Ajker Patrika

ডিজিটাল হোল্ডিং নম্বর প্লেট দিতে ‘টাকা আদায় ’

চারঘাট প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ জুন ২০২২, ১৫: ০৩
Thumbnail image

চারঘাটের শলুয়া ইউনিয়নে ডিজিটাল হোল্ডিং নম্বর প্লেট দেওয়ার জন্য টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এখানে নম্বর দিতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। দুই মাস ধরে এ কাজ করছে ইউনিয়ন পরিষদের নিয়োগ করা বেসরকারি সংস্থা ‘আরবান’। তাদের ৯ জন মাঠকর্মী নম্বর প্লেট দেওয়া ও তথ্য সংগ্রহের নামে ইউনিয়নবাসীর কাছ থেকে ২০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করছেন।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার বিভাগের রাজশাহীর উপপরিচালক শাহানা আখতার জাহান স্বাক্ষরিত এক বার্তায় প্রতিটি উপজেলা থেকে দুটি ইউনিয়নের অনলাইনে হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণ ও আদায় কার্যক্রম সম্পন্ন করার কথা বলা হয়েছে। এ উদ্দেশ্যে তথ্য সংগ্রহ ফরম পূরণ করে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় বরাবর পাঠাতে বলা হয়। চারঘাট উপজেলার শলুয়া ও ইউসুফপুর ইউনিয়নকে এ কাজে নির্বাচন করা হয়। তবে সেই বার্তায় টাকা আদায়ের কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।

শলুয়া ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ জনশুমারি অনুযায়ী এখানে মোট পরিবারের সংখ্যা প্রায় ৭ হাজার। পরিবারগুলো থেকে আরবান সংস্থার কর্মীরা তথ্য সংগ্রহ ও হোল্ডিং নম্বর প্লেটের নামে সর্বনিম্ন ২০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করছেন।

অথচ স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. মাহবুবুর রহমান স্বাক্ষরিত ২০১৮ সালের ৯ জানুয়ারির এক স্মারক থেকে জানা যায়, কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে এই কাজ করানোর কোনো সুযোগ নেই।

জানা গেছে, দুই মাস যাবৎ শলুয়া ইউনিয়ন পরিষদের সিলমোহরকৃত রসিদের মাধ্যমে ডিজিটাল হোল্ডিং নম্বর বণ্টন প্রকল্পের মাধ্যমে ২০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত করে আদায় করা হচ্ছে। এ ছাড়া এখন রসিদ কাটা না হলে পরবর্তীতে জরিমানাসহ আরও বেশি টাকা দিয়ে রসিদ নিতে হবে বলেও ভয় দেখানো হয়েছে।

শলুয়ার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বামনদিঘী গ্রামের বাসিন্দা এনামুল হক বলেন, ‘ইউনিয়ন থেকে লোক এসে ২০০ টাকা নিয়ে গেছে। প্রথমে সন্দেহ হয়েছিল কিন্তু রসিদ দেওয়ায় টাকা দিয়েছি। তবে দেশের কোনো ইউনিয়ন পরিষদে এভাবে টাকা নেওয়া হয় বলে কখনো শুনিনি।’

৭ নম্বর ওয়ার্ডের মারিয়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল গণি বলেন, ‘পরিষদের লোক এসে আমার স্ত্রীর কাছ থেকে ২৫০ টাকা নিয়েছে। তবে ছাপানো ২০০ টাকার রসিদ দিয়ে গেছে। এখন টাকা না দিলে পরবর্তীতে ১ হাজার টাকা দিতে হবে বলে ভয় দেখানো হয়। এ জন্য স্ত্রী ভয় পেয়ে টাকা দিয়েছে।’

আরবান সংস্থার শলুয়া ইউনিয়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী দলের প্রধান নাজমুল হোসেন জানান, জরিপ, অনলাইন ও কর্মী খরচ ও ডিজিটাল প্লেটের মূল্য বাবদ ২০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। পরিষদ তাঁদের ৯ কর্মীকে তথ্য সংগ্রহ ও টাকা আদায়ের জন্য নিয়োগ দিয়েছে।

ইউনিয়ন পরিষদের নামে রসিদ দিয়ে টাকা আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে সচিব আব্দুল জলিল বলেন, ‘শুনেছি সরকারি খরচ বাবদ ২৫ টাকা আদায়ের নির্দেশনা আছে। তবে এ কাজের বাস্তবায়নে নানা রকম খরচ আছে। এ জন্য হয়তো ২০০ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে।’ তবে টাকা আদায়ে সরকারি নির্দেশনার কোনো কাগজপত্র তিনি দেখাতে পারেননি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শলুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ ও ডিজিটাল নম্বর প্লেট বাবদ টাকা নেওয়া হচ্ছে। পরিষদের সেবার পরিধি বাড়াতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কেউ টাকা না দিলে জোর করা হচ্ছে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত