিবির দ্বৈত নীতি

মোস্তাফিজুর রহমানের টেস্ট খেলা না-খেলার প্রসঙ্গ এই মুহূর্তে দেশের ক্রিকেটাঙ্গনের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় বললে ভুল হবে না। গত দুই সপ্তাহে বিসিবির শীর্ষ কর্তা কিংবা নির্বাচকদের যেকোনো সাংবাদিক বৈঠকে মোস্তাফিজ-প্রসঙ্গ আসাটা যেন অনিবার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গত ২১ এপ্রিল আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে নিজের টেস্ট ভাবনা নিয়ে বেশ খোলাখুলিই কথা বলেছিলেন মোস্তাফিজ। এসব বিষয়ে সাধারণত তিনি কমই বলে থাকেন। এরপরই মোস্তাফিজ ইস্যুটা ঘুরেফিরে আসছে বিসিবি কর্তাদের সংবাদ সম্মেলনে। এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে কখনো বিসিবির নীতিনির্ধারকেরা যৌক্তিক ব্যাখ্যা দিচ্ছেন, কখনো নিজেদের নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়, এমন বক্তব্যও দিচ্ছেন। কখনো আবার নিজেদের খেলোয়াড়দেরই ব্যক্তিগত আক্রমণ করে বসছেন। এমনটা অবশ্য আগেও দেখা গিয়েছে। যেমন গত মার্চে সাকিব আল হাসানের দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যাওয়া না-যাওয়ার ঘটনায়। তারও আগে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে মুশফিকুর রহিমের পাকিস্তান সফর থেকে নাম প্রত্যাহারের সময় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে তাঁর পারিবারিক সম্পর্ক পর্যন্ত টানা হয়েছিল।

দুই দিন আগে টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন মোস্তাফিজের টেস্ট না খেলা নিয়ে বলেন, ‘পাপন ভাই (বিসিবি সভাপতি) বলেছিলেন, খেলোয়াড়েরা যে সংস্করণ খেলতে চায়, এ নিয়ে আলাপ করতে পারে। সেটা সিনিয়র খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রে কথাটা বলেছেন, সবার ক্ষেত্রে নয়।’ মন্তব্যটা বোর্ডের নীতির সঙ্গেই সাংঘর্ষিক। কারণ, ক্রিকেটাররাই জানাচ্ছেন, তাঁদের সংস্করণ বাছাইয়ের চুক্তিপত্রে কোথাও উল্লেখ নেই, ‘এটি শুধু সিনিয়র খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।’

গত কয়েক বছরে খেলোয়াড়দের ছুটি কিংবা নাম প্রত্যাহারের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে জানান, তাঁরা চুক্তিতে নতুন ধারা যুক্ত করতে চান। সেই ‘নতুন ধারা’ যুক্ত করে গত বছরের জুনে ক্রিকেটারদের চুক্তিপত্র পাঠায় বিসিবি। ‘পছন্দের সংস্করণ ও ব্যক্তিগত প্রতিশ্রুতি’ শিরোনামে বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের পাঠানো চুক্তিপত্রের শুরুতেই খেলোয়াড়দের কাছে জানতে চাওয়া হয়, কে কোন কোন সংস্করণ খেলতে চান। খেলতে না চাইলে পাশে ‘ক্রস চিহ্ন’ দিতে হবে।

মজার ব্যাপার হচ্ছে, তিন সংস্করণে চুক্তি করেও সংস্করণ বেছে খেলা কিংবা একটি সংস্করণ থেকে অবসর কিংবা লম্বা বিরতি নেওয়ার একাধিক ঘটনা ঘটেছে গত এক বছরে। বেশির ভাগ ঘটনা ঘটেছে সিনিয়র খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রে। এসব ক্ষেত্রে বোর্ডের ‘কঠোর নীতি’ অনেকটাই শিথিল, সেটি গতকাল নাজমুল হাসান পাপনের কথাতেও বোঝা গেল। বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘কেউ যদি বলে, এটা খেলব না, তখন আমরা বলতে পারি, তিন মাস খেলো। তত দিনে আমরা তৈরি করতে পারি, প্রস্তুতি নিতে পারি। এ বিষয়গুলো বোর্ডের সঙ্গে বসে করলে সহজ হয়। বাইরে কিন্তু তাই হয়। আমাদের দেশে হয়নি, হবে।’

স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠবে, তাহলে বিসিবির চুক্তির কার্যকারিতা কী, আদপে খেলোয়াড়দের বেছে খেলার সুযোগ তো বিসিবিই করে দিয়েছে। বিসিবির ‘অপশন’ কাজে লাগিয়ে একমাত্র মোস্তাফিজই সোজাসাপটা জানিয়েছেন, তিনি এই মুহূর্তে টেস্টে খেলতে চান না। যেহেতু টেস্ট দলে তিনি নিয়মিত বিবেচিত হন না আর জৈব সুরক্ষাবলয়ে হাঁপিয়ে ওঠার বিষয়টাও সামনে এসেছিল, বিসিবিও গত বছর চুক্তির পর বাঁহাতি পেসারের টেস্ট না খেলার বিষয়টি বড় করে দেখেনি।

সর্বশেষ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে তাসকিন আহমেদ, শরীফুল ইসলাম চোটে পড়ার পর হঠাৎ মোস্তাফিজের টেস্ট খেলার আলোচনা জোরালো হয়েছে। ফরম্যাট বাছাইয়ের সুযোগ দিয়ে বিসিবিই এখন বলছে, সবার জন্য এটি প্রযোজ্য নয়। অর্থাৎ এক চুক্তি নিয়ে বিসিবি হাঁটছে দুই নীতিতে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত