Ajker Patrika

মাছের সংকটে কমেছে শুঁটকির উৎপাদন

মো. শফিকুল ইসলাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
আপডেট : ২৪ মার্চ ২০২২, ১৫: ৪৬
মাছের সংকটে কমেছে শুঁটকির উৎপাদন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার মেঘনা নদীর পাড়ে লালপুর শুঁটকিপল্লিতে চাহিদা অনুযায়ী কাঁচা মাছ না পাওয়ায় শুঁটকির উৎপাদন কমেছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, চলতি মৌসুমে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ শুঁটকি কম উৎপাদিত হচ্ছে। এতে করে শুঁটকির দামও কিছুটা বাড়বে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার লালপুর ইউনিয়নের মেঘনা নদীর পাড়ে লালপুর গ্রামে শত বছর ধরে শুঁটকি তৈরি করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আশপাশ এলাকার হাটবাজার থেকে কাঁচা মাছ কিনে এনে লালপুর গ্রামে মেঘনা নদীর পাড়ে তৈরি করা হয় দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন শুঁটকি। মাছ কেটেকুটে প্রক্রিয়াজাত করে নদীর পাড়ের মাচায় শুকিয়ে তৈরি করা হয় শুঁটকি। এসব শুঁটকি বাজারজাত করা হয় দেশ-বিদেশে। লালপুর গ্রামের কয়েক শ পরিবার শুঁটকি উৎপাদন ও বাজারজাতের সঙ্গে জড়িত। তাই গ্রামটি শুঁটকিপল্লি হিসেবেই দেশে বেশি পরিচিত। পল্লিতে ছোট-বড় মিলিয়ে ব্যবসায়ী আছেন ২৫০ জনের বেশি। প্রতি বছর এই পল্লিতে উৎপাদিত দেশীয় মাছের প্রায় ১০০ কোটি টাকা মূল্যের শুঁটকি বাজারজাত করা হয়। এর মধ্যে ৫০ ভাগই পুঁটি শুঁটকি, বাকি ৫০ ভাগ বিভিন্ন মাছের।

এ ছাড়া গত দুই মৌসুমে করোনার কারণে প্রত্যেক ব্যবসায়ী বিপুল অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। তাই ব্যবসায়ীদের হাতে নগদ অর্থ কম। সে জন্য চাহিদামতো কাঁচা মাছ কিনতে না পারায় শুঁটকির উৎপাদন কমেছে। কিছুটা বেশি দরে মাছ কেনায় এবার শুঁটকির দামও বাড়বে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। শুঁটকিতে কেজি প্রতি ৫৫-৬৫ টাকা পর্যন্ত বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের।

শুটকি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিবছর অক্টোবর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত শুঁটকি তৈরির মৌসুম। বছরের এ সময়টাতে শুঁটকি তৈরি এবং বেচাকেনার পাশপাশি মজুত করেন বড় ব্যবসায়ীরা। বর্তমানে মেঘনা নদীর পাড়ে মাছ প্রক্রিয়াজাত করে ৬০-৭০টি মাচায় শুকানো হচ্ছে। তবে গত বছর নদী ও খাল-বিলে পানি কম থাকায় এবং অতিরিক্ত মাছ শিকারের ফলে মাছ কম হয়েছে। এতে করে হাট-বাজারগুলোতে দেশীয় মাছের যোগনও কিছুটা কম। আর মাছের যোগান কম থাকায় দামও কিছুটা বেশি। প্রত্যেক প্রজাতির মাছের দাম কেজিতে অন্তত ৩০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে।

শুঁটকি ব্যবসায়ী উৎপল চন্দ্র দাস বলেন, ‘গত ১০ বছর ধরে শুঁটকি ব্যবসা করছি। এবার ৪টি মাচায় প্রায় ২ কোটি টাকা মূল্যের বিভিন্ন মাছের শুঁটকি শুকানো হচ্ছে। তবে করোনা মহামারি শুরুর আগে ৪ থেকে ৫ কোটি টাকার শুঁটকি তৈরি করতাম। কিন্তু গত দুই মৌসুমে করোনার কারণে শুটকি ব্যবসা ভালো যায়নি। করোনার কারণে গত দুই মৌসুমে অন্তত ৪০ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে আমার।’

এ ব্যাপারে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা তাজমহল বলেন, ‘মাছ কম পাওয়ার কারণ দুটি। একটি প্রাকৃতিক এবং আরেকটি অতিরিক্ত মাছ শিকার। গত বছর বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় নদী, খাল-বিলে পানি কম ছিল। সে জন্য মাছও কম হয়েছে। এ ছাড়া পোনা ও ডিমওয়ালা মাছ শিকারও মাছ কম হওয়ার অন্যতম কারণ। তবে মাছ ব্যবসায়ীরা বেশি দামে বিক্রি করার জন্য সবসময়ই মাছ সংকটের অজুহাত দেখান।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মেঘালয়ে হানিমুনে গিয়ে বর খুন, নিখোঁজ নববধূকে উদ্ধারে নেমেছে ড্রোন

‘তাণ্ডব’ সিনেমার শো চলার সময় ছায়াবাণী হলে দর্শকদের ভাঙচুর, টাকা লুট

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান বিচার ও কিছু প্রশ্ন

যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা নিয়ে বাংলাদেশের গার্মেন্টসের বাজার দখলের চেষ্টা ভারতে

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সেনাপ্রধানের সস্ত্রীক ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত