Ajker Patrika

শ্বশুরবাড়ির লোকদের ফাঁসাতে বাবাকে হত্যা

জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ জুন ২০২২, ১৩: ২৩
শ্বশুরবাড়ির লোকদের ফাঁসাতে বাবাকে হত্যা

স্ত্রী প্রবাসে। শ্বশুর বলেন তালাক দিতে। স্ত্রীর পাঠানো টাকাও যায় শ্বশুরের পকেটে। শ্বশুরবাড়িতে গেলও খেতে হয় মারধর। এভাবে কয়েকবার লাঞ্ছিত হওয়ার পর নিজেই বেঁচে নেন আত্মহত্যার পথ। দুই দিনে নয়টি ঘুমের ট্যাবলেট খেয়েছেন। শেষমেশ বাবাকে গলা কেটে হত্যা করে শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে ফাঁসাতে চেয়েছিলেন তিনি।

গত শনিবার রাতে আদালতে লোমহর্ষক এ হত্যাকাণ্ডের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে বাবাকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া সুজাত মিয়া (৩০)। জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার রাতের খাওয়া শেষে সুরুজ আলী নিজ ঘরে ছোট ছেলে সুজাত মিয়াকে সঙ্গে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত দুইটার দিকে সুজাত মিয়া প্রতিবেশীদের গিয়ে জানান, একদল ডাকাত তাঁর বাবাকে হত্যা করেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠায়।

ঘটনায় রহস্য উদ্‌ঘাটনে পুলিশ প্রাথমিকভাবে চারজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। ঘটনার পরদিন নিহতের মেয়ে খোদেজা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

পরে পুলিশ সন্দেহজনক নিহতের ছোট ছেলে সুজাত মিয়াকে গ্রেপ্তার করে গত বুধবার আদালতে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জগন্নাথপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শামীম আল মামুন জানান, স্ত্রী সুজাতের কাছে টাকা না পাঠিয়ে বাবার বাড়িতে টাকা পাঠাতেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে বিরোধ চলছিল। আসামির জবানবন্দি মতে, তাঁর বাবা দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক অসুস্থতা ভুগছিলেন। ঘটনার রাতে গলা কাটার আগেই তাঁর বাবা স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করেন। পরে শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে ফাঁসাতে তিনি এ কাজ করেছেন।

স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, পুলিশের কাছে হত্যার বিষয়টি অস্বীকার করার পর তাঁকে নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ‘দা’ উদ্ধারসহ বিভিন্ন আলামত জব্দ করা হয়েছে। পরে শনিবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি শেষে আসামিকে সুনামগঞ্জ কারাগারে পাঠানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত