Ajker Patrika

ধানের দামে হতাশায় কৃষক

মুক্তাগাছা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি 
আপডেট : ১৫ জুন ২০২২, ১৫: ১৪
Thumbnail image

মুক্তাগাছায় চলতি মৌসুমে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হলেও দাম নিয়ে হতাশ কৃষকেরা। বর্তমানে বাজারে চালের তুলনায় ধানের দাম অনেক কম। কৃষকেরা বলছেন, এক মণ বোরো ধানের দাম ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা। কিন্তু ১ মণ চালের দাম ১ হাজার ৯০০ থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা। এক মণ ধানে ২৬-২৭ কেজি চাল হয়। তাঁরা ধানের দাম বাড়ানোর দাবি জানান। উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে, সরকারিভাবে শিগগিরই ধান সংগ্রহের কাজ শুরু করা হবে। তখন এই সমস্যা থাকবে না।

স্থানীয় কৃষকেরা জানান, বর্তমান বাজারে যে দামে ধান বিক্রি হচ্ছে, তাতে তাঁরা লোকসানের আশঙ্কায় আছেন। এ বছর একজন শ্রমিকের এক দিনের মজুরি দিতে কৃষকের বিক্রি করতে হয়েছে প্রায় দুই মণ ধান। শ্রমিকসংকটে বহু কষ্টে ধান ঘরে তুললেও বাজারে এখন ধানের দাম কম, কিন্তু চালের দাম বেশি। উপজেলার তারাটি এলাকার কৃষক কবির হোসেন, মধ্যহিস্যার হারুন, বড়গ্রামের আব্দুল হাই, মহিশতারার শাকিল মিয়াসহ অনেকেই জানান, এ বছর কাঠাপ্রতি জমি চাষ করতে খরচ হয়েছে ৩০০ টাকা, ধানের চারা রোপণ করতে খরচ হয়েছে ৫০০ টাকা। বিপরীতে রোদে শুকানো ধান মণপ্রতি ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।

বীজ কেনা, আগাছা পরিষ্কার, পানি সেচ, সার-কীটনাশক প্রয়োগ, ধান কাটা ও মাড়াই খরচ বাদ দিলে এ বছর ধান চাষিরা লাভের মুখ দেখবেন না বলেও তাঁরা জানান। এমন অবস্থা চলতে থাকলে ধান চাষের ওপর কৃষকেরা আস্থা হারিয়ে ফেলবেন। চাষে লাভ না পেয়ে ধান চাষের বিকল্প খুঁজবেন উপজেলার ধানচাষিরা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে ১৯ হাজার ১৯০ হেক্টর জমিতে। ধানের ফলনও ভালো হয়েছে, কিন্তু এ মৌসুমে টানা বৃষ্টির কারণে ফসল ঘরে তুলতে কিছু বেগ পেতে হয়েছে কৃষকদের।

উপজেলার ধান ব্যবসায়ী তাহের মিয়া, ওয়াহাব আলী ও রঙ্গলাল বাবু বলেন, ‘ধানের মিলাররা দাম নির্ধারণ করে দিয়েছেন। তাই এর বেশি নেওয়া সম্ভব নয়। তা ছাড়া এ বছর টানা বৃষ্টিতে বেশির ভাগ ধানের কালার নষ্ট হয়ে গেছে। ধানের প্রকারভেদে আমরা ধান ক্রয় করছি। রোদে শুকানো ধান ৯৫০ থেকে ১ হাজার ৫০ আবার বেশি শুকানো ধান ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ১৫০ দরে কিনছি।’

আটানী বাজারের চাল ব্যবসায়ী আশরাফ হোসাইন বলেন, এক মণ বোরো ধান থেকে চাল পাওয়া যায় ২৬-২৭ কেজি। বর্তমানে ১ কেজি চাল প্রকারভেদে ৪৮-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সে হিসাবে এক মণ চাল ১ হাজার ৯০০ থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মুজাটি এলাকার কৃষক হাসিম বলেন, কাঁচা ধান ব্যাপারীরা কিনতে চায় না। কিছু ব্যাপারী কিনলেও শুকনো ধানের তুলনায় দাম অনেক কম দেয়। এখন এক মণ কাঁচা ধান ৮০০ থেকে সর্বোচ্চ ৯০০ টাকায় বিক্রি করা যায়।

মুক্তাগাছা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘অনেক কৃষক আমাদের কাছে ধান বিক্রি করতে আবেদন করেছেন। সরকারি নির্দেশনা পেলে শিগগিরই ধান সংগ্রহের কাজ শুরু করা হবে। তখন দাম কমের এই সমস্যা থাকবে না।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সেলিনা পারভীন বলেন, ‘চলতি বছরে উপজেলায় ১৯ হাজার ১৯০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। খুব শিগগির সরকারিভাবে ধান ক্রয় শুরু হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত